মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার আরেক দূর্গ গাড়াডোব

কোমরপুরের পরে মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার আরেক দূর্গ হিসেবে স্থান পেয়েছে গাংনী গাড়াডোব গ্রাম। যে গ্রামটিতে প্রায় অর্ধশত তরুন এ অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত।

গত বুধবার রাতে গাংনী গাড়াডোব গ্রামে অভিযান চালিয়ে রাসেল আহমেদ ও রাকিবুজ্জামান নামের দুই অনলাইন জুয়ার এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তীতে এসকল তথ্য উঠে এসেছে।

গ্রেফতারকৃত রাসেল ও রাকিবুজ্জামানকে গাংনী থেকে আটক অনলাইন জুয়ার মূল হোতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিপুর বিরুদ্ধে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মেহেরপুর জেলায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি অনলাইন জুয়া, ওয়ানএক্স বেট, মেলবেটসহ অনলাইন জুয়ার পরিচালনা করে বিকাশ/নগদ/রকেটের সেলস রিপ্রেজেনটেটিভদেও যোগসাজশে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ব্যতিত অবৈধ ই ট্রানজেকশন করে আসছে। গত ১৩ ফ্রেব্রুয়ারি গাংনী থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিপুসহ ৬জনকে আটক করার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে শিপুর অন্যতম এজেন্ট হিসেবে গাড়াডোব গ্রামের মৃত আবুল হাশেমের ছেলে আবু রাসেলকে(২৭) ও জামিরুল ইসলামের ছেলে রাকিবুজ্জামনকে প্রমানসহ গ্রেফতার করে। তাদেও কাছে থেকে ৬টি মোবাইল সেট, একটি ল্যাপটপ ও বেশ কয়েকটি সিম জব্দ করা হয়।

আবু রাসেল পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তীতে জানায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিপুর সহযোগী এজেন্ট ও পার্টনার হিসেবে কাজ করেন তিনি। বর্তমানে অনলাইন জুয়ার জনপ্রিয় সাইট ওয়ানএক্স বেট ও মেলবেট এ পুলিশের নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় শিপুর সহযোগীতায় ওয়ানবেটপ্রো নামের নতুন একটি জুয়া সাইট কার্যক্রম করে আসছিলো। রাসেল আরো জানায়, নগদ/বিকাশে মাসিক ৩০/৪০ লক্ষ টাকা লেনদেন স্বাভাবিক হওয়ায় তারা প্রকাশে স্বাভাবিক ভাবে ওয়ানবেট প্রো ওয়েবসাইট পরিচালনা করে আসছিলো এবং গাংনী এলাকায় যতগুলো অনলাইন জুয়ার এজেন্ট পরিচালিত হয় তার মূল পরিচালনাকারী হলো সাহিদুজ্জামান শিপু। তার মত আরো যারা শিপুর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে তাদের নাম ও পরিচয়ও স্বীকারোক্তীতে উল্লেখ করেছেন আবু রাসেল। তারা হলেন- গাড়াডোব গ্রামের আনারুলের ছেলে হারুন, আমিরের ছেলে দোস্ত মোহাম্মদ দুদু, একই গ্রামের নওশাদ, আবুল হাশেমের ছেলে রাজন, রাজ্জাকের ছেলে সাজু, ময়নালের ছেলে তুলিপ, মনুর ছেলে তামিম, তাহাজদ্দিনের ছেলে রিকন, আলমগীরের ছেলে আশিক, বাবলুর ছেলে নাসিরুল, হালিমের ছেলে রিপন, একই গ্রামের ফয়সাল, রবিউল ইসলামের ছেলে তাহারুল, ।

ডিবির ওসি সাইফুল আলম জানান, মেহেরপুর পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে অনলাইন জুয়া মুক্ত করতে পুলিশের এ অভিযান অব্যহত রয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাংনী শহরের উত্তরপাড়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাহিদুজ্জামান শিপুর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে শিপুসহ অনলাইন জুয়ার ৬ এজেন্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন গাংনী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যে মামলায় শিপুসহ ওই ৬জন কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে, মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার দূর্গে একের পর এক হানা দিয়ে পুলিশ প্রায় অর্ধশত এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের এ অভিযান ও নজরদারী অব্যহত থাকায় জেলার অনলাইন জুয়াড়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তারা বিচ্ছিন্নভাবে অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বলে জানা গেছে।

এ সংক্রান্ত আরো খবর

গাংনীতে অনলাইন জুয়ার সম্পৃক্ততায় ছাত্রলীগ নেতা শিপুসহ ৬জন আটক

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার দূর্গে হানা