মেহেরপুরে আদালতে মামলা মিথ্যা, বাদীকে জেলে প্রেরণ

মামলা মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় এবার বাদীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ। এছাড়া বাদীর দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি কার্যবিধির ২০৩ ধারার বিধান মোতাবেক খারিজ করেছেন তিনি।

আজ  দুপুরের দিকে বিজ্ঞ বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ এই আদেশ দেন। যার মামলা নং সি, আর ৮০৬/২২।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী ও বিবাদীগণ একে অপরের পূর্ব পরিচিত। মামলার বাদীর বোন ১নং সাক্ষী মোছাঃ মাবিয়া খাতুন এর সাথে জনৈক ইনাচতুল্লাহ ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। জনৈক ইনাচতুল্লাহ ও বিবাদী আঃ কুদ্দুস একে অপরের আপন ভাই এবং দুই বিবাদী প্রতিবেশী। বাদীর বোনের স্বামী ইনাচতুল্লাহ দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর যাবৎ মালয়েশিয়াতে থাকে এবং কয়েক বছর পর পর দেশে আসে। বাদীর বোন ঘর সংসার করাকালে ইনাচতুল্লাহর পাঠানো টাকাতে বাদীর বোনের ছোট ছেলে লিটনকে তফসিল বর্ণিত মোটর সাইকেলটি ক্রয় করে দেয় যা বাদীর বোনের নামে সকল কিছু রেজিট্রেশন করা হয়। বাদীর বোন ইনাচতুল্লাহর ঘর সংসার করাকালে সে গাংনী থানাধীন হিন্দা গ্রামের জনৈক জামাল এর সাথে অবৈধ প্রেম ভালবাসা করে ইনাচতুল্লাহকে তালাক না দিয়ে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বাদীর বোন মাবিয়া খাতুন ইনাচতুল্লাহকে তালাক প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে মামলার ২নং বিবাদী আঃ কুদ্দুস ইনাচতুল্লাহ এর ভাই হয়ে বিজ্ঞ আদালতে অত্র মামলার বাদীর বোনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এবং ১নং ও ৩নং বিবাদী উক্ত মামলায় সাক্ষী হন। উক্ত মামলার জের ধরে বাদী ও বিবাদীদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। যেহেতু মামলার বাদীর বোন ইনাচতুল্লাহ ঘর সংসার করাকালে তার নামে তফসিল বর্ণিত মোটরসাইকেলটি ক্রয় করা হয়ে।

সেহেতু উক্ত মোটরসাইকেলটি পাওয়ার জন্য মামলার বাদী অত্র মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। প্রকৃতপক্ষে বাদীর নালিশী দরখাস্তে বর্ণিত কোন ঘটনা, ঘটনার তারিখের আগে বা পরে ঘটেনি। অর্থাৎ নালিশকারী মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে মর্মে তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা নালিশকারী ও তার মানিত সাক্ষীদেরকে সঠিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি বা ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করে আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একটি মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মর্মে দাবী করলেও নথি দৃষ্টে দেখা যায় ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারা অনুযায়ী সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।

নালিশকারী ও সাক্ষীদের প্রদত্ত বক্তব্য, তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিল প্রতিবেদন এবং নথি পর্যালোচনায় মিথ্যা মামলাটি দায়ের করিয়েছেন মর্মে আদালতের পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এমতাবস্থায় মিথ্যা মামলা দায়েরের দায়ে নালিশকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইন অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন আদালত।