মেহেরপুরে ওমেদারের বাড়িতে জি আর’র চাল

বিশেষ বরাদ্দের (জি আর) চাল জেলা প্রশাসকের অফিসের ওমেদার মহিদুরের বাড়িতে পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী ২৮ বস্তা চালের কথা বলে অভিযোগ করলেও তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া গেছে ৯বস্তা। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ১৬ বস্তা চাল পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন তাকে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে মানব সহায়তা কর্মসূচী নির্দেশিকায় এককালীন এই পরিমান চাল বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ নাই।

সোমবার দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার চকশ্যামনগর গ্রামে নৈশ প্রহরী শহিদ আলীর বাড়িতে এ চালগুলো পাওয়া যায়। ওমেদার মহিদুর রহমান
শহীদ আলীর ছেলে। চালের বস্তায় লেখা রয়েছে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” খাদ্য অধিদপ্তর, নেট ওজন ৩০ কেজি।
শহীদ আলী জানান, আমি ডিসি স্যারের অফিসের নৈশ প্রহরীর চাকরি করি। আমার ছেলে তিন বছর ধরে ডিসি স্যারের গাড়ি ধোঁয়া মোছার
কাজ করে। সে কোন বেতন পায় না। সে কারণে ডিসি স্যার তাকে ৫০০ কেজি চাল খেতে দিয়েছেন। ছেলে মহিদুর রহমান জানান, ডিসি স্যার আমাকে কোন বেতন দেন না। তাই চাল গুলো খেতে দিয়েছে।

গ্রামবাসী নজরুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেন জানান, এই দফায় ২৮ বস্তা চাল নিয়ে এসেছে তারা। এরকম মাঝে মধ্যেই চাল নিয়ে আসেন। দেশে
করোনার বিপর্যয়ে অনেক গরিব মানুষ খেতে পাচ্ছেনা। অথচ ডিসি অফিসের কর্মচারীর বাড়িতে এতগুলো চাল।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গণি বলেন, নৈশ প্রহরী শহীদ আলীর ছেলে মহিদুর রহমান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ওমেদার হিসেবে
কাজ করেন। আগের জেলা প্রশাসক মহোদয়রা প্রতিবছর তাকে এক মেট্রিক টন করে জিআর (জেনারেল রিলিফ) চাল বরাদ্দ দিয়েছেন।

আমি দেড় বছরের মধ্যে এই প্রথম গত ১১ মার্চ তাকে হাফ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। এছাড়া যদি অন্য কোন চাল তার বাড়িতে থেকে থাকে তবে সে দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

চালের বস্তার লেখা নিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য অধিপ্তরের শ্লোগান ওটা। তাই যে কোন প্রকল্পের চালের বস্তায় এ লেখা থাকতে পারে। এদিকে , সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২৩ এর ৭(গ) এ বলা রয়েছে খাদ্যশস্য সহায়তা(জি আর) বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এবং অসহায় ব্যক্তি/পরিবারকে তাৎক্ষনিকভাবে খাদ্য সহায়তা হসেবে পরিবার প্রতি এককালীন ১০-৩০ কেজি চাল/গম বরাদ্দ দেয়া
যেতে পারে।

দুর্যোগে নিহত/আহত ব্যক্তির অস্বচ্ছল পরিবার প্রতি বিশেষ বিবেচনায় সর্বোচ্চ ২০০ কেজি চাল/গম বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে)।

এছাড়া সরকারী/বেসরকারী এতি,খানা/ লিল্লাহ বোর্ডিং/ শিশুসদন/ অনাথ আশ্রম/ মুসাফির খানা/ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আগতদের আহার্য বাবদ সহায়তা হিসেবে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ মেট্রিক টন চাল/গম বরাদ্দ দেওয়া যাবে( সংশ্লিষ্ট কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে)।নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক তার অধিনস্ত কর্মচারীকে
এককালীন ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দিতে পারেন কিনা এনিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়?