ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মেহেরপুরে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালন করেছেন ৬ গ্রামবাসী।
রবিবার সকালে গাংনী উপজেলার তেরাইল, মহব্বতপুর, বাদিয়াপাড়া, কামারখালি, ষোলটাকা ও সহড়াবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক কৃষক মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বামুন্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো।
তিনি বলেন, তেরাইল মোহাম্মদপুর ষোলটাকা তিন গ্রামের মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা ইতিপূর্বে প্রশাসনকে জানিয়েছি মানববন্ধন হয়েছে ওই মাঠে। তখন অল্প ছিল জলবদ্ধতা। আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়ে পুরো মাঠ প্লাবিত হয়েছে। মাঠ প্লাবিত হওয়ার সাথে সাথে গ্রামে চলে এসেছে। গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এখন এটা যদি নিরসন না হয় ফসলের তো ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে পাশাপাশি গ্রামের মানুষের অনেক ক্ষতি হবে। রাস্তার পাশে ক্যানাল আছে সেগুলো হয়তো বন্ধ হয়ে গেছে। এখন প্রশাসন নজর দিয়ে ক্যানালগুলো যদি ঠিক করে দেয় তাহলে জলবদ্ধতা কমে যাবে।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বহু বছর ধরে সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি বা সামান্য প্লাবন হলেই জমি ডুবে যায়। ধান, পাট, শাকসবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কৃষকরা বলেন, সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে কৃষকরা একদিকে লোকসানের বোঝা বইছেন, অন্যদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বক্তারা দ্রুত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান। ষোলটাকা ইউনিয়নের সাত আটটা গ্রামের প্রচুর জমিতে সব গ্রামের পানি এসে আটকে থাকে। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকাই জমিতে সারা বছর পানি আটকে থাকে । যার ফলে কোনরকম চাষাবাদ করা যায় না। বড় বড় মাছ ব্যবসায়ীরা পুকুর কাটার জন্য ক্যানাল বন্ধ করে ফেলে। ক্যানাল বন্ধ হাওয়াই মূলত জলবদ্ধতার কারণ। চাষাবাদ না করতে পেরে আমাদের গ্রামের মানুষ অনাহারে না খেয়ে থাকে। এর পাশাপাশি গ্রামের সকল মানুষের গরুর খাবারে সংকট দেখা যায়। তিন থেকে পাঁচ হাজার বিঘা জমি পানি আটকে আছে।
পানি নিষ্কাশনের পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে গমের চাষ হবে না, ভুট্টা চাষ হবে না, কৃষকের আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। রবিশস্যের চাষ গুলো আমাদের মাঠে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।
মানববন্ধন শেষে কৃষকরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।