মেহেরপুরে নির্বাচন পরবর্তি সহিসংতা বন্ধের দাবিতে পরাজিত প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুরে নির্বাচন পরবর্তি সহিসংতা বন্ধের দাবিতে পরাজিত প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুর-১ আসনের সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতা। পরাজিত প্রার্থীর নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মারধর, তাদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এসকল অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুরে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নান তার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) অভিজ্ঞতার আলোকে নিশ্চয় জানেন যে, নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর কর্মি সমর্থকরা পরাজয়ের লজ্জায় এবং নানাবিধ হুমকি ধমকির কারণে কিছুদিন ভয়ে ভয়ে আড়ালে আবডালে এবং ঘরেই অবস্থান করেন। অন্য দিকে সহিংসতা ও সংঘর্ষের আশঙ্কায় বিজয়ী প্রার্থী স্বয়ং তার কর্মিসমর্থকদের আনন্দ মিছিল সাধারণত করতে দেন না এবং সহনশীল আচারণ করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রীও বরাবরই তা নিষেধ করেন।

কিন্তু মেহেরপুর- মুজিবনগরে বিজয়ী প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন নির্বাচনের পূর্ব থেকেই আওয়ামীলীগ নেতা কর্মিদের শয়তান বলে আখ্যা দিয়ে আগে থেকেই তার কর্মিসমর্থকদের উসকানি দিয়ে রেখেছেন। নির্বাচনের দিন জানুয়ারি বিকেল ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই রকেট গতিতে সুবিদপুর কেন্দ্রের ভোট গনণার শেষে ফলাফল ঘোষনা করা হয়। এরপর সেখানে এবং দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতা ও হিংস্রতা শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে।

গতকাল সোমবার রাতে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের লোকজন মিছিল সহকারে গিয়ে মুজিবনগর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা জেলা আওয়ামীলীগ এর সহ সভাপতি জনাব জিয়া উদ্দিন বিশ্বাসের বাসায় হামলা চালায় ইট পাটকেল ছোড়ে এবং তার লোকজনকে মারধর করে। এসময় এলাকা বাসী আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষ বাধে এতে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়। জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস ও তার লোকজন প্রানভয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বাইরে যেতে পারছেন না। এছাড়াও একই উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মি লালনের বাড়িতে হামলা করা হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা ও কালীগাংনী গ্রামে মহিলা মেম্বার বুলবুলি খাতুন ও মহিলা মেম্বার রহিমা খাতুন ভেজালীকে মেরে আহত করা হয়েছে। বুলবুলিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়। কালীগাংনীর অনেকে প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছাড়া। তেরোঘরিয়া বিল দখল করে নিয়েছে, যতারপুরে সাহেব আলীর কলা বাগান ও পেঁপে বাগান তছরুপাত করে। সোনাপুরে ছফর আলীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে, উজলপুরে মনছুদ্দিন ও তার পরিবারকে মারধর করেছে নৌকার কর্মি গোলাম মেম্বার, গোভীপুরে আছুনুর রহমান গোপালের উপর হামলা করেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন, আশরাফপুরে হায়দার ও নিজাম সহ ১০/১২ জন আওয়ামীলীগ কর্মিকে মারধর করেছে ও বাড়িছাড়া করেছে, দক্ষিণ শালিকায় ওসাইদ মেম্বারের অফিসে হামলা করেছে, রাধাকান্তপুরে ইসমাইল মেম্বারের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করেছে, চাঁদবিলে হাবিবের বাড়িতে হামলা করায় সে প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছাড়া, বর্শিবাড়িয়াতে ৮/১০ টি মাটরসাইকেল যোগে প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরা রামদাসহ অস্ত্র সজ্জিত হয়ে পরাজিত ট্রাক প্রতিকের লোকজনকে খুজতে থাকে, মেহেরপুর পৌরসভার ০৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতির অফিসে তালা দিয়েছে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই হামলার ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে এর অবসান না হলে হামলার শিকার ব্যক্তিরা নিজেদের বাঁচার তাগিদে ঘুরে দাড়ালে আরো মারাত্মক সংঘর্ষ ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর চাপে কোন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং ভোটে যে কারচুপি হয়েছে তা আপনারাও বুঝতে পেরেছেন।