
মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের মশুরিভাজা বিলে পদ্মফুল তুলতে গিয়ে একই পরিবারের ৩ জনসহ চার ছাত্রীর মমান্তির্ক মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা প্রথমে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। একজন নিখোঁজ থাকায় পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম গিয়ে অপরজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলো, আব্দুস সামাদের মেয়ে ফাতেমা (১৪) ও আফিয়া (১০)। এদের মধ্যে ফাতেমা মোমিনপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী এবং আফিয়া বারাদি তৃণমূল মডেল একাডেমির চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। ইরাক প্রবাসী সাহারুল ইসলামের মেয়ে ও বারাদি তৃণমূল মডেল একাডেমির চুতর্থ শ্রেণীর ছাত্রী আলেয়া (১০), ইসাহাক আলীর মেয়ের আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী মিম (১৪)। নিহত সকলের বাড়ি রাজনগর গ্রামের মল্লিকপাড়ায়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরের দিকে চারজনই একসঙ্গে মশুরিভাজা বিলে পদ্মফুল তুলতে মশুরিভাজা বিলে যায়। দীর্ঘক্ষণ তারা ফিরে না আসায় বিকালের দিকে পরিবারের লোকজন তাদের খুঁজতে বের হয়। বিলপাড়ে তাদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে যে একজনের লাশ পানিতে ভাসছে। তারপর খোঁজাখুঁজির পর আরও দুটি মরদেহ দেখতে পায়। একজনের খোঁজ না পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম সেখানে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। মমান্তিক এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ শোকে ভারী হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের টিম লিডার শামিম হোসেন জানান, পদ্মফুল তুলতে গিয়ে চারজন বিলে ডুবে যায়। স্থানীয়রা ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। একজনকে খুঁজে না পেলে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে বিলের একটি গর্তের মধ্যে থেকে বাকি জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারাদি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই রেজাউল ইসলাম বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে চারজন মশুরিভাজা বিলে পদ্মফুল তুলতে যায়। ফুল তুলতে গিয়ে তারা একটি গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেছবাহ উদ্দিন বলেন, নিহত চারজনের কেউ সাঁতার জানতো না। বিলে একেক যায়গায় একেক রকম গভিরতা। যেকারণে তারা বুঝতে না পেলে বিলে তলিয়ে গেছে। পরে তাদের খোঁজাখুজি করার পর স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ সুমাইয়া জাহান ঝুকার্সহ প্রশাসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত পরিবারের খোজ খবর নিয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতদের দাফনের জন্য মরদেহ প্রতি ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।