
মেহেরপুরে এবার পাটের ভালো ফলন হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা। জমি চাষ, সার, বীজ, পানি, শ্রমিক-সবকিছুতেই খরচ বেড়েছে, কিন্তু বাজারে ন্যায্য দাম মিলছে না। এবছর পাটের দাম মন প্রতি ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবী চাষীদের।
এভাবে লোকসান হলে আগামীতে পাট চাষ থেকেমুখ ফিরিয়ে নেবেন চাষিরা।
পর পর বেশ কয়েক বছর সোনালী আঁশ পাটের দাম ছিল নিম্নগামী। “কৃষকরা যে দামে পাট বিক্রি করেন, তাতে খরচই উঠে না। প্রতি বছরই লোকসানে যাচ্ছেন কৃষক।” তবে, এবছর সেই দাম কিছুটা বেড়ে বাজারে এখন সাড়ে ৩ হাজার টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ কোনো রকম উঠলেও লাভবান হচ্ছেন না কৃষক। পাটের মন প্রতি সরকার চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা মন নির্ধারণ করার দাবী তাদের।
কৃষকরা জানিয়েছেন, সার, বিষ, পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। যার ফলে লাভ তো দূরের কথা, মূলধনই ফিরে পাওয়ায় সংশয় দেখা দিচ্ছে।
“সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া কৃষকের এই অবস্থা থেকে উত্তরণ কঠিন। দাম নির্ধারণ করা হলে কৃষক উৎসাহ পাবে।” স্থানীয় কৃষকদের দাবি, সরকার পাটের মূল্য নির্ধারণ করে সরাসরি পাট সংগ্রহের ব্যবস্থা নিলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন কৃষক।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় এবছর ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জামিতে পাট চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও মূল্য না পেলে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে না। তাই টেকসই পাটখাতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাই সময়ের দাবি।
ইচাখালী গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এক বিঘা জমিতে তিনি পাচ চাষ করেছিলেন। জমি চাষ, বীজ বপন, সেচ ও নিড়ানি খরচ বাবদ প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। ওই জমিতে ১০মন পাট হয়েছে। বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকা মন। খরচ উঠছে কোন রকম। লাভ হচ্ছে না।
ঊন্দও গ্রামের কৃষক বাবর আলী বলেন, প্রতি বছরই পাটে লোকসান হচ্ছে। তবুও আশায় আশায় পাটের আবাদ করি। এবছরেও দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। খরচের টাকা টা কোন রকমে উঠছে। শুধু পরিবারে জ্বালানী হিসেবে পাটকাঠির জন্য আবাদ করি। তবে আগামিতে আর পাটের আবাদ করবো না। বিকল্প আবাদে যাবেন তিনি।
নওপাড়া গ্রামের কৃষক মোছাদ্দেক আলী, ধলা গ্রামের কৃষক জাবের আলী বলেন, আমরা কৃষকম। লাভ আর লোকসান বুঝতে গিয়ে বার বার লোকসান হচ্ছে। তবে পাটের দাম সরকারি ভাবে বৃদ্ধি করা না হলে দেশ থেকে সোনালী আশ এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাবে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবছর ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জামিতে পাট চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও মূল্য না পেলে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে না। তাই টেকসই পাটখাতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাই সময়ের দাবি।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগ কৃষকের পাশে থেকে কাজ করছেন। পাট চাষিরা যেনো ন্যায্য মূল্য পাই এবং দালাল ফঁড়িয়া দারা প্রতারিত না হয় সে লক্ষে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের লোকসানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।