মেহেরপুরে বোমা আতঙ্কে দুইদিন ধরে পাহারায় ছিলো পুলিশ

মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে পড়ে থাকা সার্কিটযুক্তযুক্ত বোমাটি দুইদিন ধরে পুলিশ ঘিরে রাখার পর গতকাল শনিবার সকালে নিস্ক্রিয় করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দু’টি দল মেহেরপুর আসে।

পরিদর্শক মোদাচ্ছের কাউছারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও পরিদর্শক ইসরাফিল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের অপর একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থলে আসে। সকাল ৮টার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক ইসরাফিল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের তদন্ত দল কাজ শুরু করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পরিদর্শক মোদাচ্ছের কাউছারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বোমা বিশেষজ্ঞ দল বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটান। এসময় বিকট শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।

তবে মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম তাৎক্ষণিক ভাবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এটি বোমা ছিল না। সার্কিটের সঙ্গে ডিভাইস থাকায় নেগেটিভ-পজেটিভ এক হওয়ায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই কে কারা এ কাজ করেছে। ডিভাইসযুক্ত সার্কিটের ভেতর বালু ছিল।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান ফটকের পাশে একটি ব্যাগের মধ্যে ডিভাইসযুক্ত বোমাটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে থানা পুলিশ ওই দিন থেকেই ঘিরে রাখে ঘটনাস্থল। এর মধ্যে র‌্যাবের বোমা বিশেষজ্ঞ দল খুলনা থেকে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

তবে তাদের কাছে এ ধরনের বোমা নিষ্ক্রিয় করার কোনো যন্ত্র না থাকায় তারা ফিরে যান। পরে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দু’টি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে আসে। এদিকে বোমার ব্যাগটির পাশেই আনসারুল্লাহ ইসলামী জঙ্গি সংগঠন লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেই চিরকুটের কারণেই এলাকাই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এ দিকে, গতকাল দুপুরে মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী প্রেস ব্রিফিং এ বলেন, গত বৃহস্পতিবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যলয়ে বোমা সাদৃশ্য বস্তুর খবর পেয়ে আমরা পরিদর্শন করি।

সেখানে একটি চিরকুট পাওয়া যায় যেটি আল-কায়েদা নামে লেখা। সেই সাথে ইলেকট্রিক সার্কিট যুক্ত বোমা সাদৃশ্য বস্তু। এ জন্য আমরা কোন ধরনের ঝুকি না নিয়ে উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার তারা সেটি নিস্ক্রিয় করে। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের তথ্য মতে এটি কোন বোমা ছিল না। বালি ভর্তি একটি প্লাসটিকের পাইপ ও এলোমেলো কিছু তারের সংযোগ। কে বা কারা আতঙ্ক তৈরির জন্য এটি করেছে। তবে কারা করেছে সেটি আমরা তদন্ত করে খুজে বের করবো।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মেহেরপুর জনস্বাথ্য প্রকৌশলী কার্যালয়ে একটি বোমা সাদৃশ্য বস্তু পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খরব দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ গত দুই দিন ধরে জায়গাটি ঘিরে রেখেছিল।