মেহেরপুরে মানবেতর জীবন কাটছে শিক্ষক-কর্মচারীদের

বন্ধ স্কুল, কবে খুলবে জানা নেই। শিক্ষার্থী নেই, তাই বেতনও নেই শিক্ষকদের। করোনা দুর্যোগের কারণে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন মেহেরপুর জেলার ৮ শতাধিক শিক্ষক কর্মচারী। এসব শিক্ষক কর্মচারীদের পরিবারে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ।

শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় চলা এসব শিক্ষকদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে না আসায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। ফলে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সরকারী সহায়তা বলতে পেয়েছেন এ পর্যন্ত ১০ কেজি চাল।

মেহেরপুর জেলা কিন্ডারগার্টেন স্কুল সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলায় সমিতি ভুক্ত ৬০ স্কুল রয়েছে এছাড়া সমিতির বাইরেও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্টান রয়েছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়। সেই টাকায় শিক্ষক কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। সামান্য বেতন ভাতা দিয়ে চলতো শিক্ষকদের জীবন যাপন।

কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতন বন্ধ রয়েছে। ফলে কোনোদিক দিয়েও তারা উপার্জন করতে পারছে না। চক্ষু লজ্জার ভয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতেও পারছেন না। পারছেন না মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতে। সব মিলিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাংনীর কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কেজি স্কুলের শিক্ষকতা আর প্রাইভেট পড়িয়ে কোনোরকম পরিবার নিয়ে চলতাম। করোনার কারনে স্কুল বন্ধ বেতন ভাতা ও প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ একারনে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছি। পেটে ভাত না থাকলেও সম্মানের ভয়ে কোথা থেকে ত্রাণ নিতেও পারেন না। অনাহারে অর্ধহারে চলছে শিক্ষক কর্মচারীদের জীবন। ধারদেনায় জর্জরিত তাই সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রণোদনার ব্যবস্থার দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে সভাপতি বলেন,ঘরভাড়ার জন্য বাড়ির মালিকরা চাপ দিচ্ছে। চেয়ার টবিল বেঞ্চে উইপোকা ধরেছে। আর অভাব অনটন গ্রাস করছে গোটা শিক্ষক কর্মচারীদের পরিবার গুলোকে। আবার কবে যে বিদ্যালয় গুলো শিক্ষার্থীদের পাদভারে মুখর হবে সেই অপেক্ষায় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।