মেহেরপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) আব্দুল মালেক এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) আব্দুল মালেক বলেন, জামুকার ১৮/০৪/১৯ ইং এবং মেহেরপুর জেলা প্রশাসক অফিসের ১৩/০৯/১৯ ইং তারিখের স্মারকে উদ্ধৃতি দিয়ে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি হিসেবে হুমায়ন কবিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু জামুকার ১৮/০৪/১৯ ইং তারিখের স্মারকে মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের নাম ছিলনা। গত ৩০ জানুয়ারি ২১ ইং তারিখে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল সেখানে দুইবার যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের নাম এসেছিল। কিন্তু পরের বার মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের নাম বাদ যায়। আশ্চর্যজনকভাবে ওই বিতর্কিত মানুষটিকে আবার যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি করা হলো। ভারতীয় তালিকা উপেক্ষা করে সন্দেহযুক্ত লাল মুক্তিবার্তার উপর ভর করে তিনি কার তদবিরে সভাপতি হিসাবে নিয়োগ পেলেন? এখানে প্রথমে নাম এসেছিল মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের কিন্তু রাতারাতি নাম বদল করে কোন যোগ্যতার বলে মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি বানানো হলো?
তিনি বলেন, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলায় ২০১৭ সালে যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে। কিন্তু কার স্বার্থে, কোন উদ্দেশ্যে প্রায় চার বছর পর আবার মেহেরপুর সদর উপজেলায় যাচাই বাছাই শুরু হলো এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (জেলা প্রশাসক) কাছে জানতে চেয়েছিলাম এই কমিটি কোন প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে। তিনি উত্তর দেন, নিয়ম মেনে করা হয়েছে।
এসব অসঙ্গতিগুলোকে নিয়ে আমি সদস্য সচিব ইউএনও কে যখন বলি, তখন তিনি আমাকে উত্তর দিলেন আমার কিছু করার নেই।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মন্ত্রণালয় আছে, জামুকা আছে, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল আছে, তাই স্থানীয় নেতাদের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর খবরদারির কোন প্রয়োজন নেই। আপনারা তো সাবেক হয়ে যাবেন কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা কোনদিন সাবেক হবে না। চর দখলের মত মুক্তিযোদ্ধাদের দখলের চেষ্টা করবেন না। অচিরেই এই কমিটির বাতিল করে যোগ্য মুক্তিযোদ্ধাকে সভাপতি করে যাচাই বাছাইয়ের দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা উজির আলী, আনোয়ার হোসেন, সেলিম আক্তার, আবুল হোসেন, আহাদ আলী, আফজাল হোসেন, শুকুর আলী, জালাল উদ্দিন, আবু তাহের, নাজিম উদ্দিন, মিনহাজ উদ্দিন, সুলতান আহমেদ, মুসা করিম, কাসিদুল ইসলাম, বজলুল হক, সিরাজুল ইসলাম, তৌফিক আলী, আঃ লতিফ, ইঞ্জিঃ নুরুল ইসলাম, মোফাজ্জেল হোসেন মাস্টার, সিনিঃ ওয়ারেন্ট অফিসার চাঁদ আলী (অবঃ), খোরশেদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি আমার নির্দেশনাতেই হয়েছে। আমি যতটুকু জানি নীতিমালা মেনেই এটি করা হয়েছে। তারপরও যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে সেটি দেখা হবে।