মেহেরপুরের পাইকারি ও খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় সবজি, মুরগি ও মাছের দামে নানা রকম ওঠানামা দেখা গেছে। বর্ষার কারণে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় আলুর দাম বেড়ে কেজি ২০ টাকায় উঠেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬ টাকা। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম অপরিবর্তিত থেকে যথাক্রমে ৭০ ও ৮০ টাকায় রয়েছে। বেগুনও ৭০ টাকা কেজিতে অপরিবর্তিত রয়েছে। আদার দাম স্থিতিশীল থেকে কেজি ১৬০ টাকা। তবে শশার দাম ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকায় উঠেছে।
মুরগির মধ্যে ব্রয়লার মুরগির পাইকারি দাম বেড়ে ১৭০ টাকায় উঠেছে, সোনালী মুরগির দাম কমে ২৭৫ টাকায় নেমেছে এবং লেয়ার মুরগি কেজি ২৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খুচরা বাজারে আলুর দাম কমে ২০ টাকায় নেমেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩ টাকা। পেঁয়াজ ৮০ টাকা থেকে কমে ৭০ টাকায়, রসুন ৮০ থেকে ৭০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ২৪০ থেকে ১৮০ টাকায় নেমেছে। তবে শশার দাম ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় উঠেছে।
পটল ৫০ থেকে বেড়ে ৬০, ঢেঁড়স ৫০ থেকে কমে ৪০, কলা ৭০ থেকে কমে ৬০ এবং পেঁপে ২০ থেকে বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আদার দাম ২০০ থেকে বেড়ে ২২০ টাকায় উঠেছে।
মুরগির খুচরা বাজারে ব্রয়লার বেড়ে ১৯০ টাকায় উঠেছে, সোনালী মুরগির দাম কমে ৩০০ টাকায় এবং লেয়ার মুরগির দাম সামান্য কমে ৩১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মাছের বাজারে রুই ২৫০, তেলাপিয়া ২২০, বাটা ২০০, পাঙাশ ১৫০, সিলভার ২০০, জিওল ৩৫০, চিংড়ি ৭০০, টেংরা ৮০০ এবং ইলিশ ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ছাগল শুক্রবারে কেজি ১১০০ টাকা, অন্যদিনে ১০০০ টাকা এবং গরু সর্বদা ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি দোকানদার মহির বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সবজির দাম এত বেশি যে ক্রেতারা আগের মতো আর বেশি কিনছেন না। আগে এক ক্রেতা যেখানে ৫০০ টাকার সবজি কিনতেন, এখন ৩০০ টাকার বেশি কিনছেন না। এতে আমাদের বিক্রিও কমে গেছে।
সবজি দোকানদার ফিরোজের বলেন, বর্ষার কারণে সবজি পচে যাচ্ছে, বাজারে মাল আসছে কম। চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ কম, তাই দামও বেড়েছে। আগে যেখানে এক ট্রাকে ৫০ বস্তা শাক-সবজি আসতো, এখন ২০-২৫ বস্তার বেশি আসে না।
সবজি দোকানদার মো: অনিক বলেন, বৃষ্টি এবং জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় আশানুরূপ বেচা কেনা হচ্ছে না। অনেক সময় বৃষ্টি হওয়ায় গ্রাম থেকে ট্রলি করে সবজি আনা যায় না, যার ফলে বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দেয়।
মুরগি বিক্রেতা জরিহ বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে, কিন্তু সোনালী মুরগির দাম কমেছে। লেয়ার মুরগির দাম মোটামুটি ঠিকই আছে। তবে দাম বাড়লে আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়, কারণ ক্রেতারা কম কিনতে শুরু করেন।
ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, সব পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় সংসারের খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
ক্রেতা সোহেল বলেন, আগে ৫০০ টাকায় বাজার করলে ৩-৪ দিন চলে যেতো। এখন ৫০০ টাকায় একদিনেরও বাজার হয় না। সবকিছুর দামই বেড়েছে। বাচ্চাদের জন্য ফল কিনতে গেলে পকেট খালি হয়ে যায়।
ক্রেতা নজমুল বলেন, সবকিছুর দাম এত বেড়েছে যে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। গতকাল যে পেঁয়াজ ৮০ টাকায় কিনলাম, আজ সেটা ৭০ টাকা। এই ওঠানামা আমাদের জন্য খুব কষ্টের।
তহ বাজারের সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান হাফি বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানি কমেছে। তবে আজ থেকেই দাম কমতে শুরু করেছে। আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
তিনি আরও জানান, আজ লালশাক পাইকারিতে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, খুচরায় ৫০ টাকায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই একই লালশাক ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।