মেহেরপুরের বহুল আলোচিত হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডের একটি মামলায় (পর্ণগ্রাফি) ৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা দিয়েছে আদালত। আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাসির উদ্দিন ফরাজী এ রায় প্রদান করেন।
রায়ে নাজনিন খান প্রিয়া, হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন এবং সহযোগী শাহজাহানকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া নেহাল ও জয়কে ছয় বছরের কারাদণ্ড ও সমপরিমাণ অর্থদণ্ড দেয়া হয়। তবে আসামি জয় এখনও পলাতক রয়েছেন।
মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, ছন্দা খাতুন, আবু আক্তার করণ, তুহিন অরন্য, রেক্সনা, নিলুফার ইয়াসমিন রুপা, বর্ষা খাতুন, নুসরাত, সুমন রহমান বিমান, বিপাশা খাতুন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সাইদুর রাজ্জাক রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই বিজ্ঞ বিচারক দোষীদের শাস্তি দিয়েছেন। রায়টি দৃষ্টান্তমূলক হয়েছে। এতে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, অপরাধ করলে কেউ ছাড় পায় না। মেহেরপুরের মানুষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।”
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত বছরের ২২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের এনজিও কর্মী মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৩২)। মামলায় মূল আসামি করা হয় নাজনীন খান ওরফে প্রিয়া খানকে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের অনুমতি নিয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইল চক্রের চিত্র।
তদন্তে জানা যায়, প্রিয়া খান ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোটেল আটলান্টিকায় নিয়ে যেতেন। সেখানে গোপনে অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে পরে তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হতো। এ ঘটনায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুনসহ একাধিকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলায় ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১৭ জনের মধ্যে আসামি মিজানুর রহমান জনি ও আব্দুস সালাম মামলা চলাকালীন সময়ে মারা যান।