মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের দাবিতে একাট্টা খেলোয়াড় ও সংগঠকরা

দীর্ঘদিন মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা ক্রীড়াঙ্গন সচল করতে মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের দাবীতে একাট্টা হয়েছে বর্তমান- প্রাক্তন খেলোয়াড় ও সংগঠকরা।

বুধবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্তরে এ দাবীতে অবস্থান কর্মসূচি ও জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও পায়রা স্পোর্টিং ক্লাবের চেয়ারম্যান এম এ এস ইমনের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান, মেহেরপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়া শিক্ষক রমজান আলী, মেহেরপুরের প্রাক্তন খেলোয়াড় এমদাদুল হক, আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মাসুদ করিম ধলস ক্রীড়া সংগঠক আসাদুজ্জামান লিটন, আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত মাশাল অর্ট হুসাইন কবীরসহ কর্মসূচিতে শতাধিক খেলোয়াড়, সংগঠক অংশ নেন। পরে তারা জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসেন। জেলা প্রশাসক আন্দোলনকারীদের নির্বাচেনর ব্যাপারে আশ^স্ত করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে এমএএস ইমন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন নেই। কেনো নেই, কি কারনে নির্বাচন নেই এ কথাটি আমরা সবাই জানি। নির্বাচনের এই আন্দোলন জেলাবাসির দীর্ঘদিনের। গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচন হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ আবার খেলার মাঠে খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে। তিনি প্রশ্ন করেন, খেলার মাঠ না পেলে নতুন প্রজন্ম খেলা করবে কিভাবে? আজকের এই প্রজন্ম কিভাবে বেড়ে উঠবে। খেলার সাথে ভালো মানুষ হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।

এমএএস ইমন বলেন, আজকের শিশুরা সকালে বই, বিকালে মোবাইল আর রাতে গুগলে ঢুকছে। এই প্রজন্ম অদ্ভুত একটা প্রজন্ম হিসেবে বেড়ে উঠছে। এই প্রজন্মের জন্য খেলাধুলা ও আনন্দ বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। খেলাধুলা না থাকার কারনে এই প্রজন্মের মধ্যে কোনো শক্তি নেই, তারা বেড়ে উঠছে ব্রয়লার মুরগির মত।

তিনি বলেন, একটি কুচক্রি মহলের কালো থাবায় ক্রীড়া সংস্থা আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। ওই স্বার্থনেস্বী মহল এটিকে অচল করে রেখেছে। খেলাধুলার আয়োজন না থাকায় জেলার যুব সমাজ আজ ধ্বংসের পথে। এই যুব সমাজকে বাঁচাতেই এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনে জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুশিয়ারী দেন তিনি।
সাবেক ক্রীড়া শিক্ষক রমজান আলী বলেন, দীর্ঘদিন ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন না হওয়ায় খেলাধুলাও স্থবির হয়ে গেছে। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে এই অচল অবস্থা কাটাতে হবে।

সাবেক ফুটবলার এমদাদুল হক বলেন, এডহক কমিটি নিয়ে ১১/১২ বছর চলছে মেহেরপুর ক্রীড়া সংস্থা। যে কমিটির মেয়াদ ছিলো ৩ মাস। আমাদের সন্তানরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করবে ক্রীড়াঙ্গন বন্ধ থাকায় তারা আসক্তি হচ্ছে মোবাইলে।

মার্শাল আট হুসাইন কবির বলেন, নির্বাচন না হওয়ার কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে মনে হয় ক্রীড়া সংস্থা মরে গেছে। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে উপযুক্ত মানুষকে দায়িত্ব দিয়ে ক্রীড়া সংস্থাকে সচল করার দাবী জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০০৮ সালে। পরে ২০১২ সালে আহবায়ক কমিটি গঠণ করা হয়। ২০২০ সালে ওই আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিবও মারা গেছেন। বর্তমানের তিন সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি দিয়ে অচলাবস্থায় ক্রীড়া সংস্থা।