মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে সীমাহীন চিকিৎসা অবহেলা, তত্ত্বাবধায়কের লাগামহীন দুর্নীতি এবং বেসরকারি ক্লিনিকের সঙ্গে যোগসাজশে টেস্ট বাণিজ্যের প্রতিবাদে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের সর্বস্তরের জনতা ও সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকারি এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান ভয়াবহভাবে নেমে গেছে। সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে রোগী ও স্বজনরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় চিকিৎসকরা দায়িত্বে অনুপস্থিত থাকেন, আর উপস্থিত কিছু কর্মচারী রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
অভিযোগ করা হয়, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও কিছু অসাধু কর্মচারী ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে দালাল চক্র পরিচালনা করছেন। এই দালাল চক্র রোগীদের সরকারি টেস্ট না করিয়ে নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিচ্ছে। এতে সাধারণ রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ক্রীড়া সংগঠক এ এস লিটন, আহত জুলাই যোদ্ধা খন্দকার মুইজ উদ্দিন, মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুস সালাম, কলেজ ছাত্র মারুফ ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিন্টু মোল্লা, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মল্লিকপাড়া যুব সংঘের সভাপতি মো. হাসনাত জামান সৈকত, এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) জেলা কমিটির সদস্য শাওন শেখ প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতির তদন্ত, তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা ও হাসপাতালের সেবা মান উন্নয়নের দাবি জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত সাধারণ মানুষ বলেন, “সরকারি হাসপাতাল আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। এখানে দুর্নীতি আর দালালি চললে গরিব মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারটাই শেষ হয়ে যাবে।”
তারা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সত্যিকারের রোগীবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।