মেহেরপুর ডিসি অফিসের ছাদ যেন একখন্ড কৃষি জমি

এম এফ রুপক:

অল্প সম্পদের যথাযথ ব্যবহার দারিদ্র বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। মেটানো সম্ভব ফলমূল, শাক-সবজির চাহিদাও। এ লক্ষ্যে পরিত্যক্ত সব জমি কাজে লাগানোর পাশাপাশি ছাদেও সবুজের সমারোহ গড়ে উঠছে। শহরে খালি জায়গা না থাকায় ছাদকে কাজে লাগানোর প্রতি জোর দেয়া হচ্ছে। আর ছাদ কৃষির সফলতা নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান।

নিজ উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২য় তলার ছাদকে পরিণত করেছেন একখন্ড কৃষি জমিতে। গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন বাগান। এ যেন একখন্ড কৃষি জমি। শুধু নিজের কার্যালয় নয়, উদ্বুদ্ধ করছেন অন্যান্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদেরও। শুধু নিজে নয়, স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অন্যদেরও।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ছাদ দেশিও ফল, ফুল দেশী ও বিদেশী সবজি গাছে সয়লাব। এখানে আম, কমলা, মাল্টা, আমড়া, কামরাঙ্গা, বিভিন্ন ওষধি থেকে শুরু করে বিদেশী গোলাপ জাম, পার্সিমন, তিন, আঙ্গুর, এভোকাডো, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, চাইনিজ পেয়ারা, মালবেরি, ব্লুবেরি, ড্রাগন ফল, লটকনসহ প্রায় দেড়শ প্রজাতির ফল আর সবজি শোভা পাচ্ছে।

ছাদ কৃষিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এ উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান। অন্যান্য সরকারি অফিসের ছাদেও যেন কৃষিকাজ করা হয় সেজন্য উদ্বুদ্ধ করছেন জেলা প্রশাসক। কম সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহারের লক্ষ্যে সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি অফিস ও বিভিন্ন বাসার ছাদেও কৃষিকাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহাকারী কমিশনার নাহিদ হাসান জানান, দুইটি বিল্ডিংএর প্রায় ২৭ শতক ছাদের জায়গা জুড়ে করা হয়েছে ছাদ বাগান। ছাদের ওপর সারিবদ্ধভাবে জিও প্যাকেটে মাটি ভরাট করে প্রতিটি প্যাকেটে একটি করে দেশি, বিদেশি ফলদ, ওষধি, সবজি, মসলা জাতীয় গাছ রয়েছে।

জেলা প্রশাসকের এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চান্দু বলেন, জেলা প্রশাসকের এ কাজের অনুকরণ করে সরকারি বেসরকারি অফিসগুলোসহ বাসাবাড়িতেও গড়ে তোলা যেতে পারে ছাদ বাগান।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান জানান, কম সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতেই মূলত ছাদ বাগানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, শহরে মানুষের জায়গা কম। অধিকাংশ মানুষই পুরো জায়গা নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেন। তাই ছাদ বাগানের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। যদি কেউ ছাদ বাগান করতে গিয়ে সহযোগিতা চান তবে সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা করা হবে। ছাদ বাগানের ফলে সবকিছু আর কেনার ওপর নির্ভর করতে হবে না। সবজি, ফলমূল নিজেরা ফলিয়েই ভোগ করা সম্ভব।

এছাড়াও নিজেদের আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় ছাদ বাগানে সময় কাটিয়ে। সহকর্মীদের নিয়ে সময় পেলে ছাদ বাগানে বসে চায়ের আড্ডাও দেওয়া হয়।