মেহেরপুর পৌরসভা: ওয়ার্ড পরিক্রমা (ভিডিও সহ)

কেমন আছেন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পৌরসভা থেকে যে সকল সেবা পাওয়ার কথা সে সকল সেবা ঠিকমত পাচ্ছেন কি না, ওয়ার্ড এলাকায় উন্নয়ন কতটুক হয়েছে। এসব বিভিন্ন চিত্র নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনের নিয়মিত পর্ব ওয়ার্ডের চিত্র। প্রথম দিনে মেহেরপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড। মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার থেকে শুরু করে বামনপাড়ার একাংশ নিয়ে এ ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ড নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন আমাদের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার সিরাজুদ্দোজা পাভেল ও স্টাফ রিপোর্টার এস এ সাদিক।
প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা কিন্তু নাগরিক সেবা কিছু এলাকায় তৃতীয় শ্রেণীর মত। বাসিন্দারা পৌর ট্যাক্স নিয়মিত পরিশোধ করলেও নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বছরের পর বছর চলাচল করতে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। পর্যাপ্ত বা ময়লা আবর্জনা রাখার ডাষ্টবিনের অভাবে সড়কের পাশে দূর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ হয়ে পড়ে থাকে। পৌরসভা কিছু এলাকায় ড্রেনের সু ব্যবস্থা না থাকায় ড্রেনে পানি জমা থেকে দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রপ সৃষ্টি হচ্ছে ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১নং ওয়ার্ডের নতুন পাড়ার সড়কে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দর, ভাঙ্গা ড্রেনের গাইডওয়াল ও ঢাকনা যা দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার ও পুণঃ নির্মাণ হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীদের। নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গা। বছরের পর বছর বসবাস করতে হয় বসতবাড়ির আশেপাশে গাইডওয়াল ও ঢাকনা ভাঙ্গা ড্রেনের পাশে দূর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ ও মশা-মাছি নিয়ে।
পাড়ার প্রধান সড়কের ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলেও অলিগলির ড্রেনগুলোর চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। ড্রেনগুলো সময়মত পরিষ্কার না করায় ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। এবিষয়ে কাউন্সিলরকে অবগত করলেও কোন সুফল মেলেনি।

নতুন পাড়ার মোঃ সবুজ, মোঃ হাসিবুল, মোঃ রাব্বি, নাহিদ হাসান, আব্দুল কাদের, মোঃ সেলিম, নাসিম জানান, ১ম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও আমাদের নেই কোনো নাগরিক সুযোগ সুবিধা। পাড়ার অলিগলির রাস্তাগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাড়ির ব্যবহৃত ও বৃষ্টির পানিতে জলবদ্ধতা হয়ে থাকে। নোংরা দূর্গন্ধময় পানি মাড়িয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাষ্টবিনের অভাবে সড়কের পাশে দূর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ হয়ে পড়ে থাকে। ভুল করেও এদিকে পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা আসে না।

গত কয়েক বছরের এইসব সড়কের তেমন কোনো সংষ্কার চোখে পড়েনি ওয়ার্ডবাসীর। ফলে চরম দুর্ভোগে এই এলাকার বাসীন্দারা। এছাড়াও ডাষ্টবিন এর অভাবে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ, মশা-মাছির উপদ্রপতো আছেই। তবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা মোটামুটি ভালো।

ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মোঃ সোহেল, মফিজুল ইসলাম, ইউনুনচ আলী জানান, এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। অধিকাংশ বাড়িতে টিউবওয়েলের পানি আর্সেনিকযুক্ত। এলাকার একাংশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো হলেও আরেক অংশে রয়েছে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা। দৈনন্দিন ব্যবহৃত ও সামান্য বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পাড়ায় কোনো ডাষ্টবিন নির্মাণ না করায় স্থানীয়রা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনায় ফেলে। ফলে মশা-মাছির উপদ্রপ বাড়ছে। খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলার কারণে দূর্গন্ধময় পরিবেশে কষ্ট করেই বসবাস করতে হচ্ছে। তবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা ভালো।

মেহেরপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর জাহাঙ্গীর বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় নানান সমস্যা রয়েছে। জনগণের স্বার্থে ও ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য যেসব কাজ করার কথা ছিল বা ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম তা আমি সম্পূর্ণ করতে পারিনি পৌরসভার আর্থিক সংকট এবং ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য চাহিদামত বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে। এছাড়াও আছে করোনা মহামারীর কারণে জনসেবা ও ওয়ার্ড উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ওয়ার্ডবাসী। এরপর স্বল্প আয়ের মধ্যে দিয়ে জনগণের যতটুকু সেবা দেয়া সম্ভব হয়েছে তা দেয়ার চেষ্টা করেছি।