মেহেরপুর সরকারি কলেজে চাঁদা উত্তোলেনের প্রতিবাদ করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অপমান ও চেয়ার ভাংচুর

মেহেরপুর সরকারি কলেজের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে খারাপ আচরণ ও আসবাবপত্র ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে মেহেরপুর সরকারি কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দুপুর ১২ টার দিকে কলেজের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় একাদশ শ্রেণীর সমাজবিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন। ক্লাস চলাকালীন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইমরান মাহমুদ অনিক, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ আলীর নেতৃত্বে ৫/৬ জন নেতাকর্মী পিকনিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নাম করে রশিদ ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জন প্রতি ২৫০টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু তাদের প্রতিবাদ করে এবং চাঁদার রশিদ জব্দ করে প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে যান। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর সাথে তারা খারাপ আচরণ করে রশিদ বই ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় দুটি চেয়ার ভাংচুর করেন। পরে তারা কলেজের মূল ফটকে তালা মারতে গেলে কলেজের শিক্ষক- কর্মচারীরা সেখানে গেলে তালা না দিয়ে পালিয়ে যায়।

চাঁদা আদায়ের রশিদে লেখা রয়েছে, মেহেরপুর সরকারি কলেজের আয়োজনে পিকনিক ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান। সেখানে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক ইমরান মাহমুদ অনিক, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ আলীর নাম লেখা রয়েছে। তবে ছাত্রলীগের নাম লেখা না থাকলেও পদ ও নাম লেখা রয়েছে। এর মধ্যে কুতুবউদ্দিন আহমেদ বর্তমানের কলেজে ছাত্র না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা হুমকি ধামকি পিকনিকের চাঁদা দিতে বাধ্য করাচ্ছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি কলেজে আসতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি ছিলাম না, ঢাকা থেকে মেহেরপুরে ফিরছি। তারা পিকনিকের বিষয়ে স্যারদের অবহিত করতে গেছিলো। এসময় আব্দুল্লাহ আল আমিন স্যার তাদের কাছে থেকে টাকা কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তবে কিসের টাকা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আগের উত্তোলন করা টাকা। তবে টাকার পরিমান জানাতে পারেননি।

মেহেরপুর সরকারি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, পিকনিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কোন অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। তাই কলেজের নাম ব্যবহার করে চাঁদা উত্তোলন করা যাবে না। ক্লাসে গিয়ে চাঁদা চাওয়ায় আমি রশিদ বই জব্দ করি। তারা কলেজের প্রিন্সিপালের টেবিল থেকে থাবা দিয়ে রশিদ বই ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। গত সোমবারও তারা আরেক শিক্ষককে এ নিয়ে অপমান করেছে। কুতুবউদ্দিন আহমেদ বর্তমানের কলেজের ছাত্র নয়।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তপসিল ঘোষনার কারণে কলেজে কোন অনুষ্ঠান করা বিধি সম্মত নয়। ছাত্র-ছাত্রীদের কাউকে কোন চাঁদা না দেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি।