
মেহেরপুর শহরের সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা ৬০ বস্তা চাল গোপনে গত বুধবার সন্ধ্যায় আলগামন করে সরানোর উদ্দেশ্যে গেট পর্যন্ত যখন নেওয়া হয়, তখন চাল সরানো হচ্ছে এমন গোপন খবরে গোডাউনের বাইরে বেশ কিছু ছাত্র, গোয়েন্দা সংস্থার দুজনসহ কয়েকজন সংবাদকর্মী অবস্থান করছিলেন। অবস্থানকারীরা বিষয়টি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন। এর পরপরই সেই চাল গোডাউনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এসময় গোডাউনে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা দেবদূত রায় ও মোসারফ হোসেন নামের বিএনপির এক নেতা অবস্থান করছিলেন।
বিদেশ থেকে আমদানি করা উন্নতমানের চাল গুদামের হিসেবের খাতায় না থাকলেও গোডাউনের ৫ নম্বর ইউনিটের তিনটি খামারে প্রায় ৭০ মেট্রিক টন আমদানিকৃত চাল মজুত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গোডাউনের অভ্যন্তরীণ সূত্র।
বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এরশাদ আলীর অফিসে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই আমদানিকৃত চাল সরানো শুরু হয়। দুপুরের দিকে দুটি ভ্যানে ৬০ বস্তা চাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মেহেরপুর সরকারি খাদ্যগুদামে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে সরকারি খাদ্য মজুত ব্যবস্থাপনায় চলছে নানা ধরনের অপচেষ্টা ও দুর্ব্যবস্থা। কাগজে-কলমে মজুত শূন্য দেখানো হলেও বাস্তবে গুদামে বিপুল পরিমাণ চাল ও ধান সংরক্ষিত রয়েছে।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, গুদামের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় একটি দালালচক্র দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। কাগজে চাল ও ধান বিতরণ বা গুদামে সংগ্রহের তথ্য দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবদূত রায়ের কাছে ভ্যানে ৬০ বস্তা চাল গেটের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে কেন ফের গোডাউনে রাখা হলো এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল ইসলাম আপাতত চাল বাইরে না নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়ায় তা ফের গোডাউনে নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি বলে দাবি করেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এরশাদ আলীর অফিসে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।