রানের রেকর্ডের পেছনে ছোটা রুটের সঙ্গী হলো না পাওয়ার রেকর্ড

সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিনি, কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাটিতে একটা শতকও নেই। আক্ষেপটা নিশ্চিতভাবেই পোড়াচ্ছে ইংলিশ অধিনায়ক জো রুটকে। একের পর এক অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার জমিনে, কিন্তু শতকের দেখা পাওয়া হয়নি। আক্ষেপটা আরেকটু বেড়েছে আজ সকালে।

সিরিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মেলবোর্নে আজ অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম সকালেও যথারীতি ব্যর্থ দুই ইংলিশ ওপেনার। ফলে আগেভাগেই নামতে হয়েছিল রুটকে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক শুরুর ধসটা সামলেছেন দক্ষ হাতে। তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। কিন্তু এরপরই বিধি বাম। ৫০ করেই স্টার্কের বলে উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এ নিয়ে এক এক করে নয়বার অর্ধশতক ছোঁয়া হয়ে গেল রুটের। কিন্তু শতক এল না এখনো! অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সফরকারী আর কোনো ব্যাটসম্যান শতক না হাঁকিয়ে এত বেশি অর্ধশতক কখনো করেননি। এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ডটা ধাওয়া করছিলেন রুট, চেষ্টা করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম শতক পাওয়ার। তাই বলে এই রেকর্ড চাননি হয়তো রুট!

রুটের অপ্রত্যাশিত রেকর্ড অর্জনের সকালে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে প্রত্যাশিতভাবে। কোভিড-১৯ পজিটিভ এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় সাবধানতা হিসেবেই অ্যাশেজে দ্বিতীয় টেস্টে ছিলেন না অস্ট্রেলিয়ার নতুন নিয়মিত অধিনায়ক। তৃতীয় টেস্টে ফিরেছেন। ফিরেই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ছেঁটে দিয়েছেন দক্ষ হাতে।

ররি বার্নসের জায়গায় সুযোগ পাওয়া জ্যাক ক্রলির পাশাপাশি হাসিব হামিদ বা ডেভিড মালান-প্রত্যেকেই বশ মেনেছেন কামিন্সের গতির বিষে। হাসিব হামিদ তো ‘ডাক’ মেরেই ফিরেছেন, বাকি দুজনও ১৫ পেরোতে পারেননি।

এরপর ইংল্যান্ড বড় ধাক্কা খেয়েছে স্টার্কের বলে রুটও ফিরে যাওয়ায়। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। ইংল্যান্ডকে ধসের মুখে ফেলে ২৫ রান করে আউট হয়ে যান স্টোকসও, ক্যামেরন গ্রিনের বলে লায়নের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। কিছুক্ষণ আগে লায়নের বলেই আউট হয়েছেন জনি বেয়ারস্টোও। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে চা বিরতি হয়ে গেছে, আর চা খেতে যাওয়ার আগে ৬ উইকেটে ১২৮ রান করতে পেরেছে ইংল্যান্ড।

এই পঞ্জিকাবর্ষে ২৭ টেস্ট ইনিংস খেলেছেন রুট, যার মধ্যে ১৪ ইনিংসেই প্রথম দশ ওভারের মধ্যে মাঠে নামতে হয়েছে তাঁকে। ধরতে হয়েছে ইনিংস মেরামতের কাজ। টেস্টে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার যে রুটকে ছাড়া কতটা নাজুক, এই পরিসংখ্যান সেটাই বলে। তবে শতক না পেলেও আরেকটা রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়কের। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি রান এখন রুটেরই। অর্ধশতক হাঁকানোর পথে আজ ছাড়িয়েছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে। ২০০৮ সালে ১৬৫৬ রান করেছিলেন স্মিথ।

অধিনায়ক হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি রান করা হয়ে গেলেও সব মিলিয়ে এখনো তৃতীয় স্থানে রুট। ১৭৮৮ রান নিয়ে শীর্ষে আছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ ইউসুফ। ১৭১০ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস। ১৬৮০ রান নিয়ে রুট আছেন এর পরেই। অর্থাৎ, হাতে থাকা মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইউসুফকে টপকাতে হলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপটাও ঘোচাতে হবে রুটকে!