
মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পৌর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম গোলাম রসুল।
মঙ্গলবার বাদ আসর হোটেল বাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড মিয়াজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ. খালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহিন, সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, মরহুমের ভাই লিজ্জু, ছেলে হাসান প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে তাঁর মরদেহ মেহেরপুরে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। দীর্ঘদিনের সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের কান্নায় পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার ভোর ৩টার দিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার তাঁর একটি অপারেশন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সোমবার দিবাগত গভীর রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
গোলাম রসুল ছিলেন ব্যবসা সফল একজন উদ্যোক্তা। হোটেল বাজার থেকে তাঁর ব্যবসায়িক জীবনের সূচনা হয় এবং সেই ব্যবসায়িক গদি ঘর থেকেই শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা। কর্মীবান্ধব এই মানুষটি ছিলেন মেহেরপুরের আওয়ামী রাজনীতির এক জনপ্রিয় ও সফল নেতৃত্ব।
রাজনীতির ময়দানে তিনি ছিলেন অকুতোভয় ও সংগঠননির্ভর নেতা। দলের দুঃসময়ে তিনি মিছিলের অগ্রভাগে থেকে দলকে টিকিয়ে রেখেছিলেন দৃঢ়তা ও সাহসিকতার মাধ্যমে। এক পর্যায়ে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা হামলারও শিকার হতে হয়েছিল। মেহেরপুরে আওয়ামী লীগের সোনালী অধ্যায়ে তাঁর নাম প্রেরণার প্রতীক হিসেবে উচ্চারিত হবে।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেহেরপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, মেহেরপুর জেলা হজ সমিতির সভাপতি, মেহেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম দায়িত্বশীল সদস্য এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মেহেরপুর ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।


