মেহেরপুরে কাঁচাবাজারে কয়েকদিন স্বস্তির পর আবারও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। গত এক-দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কিছু সবজি ও নিত্যপণ্যের দামে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কম বেশি দেখা গেছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে গতকাল শুক্রবার মেহেরপুর বড়বাজারের কাঁচাবাজার পরিদর্শন করে দেখা গেছে প্রত্যেকটা সবজি, মাছ, মাংস ও মুরগি বাজারে দাম ওঠানামা লক্ষ্য করা গিয়েছে।
কারন হিসেবে জানা যায়, শারদীয় দুর্গাৎসবের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে কোন ধরনের কাঁচামাল দেশে আসেনি। আমদানি কম হওয়ায় বেড়েছে সবজির দাম।
তবে গত বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পুজো। গতকাল শুক্রবার থেকে আবার নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে মেহেরপুরে কাচামালের দাম৷
মেহেরপুর পাইকারি ও খুচরা বাজারে ঠিক মতো সরবরাহ না থাকায় বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে গতকাল শুক্রবার থেকে আবার কিছু সবজির দাম ওঠানামা দেখা গিয়েছে।
পাইকারি বাজারে আলু ১৭ থেকে নেমে ১৫ টাকা, পেয়াজ ৬৫ থেকে নেমে ৬০ টাকায়, রসুন ১০৫ থেকে নেমে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবো কাঁচামরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী গত সপ্তাহে যেখানে ছিলো ২১০ টাকা এ সাপ্তাহে ২৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
ঢেঁড়স, বেগুন, পটল অপরিবর্তিত থেকে ৪০, ৭০, ৫০ টাকা। শশা, মূলা ৪৫, ৪২ থেকে নেমে ২৫,২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শাক ২০ থেকে বেড়ে কেজিপ্রতি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।পেঁপে ২০ টাকা থেকে নেমে ১৫, ঝিঞা ৪০ টাকা থেকে নেমে ৩৫, ধুন্দল ২৫ থেকে নেমে ১৫ টাকা।
গজর ও টমেটো তে বেড়েছে দাম। গাজরে ২০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছ ১৪০ টাকা, টমেটো তে ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা।
খুচরা বাজারে আলু, পেয়াজ ২০, ৭০ টাকায় অপরিবর্তিত , রসুন ১২০ থেকে নেমে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবো কাঁচামরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী গত সপ্তাহে যখানে ছিলো ২৪০ টাকা এ সাপ্তাহে ৩০০ টাকা।
ঢেঁড়স অপরিবর্তিত থেকে ৫০ টাকা। বেগুনে ২০ টাকা কমে ৮০ টাকা, শশা ও মূলায় ১০ টাকা করে কমে ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
শাকে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।পেঁপে ২৫ টাকা থেকে নেমে ২০ টাকা, ঝিঞা ধন্দলের দাম ৫০,৩০ টাকা স্থিতিশীল।
গজর ও টমেটো তে বেড়েছে দাম। গাজরে ২০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছ ১৬০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত।
মুরগি খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগী ১৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০, সোনালী মুরগীতে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৮০ এবং লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত থেকে ৩১০ টাকা।
মুরগী বিক্রেতা জহির আলী বলেন, গত সপ্তাহের থেকে এসপ্তাহে মুরগীর দাম সামান্য পরিমান বেশি। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মুরগী না আসায় বেশি দামে মরগী কিনতে হচ্ছে এবং বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মাছের বাজারে রুই ২৫০, তেলাপিয়া ১৮০,পাঙাস ১৬০, সিলভার ১৫০, চিংড়ি ১২০০, জিওল ৩০০,পাকাল ৭০০ এবং ইলিশ ৫০০-২৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।
সবজি বিক্রেতা মো: হাফিজুর রহমান জানান, কিছু দিন বাজারে সব কিছুর দাম কম ছিল। আগের সপ্তাহের দিকে দাম একটু বেশি ছিলো এ সপ্তাহে আবার কমতে শুরু করেছ।
সবজি বিক্রেতা ফিরোজ জানান, এ সাপ্তাহে কয়েকটি সবজিতে দাম কমেছে আবার কয়েকটিতে বেরেছে। কাঁচা মরিচে আগের সাপ্তাহে বিক্রি করলাম ২৪০ এ সপ্তাহে বিক্রি করছি ৩০০। শশা শাকে দাম বেড়েছে শুনে ক্রেতারা কিনছেন না।
ক্রেতাদের বক্তব্য, একবার এই সমস্যা আরেকবার ওই সমস্যা দেখিয়ে প্রতি সপ্তাহে সবজি মাছ মাংসের দাম ওঠানামা করছে।
সবজি ক্রেতা সোহেল জানান, কয়দিন আগে কাঁচা মরিচ কিনলাম ২৪০ টাকা এখন কিনতে হচ্ছে ৩০০ টাকায়। সবজির মধ্যে অনেক সবজির দাম কমেছে বেগুন ১০০ টাকা থেকে নেমে ৮০ টাকায় এসেছে।
সবজি ক্রেতা নাহিদুল জানান, সব ধরনের সবজিতেই দাম কমেছে কাঁচা মরিচ আর শাকে বেড়েছে শাক ২০ থেকে ৪০ টাকা হয়েছে আর কাঁচা মরিচ ৩০০ টাকা। রান্না করতে কাঁচা মরিচ তো লাগবেই বেশি দাম হলেও ও কিনতে হচ্ছে। বাকি যেসকল সবজি আছে সেগুলো তুলনা মূলক দাম কম।
মেহেরপুর তহ বাজার সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান হাফি বলেন, আমি নিজেও বাজার পরিদর্শন করে দেখেছি সব ধরনের সবজিতে দাম কমেছে। যেগুলো নিত্য প্রয়োজনীয় সেগুলোর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। দুই একটা সবজি এবং পেয়াজ রসুনে বেড়েছে। বস্তা প্রতি ২০০-৩০০ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে ব্যাবসায়ীদের। তারা বাধ্য হয়ে বেশিতে বিক্রি করছে।
তিনি আরও বলেন, কাঁচা মরিচ এর ব্যাপার টা পুরোটাই আলাদা। আমাদের মেহেরপুর যে পরিমান কাঁচা মরিচ হয় ওতে আমাদের চাহিদা পূরন হয় না। ইন্ডিয়া থেকে আমদানি না হওয়া পর্যন্ত কাঁচা মরিচের দাম স্বাভাবিক হবে না বলে তিনি ধারণা করেন।