সব অফিসে ঘুরেও নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারলেন না বৃদ্ধা!

মুলাদী উপজেলা নির্বাচন অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে ঘুরে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে না পারায় বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের অশীতিপর হাচেন ভানু (৮৩)।

ভোটার তালিকায় মৃত থাকায় তিনি নাগরিকত্ব হারিয়ে বয়স্ক ভাতাসহ সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

হাচেন ভানু মুলাদী উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত জলকাদের ফকিরের স্ত্রী।

জীবনের শেষ সময় এসে সরকারি ভাতা বঞ্চিত হয়ে খুবই কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন তিনি।

হাচেন ভানু বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রেখে স্বামী মারা গেছেন। কৃষক ছেলে অভাব অনটনে থাকায় তেমন খোঁজ নিতে পারে না।

২০০৫ সালের ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বররা বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিলে ওই টাকা দিয়ে সংসার চলছিল তার। কয়েক মাস আগে উপজেলা সমাজসেবা অফিস তার কাছ থেকে ভাতা প্রদানের বই জমা নেয় এবং জানায় নির্বাচন ওয়েবসাইটে তার কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তাই তার বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমাজসেবা অফিস তাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে দেখতে বলেন।

দুই মাস আগে তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। পরে তিনি ভাতাপ্রাপ্তির আশায় নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নসহ মার্চ মাসের প্রথম দিকে নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন।

কিন্তু আবেদনের এক মাস অতিবাহিত হলেও নির্বাচন অফিস কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারছেন না।

ফলে তার বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্তির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হাচেন ভানু জানান, আমি মারা যাইনি। নিজে উপজেলা সমাজসেবা অফিস এবং নির্বাচন অফিসে গিয়েছি।

‘এর পরও জীবিত প্রমাণ করতে আমাকে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন নিয়ে আবেদন করতে হয়েছে এবং অফিসে অফিসে ঘুরতে হয়েছে। তবুও আমার জীবিত থাকার প্রমাণ হচ্ছে না।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার শওকত আলী জানান, ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তথ্য সংগ্রহকারী জীবিত হাচেন ভানুকে হয়তো মৃত উল্লেখ করেছেন। এ কারণে হালনাগাদ তালিকায় হাচেন ভানুকে মৃত উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত। তিনি আবেদন করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।