সহগলপুরে নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে সড়ক

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সহগলপুর দক্ষিণপাড়ায় সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের ইট ও বালি ব্যবহার করে তৈরী করা হচ্ছে রাস্তাটি। এছাড়াও নিম্মমানের ইট ব্যবহারের ফলে সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মেহেরপুর এলজিইডি সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার সহগলপুর দক্ষিণপাড়ায় বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার অবকাঠামো ( জিকেআরআইডিপি) প্রকল্পের রাস্তা প্রাক্কলিত ব্যয় ষাট লক্ষ আঠারো হাজার পাঁচশত তিতাল্লিশ টাকা। সাতান্ন লক্ষ সতের হাজার ছয়শত পনের টাকা চুক্তি মূল্যে সড়ক নির্মাণের কাজটি পায় নজরুল কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নজরুল কন্সস্ট্রাকশনের কাছে কাজটি কিনে নেয় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের ছোট ছেলে তুর্য বিশ্বাস

সরেজমিনে গিয়ে সহগলপুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আসেন আমরা এক ধরনের বালি দেখাচ্ছি, এই গুলো আমাদের মসজিদের বালি । আর এগুলা রাস্তার বালি এখন আপনারা বলেন কোনটা বালি আর কোনটা মাটি বালি। এই ইট গুলো দেখেন এইগুলা কোন ইট হলো। এগুলোর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ভালো ইট আছে।

বালির মানও ভালো না। দেখছেন না বালি গুলা কেমন, বালিতে কিছুই নাই। আমাদের মনে এই ইটগুলো তিন নম্বর ইটের মধ্েযও মধ্যে পড়ে না। তিন নম্বর ইট তো ইটের মধ্যে পড়ে তবে এটা তাও পড়ে না। হাওয়া ভাটার ৩ নম্বর ইট এর থেকে ভালো। তিন নম্বর ইট ভালো কিন্তু সেটাও নাই। একদম রাবিশ। ইট কেমন এই কথা বলে আমাদের লাভ আছে। যা পারবি তাই করুক। আমাদের বাড়ির পাশে কাজ হচ্ছে কিন্তু বলার কিছুই নাই গরিবের আবার বলাবলি। কিছু বলার নাই, কিছু করার নাই, মানুষতো বিপদের মধ্যে পড়ে গেছে ভাই। এইতো বিপদের মধ্যে উন্নয়ন হচ্ছে দেখছি।

স্থানীয় বাসিন্দা ছালাম (ছদ্মনাম) বলেন, এবিষয়ে বলবে কে? বলার কোন লোক নাই। মেম্বার গ্রামবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। এদিকে বন্ধ করলে ও দিকে করে, আর ওদিকে বন্ধ করলে এদিকে করে। কিছু বলতে গেলে লোকজন কে চাঁদাবাজি মামলার ভয় দেখায় ঠিকাদার। এক নম্বর ইট এর দাম ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা আর এগুলা ১০ হাজার টাকা। গাড়ি প্রতি গাড়িতে প্রায় ৭ হাজার টাকা লাভ করে। যদি তারা মনে থেকে কাজ ভালো না করে তাহলে মানুষের বলে কোন লাভ নেই। জনগনের একটা কাজ করবে সেই কাজ যদি ভালোভাবে না করে তাহলে সে ভালো হবে কি করে।

প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা রহমান (ছদ্মনাম) নামের একজন বলেন, রাস্তা যেমন তেমনি করছে। সবই তিন নম্বর ইট। দেখার লোক নাই। একদিনও সরকার থেকে কোন লোক এসে দেখলো না, তদন্ত করল না।

এলাকাবাসী হিসেবে নিষেধ করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পাড়ায় কোন লোকের কোন সমস্যা নেই। যেমন করে পারে করে দিয়ে যাক। এখন করে নষ্ট হয়ে গেলে আবার বাজেট হবে। যে বাধা দেবে সে মরবে নাকি। ঠিকাদারের লোকজন আসবে এসে সরকারি লোকজনকে হ্যালো করবে দেখা করে সাথে সাথে মিটিয়ে নিবে।

সাধারণ লোকজন বাধা দিয়ে কি করবে। কাজ মন্ত্রীর ভাগ্নে করছে এখানে কারোর কোন কথা বলার আছে। আমরাতো ইট দেখছি, কিনছি ঘর বানাচ্ছি, আমরা তো ১ নম্বর আর নম্বর ৩ ইট চিনি। চিনে তো লাভ নাই। বলবে ওরা বাধা দিয়েছে ওদের ধরে নিয়ে আয়। ওই ঝামেলা কে নেবে। যা করছে করে দিয়ে যাক। রাস্তা ভাঙলে সরকার আবার করে দেবে। এই জিনিসটা প্রতিবাদ করার ও দেখার জন্য সরকারের লোকজন আছে।

তবে ঠিকাদার তুর্য বিশ্বাস মেহেরপুর প্রতিদিনের কাছে নিম্মমানের ইট ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, সব এক নম্বর ইট দিয়ে রাস্তা করা হচ্ছে।

মেহেরপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফেঅন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানান, নিম্মমানের ইট ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। যেহেতু ইট নিয়ে কথা উঠেছে বিষয়টি আমরা দেখবো।