সাংবাদিক, প্রশিক্ষণ ও বাস্তবতা!

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের মধ্যে গ্রুপিং, মতবিরোধ আছে, থাকতেই পারে। সেই মতবিরোধ সাংবাদিকতার সকল ক্ষেত্রেই কাজে লাগানোটাও অপসাংবাদিকতার একটি রুপ।

মতের বিরুদ্ধে গেলেই যে সহকর্মীর বিরুদ্ধে যেতে হবে এটা হয়তো কাম্য নয়। তবে সাংবাদিকদের মধ্যে এটি অনেক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাংবাদিকতার সংবাদকে কেন্দ্র করেও সহকর্মী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যেতেও আজকাল খুব বেশি কার্পণ্য দেখাচ্ছেন না।

এছাড়াও সাংবাদিকতার মধ্যে যখন অতিবেশি রাজনীতিকরণ ঢুকে পড়ে তখন আর সাংবাদিকতা থাকেনা সেটি দলবাজি হয়ে যায়। ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা সবসময়ই সাংবাদিকদের পক্ষে নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ খোঁজেন। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা সফল হচ্ছেন তাদের কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণে। যখন যে সাংবাদিককে যেভাবে চাচ্ছেন, সেভাবে ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করে ফেলছেন। একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার এবং অপমানজনক।

ঠিক তেমনি সেই ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে নিজেদের সুরক্ষা করতেও ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন আমার সহকর্মীরা। কেউ বা পদের সুরক্ষা নিয়ে আবার কেউ বা অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিয়ে। যাহোক এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার জন্য অন্য কাউকে লাগবে না।

মতবিরোধের সূত্র ধরেই তিন দিন ব্যাপী মেহেরপুরে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী রিপোটিং প্রশিক্ষণে স্থান পাননি দেশের প্রথম সারি ও মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকরা।

যুগান্তর, কালের কণ্ঠ, বাসস, ইত্তেফাক, বাংলাদেশ প্রতিদিন, প্রতিদিনের সংবাদ, মানবজমিন, ভোরের কাগজ, ডেইলি স্টার, আমাদের অর্থনীতি, বণিক বার্তা, বিজয় টিভি, বাংলা টিভি, মোহনা টিভি, সময়ের আলো, জবাবদিহিরমত গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকদের নেওয়া হয়নি প্রশিক্ষণে। মেহেরপুরবাসী ও মেহেরপুরের সাংবাদিকদের লজ্জার ইতিহাস থেকে রক্ষার দায়িত্ব নেওয়া মেহেরপুরের একমাত্র দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিনকেও প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোন ধরণের আমন্ত্রণ বা অবগত করানো হয়নি।

তবে প্রশিক্ষণ আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রেস ইনষ্টিউট (পিআইবি) যথাযথ গুরত্ব না দিয়ে কথিত একটি তালিকা ধরেই প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। কথিত বলার পেছনে কারণ হলো প্রেসক্লাবের পিয়ন পদে চাকরি করা ব্যক্তিটি, সাংবাদিক থেকে ইস্তফা দেওয়া সাংবাদিক, পত্রিকা বা টেলিভিশন কিছুই নেই এমন জনকেও এই প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রশিক্ষণের এই যায়গা টিকে কি প্রশ্নের বাইরে রাখা যেত না ? “যাদের চোখে, সমাজ দেখে,” তাদের অন্তত এ ধরণের কাজগুলো করার আগে দুটি বার ভেবে দেখার জন্য বিনয়ী আহবান জানাচ্ছি।