সাইফের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে বাবা মা।

ছবি বুকে নিয়ে ছেলে সাইফের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে হতভাগ্য পিতা জামাত আলী। বিচার না পেয়ে মা বাবার বিলাপ থামছেই না। নানা দেনদরবার করার পরও ছেলে হত্যার বিচার না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনা করেছেন মেহেরপুরের গাংনীর পূর্ব মালসাদহ গ্রামের অসহায় পরিবারটি।

সাইফের পিতা জামাত আলী জানান,পূর্বমালশাদহ গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ও আব্দুল আজিজের ছেলে সাহেদ আলী প্রায় ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ২০১৭ সালে ১৪ আগষ্ট সাইফকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায়। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কনসালটেশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লি: (সি জি ডাবলু) কর্মরত অবস্থায় ২০১৮ সালের ৯ নভেম্বর কোম্পানীর একটি ৭তলা রুমে থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সাইফের লাশ উদ্ধার করে।

সাইফ আত্মহত্যা করেছে বলে আমাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খবর দেয় আশরাফুল ইসলাম সাহেদ আলী। ১৭ নভেম্বর সাইফের লাশ দেশে আসলে ঐদিনই দাফন করা হয়। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলী দুজন সাইফের পরিবারকে জানান,মৃত্যু’র ঘটনায় কোম্পানী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে যার নং জি/২০১৮১১০৯/০১৩।

সাইফের বোন পারভীনা খাতুন জানান,বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যেদিন সাইফের লাশ উদ্ধার করা হয় তার আগে রফিকুল ইসলাম ও সাহেদ আলী সাইফের সাথে দেখা করে কোম্পানীর প্রধান কার্যালয়ের ৭ম তলায়। এরপর সাইফের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সিঙ্গাপুর পুলিশ। সাইফ আত্মহত্যা করেনি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ হত্যাকান্ডোর সাথে আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলীর জড়িত থাকতে পারে সন্দেহ প্রকাশ করে সাইফের পরিবার। হত্যাকান্ডে জড়িতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলীর ডিএনএ টেস্ট করা ও লাশের সুরতহালের রির্পোট দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

সাইফের মা জানায়,আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলীর চক্রান্তের কারনে সিঙ্গাপুরের কোম্পানী ও পুলিশ আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনী। কোম্পানী থেকে দেয়া আর্থিক বিষয়টাও আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলী হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সাইফের বোন পারভীনা খাতুন আরো জানান,তার ভাই হত্যাকান্ডোর বিচার পেতে বিভিন্ন লোকজনের কাছে গিয়েছি কোন কাজ হয়নী।

শেষ পর্যন্ত মেহেরপুর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক গাংনী উত্তর পাড়ার বাসিন্দা আনিছুজ্জামান লুইসের কাছে গেলে সে প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ে আবেদন করার আশ্বাস দিয়ে ৯ হাজার টাকা নিয়েছেন। ঢাকায় যাতায়াত করার জন্য ৯ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে বলে স্বীকার করে আনিছুজ্জামান লুইস বলেন,আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। সব টাকা খরচ হয়নী কিছু টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।

শেষ পর্যন্ত ভাই হত্যার বিচার পেতে তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনা করেন তিনি। এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরে থাকায় আশরাফুল ইসলাম ও সাহেদ আলীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নী। তবে তাদের মোবাইল নম্বর নেওয়ার জন্য পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন।