বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো সাইবার নিরাপত্তা। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে যখন দেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে, তখন প্রযুক্তির অপব্যবহারও ভয়াবহ হারে বাড়ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তরুণ সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট আছিম হোসেন লিয়ন ।
২০১৮ সালের শেষের দিকে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ শুরু করেন আছিম। বর্তমানে তিনি গঠন করেছেন একটি বিশেষায়িত সাইবার টিম যার নাম Bangladesh Cyber Defense ও CyberSentinel – IT।
তার এই টিম দেশের বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে নিজ জেলা মেহেরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আছিমের স্বপ্ন শুধু নিজেকে নিয়ে নয়-তিনি চান, সারা বাংলাদেশের মানুষ যেন সাইবার নিরাপত্তার আওতায় আসতে পারে। তিনি মনে করেন, “প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা না থাকলে ডিজিটাল অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়বে।”
তাই তিনি ও তার টিম দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গিয়ে সাইবার নিরাপত্তা ও সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার নিয়ে ফ্রি সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়, বরং তারা যেন সচেতনভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারে। এজন্য আমরা বিনামূল্যে সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি মাসে হাজার হাজার মানুষ ফেসবুক হ্যাকিং, ফিশিং, ইম্পার্সনেশন, এবং ব্ল্যাকমেইলের মতো সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব থেকে বাঁচতে হলে সাধারণ মানুষকে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত জ্ঞান দিতে হবে। আছিম- এ বিষয়ে বলেন, “অনেকেই জানেন না, কীভাবে একটি ম্যালওয়্যার, একটি লিংক, বা একটি হ্যাকিং অ্যাপস আপনার জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। আমরা এই অজ্ঞানতাকেই দূর করতে চাই।”
দেশের জন্য কিছু করার তীব্র ইচ্ছাশক্তি ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে “আছিম হোসেন লিয়ন” আজ দেশের তরুণ সমাজের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। তার নিরলস পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং দেশপ্রেম ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখবে-এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সকলের।