
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) ও সাংবাদিক মনির হায়দার বলেন, সাফল্য এবং ব্যর্থতা এ দু’টিই জীবনের লক্ষ্য অর্জনের মাপকাঠি নয়। অবশ্যই সফল হতে হবে তোমরা পড়তে এসেছ, বড় কিছু হবে, সরকারি চাকরি করবে, বড় জায়গায় যাবে, বড় ব্যবসায়ী হবে কিংবা বড় নেতা হবে এই লক্ষ্য তো থাকতেই হবে। কিন্তু এটাই জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়।
জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য তাহলে কী? জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সার্থকতা। সাফল্যের পাশাপাশি জীবনটাকে সার্থক হতে হবে, জন্মকে সার্থক করতে হবে। আর সার্থকতার অর্থ কবি কামিনী রায়ের দুই লাইনে “সকলের তরে সকলে মোরা, প্রত্যেকে মোরে পরের তরে।” তোমার জীবন যদি শুধু তোমার জন্যই হয়, তবে সে জীবন সার্থক নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রঙিন সাজ, আনন্দ উল্লাস আর মধুর আবহে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী মেহেরপুর সরকারি কলেজের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির নবীনবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্য এসকল কথা বলেন তিনি।
নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মনির হায়দার বলেন, নতুন পথচলা শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠারও পথ দেখায় কলেজ জীবন। স্বপ্ন বড় হবে, পথ চলা হোক আলোকিত। আমরা সকলেই সফল হতে চাই, তোমরাও সফল হওয়ার জন্যই এই লেখাপড়ার পথ বেছে নিয়েছ এবং এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে এসেছ। তোমরা তো জীবন মাত্র শুরু করেছ লেখাপড়া করবে, পেশাগত জীবনে ঢুকবে, অনেক কষ্ট করে অনেক কিছু অর্জন করবে, সফল হবে তারপর একদিন জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাবে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম নজরুল কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম, মেহেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক খেজমত আলী মালিথ্যা।
অতিথিরা নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধে বড় হয়ে ওঠার আহ্বান জানান। এছাড়া কো-কারিকোলাম অ্যাক্টিভিটিস, সামাজিক কার্যক্রমসহ মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে কলেজকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার পাশাপাশি একটি মানবিক সমাজ গঠন করার আহ্বান জানান।
নবীনদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র বিধান শেখ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র উলফাতুন নেছা পূর্ণিমা।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্ত ছিল ফুল ছিটিয়ে নবীনদের বরণ করে নেওয়া। প্রবীণ শিক্ষার্থীরা হাতে রঙিন পাপড়ি ছিটিয়ে নবীনদের স্বাগত জানালে ক্যাম্পাসজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর এক আবহ।
পরে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নৃত্য, কবিতা আর নাট্য পরিবেশনায় মাতিয়ে রাখেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।