সরকারের স্বায়ত্তশাসিত একটি সংস্থার মহাপরিচালক শওকত হায়দার(ছদ্মনাম)। অন্যদিনের মতো আজও তিনি ভোরে উঠে ফ্রেশ হয়ে মর্নিং ওয়াক-গোসল ও সকালের নাস্তা সেরে পরিচ্ছন্ন পোশাকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই দক্ষ মানুষ হিসেবে যেমন তাঁর পরিচিতি, অনুরূপভাবে পোশাক-পরিচ্ছদেও টিপটপ ব্যক্তি হিসেবে তার নামডাক বেশ। সকাল নয়টার আগেই রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় অফিসের সামনে পৌঁছায় তাকে বহনকারী জিপ গাড়িটি। তবে বিপত্তি ঘটেছে এখানেই, গতকাল সন্ধ্যায় যে অল্প একটু বৃষ্টি হয়েছে, সেই পানি রাস্তা ও অফিস চত্বরে এখনও পর্যন্ত জমে রয়েছে।
অফিসে ঢুকতে হলে ড্রেন ও সুয়ারেজের ময়লায় একাকার এই কালো পানিতে পা ভেজানো ছাড়া অন্য উপায় নেই। ইচ্ছে না থাকলেও অফিস জুতো খুলে স্যান্ডেল পরে সে পথেই হাঁটতে হলো তাকে। পানি আর ময়লার পঁচা দুর্গন্ধে গা ঘিনঘিন করা অবস্থা হলো তখন। একটু পরে অবশ্য সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে পানি অপসারণের ড্রেনের মুখ থেকে জমে থাকা কিছু পলিথিন সরিয়ে দিতেই সমস্ত পানি নিমিষেই নেমে গেল। জলাবদ্ধতার কারণটি ছোট্ট হলেও অফিসের সবার ভোগান্তি ছিল অনেক বড়ো।
ফেলে দেওয়া পলিথিন বা প্লাস্টিকগুলো নাগরিক জীবনে এরকম ছোটো-বড়ো বিপত্তির কারণ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়তই। একসময়ে বিজ্ঞানের উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার পলিথিন বা প্লাস্টিক এখন পরিবেশ দূষণের উৎস ও জনজীবনে এক দুঃস্বপ্নের নাম। ব্যবহার শেষে প্লাস্টিক বর্জ্যের বড়ো একটি অংশ জমা হয় ভাগাড়ে, যেগুলো পচতে সময় লেগে যায় বছরের পর বছর। পরিবেশে প্লাস্টিকের প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং বিধ্বংসী। একবার ব্যবহারযোগ্য পলিব্যাগ থেকে শুরু করে বহুবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিকপণ্য সবই পরিবেশের ক্ষয়ে ভূমিকা রাখে। এসইউপি বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার এখন সর্বব্যাপী, বিশেষ করে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যাগ, স্ট্র এবং বোতলের মতো দ্রব্যাদি। এর অপব্যবহার এবং ব্যবহৃত পলিথিনের ব্যবস্থাপনাগত ঘাটতির ফলে বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্রের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া একটি মোটামুটি পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্যের গন্তব্য হচ্ছে জলাশয়গুলো, যার জের ধরেই ক্রমবর্ধমান সমুদ্র দূষণের সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। সমুদ্র যেন প্লাস্টিক বর্জ্যের এক বিশাল মজুদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এতে করে বিপর্যস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক জীবন। জাতিসংঘের পরিবেশ প্রোগ্রামের (ইউএনইপি) পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আট মিলিয়নেরও বেশি মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য প্রতিবছর সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। যা সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য বিশাল হুমকিতে রূপ নেয়, কেননা তারা প্রায়ই ভুল করে প্লাস্টিককে খাবার ভেবে খেয়ে ফেলে অথবা বিভিন্নভাবে তাদের শরীর প্লাস্টিকের সঙ্গে জড়িয়ে যায়, যা তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্লাস্টিক বর্জ্যে মাটি দূষিত হয় এবং এতে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের কারণে জীবজগৎ ও উদ্ভিদকূল উভয়েই ক্ষতির মুখে পড়ে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে মাটির উর্বরতা ব্যাহত হয়, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে এবং বাস্তুতন্ত্রের সুস্থতা বাধাগ্রস্ত হয়। এ ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে নষ্টের চেষ্টা করলে তা পরিবেশে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ হয়ে মিশে যায়, যার ফলে বায়ু দূষণ ঘটে এবং পরবর্তীতে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগব্যাধির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। প্লাস্টিক দূষণের সবচেয়ে ভয়ের দিকটি হচ্ছে এর দীর্ঘস্থায়িত্ব। এর পচনে বহু বহু বছর লেগে যায় এবং বহু বছর পরও এটি ভেঙে গিয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক নামের ক্ষুদ্রাংশে পরিণত হয়। মাইক্রোপ্লাস্টিকের আকার পাঁচ মিলিমিটারের চেয়েও কম এবং সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে যে বাতাসে আমরা শ্বাস নিই-তার সবখানেই এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এই ছোটো ছোটো কণাগুলো খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্ম দেয়।
প্লাস্টিকের জীবনচক্রের প্রথম ধাপ শুরু জীবাশ্ম জ্বালানি, অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস নিষ্কাশনের মধ্য দিয়ে। এই অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোকে প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল, যেমন-ইথিলিন ও প্রোপিলিন পেতে ব্যবহার করা হয়। এই নিষ্কাশন প্রক্রিয়ার ফলে বায়ু ও পানি দূষণ হয় এবং এর ফলে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাসের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড়োসড়ো ঘটনা ঘটে। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল বা আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, প্রায় ৯৯ শতাংশ প্লাস্টিকই আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। শুধু ২০২০ সালেই বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক শিল্প থেকে ১.৮ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সমপরিমাণ গ্যাস বের হয়েছে, যা কি না ৩৮০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্বন দূষণের সমান।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার সীমিত করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শুরুতে ছিলো শপিংমলগুলোতে পলিব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ। এ ব্যাপারে আইনের প্রয়োগসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যা এখনও চলমান আছে। এর পাশাপাশি ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে গত ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বর্জন।এর আওতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ফাইল-ফোল্ডারের পরিবর্তে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য সামগ্রীর তৈরি ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে কটন বা জুট ফেব্রিকের ব্যাগ ব্যবহার করা, প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে কাঁচের বোতল ও কাঁচের গ্লাস ব্যবহার, প্লাস্টিকের ব্যানারের পরিবর্তে কটন ফেব্রিক, জুট ফেব্রিক বা বায়োডিগ্রেডেবল উপাদানে তৈরি ব্যানার ব্যবহার, দাওয়াতপত্র, ভিজিটিং কার্ড ও বিভিন্ন ধরনের প্রচারপত্রে প্লাস্টিকের লেমিনেটিং পরিহার করার পরামর্শও রয়েছে। উপরন্তু বিভিন্ন সভা-সেমিনারে সরবরাহকৃত খাবারের প্যাকেট যেন কাগজের তৈরি হয় বা পরিবেশ বান্ধব হয় সেটি নিশ্চিত করা। একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, কাপ, স্ট্র, কাটলারিসহ সকল ধরনের পণ্য পরিহার, প্লাস্টিকের কলমের পরিবর্তে পেনসিল বা কাগজের কলম ব্যবহার, বার্ষিক প্রতিবেদনসহ সকল ধরনের প্রকাশনায় লেমিনেটেড মোড়ক ও প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিহার এবং ফুলের তোড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত আছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সভায় সব মন্ত্রণালয়কে প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার সীমিত করা-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, দর্শনার্থীদের কেউ যাতে এসইউপি নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য প্রবেশপথে তল্লাশি করা এবং দর্শনার্থীদের কাছে প্লাস্টিকের ব্যাগ পাওয়া গেলে এর পরিবর্তে তাদের কাগজের বা কাপড়ের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সচিবালয়ের প্রবেশপথসহ বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক বোর্ড বসানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্লাস্টিকের থলের পরিবর্তে পাটজাত, কাপড় বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য থলে ব্যবহার করতে হবে। সরকারি কেনাকাটায়ও প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসইউপি ব্যবহার বন্ধে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে ব্যবহারের জন্য বিকল্প সামগ্রী সরবরাহ করা এবং সভা-সেমিনারে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন নিয়োগ ও মনিটরিং কমিটি গঠন করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করা এসব প্লাস্টিকপণ্য বন্ধে অনুসরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করতে সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ধারণা করা যায়।
একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বর্জনের উদ্যোগে সবার আগে এগিয়ে এসেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও তার অন্যতম প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিদফতর। তথ্য অধিদফতরের অবস্থান সচিবালয়ের ভেতরেই। বাংলাদেশ সচিবালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) মুক্ত ঘোষণা করার ধারাবাহিকতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদফতর (পিআইডি)-কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।এর আওতায় পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণকল্পে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক-এর ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রীর পরিবর্তে নিম্নোক্ত প্রস্তাবিত বিকল্প পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করে। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে ২০০২ সালে আইন করা হলেও গত ২২ বছরে তার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার সেই কাজে হাত দিয়েছে। এতদিন পরে এসে যখন বলা হয় পলিব্যাগের বিকল্প এখনো বাজারে নেই, তা কোনোভাবেই শতভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃত কথা হলো, ২২ বছরেও আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় প্লাস্টিকের বিকল্পও গড়ে ওঠেনি। স্বভাবতই আমরা প্লাস্টিকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছি। আইনের যথাযথ প্রয়োগহলে বাস্তবতার নিরিখেই প্লাস্টিকের বিকল্প গড়ে উঠবে। তখন সবাই প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য ব্যবহার করার সুযোগ পাবে ও সেক্ষেত্রে নৈতিক বাধ্যবাধকতা পালনও সহজ হবে। একটু ভেবে দেখা দরকার, আজ আমরা যেসব প্লাস্টিকগুলো বর্জ্য হিসেবে প্রকৃতিতে ফেলে দিচ্ছি, তার কোনো কোনোটি হয়তো আগামী ৪০০ বছরেও ধ্বংস হবে না।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি (ইউএনইপি) তাদের বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার বিষয়ক ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা নদী দিয়ে প্রতিদিন ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে মিশছে। এর ফলে সমুদ্রের তলদেশে যে হারে পলিথিন-প্লাস্টিকের স্তর বাড়ছে, তাতে আগামী ৫০ বছর পর সমুদ্রে মাছের চেয়ে পলিথিনের পরিমাণই হয়তো বেশি হবে। বাংলাদেশে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কী পরিমাণ বেড়েছে তার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এবং বিশ্বব্যাংক। তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০৫ সালে দেশের শহরাঞ্চলে বছরে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল মাত্র তিন কেজি, যেটি ২০২০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে নয় কেজিতে উন্নীত হয়েছে।
বর্তমানে শুধু রাজধানীতেই একজন মানুষের বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার ছাড়িয়েছে ২৪ কেজি। পুরো বাংলাদেশের হিসেব বিবেচনায় নিলে প্রতিবছর প্রায় এক কোটি টন পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। যদি ও এ সব প্লাস্টিক-পলিথিনের মাত্র ৩৭শতাংশ রিসাইক্লিং করা সম্ভব হচ্ছে। পলিথিন এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম। বৈশ্বিক প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণের প্রায় আড়াই শতাংশ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশেই। এ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সচিবালয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্রকে প্লাস্টিক-পলিথিন মুক্ত করার যে শুভ উদ্যোগের শুরু হয়েছে, তার গুরুত্ব অশেষ। উদ্যোগটির বাস্তবায়ন সফল হলে পুরো দেশকে পলিথিন মুক্ত করার পথে আমরা আর ও একধাপ এগিয়ে যাব। বাংলাদেশ মুক্ত হবে এক পরিবেশগত মহা-হুমকি থেকে। তাই, উদ্যোগটির সফলতার প্রত্যাশা এখন সবার।
লেখক: সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, ঢাকা