সেই আলোচিত-সমালোচিত প্রধান শিক্ষক কালাম সাময়িক বরখাস্ত

মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে এবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৪অক্টোবর) সকালে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিদ্যালয়ে এক জরুরী সভা শেষে অন্যান্য সদস্যদের সর্ব সম্মতিক্রমে সভাপতি তাকে বরখাস্ত করেন।

বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের একজন সহকারী নারী শিক্ষকের সাথে অনৈতিক অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষকদের টিউশন ফিস আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষকদের সাথে দূর্ব্যবহার, জাল সার্টিফিকেট বিক্রি, আদালতের মামলায় দুদকের তদন্ত, বারাদী বাজার কমিটির সভাপতি আলাউদ্দীন হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ নানা অভিযোগ আনা হয় প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।

আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিস্তর অভিযোগে মেহেরপুর প্রতিদিনসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও একজন সহকারী শিক্ষিকার ভিডিও ফেইসবুকগুলোতে ভেসে বেড়াচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে গভীর রাতে প্রধান শিক্ষক আবুল কালা আজাদ ও ওই সহকারী শিক্ষিকা একটি বাড়ি থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলযোগে পালানোর চেষ্টা করছেন। কিছু যুবক তাদের আটকিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষিকা যুবকদের পা ধরে বিষয়টি না জানানোর অনুরোধ করছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নানাভাবে তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।

একজন ছাত্রের মোবাইল ফোন নিয়ে ফেরত না দেওয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তার অফিস রুমে তালা লাগিয়ে দিনভর বিক্ষোভ করে।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের দাবীর সাথে সহমত প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহি সদস্য ও গ্রাম আওয়ামীলীগের সভাপতি নিয়ামুল হক, স্বেচ্ছাসেবকলীগের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি আকরামুল হক, বারাদী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের সাথে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকার সাথে যৌণ কেলেংকারীর ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেই। এসময় তারা এসএসসি পরীক্ষার ফ্রম ফ্লাবের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ভর্তি ফিসসহ নানা অজুহাতে অর্থগ্রহণের অভিযোগ করেন।

এছাড়া অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ২০২১-২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ সরকারীভাবে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও অদ্যবধি সে টাকা ফেরত দেননি। শিক্ষার্থীরা বারবার তার কাছে আসলেও সে টাকা ফেরত দেইনি।

সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক সৈরাচারী কায়দায় সব ধরণের কাজ করে থাকেন। আমাদের কোনো কিছুই জানান না তিনি। অতিরিক্ত টাকা পয়সা উত্তোলনসহ নানা অভিযোগ তোলেন তার বিরুদ্ধে।

এদিকে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করাই এলাকায় শিক্ষার্থীরা মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।