হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৩ নেতাকে অবৈধ বহিষ্কারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

গত শনিবার ২৩ শে জানুয়ারি বহিষ্কার করা হয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম শরিফ ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুর রহমান রিন্টকেু।

বহিষ্কারের কারণ হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আছাদ জানান, ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর ফারুক হোসেনকে মনোনীত করা হয়েছে।

কিন্তু ওই ৩ আওয়ামী লীগ নেতা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণাসহ মানববন্ধন, উস্কানীমূলক বক্তব্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে নেতাকর্মীদের নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করতে উৎসাহিত করে আসছে।

এ ঘটনায় মেয়র প্রার্থী ফারুক হোসেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে অভিযোগ করে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কেন্দ্রের নির্দেশে ওই ৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এই বহিষ্কার আদেশ অবৈধ সম্পূর্ণ অন্যায় এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী দাবী করে গতকাল রবিবার শিতলী গ্রামে মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দারের বাড়ীতে ১২টার দিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবী করে সদ্য বহিষ্কার কৃত আওয়ামী লীগ নেতা।

এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলো হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৪৭ ধারার ১০ উপ-ধারায় উল্লেখ আছে কাউকে বহিষ্কার করতে হলে জেলা কমিটির সাধারণ সভায় ২/৩ সদস্যের মতামাতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুপারিশ পাঠাতে হবে। তারপর কেন্দ্রীয় কমিটি তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে তখন চুড়ান্ত বহিষ্কার করবে। তার আগে এই আদেশ কোন গণ মাধ্যমে দেওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন যে, আমি গত ২৩ তারিখ রোজ শনিবার বেলা ৩ টায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব আব্দুল হাই এমপির সাথে নৌকা প্রতীকের ভোট প্রচারণা করছিলাম। প্রচারণা শেষে ঝিনাইদহ ফেরার পথে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ আমাকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম শরিফ ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুর রহমান রিন্টু কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর হরিণাকুণ্ডু পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৮ সে ডিসেম্বর বেলা ১ টার দিকে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে আমিসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিল। উক্ত মানববন্ধনে আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই বিষয়টি পুনঃ বিবেচনার অনুরোধ জানাই।

কিন্তু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় আমারা বর্তমান মেয়র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করি এবং ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশ মোতাবেক গত ৭/০১/২০২১ তারিখে হরিণকুণ্ডু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, তাহজীব আলম সিদ্দিকি এম পি, খালেদা খানম এমপি এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস।

উক্ত সভায় আমি সভাপতিত্ব করি এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব রবিউল ইসলাম পরিচালনা করেন। ১১/০১/২০২১ তারিখ থেকে পৌর নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়, প্রচারণা শুরু হবার পর থেকেই প্রতিনিয়ন পৌর সভার সকল ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলাম এই সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চক্রান্ত করে অন্যায় ভাবে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করে। সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট সুবিচার প্রার্থনা করছি।