হাসপাতালে বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে নুপুর

হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রনায় দিন পার করছে নুপুর। মাটি বোঝাই ট্রাকটরের নিচে পড়ে থেতলে গেছে তার শরীরের ডান পাশ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফেরত এসে মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকে কাতরাচ্ছে। সেই সাথে আহত মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হাফিয়ে উঠেছে তার পরিবার।

নুপুর শোলমারী গ্রামের পাঠানপাড়ার নজরুল ইসলামের মেয়ে। সে শোলমারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর মেধাবি ছাত্রী।
মোলমারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব রহমান জানান, গত ২ এপ্রিল সন্ধায় মেহেরপুর সদর উপজেলার রুদ্রনগর গ্রাম থেকে শোলমারী তার নিজ গ্রামে ফেরার পথে মাটি বোঝাই ট্রাকটরের নিচে পড়ে রক্তাক্ত জমখ হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখান থেকে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

কুষ্টিয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরেফার্ড করা হয়। এক সপ্তাহ সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর ডাক্তার তাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলে। অসহায় পরিবার উপায় না পেয়ে মেহেরপুরে ফেরত নিয়ে আসে। বর্তমানে নুপুর মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকের ২য় তলায় ১নং কেবিনে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

নুপুরের পিতা নজরুল ইসলাম জানান, নুপুরকে নিয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ছোটা ছুটি করেছি। ইতি মধ্যে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার প্রতিদিন এক ব্যাগ (এবি পজিটিভ) রক্ত লাগছে যা কিনে দিতে হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার ওষুধ লাগছে। আমি গরিব মানুষ এতো আমার যা ছিল সব শেষ। আমি বুঝতে পারছিনা আমার মেয়েকে আমি কিভাবে বাঁচাবো।

নুপুরের চাচি পারভিনা খাতুন জানান, আজ প্রায় ৮দিন হতে চললো নুপুরের দুর্ঘটনা। পরিবারের সর্বোচ্চ বিলিন করে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। ডা. তাহের বলেছে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হবে পরোপুরি ভালো হতে।

তাহের ক্লিনিকের সেবিকা সোনালী খাতুন জানান, তার ক্ষতস্থানে প্রতিদিন ড্রেসিং করা হচ্ছে। অন্যদিনের তুলনায় এখন ভালো আছে।
ডা. তাহের জানান, রোগীর বর্তমান অবস্থা অনেক ভালো। তার জীবন নিয়ে আর কোন শঙ্কা নেই। আল্লাহর রহমতে সে ধিরে ধিরে সুস্থ হচ্ছে। কিন্তু তার বেশ কয়েকটা অপারেশন করতে হবে। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। পুরোপুরি সেরে উঠতে বেশ সময় লাগবে।

শোলমারী গ্রামের ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম জানান, রুদ্রনগর গ্রামের বুলু নামের এক ট্রাকটর ড্রাইভারের গাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ড্রাইভার বুলু রোগীর খোজ খবর নিচ্ছে। আজকেও আমার কাছে এসেছিল সে বলেছে রোগীর জন্য যতটুকু সম্ভব আমি সাহায্য করবো।