১৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ

কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডের পাঁচ রাস্তা মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম।

গতকাল বুধবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে তার কথা হয় ভাস্কর্য নির্মাণ স্থলে। তিনি বলেন, যদি ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা না ঘটতো তবে অনেক আগেই এর নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হতো।

তিনি আরো বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর মামলার কারণে এবং বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ভাস্কর্যস্থলে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করায় এর মেরামত ও নির্মাণ কাজ বেশ কয়েকদিন থেমে যায়।

ভাস্কর্যটি পাথর দ্বারা নির্মিত হওয়ার কারণে তা অনেকটা শক্ত হয়ে যায়। যে কারণে এটি সংস্কার কাজে বেশ সময় লেগে যায়। তার পরেও ভাস্কর শিল্পী আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য ও এর বেজমেন্টে যে কাজগুলো রয়েছে তা শেষ করার আশাব্যক্ত করেন।

সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায় যে, ভাস্কর শামীমের সহকারী হিসেবে কয়েকজন ভাস্কর কর্মী সকাল থেকে রাত অবধি এর নির্মাণ কাজ করে চলেছেন।

এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদেরী শাকিল বলেন, এ ভাস্কর্য নির্মাণ হলে আগামী প্রজন্ম যেমন বঙ্গবন্ধুকে চিনবে, তেমনি তারা জানতে পারবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশকে। এ ভাস্কর্যটি ভাঙচুরে আমাদের কুষ্টিয়াবাসীর কপালে একটি কালো দাগ একে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা, যার ক্ষত আমাদের অনেকদিন বয়ে বেড়াতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ডান হাত, পুরো মুখমন্ডল ও বাঁ হাতের অংশ বিশেষ ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পরদিন কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলে শহরের বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট চত্বর ও থানা মোড়ে আওয়ামী, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করে। ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর মানুষ।

পরে সিসিটিভির ফুটেজের সাহায্যে ভাঙচুরে জড়িত দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে দুই ছাত্রকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগে একই মাদ্রাসার দুই শিক্ষককেও গ্রেফতার করে।

দুই ছাত্র হলেন, ইবনি মাসউদ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র আবু বক্কর মিঠুন (১৯) এবং সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ(২০)। দুই শিক্ষক হচ্ছেন, আল আমিন(২৭) এবং ইউসুফ আলী(২৬)। এরা সকলেই আদালতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। বর্তমানে সকলেই কারাগারে রয়েছে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার উদ্যোগে শহরের ব্যস্ততম পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে গত বছর নভেম্বর মাসে। একই বেদিতে বঙ্গবন্ধুর তিন ধরণের তিনটি ভাষ্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই বেদিতে জাতীয় চার নেতার ভাষ্কর্যও থাকবে। দরপত্রের মাধ্যমে যশোরের ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম কার্যাদেশ পান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।