দামুড়হুদায় আলম সাধুর ধাক্কায় পাখি ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর (গয়েশপুর) গ্রামে পাখিভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে আলমসাধুর ধাক্কায় জমেশ আলী(৭০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে গোপালপুর প্রাইমারি স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জমেশ আলী দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের মৃত ইয়াছিন মিস্ত্রির ছেলে।

জানা গেছে, বাড়ি থেকে পাখি ভ্যানে সকাল ৮ টার দিকে রামনগর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তিনি, পথের মধ্যে মোল্লাপাড়ায় চায়ের দোকানে চা পান করে আবারও রওনা দেন।

গোপালপুর উত্তর পাড়া প্রাইমারি স্কুলের সামনে পৌঁছালে একটি আলমসাধু গোডাউন থেকে ভুট্টা নিয়ে রাস্তায় উঠছিল,ঠিক তখনই আলমসাধুর সাথে ধাক্কা লাগে ঘটনাস্থলেই পাখিভ্যান উল্টে নিহত হয় জমেশ আলী। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায়, মরদেহ বাদ জুম্মা নিজ গ্রামে দাফন কার্য সম্পাদন করা হয়েছে।

এবিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।




গাংনীতে মদ ও গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৭ বোতল মদ ও এক কেজি গাঁজাসহ ইকরামুল হক নামের এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃত ইকরামুল হক ওই গ্রামের বাগানপাড়ার ইকতার আলী ছেলে।
গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) বিকালের দিকে ডিবির এসআই আশরাফুলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানে এসআই কাহী মহসিন, এএসআই নো: হেলাল উদ্দিন  অংশ নেন।এসময় তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সাত বোতল মদ ও এক কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এঘটনায় গাংনী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।




১০ দফা দাবি আদায়ে মেহেরপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ

বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি আদায়, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথা মামলা ও পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে জেলা বিএনপি।

শুক্রবার বিকালে মেহেরপুর জেলা বি’এন’পির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাবেক এমপি ও মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুনের সভাপতিত্বে ও পৌর বিএনপি সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যড. জয়নাল আবেদিন। বিশেষ বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।  বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, আলমগীর খান ছাতু, যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদস্য জাকির হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মারুফ হাসান বিজনসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, এদেশের জনগন এখন আর আওয়ামীলীগের সাথে নেই। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধীনস্থ আদালত ও পুলিশ এখন আর মানেনা। মেহেরপুর হ সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা করে সরকারের পতন ঘটানো হবে। ২০১৮ সালের মত নির্বাচন এ দেশে আর হবে না, জনগনই প্রতিহত করবে। আর তারেক রহমান রাজার বেশে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন বলেন,’জনগনের সংগ্রাম শুরু হয়েছে আজকের এই ১৯ তারিখে। লড়ায়ের মধ্য দিয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।’




গাংনীতে চিরকুট লিখে বন্ধুর বাড়িতে যুবকের আত্মহত্যা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের বেতবাড়ীয়া গ্রামে স্ত্রী-বাবা ও মায়ের উপর অভিমানে চিরকুট লিখে বন্ধুর বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন সাইদুল ইসলাম (২০) নামের এক যুবক। যুবক সাইদুল বেতবাড়ীয়া গ্রামের রিফুজীপাড়ার শাহিন আলীর ছেলে।

শুক্রবার সকালের দিকে বেতবাড়ীয়া গ্রামের পূর্বপাড়ার বন্ধু পারভেজ আলীর ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি পেঁচানো সাইদুলের মরদেহ উদ্ধার করে গাংনী থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সিহালা গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে ফাতেহা খাতুনের সাথে প্রেমেজ সম্পর্কের সূত্র ধরে এক বছর আগে বিয়ে হয় সাইদুলের। সাইদুল ঢাকার একটি কোম্পানীতে চাকরী করে আসছিলেন। তিনি কয়েকদিন পূর্বে (আগে) ছুটিতে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে শুনেন স্ত্রী ফাতেহা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছেন। এনিয়ে অভিমানে সাইদুল তার বাবা-মায়ের সাথে অসদাচরণ করেন। এক পর্যায়ে সে বাবা-মায়ের উপর অভিমানে বন্ধু একই গ্রামের পারভেজ আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেন।

বৃহস্পতিবার রাতে খাবার খাওয়ার পর সাইদুল তার বন্ধু পাভেজ এর বাড়িতে শুয়ে পড়েন। বন্ধুর পারভেজ ঘুমিয়ে গেলে,সাইদুল ওই ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পারভেজ দেখেন সাইদুলের মরদেহ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছে। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

এদিকে আত্মহত্যার আগে সাইদুল একটি চিরকুট লিখেছেন। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় এমন কথা লিখেছেন চিরকুটে।

গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি আত্মহত্যা।




মুজিবনগরে থানা পুলিশের অভিযানে ৮ জন আসামি গ্রেফতার

মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেলের নেতৃত্বে থানা পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে মুজিবনগর থানা পুলিশ।

এদের মধ্যে এস সি ২২/২২ ভবানীপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জহুরুল ইসলাম, জিআর ৬৯/২০  আনন্দবাস গ্রামের তাহাজ উদ্দিনের ছেলে হিলটন আলী, জি আর ১৫/২০,  বাগোয়ান গ্রামের আব্দুল হান্নান খানের ছেলে মনিরুল ইসলাম ওরফে ময়না, সি আর ১১৯/২৩ কোমরপুর গ্রামের মৃত মুরাদের ছেলে মোহাম্মদ আলী, সি আর ১১৯/২৩ কোমরপুর গ্রামের মোহাম্মদের ছেলে সাইফুল ইসলাম, সি আর ১১৯ /২৩ কোমরপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন, সি আর ১১৯/ ২০ কোমরপুর গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম এবং মুজিবনগর থানার নং-৮ মামলার এজাহারভুক্ত আসামী মহাজনপুর গ্রামের খেদের আলীর ছেলে রহিদুল ইসলাম গ্রেফতার করেছে মুজিবনগর থানা পুলিশের একাধিক টিম।

গ্রেফতার কৃত আসামিদের শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।




এইচএসসি পাসে নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। প্রতিষ্ঠানটিতে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

অফিস সহকারী (সাপ্লাই চেইন)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

প্রার্থীকে সর্বনিম্ন এইচএসসি বা সমমান পাস হতে হবে। বয়স সর্বোচ্চ ২৮ বছর। শারীরিকভাবে সুঠামদেহের অধিকারী প্রার্থীদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে। গাড়ির পার্টস কেনাকাটা সম্পর্কে পারদর্শী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

কর্মস্থল

ঢাকা (উত্তরা, বারিধারা)

বেতন

১৪০০০/- (মাসিক )।

আবেদন প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা বিডিজবস অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ

৩১ মে, ২০২৩।

সূত্র : বিডিজবস




চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ২

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে ২৭ পিস এ্যাম্পুল বুপ্রেনরফাইন ইনজেকশনসহ ২ (দুই) জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান নেতৃত্বে এসআই (নি:)মোঃ মাসুদ রানা সঙ্গীয় ফোর্সসহ আজ শুক্রবার দুপুর  ১ টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন জনৈক নীলরতন সাহার গোডাউনের সামনে পাকা রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে দুইজন কে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী বুজরুকগড়গড়ি (কেদারগঞ্জ) গ্রামের কাবিল উদ্দিনের ছেলে মোঃ বদর উদ্দিন বাদল (৩৩), আলমডাঙ্গা থানার জেহালা মুন্সিগঞ্জ গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে মোঃ জানে আলম নয়ন (৪২) ।

এসময় তাদের দেহ তলাশি করে ২৭ (সাতাশ) পিস এ্যাম্পুল বুপ্রেনরফাইন ইনজেকশন উদ্ধার করে পুলিশ।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান বলেন,গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।




গরমে শরীর ঠান্ডা করে যেসব খাবার

বেশি গরমে শারীরিক সমস্যা হওয়া ছাড়াও দীর্ঘস্থায়ীভাবে কিডনির রোগ, ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ, চর্মরোগ ইত্যাদি হতে পারে। এ জন্য শরীরকে যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা জরুরি। খেতে হবে কম তেল-মসলাযুক্ত খাবার।

গুরুপাক খাবারে শরীর আরও বেশি গরম হয়ে ওঠে। শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য খেতে হবে-শসা, তরমুজ, ডাবের পানি, টমেটো, তালের শাঁস, কাঁচা পাকা আম, তেঁতুল, কাঁচা পেঁয়াজ, টকদই, পুদিনাপাতা, শাক ইত্যাদি।

সবজির মধ্যে-লাউ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, জালি, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি। সবজি ভাজির চেয়ে নিরামিষ তরকারি খাওয়া ভালো।

সকাল ও বিকালের নাশতায় দই-চিরা ভালো খাবার। দইয়ে আছে প্রোবায়োটিক। যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ দূর করবে। টকদই-পুদিনাপাতা-শসা দিয়ে রায়তা করে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে। কেউ কেউ গরমের সময় পান্তা ভাত খেয়ে থাকেন। এতে শরীর যেমন ঠান্ডা থাকবে তেমনি এন্টিঅক্সিডেন্টের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে পানির অভাব দূর হয়।

ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার সময় বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সঙ্গে রাখা ভালো। এদিকে আইসক্রিম ও কোমল পানীয় পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে পিপাসার উদ্রেক বেশি হয়। ফ্রিজের ঠান্ডা পানি সরাসরি না খেয়ে স্বাভাবিক পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করা উচিত। এ সময় চা-কফি যতটা সম্ভব কম পান করা উচিত। কারণ এর ক্যাফেইন দেহে পানিস্বল্পতা ঘটায়। সবচেয়ে ভালো হয় লেবু-চা, পুদিনা চা অথবা কোল্ড টি খাওয়া। পুদিনা দিয়ে কাঁচা আমের শরবত এ সময় শরীর ঠান্ডা রাখবে।

তেঁতুলের শরবতও বেশ কাজ দেয়। তবে খুব বেশি বরফ দিয়ে পানীয় পান না করা ভালো। এতে শরীর আরও গরম হয়ে যায়। শসার সালাদ, কাঁচা আমের টক, টকদই দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে, খাবারে রুচি বাড়াবে। এগুলো হজমের সহায়ক। সালাদের সঙ্গে টকদই বা লেবুর রস মিশালেও ভালো হয়। সালাদ তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিয়ে কিছুক্ষণ পর খাওয়া যেতে পারে। তরমুজে আছে বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রচুর পানি। বড় মাছ ভাজা বা ভুনার চেয়ে ছোট মাছের ঝোল শরীর ঠান্ডা রাখবে। তেমনি ডালের চচ্চরির চেয়ে পাতলা ডাল খাওয়া ভালো। গরমে ডুবো তেলে ভাজা খাবার না খাওয়াই ভালো।

লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.) বারডেম।

সূত্র: যুগান্তর




কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তির আগমনে চাকরি হারাবেন যারা

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে চাকরির বাজারে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটে যাবে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) এক সমীক্ষায় বলেছে, এ সময়ে বিশ্বের ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ চাকরি হারাবেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব কাজ চালাবে বলে এ আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করে এআই প্রযুক্তি চালুর দিকেই যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস করপোরেশন বা আইবিএম সেই পথেই হাঁটছে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। আগামী কয়েক বছরে ৭ হাজার ৮০০ কর্মী ছাঁটাই করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন আইবিএমের প্রধান নির্বাহী (সিইও) অরবিন্দ কৃষ্ণা।

আবার এর ইতিবাচক দিকও আছে। এআই আসার কারণে অনেক নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্রে তৈরি হবে। আবার কিছু নিরাপদ চাকরি আছে, যেখানে এআই তেমন কোনো প্রভাব রাখতে পারবে না।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি গোল্ডম্যান স্যাকস গত মার্চ মাসের প্রতিবেদনে বলেছে, কনটেন্ট তৈরি করতে সক্ষম এআই বর্তমানে মানুষের দ্বারা করা সব কাজের এক-চতুর্থাংশ করতে পারে। অটোমেশনের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারেন।

‘রুল অব দ্য রোবোটস: হাউ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উইল ট্রান্সফরম এভরিথিং’ বইয়ের লেখক ও মার্কিন ফিউচারিস্ট মার্টিন ফোর্ড বলেছেন, এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘এটি শুধু যে ব্যক্তি পর্যায়ে ঘটবে, তা নয়, তবে এটি বেশ পদ্ধতিগতভাবে হতে পারে। এটি হঠাৎ একই সময়ে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে ঘটতে পারে। আর এর প্রভাব শুধু সেই ব্যক্তি নয়, পুরো অর্থনীতিতেই পড়বে।’

তবে এত খারাপ খবরের মধ্যে ভালো খবরও আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন কিছু বিষয়ে আছে, যা এআই করতে সক্ষম নয়। স্বতন্ত্রভাবে মানবিক গুণাবলি জড়িত, যেমন আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা ও প্রথার বাইরে গিয়ে ভিন্ন ভাবনা ভাবার মতো কাজগুলো এআইয়ের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই আপাতত এসব কাজের কর্মীদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা নেই।

এ বিষয়ে মার্টিন ফোর্ড বলেছেন, ‘আমার ধারণা, সাধারণত তিন ক্যাটাগরির কাজের ভবিষ্যৎ এখনো আছে। এর প্রথমটি হলো এমন চাকরি, যা প্রকৃতপক্ষে সৃজনশীল কাজ, যা ফর্মুলা অনুযায়ী কাজ নয় বা কেবল কিছু বিষয়কে পুনর্বিন্যাস করা নয়; বরং সত্যিকারের নতুন ধারণা নিয়ে নতুন কিছু তৈরি করার কাজ।’

ফোর্ড বলেন, তবে এর অর্থ এই নয় যে ‘সৃজনশীল’ হিসেবে বিবেচিত সব কাজই নিরাপদ। যেমন গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিজ্যুয়াল আর্ট-সম্পর্কিত কাজগুলো প্রথমে এআইয়ের কাছে চলে যেতে পারে। মৌলিক অ্যালগরিদম লাখো ছবি বিশ্লেষণ করার জন্য একটি বটকে নির্দেশ করতে পারে, যা এআইকে তাত্ক্ষণিকভাবে ওই ছবি নান্দনিক করতে দেয়। তবে অন্য সৃজনশীল কাজে কিছু নিরাপত্তা আছে, যেমন বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও আইন। এসব কাজে একটি নতুন আইনি কৌশল বা ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে আসা যায়। এসব কাজে মানুষের জন্য একটি পোক্ত জায়গা হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন ফোর্ড।

ঝুঁকিপূর্ণ নয়, নিরাপদ ও ভবিষ্যৎ আছে, এমন দ্বিতীয় ক্যাটাগরির কাজ হিসেবে পরিশীলিত আন্তব্যক্তিক সম্পর্ক নিয়ে কাজের কথা বলেছেন ফোর্ড। এসব কাজের মধ্যে আছে-নার্স, ব্যবসায়িক পরামর্শক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। তিনি বলেছেন, ‘এসব কাজে মানুষকে খুব গভীরভাবে বোঝার প্রয়োজন হয়। এসব চাকরি দখলে নিতে গেলে আমার মনে হয়, সত্যি সত্যি সম্পর্ক তৈরি করতে পারে এমন যোগাযোগ করার ক্ষমতা থাকতে হবে এআইয়ের।’

অনুমান করা যায় না এমন পরিবেশে ব্যাপক গতিশীলতা, দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার প্রয়োজন আছে-এমন কাজকে তৃতীয় নিরাপদ ক্যাটাগরির কাজ বলেছেন ফোর্ড। কারিগরি কাজগুলো, যেমন ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ, প্লাম্বারের কাজ ও ওয়েল্ডারের কাজগুলো এর আওতায় পড়ে।

ফোর্ড বলেন, ‘এ ধরনের চাকরিতে সব সময় একটি নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এ ধরনের কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করানোর জন্য একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনিভিত্তিক রোবট প্রয়োজন হবে। প্রয়োজন হতে পারে স্টার ওয়ার্স এর সি-৩পিও।’

এসব চাকরিতে কর্মী হিসেবে মানুষই কাজ করে যাবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে এসব কাজ একেবারেই এআই করতে পারবে না। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব বাফালোর লেবার ইকোনমিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোয়ান সং ম্যাকলাফলিন বলেছেন, শিল্প নির্বিশেষে বেশির ভাগ চাকরিরই এমন দিক আছে, যা প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যেতে পারে।

জোয়ান সং ম্যাকলাফলিন বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, চাকরির জন্য তাত্ক্ষণিক কোনো হুমকি নেই। তবে কাজগুলো পরিবর্তন হয়ে যাবে। মানুষের কাজ আরও বেশি আন্তব্যক্তিক দক্ষতাকেন্দ্রিক হয়ে যাবে। এটা কল্পনা করা সহজ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এআই মানুষের চেয়ে ভালোভাবে ক্যানসার শনাক্ত করবে। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে চিকিত্সকেরা এমন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন। তবে চিকিত্সকদের পুরো ভূমিকা এআই নিয়ে নেবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।’ তিনি আরও বলেন, যদিও রোবটের নির্ভুলভাবে ক্যানসার শনাক্ত করার সম্ভাবনা থাকবে, তারপরও অধিকাংশ মানুষ রোগ সম্পর্কে একজন ব্যক্তি চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন। এটা প্রায় সব কাজের ক্ষেত্রেই সত্য। এ কারণে স্বতন্ত্রভাবে মানবিক দক্ষতা বিকাশ করে মানুষকে এআইয়ের পাশাপাশি কাজ করে যেতে হবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ফিউচার অব জব রিপোর্ট ২০২৩ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে এআই ও মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ, ডেটা-বিশ্লেষক, বিজ্ঞানী, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্পেশালিস্ট ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ অনেক বেড়ে যাবে। ডব্লিউইএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে এআই ও মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে; ডেটা-বিশ্লেষক, বিজ্ঞানী বা বিগ ডেটা অ্যানালিস্টের সংখ্যা বাড়বে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ এবং ইরফরমেশন সিকিউরিটি অ্যানালিস্টের সংখ্যা ৩১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থাত্ এসব চাকরি নিরাপদ স্তরে আছে। তবে রেকর্ড-কিপিং ও প্রশাসনিক পদের চাকরি হুমকির মুখে আছে।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে শ্রমবাজার অনেক কিছুই প্রভাবিত করবে। নতুন চাকরি সৃষ্টির ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবস্থা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে থাকবে এবং এর সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতিও উচ্চতর হতে শুরু করবে। এতে সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য হয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়োগ করতে হবে। এতে একদিকে যেমন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে, তেমনই নেতিবাচক ভূমিকাও রাখবে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে পরিচালিত করার জন্য নতুন ধরনের দক্ষ কর্মীও লাগবে।

এসব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের কী কী দক্ষতা প্রয়োজন, তা পুনর্বিবেচনা করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ‘দক্ষভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জাম ব্যবহারের ক্ষমতা’কে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

আগামী পাঁচ বছরে দ্রুত বেড়ে যাওয়া ১০ চাকরির মধ্যে আছে-

১. এআই ও মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ ২. সাসটেইনেবিলিটি স্পেশালিস্ট ৩. বিজনেস ইন্টেলিজেন্স অ্যানালিস্ট ৪. ইনফরমেশন সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট ৫. ফিনটেক ইঞ্জিনিয়ার ৬. ডেটা অ্যানালিস্ট ও বিজ্ঞানী ৭. রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ার ৮. ইলেকট্রোটেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ার ৯. অ্যাগ্রিকালচারাল ইকুইপমেন্ট অপারেটর ১০. ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্পেশালিস্ট

আগামী পাঁচ বছরে দ্রুত হারিয়ে যাওয়া ১০ চাকরির মধ্যে আছে—

১. ব্যাংক টেলারস অ্যান্ড রিলেটেড ক্লার্কস ২. পোস্টাল সার্ভিস ক্লার্কস ৩. ক্যাশিয়ারস অ্যান্ড টিকিট ক্লার্কস ৪. ডেটা এন্ট্রি ক্লার্কস ৫. অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যান্ড এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারিস ৬. ম্যাটেরিয়াল-রেকর্ডিং অ্যান্ড স্টক-কিপিং ক্লার্কস ৭. অ্যাকাউন্টিং, বুককিপিং অ্যান্ড পে-রোল ক্লার্কস ৮. লেজিসলেটরস অ্যান্ড অফিশিয়ালস ৯. স্ট্যাটিসটিক্যাল, ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স ক্লার্কস ১০. ডোর-টু-ডোর সেলস ওয়ার্কারস, নিউজ অ্যান্ড স্ট্রিট ভেন্ডরস।




মুজিবনগরে ২ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তসরুপ

মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের বাবুপুর দর্গাতলা মাঠে সদর উপজেলার টেংরামারী গ্রামের মৃত ফকির মহাম্মদ বিশ্বাস এর ছেলে জোয়াদ আলীর ২ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তসরুপ করেছে দুর্বৃত্তরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় এ সমস্ত কলাগাছ কেটে দেওয়া হয়েছে এবং এতে তার ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানান চাষী জোয়াদ আলী।

তিনি জানান উক্ত জমি নিয়ে উপজেলার বাবুপুর গ্রামের মৃত ছয়রদ্দীন এর ছেলে আজাদ, মোনাজাত, আজগর আলী, কামাল হোসেন, তাহাজ আলীদের সাথে বিরোধ আছে তারাই আমার কলা গাছ গুলো কেটে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে আমার জমি জোর পুর্বক দখল করতে চাই।

গত কয়েকদিন আগে ওই জমির ১০/১২ টি কলাগাছ কেটে দেয় তারা এ বিষয়ে মুজিবনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আজকে মুজিবনগর থানায় বসার কথা ছিল বলে তিনি জানান।

কলা গাছ কাটার বিষয়ে পরিবারের সবার সাথে পরামর্শ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।

দুই বিঘা জমির কলাগাছ কেটে তো তছরুপ করার বিষয়ে অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, জমি নিয়ে জোয়াদ আলীর সাথে তাদের বিরোধ চলছে এবং এই জমি আমাদের। কোন কাগজপত্র না থাকার পরেও জোয়াদ আলী জোরপূর্বক জমি দখল করে আছে কিন্তু আমরা এত পাষন্ড নয় যে আমরা একটা ফলন্ত ফসল কেটে দেব। এ কলা গাছ কাটার বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা আমাদের নামে জোয়াদ আলী যে অভিযোগ দিয়েছে তার সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, দুই বিঘা জমির কলা গাছ কাটার বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।