গাংনীর তেঁতুলবাড়িয়া থেকে সুদ ব্যবসায়ী হাতেম আটক

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে হাতেম আলি নামের এক সুদ কারাবারিকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার বিকেল ৫ টার সময় গাংনী থানা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা মনোজ কুমারের নেতৃত্বে এস আই আশিকুর রহমান, এস আই মাসুদ, এ এস আই জাহিদ সঙ্গীয় ফোর্স সহ অভিযান পরিচালনা করেন। সুদ কারবারি হাতেম আলি ঐ গ্রামের মৃত হারেজ উদ্দিনের ছেলে।

এ সময় হাতেম আলির বসত বাড়ির নিজ কার্যালয়ে তল্লাশী চালিয়ে নগদ দেড় লক্ষ টাকা, ৮টি সোনার চেইন, ১৪ জোড়া কানের দুল, ২টি লকেট, ২ আংটি, তামার উপর সোনার প্রলেপ দেওয়া ৬ টি হাতের বালা, স্বাক্ষরিত ফাঁকা নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প ১২টি ও বিভিন্ন ব্যংকের স্বাক্ষরিত ৯টি ব্ল্যাংক চেক উদ্ধার করে পুলিশ।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এক সুদ ব্যবসায়ীকে আটকের পর তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ, সাদা স্ট্যাম্প ও ব্ল্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা দায়ের এর পূর্বক আসামিকে কোর্টে প্রেরণ করা হবে।




বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ও নবীন বরণ অনুষ্ঠান

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে নবীন ছাত্রীদের বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুরুতেই নবীন ছাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয়।

রবিবার (১৯ই মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বামন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য প্রদানের সময় চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল বলেন, একটা সময় আমাদের মেয়েরা অনেক পিছিয়ে ছিলো কিন্তু আজ পুরুষের পাশাপাশি নারীরা অনেক এগিয়ে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীদের আত্নমর্যাদা অর্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আমাদের আজকের এই মেয়েরা আগামী দিনের ভবিষ্যত; প্রত্যাককে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যানে বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখবে সেটাই আমার প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিম খান। এসময় বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিতি ছিলেন।




দামুড়হুদায় মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার ৬ষ্ঠ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

দামুড়হুদায় জনগণের মুখপত্র মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার ৬ষ্ঠ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর প্রতিদিন প্রত্রিকা’র দামুড়হুদা অফিসের আয়োজনে দামুড়হুদা বাসট্যান্ড সংলগ্ন উপজেলা রোডে হেঁশেল ঘর ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টে ৬ পাউন্ডের কেককেটে পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা’র দামুড়হুদা প্রতিনিধি রকিবুল হাসান তোতা’র সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুল ইসলাম মিলন। দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার হোসেন বকুল, মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা’র দর্শনা থানা প্রতিনিধি আহসান হাবীব মামুন, দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল পত্রিকা’র দর্শনা প্রতিনিধি চঞ্চল মাহমুদ।

মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা’র চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি আল মুতাকাব্বির সাকিবের সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি সালাউদ্দীন। হাউলী প্রতিনিধি আনারুল ইসলাম, দামুড়হুদা সদর ইউপি সদস্য হাসান আলী, নুরুল ইসলাম। দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের অ: স: জহুরুল হক। জয়রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ:স: বোরহান উদ্দিন, সাংবাদিক মিরাজ রায়হান, দামুড়হুদা মডেল থানার স্টাফ রাকিবুল, শাহাজাহান গণি, শহিদুল ইসলাম, প্রত্রিকা বিক্রয় প্রতিনিধি শহীদ আজম সদু।

দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দামুড়হুদা মডেল মসজিদের পেশ ঈমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মামুন হোসেন।




মেহেরপুর প্রতি‌দিন গণমানুষের প‌ত্রিকা হয়ে উঠেছে

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনপ্রিয় দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার পঞ্চম বর্ষপূর্তি ও অর্ধযুগে পদার্পণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, কেক কাটা ও শুভেচ্ছা বিনিময়সহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৮ই মার্চ) সকাল ১০টায় মেহেরপুর পৌর শহরের কমিউনিটি সেন্টার থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মেহেরপুর প্রতিদিন কার্যালায়ে এসে শেষ হয়।

এরপর মেহেরপুর প্রতিদিন কার্যালয়ে কেক কাটা ও কয়েক পর্বের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার ব্যবস্হাপনা সম্পাদক মাহাবুব চান্দুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা, আনিশা গ্রুপের চেয়ারম্যান, মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রকাশক এম এ এস ইমন এবং মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন।

বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুস সালাম, জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বীর মুক্তিযোদ্ধা) আব্দুল মালেক, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমান,  পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সম্পাদক আব্দুর রহিম, গাংনী সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম, ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল আজিম, মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক তোজাম্মেল আযম, মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন ধূমকেতু, ছহিউদ্দীন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফররুখ আহমদ উজ্জ্বল, গাংনী সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও গাংনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রমজান আলী, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিকজন শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান চন্দন সহ প্রমুখ।

শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের সময় মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন বলেন, শত সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত মেহেরপুর প্রতিদিন বের হচ্ছে। দৈনিক সকালে পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া একটা যুদ্ধ। এই যুদ্ধ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমারা জয় করবো।

মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রকাশক এম এ এস ইমন বলেন, মেহেরপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য মেহেরপুর প্রতিদিনের জন্ম। অনেক চড়াই উৎড়ায় পেরিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিন আজকের অবস্থানে। মেহেরপুর প্রতিদিন এগিয়ে যাবে বহুদূরে সেই কামনা করি।

মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুস সালাম বলেন, মেহেরপুরে পূর্ববর্তী সময়ে অনেক পত্রিকা বের হয়েছিল কিন্তু বেশিদিন স্থায়ীত্ব পায়নি। তবে এই মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা হাটিহাটি পাপা করে আজ ৬ বছরে পদার্পন করেছে। মেহেরপুর প্রতিদিনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।

 

সন্ধ‌্যায় শু‌ভেচ্ছা জানাতে এসে জেলা বিএন‌পির সভাপ‌তি ও সা‌বেক সংসদ সদস‌্য মাসুদ অরুন বলেন, মেহেরপুর প্রতি‌দিন গণমানুষের কথা বলে, যার ফলে পাঠক‌প্রিয়তা পেয়েছে। গণমানুষের কথা বলতে গিয়ে মেহেরপুর প্রতি‌দিন ডি‌জিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার শিকার হ‌য়ে‌ছে। মেহেরপুরের মত পশ্চাৎপদ জেলা থেকে এক‌টি দৈ‌নিক নিয়‌মিত প্রকাশ করা অনেক ক‌ঠিন এক‌টি কাজ। মেহেরপুর প্রতি‌দিনের প্রকাশক, সম্পাদকসহ ব‌্যবস্থাপনা বোর্ডের ঐকা‌ন্তিক প্রচেষ্টায় এ‌টি সম্ভব হচ্ছে। প‌ত্রিকা‌টি তার নী‌তিতে অ‌বিচল থে‌কে গণমানুষের কাগজে প‌রিণত হবে এই প্রত‌্যাশা ক‌রি।

বি‌ভিন্ন সময় শু‌ভেচ্ছা বি‌নিময় করেন অ‌থি‌থিরা। অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বীর মুক্তিযোদ্ধা) আব্দুল মালেক বলেন, মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা সবসময় গণমানুষের পক্ষে কথা বলবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা করি।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, মেহেরপুর প্রতিদিন সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করে আসছে যার ফলে পাঠকের রাস্তার কাগজে পরিণত হয়েছে। তাদের এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সমাজের নানা সমস্যা তুলে ধরবে এই প্রত্যাশা করি।

গাংনী সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম বলেন, একসময় আমাদের স্হানীয় সংবাদ গুলো প্রকাশ করার মতো কোন পত্রিকা ছিলোনা কিন্তু আজ মেহেরপুর প্রতিদিন রয়েছে এবং সবসময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করছে। এটা আমাদের জন্য গর্বেরও বটে।

ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল আজিম বলেন, আজকে মেহেরপুর প্রতিদিন আগামীর পথে নতুন নতুন সাফল্য অর্জন করবে সেটাই আমার কামনা।

মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক তোজাম্মেল আযম বলেন, মেহেরপুর প্রতিদিন সংবাদপত্রে যেভাবে লেখা হচ্ছে তা মহাকালের কাছে লেখনীর মানদণ্ডে হয়তো ইতিহাস সৃষ্টি করবে।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন ধূমকেতু বলেন, শুধু মেহেরপুর জেলা নয় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১০টি জেলায় মেহেরপুর প্রতিদিনের অসংখ্য দর্শক সৃষ্টি হয়েছে। মেহেরপুর প্রতিদিনের জন্ম হয়েছে গৌরবতম স্থানে তাই এটি সারাদেশে গৌরবের জায়গায় স্থান করে নেবে।

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিকজন শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু বলেন, আজকের মেহেরপুর প্রতিদিন অর্ধযুগে পদার্পন করলো। যুগ যুগ ধরে মেহেরপুর প্রতিদিন পাঠকদের সঠিক সংবাদ উপহার দিবে এটাই আমার প্রত্যাশা।

গাংনী সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও গাংনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রমজান আলী বলেন, আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করি। সেই ধারাবাহিকতায় আমি শেখার জন্য নিয়মিত মেহেরপুর প্রতিদিন পড়ি।

গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে এনটিভির মেহেরপুর প্রতিনিধি রেজ আনাউল বাসার তাপস, মোহনা‌ টি‌ভি প্রতি‌নি‌ধি ফারুক হো‌সেন, গাংনী উপ‌জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান পা‌ভেল, গাংনী প্রেস ক্লা‌বের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, লা‌খোকণ্ঠ প্রতি‌নি‌ধি র‌ফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান শেরখান, আমাদের অর্থনীতির প্রতিনিধি মাসুদ রানা, সমাজের কথার প্রতিনিধি সোমেল রানা, মুহাম্মদ মহসীন, বাংলা টিভির প্রতিনিধি আক্তারুজ্জামান, আজকালের খবরের প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম, ডালিম সানোয়ার, ওবায়দুল্লাহ সাদিক, আবু রায়হান নিরব, নাসিম হাসান, আসিফ ইকবাল শুভ, এস এম তারেক সহ অনেকেই।




মেহেরপুরস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মিলন মেলা

স্মৃতির টানে এসো মিলি প্রাণের বন্ধনে এই স্লোগানে মেহেরপুরস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মিলন মেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনাতনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মেহেরপুরের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সচিব মোহাম্মদ আলকামা সিদ্দিকী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম খান, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলী‌গের প্রচার ও প্রকাশনা উপক‌মি‌টির সদস‌্য এম এ এস ইমন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক খালেদুজ্জামান জুয়েল, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট পল্লব ভট্টাচার্য, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি প্রফেসর হাসানুজ্জামান মালেক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহিন প্রমুখ।




বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেছেন, সারা বাংলাদেশ এখন শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে। আমরা নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বের হয়ে আমরা এখন উন্নয়ন শীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। সারা বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এ পরিণত হয়েছে।

রবিবার সকালে মেহেরপুর কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের চারতলা বিশিষ্ট ফজিলাতুন নেছা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটা বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটা কাজের জন্য পরিকল্পনা দরকার পরিকল্পনা ছাড়া আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না। পরিকল্পনা যদি গলদ থাকে তাহলে কিন্তু আপনি আপনার সন্তানকে তৈরি করতে পারবেন না।

কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল খালেক, মেহেরপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মাহফুজুল হোসেন, মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মুত্তাকিন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি প্রফেসর হাসানুজ্জামান মালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল হালিম সহ বিভিন্ন নেতাকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুর প্রতিদিনের আগামীর পথচলা শুভ হোক

নানা চড়াই-উৎরাই ও কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে মেহেরপুরের অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক ‘মেহেরপুর প্রতিদিন’ পাঁচ বছর পেরিয়ে ছয় বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পত্রিকাটির প্রকাশক, সম্পাদক ও সাংবাদিক ভাইবোনদের পাশাপাশি সকল পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখায় মেহেরপুর প্রতিদিন মেহেরপুরের পাঠকের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি পত্রিকা।

সমাজের আয়না হিসেবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন, অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো, সমাজের নানা অসংগতির তথ্য তুলে ধরা, ন্যায় ও সত্যের কথা বলা, সকল অন্যায়-অনিয়ম, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস ও মাদকের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া সহ নানা সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে মেহেরপুর প্রতিদিন ।

এছাড়াও শির্ক্ষাথীদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাতে দৈনন্দিন ইসলাম বিষয়ক লেখা প্রকাশ, নবীন ছড়াকার, কবি ও গল্পকারদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানো এবং সৃজনশীলতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে প্রত্রিকাটি।

ছোট বেলায় কোন একটি বই-এ যেন পড়েছিলাম, একটি ছোট্ট গ্রাম, আর এই গ্রামের ভিতরে রয়েছে একটি পাঠশালা। পাঠশালার মেধাবী ছাত্র আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহ পাঁচ ক্লাশে জলপানি পেয়ে পাশ করেছে। এরপর উচ্চক্লাশে লেখাপড়ার ব্যবস্থা আর গ্রামে নেই তাই এখন তাকে লেখাপড়ার জন্য যেতে হবে শহরে। মাথায় বিছানা আর কাপড়ের গাট্টি, হাতে খাবারের একটি ছোট্ট পুটুলি। যাত্রার শুরুতেই আব্দুল্লাহ দোয়া নেওয়ার জন্য গেল ওস্তাদজীর বাড়ীতে। মাথার গাট্টি আর হাতের পুটুলি মাটিতে নামিয়ে আব্দুল্লাহ বিনয়ের সাথে ওস্তাদজীর সামনে মাথা হেঁট করে দাড়াঁল। কাঁন্নাবিজড়িত কাঁপাকাঁপা কন্ঠের উচ্চারন, ‘ওস্তাদজী শহরে পড়’তে যাইতেআছি আমারে দোওয়া কইরেন’। ওস্তাদজী আদরের সাথে আব্দুল্লাহকে কাছে ডাকলেন, স্নেহভরা হাতটি রাখলেন তার মাথার উপর, বললেন, লেখাপড়া শিখে তুমি অনেক বড় হবে এ দোওয়া আমি করি না, আমি এ দোওয়াই করি লেখাপড়া শিখে যেন তুমি ‘মানুষ’ হও।

মানুষ আবার মানুষ হবে কিভাবে? বুঝে নেওয়া খুব সহজ নয় তবে মোটামুটি কথা হচ্ছে, মানুষের ঘরে জন্ম নিলেই যেমন মনুষ হওয়া যায় না, তার কিছু মানবিক গুনাবলী থাকতে হয় ঠিক তেমনি শুধুমাত্র ভালো কাগজ, ভালো ছাপা হলেই একটি ভাল পত্রিকা হওয়া যায় না। যেখানে থাকতে হয় সত্যিকারের সাংবাদিক, যারা সত্যকে উন্মোচিত করতে চির আগ্রহী।

আজকাল কিছু সাংবাদিক অনেক সময় সত্য তথ্যের ওপর নির্ভর না করে তথ্যদাতার মাধ্যমে পাওয়া খবর যাচাই বাছাই ছাড়াই ছেপে দেন। কিন্তু মেহেরপুর প্রতিদিন সেদিক থেকে আলাদা। মেহেরপুর প্রতিদিনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে যাচাই-বাছাই না করে সংবাদ প্রকাশ বিরল। এ জন্য সত্য তথ্যের ভরসা মেহেরপুর প্রতিদিন।

পাঠক নির্ভর করতে পারে, আস্থা রাখতে পারে, যদি কোনো সংবাদপত্র জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে। মেহেরপুর প্রতিদিন সেদিক থেকে পাঠকের কাছে একটি দায়বদ্ধ পত্রিকা। মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে যার দৃঢ় অবস্থান।
এমন অনেক পত্রিকাই আছে যারা সাহস করে অনেক রিপোর্ট প্রকাশ করে না বা করতে চায় না। কিন্তু সেখানে মেহেরপুর প্রতিদিন সত্য প্রকাশে আপসহীন। সত্য প্রকাশে এ পত্রিকাটি অনেক সময় ঝুঁকিও নিয়ে নেয়। জনগণকে বিভিন্ন ইস্যুতে সচেতন করার ক্ষেত্রেও মেহেরপুর প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে, যা সচেতন পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

সত্য প্রকাশের মাধ্যমে পত্রিকাটির সাহসী অভিযাত্রা অব্যাহত থাকুক। পত্রিকাটির পথচলা আরও শানিত হোক এবং একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে মেহেরপুর প্রতিদিনের ভূমিকা আগামী দিনে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক। মেহেরপুর প্রতিদিনের উপ সম্পাদকীয়তে আমি অনেক লিখেছি। এখনও লিখি। মেহেরপুর প্রতিদিনের সঙ্গে এটাও আমার যোগসূত্র। মেহেরপুর প্রতিদিন ভালো ভালো সংবাদ, ফিচার, সংকলন, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ছড়া ও কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে শুধু আমাদেরই নয়, বরং আমাদের ভক্ত পাঠকদের উৎসাহী করে তুলবে, এটাই কামনা করছি।

আমি মেহেরপুর প্রতিদিনের সাফল্য কামনা করছি। সততা, স্বচ্ছতা ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন এবং দেশীয় সংস্কৃতি বুকে ধারণ করে আপন সংস্কৃতির ধারায় পাঠকদের মন জয় করবে, সমাজের নানা অসঙ্গতি প্রকাশ করে মানুষকে সচেতন করে তুলবে, পাশাপাশি দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সবসময়ের কথা তুলে ধরবে এটাই প্রত্যাশা। মেহেরপুর প্রতিদিনের আগামীর পথচলা আরও সুন্দর হোক, শুভ হোক এই কামনাই করছি।

লেখকঃ লেখক ও গবেষক।




মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পেশা ও এর ভবিষ্যৎ

সাগর পাড়ি দিতে ইচ্ছুক, কঠোর পরিশ্রমে আগ্রহী, সাহসী, বাণিজ্যিক জাহাজে কাজ করতে চান এমন ব্যক্তিদের জন্য মেরিন পেশাটি বেশ পছন্দের পেশা। এটি একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। এই পেশায় বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া যায়। সেই সাথে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আচার, আচরণ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা যায়। বাংলাদেশি মেরিনাররা প্রতি বছর দেশের জন্য প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে।

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে বাণিজ্যিক জাহাজের জন্য ক্যাডেট ভর্তি করা হয় এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এটি চট্টগ্রামের জলদিয়াতে অবস্থিত। মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে এটি ছিল একমাত্র নৌ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার পর মেরিন একাডেমী পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার। প্রারম্ভিকভাবে ৪০ জন ক্যাডেট নিয়ে (২০ জন নটিক্যাল ও ২০ জন ইঞ্জিনিয়ারিং) এর অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিবছর ২০০এর অধিক ক্যাডেট মেরিন একাডেমী চট্টগ্রামে ভর্তি হয় এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ক্যাডেট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী চট্টগ্রাম ওয়াল্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, সুইডেন এর অধীনে নিবন্ধিত।

এছাড়াও ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রামে মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে। মেরিন ফিশারিজ একাডেমি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ, নিয়ন্ত্রণ এবং নৌ বাণিজ্যিক সেক্টরের জন্য পেশা ভিত্তিক মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার মেরিন পেশাকে আরো বিকশিত করার লক্ষ্যে পাবনা, রংপুর, সিলেট ও বরিশালে নতুন চারটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে ও এগুলির ক্যাডেট প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
এছাড়াও আরো তিনটি প্রাইভেট মেরিন একাডেমি চালু রয়েছে।

বাংলাদেশে এখন প্রতিবছর প্রায় ৫০০ জন মেরিন ক্যাডেট সরকারি এবং প্রাইভেট একাডেমী থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রামে ফিমেল ক্যাডেট ভর্তি শুরু হয়। বর্তমানে ফিমেল ক্যাডেটরাও দেশি এবং বিদেশি জাহাজে কর্মরত আছে।

মেরিন একাডেমিতে দুইটি ডিসিপ্লিন এর ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় ১। নটিক্যাল বা ডেক ডিপার্টমেন্ট ২। ইঞ্জিন ডিপার্টমেন্ট।

একাডেমিতে প্রি সি প্রশিক্ষণ শেষ করে তারা বাণিজ্যিক জাহাজে ডেক বা ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসাবে যোগদান করে। ডেক ডিপার্টমেন্ট থেকে সি টাইম কমপ্লিট করে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ক্রমান্বয়ে থার্ড অফিসার, সেকেন্ড অফিসার, চিফ অফিসার এবং সর্বশেষ ক্যাপ্টেন হওয়া যায়। একইভাবে ইঞ্জিন ডিপার্টমেন্ট থেকে ক্রমান্বয়ে ফোর্থইঞ্জিনিয়ার, থার্ডইঞ্জিনিয়ার,সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার ও সর্বশেষ চিফ ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়। পদোন্নতির জন্য প্রতিটি পরীক্ষাতেই পাস করতে হয়।

বাংলাদেশী মেরিনাররা সাধারণত প্রফেশনাল পরীক্ষা গুলো বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর,ইউকে,অস্ট্রেলিয়া বা মালয়েশিয়ায় দিয়ে থাকে।

সমুদ্রগামী জাহাজ ছাড়াও মেরিনাররা দেশি -বিদেশি নৌ বন্দর,জাহাজ ব্যবস্থাপনা,মেরিন সার্ভে প্রতিষ্ঠান,দেশি-বিদেশি পাওয়ার প্লান্ট, শিল্প কারখানায় কাজের সুযোগ পান। পোর্ট ক্যাপ্টেন এবং মেরিন সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবেও অনেকে দেশে এবং বিদেশে চাকরিতে আছেন। সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও অনেক মেরিনার দায়িত্ব পালন করছেন।

বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ পণ্য পরিবাহিত হয় শিপিং বা বাণিজ্যিক জাহাজের মাধ্যমে। বিশ্ব অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শিপিং সেক্টর। সমুদ্রপথে কম খরচে আন্তর্জাতিকভাবে মালামাল, খাদ্যদ্রব্য, কাঁচামাল এবং তৈরি পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ শিপিং এর তথ্য মতে ৫০০০০ এর অধিক জাহাজ আন্তর্জাতিকভাবে চলাচল করছে এবং ১৯ লক্ষ সি ম্যান এই পেশায় কর্মরত আছে । তার মধ্যে প্রায় ৮.৫ লক্ষ অফিসার এবং ১০.৫ লক্ষ রেটিংস।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯০ টি সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে বি এস সি বা বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের রয়েছে আটটি জাহাজ। বাকিগুলো বিভিন্ন শিপিং কোম্পানির জাহাজ। করোনা দেশের জাহাজ শিল্পে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

গত তিন বছরে দেশের সমুদ্রগামী বহরে চল্লিশটির বেশি জাহাজ যুক্ত হয়েছে। আইনি সুরক্ষা, কর সুবিধা ও ক্রমবর্ধমান ফ্রেইট চার্জের কারণে এই খাতে নতুন বিনিয়োগ বেড়েছে। দেশে বিদেশে জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মেরিনারদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মেরিন সেক্টরকে আরো এগিয়ে নিতে হলে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের আরো বেশি জাহাজ ক্রয় করা প্রয়োজন, তাতে আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই সাথে মেরিনারদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে বিদেশি কোম্পানিতে চাকরিরত মেরিনাররা আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে পাঠাতে পারবে।

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন বা আই এম ও করোনা কালে মেরিনারদের আন্তর্জাতিকভাবে কি ওয়ার্কার হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে কারণ তারা করোনার মধ্যেও বিশ্ব অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে । তরুণরা মেরিন পেশায় অনেক বেশি আগ্রহী হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে দেশে -বিদেশে মেরিনারদের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।




মুজিবনগর দিবস ও বাংলাদেশ

পৃথিবীর জাতীগোষ্ঠীর ইতিহাস উত্থান পতন অত্যাচার নিপীড়ণ রক্তপাতের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ও বিস্তারিত হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যে সমস্ত জাতি দেশ নতুনভাবে জন্মগ্রহণ করেছে এবং পৃথিবীর মানচিত্রে নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছে সে সমস্ত দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অত্যাচার বিপ্লব সংঘাত রক্তপাতের মধ্য দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি এসেছে।

পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। অসংখ্য উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম সংঘাত অবশেষে ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর যে ঐতিহাসিক ভাষণ সেই ভাষণ অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ হয়ে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়েছিল। সামনে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে শেষ বাক্যটির পূর্বে যে বাক্যটি বলেছিলেন এবং গভীর অভিব্যক্তি সহকারে প্রকাশ করেছিলেন “মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ্।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবর রহমানের এই কথার মধ্য দিয়ে এদেশের অসংখ্য আপামর মানুষ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে কেনা আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের সংঘতি, স্থিতি, অস্তিত্ব টিকিয়ে এবং বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব ও অধিকার এদেশের সর্বসাধারণ সর্ব মানুষের। এই ভাষণের পরবর্তী সময়ের ঘোষণা ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা। বর্বর পাকিস্তানী বাহিনীকে এদেশের মুক্তিকামী মানুষ শসস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পরাভূত করে। ২৬ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ২৩ দিনের ব্যবধানে মেহেরপুর মহকুমার নির্জন প্রত্যন্ত গ্রাম বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়। এই অস্থায়ী সরকারের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিচালনা এবং বিদেশের সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এই সরকারের গুরুত্ব সমস্ত দিক বিবেচনায় পৃথিবীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিল এবং সমর্থন পেয়েছিল।

যার স্বীকৃতি আজকের বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকরের রূপরেখা ছিল নিম্নরূপ :
রাষ্ট্রপতি : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
উপ-রাষ্ট্রপতি : সৈয়দ নজরুল ইসলাম (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি)
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ
প্রধান সেনাপতি : কর্ণেল এমএজি ওসমানী
খন্দকার মোশতাক আহমেদ : ক. পররাষ্ট্র বিষয়ক খ. আইন ও সংসদ বিষয়ক
ক্যাপ্টের এম মনসুর আলী : ক. অর্থ ও জাতীয় রাজস্ব খ. বাণিজ্য ও শিল্প গ. পরিবহন
এএইচএম কামরুজ্জামান : ক. স্বরাষ্ট্র বিষয়ক খ. সরবরাহ, ত্রাণ ও পূনর্বাসন গ. কৃষি

Politics is not a pouch of tobacco, it cannot be handed over, it must be earn G.B. Show এর একথার মূল্যায়ন যথার্থভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জীবনে প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। আব্রাহাম লিংকন, আইজেন হাওয়ার, মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নেতাজী সুভাস বোস, শের-ই বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, যাদের জীবন বীক্ষণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিল।

এদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম ও কারাবরণ করেছেন। প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে এদেশের মাটি ও মানুষের ভাব ও ভাবনাকে অঙ্কুরিত করেছেন। গভীর মমতায় বুকে ধারণ করেছেন বলেই তিনি বলতে পেরেছেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।” এভাবেই ১৭ এপ্রিলের শপথ গ্রহণের পরেই যথার্থভাবে আমাদের মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়। তাঁর উদ্দাত্ত কণ্ঠের ঘোষণা, “রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব”। এভাবেই মুজিবনগরের ১৭ এপ্রিল বিশ্বের মানচিত্রে জ্বাজল্যমান হয়ে উঠল। সেই থেকেই মুজিবনগর সারা বাংলাদেশ তথ্য বিশ্বের কাছে পরিচিতি লাভ করেছিল।

সমগ্র দেশ, সমবেত জনতা, জাতির প্রতিটি মানুষ তার এই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বাগত জানিয়েছিল, প্রাণের কথা মনে করেছিল। মনে করেছিল জীবনের মুক্তির কথা। বঙ্গবন্ধুকে অকুণ্ঠভাবে সমর্থন করেছিল বলেই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা নরপিশাচ ইয়াহিয়া খান ও তার সাগরেদরা বঙ্গবন্ধুকে বন্দী করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েছিল এবং ২৫ মার্চ কাল রাত্রি হতেই শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধ, এদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম। আর সঙ্গে সঙ্গে বর্বর বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বিডিআর হেড কোয়ার্টার এবং সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে তাদের ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর মাধ্যমে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ তাদের ভয়াবহ নৃশংস হত্যার সম্মুখীন হয়। বিভৎস সেই হত্যাযজ্ঞের মহানায়ক ইয়াহিয়া ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে অন্তরীণ করে রাখে। মৃত্যুর মুখোমুখী হয়েও তিনি ছিলেন অবিচল, জাতির স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন-নির্ভীক এক মহানায়ক।

মেহেরপুরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিভিন্ন গ্রাম হতে জীবন, প্রাণকে বাজি রেখে দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিসংগ্রামে সবাই নাম লেখাতে থাকে। তৎকালীন মহকুমার প্রশাসক ছিলেন জনাব তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। মেহেরপুরের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর সঙ্গে আরও ছিলেন জনাব মাহবুব উদ্দীন। তখন মেহেরপুরের মাননীয় এমএনএ মরহুম জনাব হুহীউদ্দীন আহমেদ-এর নেতৃত্বে দারিয়াপুরের হাজী ইদ্রিস আলী, গাংনীর জালাল উদ্দীন, ইসমাইল হোসেন, ইসরাইল হোসেন, আব্দুল মান্নান মাষ্টার, শাহবাজ উদ্দীন লিঙ্গু, আতাউল হাকিম (লালমিয়া), খাদেম আলী, আসকার আলী, নৈমুদ্দিন, মেহেদী বিল্লাহ প্রমুখের নাম উল্লেখ যোগ্য। এঁরা তাঁদের যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে প্রাণ দিয়ে ভালবাসা দিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে অকৃপণভাবে দেশের জন্য কাজ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন জাগরণে তাঁদের অবদান বাংলাদেশ তথা মেহেরপুরের ইতিহাস চির জাজ্বল্যমান হয়ে থাকে।

সিন্ডিকেট ভেঙে ইতিশীল হবে ভোগ্য
এভাবেই নয় মাসের মুক্তির সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানী বর্বর সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ । কিন্তু যথার্থভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রক্তক্ষরণ ও স্বপ্নের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি কি? আজকে সূবর্ণ জয়ন্তীর পরবর্তী সময়ে সামাজিক বৈষম্য গুম খুন ধর্ষণ কালোবাজারী যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে তাতে এদেশের সকল মুক্তিকামী মানুষ সঙ্কিত বিহ্বল ও মর্মাহত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবর রহমানের স্বপ্নকে বাস্তাবয়ন করতে হলে ১৭ এপ্রিলের শপথকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তবেই নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

লেথক সাহিত্যিক ও গবেষক




বাঙালির যুক্তি, তর্ক ও ধর্মভাবনা

হিন্দু-মুসলমান সবার জন্য বৈষ্ণবরা তাদের হরিসভা উন্মুক্ত করে রাখে। ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার শরিফের উরসে হিন্দুদের বসবার ব্যবস্থা থাকে। বায়েজিদ বোস্তামি ও হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে সবাই মানত করে, শিরনি দেয়। লালনের আখড়ায় ধর্মেবর্ণের ভেদ থাকে না। ইতিহাস ঘেঁটে, পুঁথি-পাঁচালির জীর্ণ পাতা উলটিয়ে জানা যায়, বাঙালি চিরকাল ধর্মপ্রাণ, তবে ধর্মান্ধ নয়। ধর্মের প্রাত্যহিক আচার-আচরণ নিষ্ঠার সাথে পালন করে, কিন্তু জীবনকে তুচ্ছ ভাবে না। জীবন ও অস্তিত্বের জন্য যা দরকারি মনে করে, তা-ই গ্রহণ ও পালন করে। হোক তা ধর্মের আচার-স্পিরিটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিংবা অসঙ্গতিপূর্ণ।

জীবন ও জীবিকার জন্য বাঙালি অন্যদেশের ধর্ম নিয়েছে, ভাষা নিয়েছে, কিন্তু অন্তরের অন্তস্তল থেকে উৎসারিত মানবধর্ম ত্যাগ করেনি। বাঙালির ধর্ম আসলে স্বনির্মিত ধর্ম। এজন্যে বাংলার জল হাওয়ায় কট্টর শরিয়তি ইসলাম তেমন শেকড় গাড়তে পারেনি। এখানে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করেছে সত্যপীর, পাঁচপীর, পাঁচগাজী, মানিকপীররা। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে মানত-শিরনি দিয়েছে সত্যপীরের দরগায়। মুসলমানের সত্যপীর হিন্দুর কাছে হয়ে ওঠে সত্য নারায়ণ। তাই নিরন্ন-বিপন্ন, বিপর্যস্ত, শোষিত হিন্দু মুসলমান বাঁচার তাগিদে বলেছে:
‘ হিন্দুর দেবতা তিনি মুসলমানের পীর।/ দুইকুলে সেবা লয় হইয়া জাহির।’

সত্যপীর বা সত্যনারায়ণ পারলৌকিক মুক্তিদানের বা পাপ-পুণ্যের দেবতা নন। তিনি জাগতিক মঙ্গলবিধানের লৌকিক দেবতা। রোগ-বালাই, বিপদ-আপদ থেকে মুক্তির জন্য তার আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়। লোকমানস প্রসূত এই পীরের অনুসারীরা সাধারণত সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক ও পীড়িত। কিন্তু যুক্তিবাদী, জিজ্ঞাসু ও ইহজাগতিক। রাজনৈতিক পরিভাষায় আমরা যাকে ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িকতা বলি, তা নিয়ে কয়েক শো আগেই এদেশের পীর-সাধক, ভাবুকরা চিন্তা করেছেন। জাতগোত্রহীন মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের কথা ভেবেছেন। মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ কবি চণ্ডীদাস বলেছিলেন : ‘শুন’হ মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ চণ্ডীদাসের সমসাময়িক চৈতন্যদেবও উচ্চবর্ণ ও ব্রাহ্মণ্যবাদ ত্যাগ করে প্রেমভক্তিবাদী মানবধর্ম প্রচার করেছেন। এই মানবধর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে চণ্ডাল, মুচি, নমশূদ্রসহ বহু মুসলমান তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। মুসলমান সূফি দরবেশরাও ইসলামের সাম্য-মৈত্রীর বাণী প্রচার করতে গিয়ে মূলত প্রেম ও মানবিকতার বাণী প্রচার করেছেন। অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রেম ও মানবতার বাণী সবচেয়ে বেশি করে প্রচার করেছেন লালন এবং বাংলার বাউল সাধকরা।

মানবপ্রেমী লালন ফকির বলেছেন : ‘এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে/ সেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান/জাতি গোত্র নাহি রবে।’

লালনের অনেক গানেই বাঙালির আসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। দারিদ্র্যপীড়িত নির্জন-নিভৃত পল্লিতে বসবাস করেও তিনি এমন এক সমাজের স্বপ্ন দেখেছেন যেখানে ধর্মের নামে ভেদাভেদ ও শোষণ বঞ্চণার কোনো জায়গা নেই। সমতা ও ন্যায়বিচারের কথা তিনি গানে গানেই ব্যক্ত করতে চেয়েছেন। গানের হাতিয়ার দিয়েই তিনি সাম্প্রদায়িক প্রজাপীড়ক রাজন্যবর্গকে বিনাশ করতে চেয়েছেন।

লালনের মতো বঙ্গবন্ধুও বলেছেন, ‘২৫ বছর আমরা দেখেছি ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানি এই বাংলাদেশের মাটিতে চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না।’
শুধু লালন না, এ ভূখণ্ডের সূফি-সাধক, রাষ্ট্রচিন্তক থেকে ও কবিরা পর্যন্ত প্রায় সকলেই মানবিকতা, মনুষ্যত্ব অসাম্প্রদায়িকতার জয়গান গেয়েছেন। ‘শুন’হ মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’– আধুনিক হিউম্যানিজমের সারসত্য মধ্যযুগের চণ্ডীদাসের এই ঘোষণার মধ্যেই নিহিত আছে। যারা গড়পড়তা ধর্ম এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন তারা হয়তো এই ঘোষণার সাথে একমত পোষণ করতে পারবেন না। কিন্তু তারাও মানুষকে বড় করে দেখেছেন। ইউরোপের তখনকার হিউম্যানিস্টরা যে অর্থে হিউম্যানিস্ট সেই অর্থে চৈতন্যদেব, চণ্ডীদাস থেকে লালন, হাছন ও অন্যান্য মরমিরাও হিউম্যানিস্ট। উনিশ শতক থেকে বিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত বাংলার গ্রামীণ জীবনভাবনা ও ধর্মচেতনা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে লালন, কুবির গোঁসাই, মদন বাউলদের মতো মরমি সাধক ও বাউলদের ভাবসমৃদ্ধ ও তত্ত্বাশ্রয়ী গানের মাধ্যমে। এসব গানের স্রষ্টারা অধিকাংশই ছিলেন নিরক্ষর, অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক এবং সামাজিকভাবে দীর্ণ। কিন্তু সর্বোতভাবে তার্কিক ও দার্শনিক। ধর্মের নানা দিক নিয়ে এঁরা তর্ক করেছেন। উল্লেখ করা প্রয়োজন, সেকালে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরা যেমন তর্ক করতেন, মুসলমান মৌলভীরাও তর্কযুদ্ধে অবতীর্ণ হতেন। তেমনই লালন এবং অন্য ভাবুক, সাধকরাও তর্কযুদ্ধে মেতে উঠতেন আখড়া-আশ্রমে, গানের মাহফিলে কিংবা সাধুসঙ্গে।

তর্ক করতে গিয়ে এক আসরে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বাউল সম্রাট লালন বলেছেন: ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান / নারীর তবে কী হয় বিধানÑ/ বামুন চিনি পৈতায় প্রমাণ/ বামনী চিনি কীসে রে।’

ভেবে বিস্মিত হই যে, লালনের মত এক নিরক্ষর, গেঁয়ো বাউল এমন ক্ষুরধার যুক্তি, দর্শনসমৃদ্ধ ভাবনা পেলেন কোথায়? কোন গুরু তাকে এসব শেখালো? তিনি তার ভাবনাগুলি অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সাবলীলভাবে গানের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। গানের মধ্য দিয়ে তিনি কেবল বর্ণাশ্রম প্রথা সম্পর্কে প্রশ্ন করেননি, সাহসিকতার সঙ্গে প্রশ্ন করেছেন, হিন্দু মুসলমানের ধর্মবিশ্বাসের নানাদিক নিয়েও।

লালনের জন্ম মধ্যযুগ ছুঁয়ে যাওয়া ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দ ধরা হলে, তাঁকে রামমোহন-বিদ্যাসাগরদের সমসাময়িক বলা চলে। অথচ এই নিরক্ষর সাধকের সাথে সে সময়ের কলকাতার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও নবজাগৃতির পুরোধাদের কতই না ফারাক! লালন যেসময়ে হিন্দু মুসলমানের ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতা, সম্প্রীতি ও ধর্মসমন্বয়ের কথা চিন্তা করেছেন, সেই একই সময়ে রামমোহন-দেবেন্দ্রনাথ-কেশব সেনরা তাদের সংস্কার আন্দোলন হিন্দুদের গণ্ডির মধ্যেই সীমিত রেখেছেন। অন্যদিকে ওহাবি-ফরায়েজি ও সৈয়দ আহমেদের ‘তরিকা ই মহম্মদীয়’ আন্দোলনের প্রয়াস ছিল কেবল মুসলমান সমাজকে বিশুদ্ধ ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনার মধ্যে পরিসীমিত। কোনো পক্ষই সেইভাবে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়কে এক ময়দানে মিলিত করতে চাননি। কিন্তু লালন ও লালন-উত্তর লোকায়তবাদী মরমি সাধকরা নিম্নবর্গের কৃষিজীবী সমাজকে কেবল কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, শাস্ত্রাচারের পথ থেকে নিবৃত্তই করেননি, তাদের মধ্যে মানবপ্রেম ও অসাম্প্রদায়িক ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছেন। আসলে আঠারো-উনিশ শতকে বাংলার লোকায়ত সাধক, কবি ও পদকর্তাদের মধ্যে ধর্মসমন্বয়ের বিস্ময়কর উদ্যোগ লক্ষ করা গেছে। ধর্মান্তকরণের প্রবল ঝড়ো হাওয়া আর সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প মাখানো প্রতিবেশে দাঁড়িয়ে কুবির গোঁসাই গেয়েছেন: ‘ অগণনায় বর্ণ লেখা / রাধাকৃষ্ণ, যিশুখ্রিস্ট খোদাআল্লা এক।’

গীতিকার জালালুদ্দিন বলেছেন: ‘ করিম কিষণ হরি হযরত লীলার ছলে ঘোরে/ ভাবে ডুবে খুঁজে দেখ/ ভেদাভদ কিছু নাই রে।’
লালনও ধর্মসমন্বয় চেতনায় শাণিত হয়ে উচ্চকণ্ঠে বলেছেন: ‘ সে তো ও নিষ্ঠুর কালা/ নাইকো তার বিচ্ছেদজ্বালা।/ আমার চক্ষু বুঁজে জপমালা/ লা-শারিকাল্লা সে কালা।’

এদের গানের ভাবৈশ্বর্য, ধ্বনিমাধুর্য ও যুক্তির বুনোট অনবদ্য। বাংলার লোকায়ত সাধকদের এই উদার ভেদবুদ্ধিহীন, মানবিক ভাবনা উচ্চবর্গীয় সমাজ মেনে নেয়নি। যেখানে হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতি ও সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে, সেখানেই সমাজের শক্তিমানরা রুষ্ট, ক্ষুব্ধ হয়েছে। কিন্তু ধর্ম ও সংস্কৃতির সমন্বয়বাদী স্রোতটি ঠেকাতে পারেনি। গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষ আজও ধর্ম মানার ক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় আচার-আচরণ বড় করে না-দেখে, আবেগকে বড় করে দেখেছে। বাংলার লোকসমাজের কাছে নাস্তিকতা বা ধর্মবিরোধিতা প্রাধান্য পায়নি, প্রাধান্য পেয়েছে মানবিক অধ্যাত্মবাদ। মওলানা-মৌলভী-পুরহিতদের চেয়ে এরা মান্য করে পির-মুরশিদ, গুরু- গোঁসাইদেরÑ যাঁরা শাস্ত্রের ধর্মের চেয়ে আত্মা ও অন্তরের ধর্মকে বড় করে দেখেন। রাজনৈতিক ভাঙাগড়া, ধর্মের নামে বাড়াবাড়ির মধ্যেও আজও নিরক্ষর, গ্রাম্য গায়কের হৃদয় ছোঁয়া গানে অখণ্ড মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা, সমন্বয়বাদী দর্শনের মর্মকথা শুনতে পাওয়া যায়:

‘ মরুতে এলেন মোহাম্মদ/ মথুরাতে গেলেন শ্যামÑ/ ইমাম খেলেন রসুল/ লীলা খেলেন ঘনশ্যাম,/ মা আয়েশা পাগল হলেন/ নবির প্রেমে মদিনায়/ বাঁশির সুরে পাগল হয়ে/ রাধা চলে যমুনায়/ একই মায়ের দুটি সন্তান/ হিন্দু আর মুসলমান/ একই কুলে জন্ম মোদের/ একই বুকে দুগ্ধপান।/ দেখে আয় ভাই হিন্দু মুসলিম/ মদিনা আর মথুরায়/ দুই রাখালে যুক্তি ক’রে/ গরু আর বকরি চরায়।’ (সুধীর চক্রবর্তী: ‘ব্রাত্য লোকায়ত লালন’। রচনা সমগ্র। কলকাতা বইমেলা ২০১০, পৃ: ৩৩০।)

এমন স্বচ্ছ, সহজ গান আমাদের আত্মাকে তৃপ্ত তো করে, সেই সাথে এই গানে আমরা খুঁজে পাই সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে বেঁচে থাকার সাহস ও মানুষকে ভালবাসার সহজ যুক্তি। মনের গহনে প্রশ্ন জাগে: এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, এই যুক্তি তারা কোথা থেকে পেলেন? এর উৎসই বা কী? বাংলার প্রকৃতির বিপুল ঐশ্বর্যই কী তাদের এই উদার মানবিক ভাবনার রস ও রসদ জুগিয়েছে? বাংলার ভূগোল কী বাঙালিকে ধর্মসহিষ্ণু করে তুলেছে? না কী তাদের জিজ্ঞাসু মন? হয়তো সেই কারণে লালন, দুদ্দু শাহ ও মদন বাউলের আমাদের অন্দর থেকে অন্তরে প্রবেশ করেছেন। আর এ কারণে বোধহয় পহেলা বৈশাখ, বর্ষাবরণ, নবান্ন উৎসব, পৌষ পার্বণ, বসন্ত উৎসব ইত্যাদি ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলি বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমান জোরেসোরেই উদযাপন করছে। মৌলভী-মওলানারা এগুলিকে হিন্দুয়ানি কৃত্য বলে ফতোয়া দিলেও জনমানুষ সেটা গ্রহণ করছে না।

সত্যি বলতে কি, মানুষকে প্রকৃতিলগ্ন হয়ে বেঁচে থাকতে হয়। প্রকৃতিময়তার মধ্যে তাকে পালন করতে ধর্মের নানাসব কৃত্যাচার। প্রকৃতির মধ্যেই সে তার ঈশ্বর আবিষ্কার করে। আল্লাহকে খোঁজে। বাঙালিকেও প্রকৃতির রূপ-অরূপের লীলার মধ্যে বাঁচতে হয়, ধর্ম পালন করতে হয়। নবান্ন বাঙালি মুসলমানের কাছে কেবলই একটি লোকজ উৎসব, কোনো ধর্মীয় কৃত্যাচার নয়। ঘট-লক্ষ্মীতে মুসলমান বিশ্বাস করে না, কিন্তু ধান-লক্ষ্মী তার মধ্যে এক ভিন্নমাত্রিক অনুভব জাগিয়ে তোলে। হেমন্তের একগুচ্ছ পাকা ধানের শীষ তার কাছে অর্ঘ্য দাবি করে, কারণ ভাত খেয়ে সে বেঁচে থাকে। জীবন ও অস্তিত্বের জন্যই বাঙালিকে ধর্মসহিষ্ণু, মানবিক ও সমন্বয়বাদী হতে হয়েছে। জীবন যেখানে মেলাতে চায় কিংবা মিলিয়ে রেখেছে, সেখানে ধর্মকে তো সহিষ্ণু হতেই হবে। যুক্তিবাবাদী-ধর্মনিষ্ঠ বাঙালির কাছে জীবনই সত্য, মৃত্যু নয়্। তার কাছে ‘এ দ্যুলোক মধুময়, মধুময় পৃথিবীর ধূলি। জীবনকে তাৎপর্যমণ্ডিত করতেই তার সকল সাধনা, সকল প্রয়াস। জীবনকে পত্র-পুষ্পে পুষ্পিত করতেই বাঙালি উদার, অসাম্প্রদায়িক ও সমন্বয়বাদী হয়েছে।

এস এম সুলতান একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন: ‘ হিন্দু মুসলমান সবাই বৈষ্ণব পদাবলী লিখত। কৃত্তিবাস, বিদ্যাপতি, আফজল খাঁ, মালাধর বসু- এরা সবাই রাজকবি। এঁরা বৈষ্ণব পদ লিখেছেন। মুসলমানরাও লিখেছে, মুসলমানদের ওই এক ইউসুফ-জুলেখা লেখা হয়েছে। এগুলো বেসিক্যালি সব সেক্যুলার বই। রামায়ণ ছিল কাব্য, ওটাকে ধর্মগ্রন্থ করেছে সামন্তপ্রভুরা, ওরাই সব ডিভিসন করেছে। .. বাঙালির কোনো অলি-দরবেশ নাই, তোমরা তো অলি হতে পারবে না, তাই আল্লাহ আল্লাহ করো। সুলতানরা সব শিখিয়ে দিল, হিন্দুদের বলল, সন্ন্যাস তোমাদের দ্বারা সম্ভব হবে না তাই তুমি হরিনাম জপ করো, জ্ঞান পাবে। এখন হরিনাম কী? ষোল নাম, বত্রিশ অক্ষর। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ—- হরে রাম হরে রাম। (রাম, কৃষ্ণ) সব বাংলার বাইরের, বাংলার সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক নাই। বাঙালি মূলত ত্যাগী, সংযমী, সত্যবাদী, অতিথিপরায়ণ। আমাদের মধ্যে অনেক বড়মাপের অ্যাবসোলিউট থিংকার তৈরি হয়েছে, সেক্যুলার থিংকার। কালিদাস, বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জয়দেব, তারপর ওই মধুসূদন, রবীন্দ্রসাথ, নজরুল। বিদ্যাসাগর আরেকজন বড় মানুষ। মসুসূদনের মেঘনাদ কাব্য, তিলোত্তমাসম্ভব, শর্মিষ্ঠা এগুলো রিলিজিয়াস মোটিফ নিয়ে লেখা হলেও ওগুলো আসলে অসাম্প্রদায়িক।’ (শাহাদুজ্জামান: ‘কথা পরম্পরা’। পাঠক সমাবেশ, ঢাকা। দ্বি-স, ফেব্রুয়ারি, ২০০৭। পৃ: ২৮)

লালনকেও বড় মাপের থিংকার এবং সর্বধর্মের মিলনসাধক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তিনিও সবাইকে বাঁচাতে, লড়তে ও মরতে চেয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল আমিন: লেখক ও লোকগবেষক, সহযোগী অধ্যাপক, মেহেরপুর সরকারি কলেজ, মেহেরপুর।