কুষ্টিয়ায় জেলা জামায়াতের কর্মী সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সব ধর্মের সব বর্ণের মানুষ মিলেমিশে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বসবাস করবে। সর্বক্ষেত্রে দেশাত্ববোধের মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে সচেষ্ট থাকবে।

তিনি বলেন, জনগণ একটি পরিবর্তনের জন্য জীবন দিয়েছে। তারা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বৈষম্য দূর করার জন্য জীবন দিয়েছে। অথচ সমাজ বৈষম্যে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। বিগত ১৭ বছরের জঞ্জালের একটিও এখনো যায়নি। কিন্তু কেন? স্বৈরাচার তো পালিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কেন মুক্ত হতে পারলাম না। এর জবাব ১৮ কোটি মানুষের সামনে আছে।

আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের ৩৫ হাজারের মতো সন্তান জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গিয়েছে, ৫শর উপরে দুটি চোখ হারিয়ে অন্ধ হয়ে গিয়েছে তারা এ বিশ্বের সৌন্দর্য আর চোখে দেখতে পারবে না। মায়ের মুখটা সন্তানের মুখ কিবাং প্রিয়তম স্ত্রীর মুখটাও আর চােখে দেখতে পারবে না। তাদের চোরেখর আলো নিভে গেছে।ন সাড়ে সাতশোর মতো এক চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকশ সন্তান মেরুদ্ন্ড অকেজো হয়ে গেছে যাদের পিঠে গুলি লেগেছিলো। কয়েক হাজার হয় হাত নয়তোবা পা হারিয়েছে। এতোগুলো মানুষের প্রতি লাল রক্তের প্রতি গাদ্দারী করা চলবে না। এ রক্তের আমানত রক্ষা করতে হবে এবং সম্মান দেখাতে হবে বলেও জানান তিনি।

দেশের পরবর্তী প্রজন্ম ও ছাত্রসমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ছাত্র সমাজকে কথা দিচ্ছি এমন শিক্ষা ব্যবস্থা হবে, তোমাদের কাগজের টু্করো নিয়ে দৌড়াতে হবে ন। লেখাপড়া শেষ করেই নিশ্চিত কর্মে যোগদানের ব্যবস্থা করা হবে।

আমাদের দল দখলবাজি-চাঁদাবাজি করে না উল্লেখ করে জামায়োতের এই আমির বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া হবে। দেশে দখলবাজি ও চাঁদাবাজি চলবে না। দখলবাজ, চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে নেতা-কর্মীদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। আমাদের দল দখলবাজি-চাঁদাবাজি করে না।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ার্দারের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য যশোর অঞ্চল পরিচালক মো. মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আল্লামা শামীম সাঈদী, জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।

শীতের কুয়াশাভেদ করে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা–কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন।




মেহেরপুরে মানবাধিকার সংগঠন মউক এর সাধারণ সভা

স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন মানব উন্নয়ন কেন্দ্রের “মউক” ৫৫ তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ৩ টার দিকে মানব উন্নয়ন কেন্দ্রের “মউক” হলরুমে এ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মউক এর নির্বাহী পরিষদের সভাপতি মোঃ ছায়ফুল ইসলাম। সভায় বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাহী প্রধান আশাদুজ্জামান সেলিম।

সভায় আগামী ৩ বছরের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়, মোঃ ছায়ফুল ইসলামকে সভাপতি ও আশাদুজ্জামান সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক পদে সদস্যদের সরাসরি প্রস্তাবে নির্বাচিত করা হয়।

সভায় বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনায় অংশগ্রহণ করেন পরিষদের সদস্য সাদ আহাম্মদ, মুরাদ হোসেন ও সানজিদা কাজল। সংস্থার বর্তমানে বিভিন্ন বাস্তবায়িত কর্মসূচি গুলি নিয়ে পর্যালোচনাসহ আগামীতে বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কর্মসুচি গ্রহন করা হয়। সাধারণ সভায় সংস্থার সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।




গাংনীতে হত্যাকাণ্ড, ২ যুবদল নেতা বহিষ্কার

গাংনী পৌর যুবদলের ১ নং ওয়ার্ডের সভাপতি আলমগীর হোসেনকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বিপ্লব ও ১ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি মফিকুল ইসলামকে তাদের দলীয় সকল পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে গাংনী পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুল ইসলাম ও সদস্য সচিব এনামুল হক স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিস্কারাদেশ দেন।

বহিস্কারাদেশে বলা হয়েছে, ১ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আলমগীর হোসেনকে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পৌর যুবদলের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রবিউল ইসলাম বিপ্লবকে ৪ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের পদসহ দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

অব্যাহতি প্রদানের নোটিশ মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, মেহেরপুর জেলা যুবদলের সভাপতি/সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সংগঠণ প্রেসক্লাবকে প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে গাংনী পৌর যুবদলের এক নং ওয়ার্ডের সভাপতি আলমগীর হোসেনকে হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রবিউল ইসলাম বিপ্লব, এক নম্বর ওয়ার্ড (বাঁশবাড়িয়া) যুবদলের সাবেক সভাপতি মফিকুল ইসলাম ও কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীর হোসেনকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২) সিপিসি-৩, মেহেরপুর ক্যাম্পের সদস্যরা গ্রেফতার করেন। গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে নিলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার মঈন উদ্দীনের ছেলে এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আলমগীর হোসেন(৩৮) কে গলাকেটে হত্যা করে সহড়াবাড়িয়া ইছাখালি মাঠের একটি গাছের নিচে ফেলে রাখে।

নিহত আলমগীর হোসেনের কাছে একই গ্রামের সাবেক যুবদল সভাপতি মোঃ মফিকুল ইসলামের ২ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল। প্রায় ৪ বছর আগে আলমগীর হোসেন ঘাতক মফিকুলের কাছ থেকে এই টাকা ধার নেন। নিহত আলমগীর হোসেন প্রায় দেড় বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (দুবাই) চলে যান। প্রায় ২ মাস পূর্বে ভিকটিম দেশে ফেরত আসেন। এই পাওনা টাকার প্রতিশোধ নিতেই মফিকুল ইসলাম তার বন্ধু যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম বিপ্লব ও কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন মিলে তাকে টাকা ধার দেওয়ার নাম করে সহড়বাড়িয়া-কামারখালি মাঠের মধ্যে নিয়ে কুপিেেয় ও জবাই করে হত্যা করে।

এঘটনায় নিহতের পিতা মইন উদ্দীন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।




এআই ডেটা সেন্টার নির্মাণে ৮ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ মাইক্রোসফটের

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল প্রশিক্ষণে এবং এআই ক্লাউডভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনগুলো উন্নয়নের দিকে নজর দিচ্ছে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট।

এ কারণে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এআই ডেটা সেন্টার নির্মাণের জন্য ৮০ বিলিয়ন ডলার বা ৮ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে কোম্পানিটি। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) এক ব্লগ পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছে মাইক্রোসফট।

২০২২ সালে ওপেন এআই চ্যাটজিপিটি চালু করার পর এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কারণ, বিভিন্ন খাতের কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ও সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করতে চাচ্ছে।

এআই প্রযুক্তি পরিচালনার জন্য অনেক বেশি কম্পিউটিং শক্তির প্রয়োজন। কারণ, এআই মডেলগুলোকে কাজ করাতে অনেক বড় তথ্য প্রক্রিয়া করতে হয়। এর জন্য বিশেষ ধরনের ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন, যেখানে হাজার হাজার চিপ একত্রে কাজ করতে পারে।এই চিপগুলো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শক্তিশালী গ্রুপ (ক্লাস্টার) তৈরি করে, যা এআই প্রযুক্তিকে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে চালাতে সাহায্য করে।

এআই অবকাঠামো উন্নত করতে এবং তার ডেটা সেন্টার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে ইতিমধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে মাইক্রোসফট। বিশ্লেষকেরা আশা করছেন, মাইক্রোসফটের ২০২৫ অর্থবছরের মূলধন ব্যয় ৮৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার (পুঁজি লিজসহ) হবে।

কোম্পানির ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (২০২৪ সালে জুলাই-সেপ্টেম্বর) মূলধন ব্যয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। ওপেন এআইয়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এবং একচেটিয়া অংশীদারত্বের কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রতিযোগিতায় মাইক্রোসফটকে বড় প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে একটি শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ব্লগ পোস্টে মাইক্রোসফটের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ জানিয়েছেন, মাইক্রোসফটের এই নতুন বিনিয়োগের অর্ধেকেরও বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করা হবে।




মেহেরপুরে ভৈরব নদীতে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার

মেহেরপুরে ভৈরব নদী থেকে সদ্য ভুমিষ্ট এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  শনিবার দুপুর ২ টায় সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের হিতিমপাড়া এলাকার ভৈরব নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভৈরব নদীতে সদ্য ভুমিষ্ট এক নবজাতকের মরদেহ ভাসতে দেখে গ্রামের লোকজন উদ্ধার করে নদীপাড়ে নিয়ে আসে এরপর পুলিশকে খবর দেয়া হয়। তাদের ধারনা সদ্য ভুমিষ্ট এক নবজাতক অবৈধ সন্তান লোকলজ্জার ভয়ে কেউ নদীতে ফেলে দিতে পারে।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, সদ্য ভুমিষ্ট এক নবজাতকের মরদেহ বৈভর নদীর পাড়ে রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করা জন্য মর্গে নেয়া হয়েছে। এঘটনা রহস্য উৎঘটনে কাজ করছে পুলিশ।




কলা বিক্রির টাকায় অক্সিজেন, অনুদানের টাকায় হয় বেতন

নানামুখী সমস্যা নিয়েও শিশুদের সেবা দিয়ে চলেছে ঝিনাইদহের ২৫ শয্যার সরকারি শিশু হাসপাতালটি। অর্থের অভাবে হাসপাতাল চত্বরে আবাদ করা কলা বিক্রির টাকা ও অনুদানে চলে চিকিৎসাসেবা। সরকারি উল্লেখযোগ্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় চিকিৎসা সেবায় প্রয়োজনীয় যেকোনো জিনিসও কিনতে হয় অনুদানের টাকায়।

সরকারি এ শিশু হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ আছে ৫টি। আছেন ৩ জন। ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, রেডিওগ্রাফি, প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও স্টোরকিপারের পদও খালি। এছাড়া ২১ জন নার্স পদের বিপরীতে আছেন ১৭ জন। তবে এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয়, আয়া, মালি, নিরাপত্তাপ্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কোনো পদই নেই। তারপরও এসব পদে যে ক’জন আছেন তাদের বেতন হয় অনুদানের টাকায়।

কিছু ব্যবসায়ী, কয়েকজন চিকিৎসক এবং ডা. আলী হাসান ফরিদের একাধিক বন্ধুর সহায়তায় শয্যা, যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। ঝিনাইদহের জাহেদি ফাউন্ডেশন নিয়মিত সহায়তা করে। এছাড়া ১৫ জন হৃদয়বান ব্যক্তি কিছু সহায়তা দেন। এরপরও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অক্সিজেন ও ওষুধের যে চাহিদা তার অর্ধেকও বরাদ্দ নেই সরকারের।

২০০৫ সালের ৭ মে ঝিনাইদহ জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকায় ২৫ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি এ শিশু হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে বছরের পর বছর বন্ধ থাকে হাসপাতালটি। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালটি তার সেবা কার্যক্রম শুরু করে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর হাসপাতালে কোনো সরঞ্জাম না থাকায় কনসালট্যান্ট আলী হাসান ফরিদ তার বাসা থেকে ব্যক্তিগত কম্পিউটার নিয়ে আসেন। ওই কম্পিউটার হাসপাতালের কাজে ব্যবহার করেন এবং শিশুদের চিকিৎসা ও মায়েদের পরামর্শ দেন। এভাবে আস্তে আস্তে হাসপাতালটি আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করেছে। মানুষ এখন এ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় আস্থাও রাখেন। কিন্তু সিভিল সার্জনের কার্যালয় বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতালটির ওপর কোনো নজর নেই। যে কারণে হাসপাতালের কর্মকর্তারা বারবার অনুরোধ করেও জনবল, যন্ত্রপাতি ও অর্থসহায়তা পান না।

সরেজমিন শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রথমে বড় একটি প্রবেশ গেট। ভেতরে প্রবেশ করলে চারপাশে নানা ধরনের ফুলের বাগান। এর সামনে লাল ইটের দোতলা ভবন। হাসপাতাল চত্বরটি খুবই পরিপাটি করে সাজানো। ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেলো, পর্যাপ্ত শয্যা আছে। শয্যাগুলোর গায়ে লেখা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম সেগুলো যারা দান করেছেন।

ঝিনাইদহ সদরের নতুনবাড়ি এলাকা থেকে আসা হীরা খাতুন বলেন, এ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়। আমার বড় ছেলে এখান থেকে সুস্থ হয়েছে। এখন ছোট ছেলে অসুস্থ, তাই এখানে এসেছি। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখানে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাইরে থেকে পরীক্ষা করে ডাক্তারকে দেখাতে দুই দিন দেরি হয়ে গেলো।
কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা নাসিমা বেগম বলেন, আমার ১৬ মাসের সন্তানের শ্বাসকষ্ট হলে প্রথম উপজেলা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এখানে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে এসে সন্তান অনেকটা ভালো আছে। হাসপাতালটি খুবই সুন্দর, সেবার মানও ভালো।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন পর চালু হলেও নানা সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। নেই পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য কোনো ল্যাব। যে কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও বাড়তি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। তাই দ্রুত হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবি রোগীর স্বজনদের।

কনসালট্যান্ট আলী হাসান ফরিদ বলেন, হাসপাতালে নানা সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের জন্য বছরজুড়ে কৃত্রিম অক্সিজেনের দরকার হয়। এতে বছরে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার অক্সিজেন লাগে। সরকারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পাওয়া যায়। হাসপাতালে পড়ে থাকা তিন বিঘার মতো জমিতে কলা চাষ করা হয়। কলা বিক্রি করে গত বছর আশি হাজার টাকার অক্সিজেন কেনা হয়েছে। এবছরও তাই করতে হবে। এছাড়া হাসপাতালে রাতের নিরাপত্তার জন্য লাইট ও অন্যান্য জিনিসপত্র কলা বিক্রির টাকা দিয়েই কিনতে হয়। এছাড়া ওষুধ, অক্সিজেন এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হয় মানুষের অনুদানের টাকায়। জনবল ও অন্যান্য সহযোগিতার জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখায় অনেকবার আবেদন জানিয়েছি, কিন্তু কাজ হয়নি।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালটিতে সাধারণত রোগী থাকে ৬০ থেকে ৭০ জন। আর ছোট বাচ্চাগুলোর সবারই অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আমাদের শিশু হাসপাতালে সরকার থেকে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় তা যথার্থ না। ২৫ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবলের যে সংকট সে বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতি মাসেই আমরা চিঠি পাঠাচ্ছি। বড় কোনো নিয়োগ না হলে হয়ত ডাক্তারের সংকট সমাধান করা যাবে না। হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার সংকট ও সরঞ্জামাদি সংকটের সমাধান করার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।




শীতে যেভাবে মেকআপ করলে ঠোঁট মসৃণ ও আকর্ষণ দেখাবে

অতিরিক্ত ধূমপান, আর কফির প্রতি অত্যধিক আসক্তি ছাড়াও বিভিন্ন কারণে ঠোঁট কালচে হয়ে যেতে পারে। আর এ জন্য নিয়মিত ঠোঁটে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাই ঠোঁটের কালচে দাগছোপ দূর করতে হলে নিয়মিত পরিচর্যা করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে একদিনই এসব দাগ উঠবে না। ধীরে ধীরে তা নিখুঁত ও মসৃণ হবে। যদি নরম ও আকর্ষণীয় ঠোঁট পেতে চান, তা হলে মেকআপ দিয়েই খুঁত ঢাকতে হবে। এবার কীভাবে ঠোঁটের রূপটান করবেন তা জেনে নিন।

ঠোঁটের রূপটান টিপস

ঠোঁটে মেকআপের আগে লিপ স্ক্রাব ও নরম ব্রাশ দিয়ে ঠোঁট ‘এক্সফোলিয়েট’ করে নিন। এবার নরম তোয়ালে দিয়ে ঠোঁট মুছে ফেলুন। এ ছাড়া মেকআপ করার আগে ঠোঁটে কনসিলার লাগান। কনসিলার যে কোনো ধরনের দাগছোপ ঢেকে দিতে পারে। আঙুল বা ব্রাশ দিয়ে ঠোঁটে কনসিলার লাগিয়ে নিন।

আবার ঠোঁটের কালচে দাগ ঢাকতে গাঢ় রঙের লিপস্টিকই বেছে নেওয়া ভালো। এতে ঠোঁটের কালচে ভাব সহজে বোঝা যাবে না। আবার যদি ন্যুড মেকআপ করতে চান, তা হলে লিপস্টিক লাগানোর অন্তত ১৫ মিনিট আগে থেকে লিপ বাম লাগাতে শুরু করুন। সানস্ক্রিন সমৃদ্ধ লিপ বাম হলেই ভালো হয়।

এর পর কনসিলার লাগিয়ে সামান্য ফাউন্ডেশন ঠোঁটে বুলিয়ে নিন। তারপর লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট আউটলাইন করুন। লিপ লাইনার কখনই লিপস্টিকের রঙ অনুযায়ী বাছবেন না। নিজের ঠোঁটের রঙ অনুযায়ী বাছুন।

লিপস্টিক টিউব থেকে ব্রাশের সাহায্যে ঠোঁটে ভরাট করে লিপস্টিক লাগান। ব্লটিং পেপার দিয়ে এই টিউব কালার শুষে নিয়ে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার পাফ করে নিন। এর ওপর লিপস্টিকের দ্বিতীয় কোট লাগান। যদি ঠোঁট খুব পাতলা হয়, তবে গাঢ় রঙের লিপস্টিক এড়িয়ে চলুন। বরং উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক বেছে নিন।

সূত্র: যুগান্তর




মেহেরপুরে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি, লোকসানে কৃষক

মেহেরপুরে উৎপাদিত সবজির দাম ও ক্রেতা না থাকায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছ ফুলকপি। জমি পরিষ্কার করতে ফুলকপি এখন গো খাদ্য হিসেবে নিচ্ছেন স্থানীয়রা ।

কৃষকরা জমি পরিষ্কার করে অন্য আবাদ করতে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে শীতকালীন ফুলকপি চাষ করেছিলেন চাষিরা। কিন্ত এখন উৎপাদন খরচ মিটছে না। এতে লোকসানে ঋনের বোঝা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন যাচ্ছে মেহেরপুরের ফুলকপির চাষিদের।

জানা গেছে, স্বল্প খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ার আশা নিয়ে রোপন করা ফুলকপির এখন লোকসানে ফেলেছে চাষিদের।
কৃষকরা বলছেন, প্রতি বছর শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপির চাহিদা থাকে। চাহিদা থাকায় দামও ভালো পান তারা। লাভের আশায় চলতি মৌসুমেও অনেকেই ফুলকপির চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু এ বছর নানান জাতের সবজিতে বাজার ভরে যাওয়ায় উৎপাদন ভালো হলেও মুনাফার অংক শূন্যের ঘরে।

প্রতিটি কপির উৎপাদন খরচ পড়ে ৭/৮ টাকা। সেখানে বর্তমান বাজারে চাষিদের ক্ষেতে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩/৫ টাকায়। ফলে উৎপাদন খরচের অর্ধেকও উঠছে না। এছাড়া চাষিদের পারিশ্রমিকও প্রায় শূন্য। যারা ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেছেন তারা তা কীভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে পড়েছেন দুর্ভাবনায়।

মেহেরপুরের সাহারবাটি সবজি গ্রাম নামে খ্যাত। সেখানেও কপির চাষ করেছেন চাষিরা। এছাড়া সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়ও প্রচুর চাষাবাদ হয় ফুলকপি ও বাঁধাকপির। এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে মেহেরপুরের চাষিদের উৎপাদিত ফুলকপি রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়। জেলার চাষিরা ক্ষেতেই এসব ফসল বিক্রি করেন পাইকারদের কাছে। তারা ট্রাক বোঝাই করে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। মেহেরপুর থেকে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক ট্রাক ভর্তি হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হতো। অথচ এবছর ট্রাক ভাড়া না উঠায় দুএকটা করে ট্রাক যাচ্ছে ঢাকা,চট্রোগ্রাম, বরিশাল, ফেনি ও সিলেট জেলায়।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে জেলায় এবছর ফুলকপির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১২০ হেক্টর, বাঁধাকপির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬০ হেক্টর এর মধ্যে গাংনী উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে ১৬০ হেক্টর ফুলকপি এবং ১৫৫ হেক্টর বাঁধাকপির আবাদ হয়েছে।

গাংনীর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা গত বছর ৬ বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করে বিঘাপ্রতি লাভ পেয়েছিলাম সাড়ে তিন লক্ষ টাকা লাভ হয়েছিল। সে আশায় এবার ১১ বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছিলাম। সময়মত বিক্র করতে না পারায় জমিতেই সব কপি নস্ট হয়ে গেছে।

ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক রেজাউল হক, নওপাড়া গ্রামের কৃষক লাভলু বলেন, দুই বিঘা জমিতে শীতকালীন ফুলকপির আবাদ করেছিলাম। একেকটি কপির ওজন হয়েছিল দেড় থেকে দুই কেজি ওজন। ক্রেতা নেই তাই জমি ছেড়ে চলে এসেছি। অনেকেই গরু ছাগলের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। সার ও কীটনাশকের দোকানর বকেয়া, জমির লিজ খরচের টাকা নিয়ে খুব বিপদে আছি।

সাহারবাটি গ্রামের কৃষক শিরাজুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছিলাম।৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। দুই বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব টাকায় লোকসান। পরে জমি পরিষ্কার করতে শ্রমিক খরচ হয়েছে। কলোনিপাড়ার কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, দেড়বিঘা জমির ফুলকপি বিক্রি করতে না পেরে জমিতে নস্ট হচ্ছে। নেয়ার লোক নাই,খাওয়ারও মানুষ নাই।

সাহারবাটির আজিজুল বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। এ জমিতে রোপণ করা ৫ হাজার চারায় উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রতি পিস ৭/৮ টাকা। এখন ফুলকপির দাম প্রতি পিস ক্ষেতে বিক্রি করতে হচ্ছে ৩/৪ টাকা দামে। এটা এমন ফসল, পরিপক্ক হলে আর ক্ষেতে রাখা যায় না। রাখলে ক্ষেতেই নষ্ট হয়। উৎপাদন খরচই পাচ্ছি না। এর ওপর ঋণের বোঝা রয়েছে। ঋণ পরিশোধ করব কী দিয়ে, আবার পরিবারের খরচসহ আগামীতে ফসল উৎপাদনের টাকাও রইল না। বেশি দামে বীজ-সার কিনে কম দামে ফসল বিক্রি করলে তো মূলধন হারিয়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা যে দামে কফি কিনে ঢাকা ও চট্রোগ্রামে নিয়ে যাচ্ছি তাতে ভাড়ার টাকা হচ্ছেনা। দুবার লোকসান দিতে হয়েছে। শ্রমিক সর্দার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতিবছর এসময় ট্রাক লোড করে ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় করতাম।এবছর কাজ করছি কিন্ত কফি চাষিরা শ্রমিক খরচ দিতে পারছেনা। দুএকটা ট্রাক লোড করছি অনেক গৃহস্থ ঘরে থেকে টাকা পরিশোধ করছেন। এদিকে মেহেরপুরের কৃষকদের হতাশা দেখে “স্বপ্ন’ নামের একটি সংগঠন ইতোমধ্যে কৃষকদের সাথে সরাসরি ১০ হাজার পিচ ফুলকপি কিনেছেন ৫ টাকা পিচ দরে।

মেহেরপুর সদর উপজেলা হরিরামপুরের ফুলকপি চাষি রাকিব হোসেন জানান, এ বছর আমি চার বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। একবিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করতে খরচ হয়েতে ২৫ হাজার টাকা। সাথে রয়েছে শ্রমিক ও পরিবহন খরচ। লাভের মুখ দেখছি না উল্টো জমিতে ফুলকপি নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল । সেখানে আশার মুখ দেখালো সুপারশপ স্বপ্ন । আমাদের থেকে ১০ হাজার পিস ফুলকপি কিনেছেন তারা। তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।

স্বপ্ন’র মেহেরপুর আউটলেট অপারেশন ম্যানেজার মাজেদুল হক বলেন, আমরা ফুলকপি চাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে। আমরা মেহেরপুরে বেশকিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জেনে ফুলকপি কিনেছি ন্যায্যমূল্যে। অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধনের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এই চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।

জেলা কৃষি বিপনন অনুসন্ধান কর্মকর্তা জিব্রাইল হোসেন জানান, বর্তমানে বাজারে ফুলকপির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এই সবজির চাহিদা কমে গেছে। যার কারণে কৃষকরা লোকসানে পড়েছে। লোকসান থেকে কিছুটা স্বস্তি দিতে বিভিন্ন ব্যাবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে কৃষকদের সাথে সংযোগ করে দিচ্ছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

‘স্বপ্ন’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির এ প্রসঙ্গে জানান, কৃষকের পাশে শুরু থেকেই আছি। তাঁদের মুখে হাসি সবসময়ই দেখতে চাই। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ‘স্বপ্ন’।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃঞ্চ হালদার বলেন, প্রতিবছর এ মৌসুমে মেহেরপুরে ব্যাপক ভাবে বাঁধাকপি ও ফুলকপির আবাদ হয়। হঠাৎ দরপতন হয়েছে। স্বপ্নকে এমন উদ্যোগ নেবার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি । সেই সাথে বাইরের বাজারে পাঠানোর চেস্টা করছি।




কুষ্টিয়ায় গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা

কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় খেজুর রস সংগ্রহ ও রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতের শুরু থেকেই বাড়ছে রসের চাহিদা। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড়ের চাহিদাও অনেক।

শীত মৌসুমে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। পাশাপাশি খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান পিঠাপুলি। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে গাছিদের।

জেলার বাইরের গাছিরাও এসে কুষ্টিয়ায় রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছে। সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে এসব গাছিদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা।

আবহমান গ্রাম বাংলায় শীতের সকালে সূর্য মিটমিট করে আলো ছড়ানোর আগেই আমরা বেরিয়ে পড়ি রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরির দৃশ্য দেখতে। খেজুরের রস আহরণ শেষে হাঁড়িতে সংগৃহীত রস নিয়ে বড় চুলার কাছে ছুটে আসেন গাছীরা।এরপর টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে এসব রস শুকিয়ে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার ব্যাবধানে জ্বালানোর ফলে তৈরি হয় লাল গুড়।

গাছিরা জানায়, প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির কলস বেঁধে রাখা হয় রসের জন্য। এরপর ভোর থেকেই ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। সকালের দিকে কেউবা রত কিনে নিয়ে যায়। আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন তারা।

তবে ভেজালের ভিড়ে আসল খেজুরের গুড় পাওয়ায় যেন দায় হয়ে পড়েছে। এতোকিছুর ভিড়ের খাঁটি গুড়ের সন্ধান মেলে কেবল সেসব গাছীদের কাছ থেকে খেজুর গুড় সংগ্রহ করার ফলে।

জানা গেছে, কুষ্টিয়ার সদর, দৌলতপুর এবং মিরপুর উপজেলার গ্রামগুলোতে খেজুর গাছের সংখ্য বেশি। এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা। আবার বাড়তি লাভের আশায় এসব এলাকায় আসছেন অন্য জেলার গাছিরাও। খেজুর গুড় তৈরির পেশায় এখন বাড়তি আয়ে খুশি তারা।

কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়কের ধারে প্রায় দুইশ খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় শীতের ৪ মাসের জন্য খেজুর গাছগুলো লিজ নেওয়া হয়েছে। এসব গাছ থেকে ৪ জন মিলে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। এছাড়াও খেজুরের রসও বিক্রি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় বিশ বছর ধরে এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এরপর এসব রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করি।’

রাজশাহীর বাঘা থেকে থেকে আসা দুলাল জানান, এবছর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকায় আড়াইশ গাছ লিজ নিয়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকে। তবে তার উৎপাদিত এই গুড় বিক্রিতে কোন ঝামেলা নেই। সকালের দিকে ক্রেতারা এসে নগদ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকার কিছু খারাপ মানুষ থাকে তারা রাতের আঁধারে রস খেয়ে আবার হাড়ি ভেঙে ফেলে রাখে। এতে করে আমাদের বছরে এক থেকে দেড়শ হাড়ি আবার নতুন করে কিনতে হয়।

নাটোরর সিংড়া থেকে আসা আলাউদ্দিন নামে আরেক গাছি জানান, শীত মৌসুমের শুরু থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। শীতের প্রায় চার মাস রস সংগ্রহ করা যায়। এই রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাই। তিনি আরও বলেন, শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে।

স্থানীয় খেজুর রস ক্রেতা শিমুল জানান, ‘শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এছাড়াও জ্বাল দেওয়া রসের তৈরি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার অতুলনীয়।’ এখান থেকে রস কিনে বোতলে করে বাড়ির জন্য নিয়ে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি।

সাইদুল বারর টুটুল নামে একজন জানান, খাঁটি গুড় পাওয়ার আশায় এখানে আসলাম। ভোরে খেজুরের রস খেয়েছি। আবার বসে থেকে রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে কিনে নিলাম। আসলে বর্তমানে ভেজালের কারনে খাঁটি জিনিসের প্রাপ্যতা একটু মুশকিল হয়ে গেছে। তাই এখানে এসে গুড় কিনতে পেরে ভালো লাগছে।

অনলাইনে খেজুরের খাঁটি গুড় বিক্রি করেন কৃষকের বন্ধু এসএম জামাল। তিনি জানান, খেজুরের বহুল ব্যবহার নিয়ে বর্ণনার শেষ নেই। রস দিয়ে নানা রকম পিঠা, পায়েস, গুড়, কুটির শিল্প, আয় ও কর্মসংস্থান হয়। সার্বিক বিবেচনায় খেজুর সমধিক গুরুত্ববহ একটি প্রজাতি। মানুষ খেজুরের খাঁটি গুড় পেতে চাই। কিন্তু অনেক সময় দূস্কর হয়ে পড়ে। তবে আমি ভোর থেকে গাছীদের রস সংগ্রহ করার পর।তা জ্বালিয়ে তৈরী করা গুড় বিভিন্ন ভোক্তাদের কাছে পাঠিয়ে থাকি।

কুষ্টিয়ার পরিবেশবিদ গৌতম কুমার বলেন, খেজুর পরিবেশবান্ধব, স্থানসাশ্রয়ী একটি বৃক্ষ প্রজাতি। এ প্রজাতি দুর্যোগ প্রতিরোধী বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। খেজুর রস ও গুড় বিক্রি করে খামারির আর্থিক লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত বেশ সুপ্রাচীন। গ্রামীণ অর্থনীতি এবং মৌসুমি কর্মসংস্থানে খেজুর গাছের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে বাংলাদেশের সর্বত্রই খেজুর রস, খেজুর গুড় দারিদ্র্য বিমোচনসহ বাঙালি সংস্কৃতিতে রসঘন আমেজ লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের মাটি ও কোমল প্রকৃতি খেজুর গাছ বেড়ে ওঠার জন্য বেশ উপযোগী। রাস্তা, বাঁধ, পুকুর পাড়, খেতের আইল এবং আবাদি জমিতে এ বৃক্ষ বেশ ভালো জন্মে।




বসুন্ধরা গ্রুপে চাকরির সুযোগ

লোকবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বসুন্ধরা। প্রতিষ্ঠানটির পেপার মিলস বিভাগ জুনিয়র টেকনিশিয়ান/টেকনিশিয়ান (ইনস্ট্রুমেন্ট) পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে। আগামী ০৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী নানা সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

এক নজরে বসুন্ধরা গ্রুপের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

প্রতিষ্ঠানের নাম : বসুন্ধরা গ্রুপ

চাকরির ধরন : বেসরকারি চাকরি

প্রকাশের তারিখ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পদ ও লোকবল : নির্ধারিত নয়

আবেদন করার মাধ্যম : অনলাইন

আবেদন শুরুর তারিখ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আবেদনের শেষ তারিখ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫

অফিশিয়াল ওয়েবসাইট : https://www.bashundharagroup.com

আবেদন করার লিংক : অফিশিয়াল নোটিশের নিচে

প্রতিষ্ঠানের নাম : বসুন্ধরা গ্রুপ

পদের নাম : জুনিয়র টেকনিশিয়ান/টেকনিশিয়ান (ইনস্ট্রুমেন্ট)

বিভাগ : পেপার মিলস

পদসংখ্যা : নির্ধারিত নয়

শিক্ষাগত যোগ্যতা : এসএসসি/এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

অন্য যোগ্যতা : ইন্সট্রুমেন্টেশন কাজের দক্ষতা

অভিজ্ঞতা : কমপক্ষে ২ থেকে ৫ বছর

চাকরির ধরন : ফুলটাইম

কর্মক্ষেত্র : অফিসে

প্রার্থীর ধরন : শুধু পুরুষ

বয়সসীমা : কমপক্ষে ২৫ বছর

কর্মস্থল : নারায়ণগঞ্জ

বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে

অন্য সুবিধা : মোবাইল বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, ভ্রমণ ভাতা, দুপুরের খাবারের সুবিধা, প্রতি বছর বেতন পর্যালোচনা, বছরে ২টি উৎসব বোনাস, পিক অ্যান্ড ড্রপ সুবিধাসহ কোম্পানির নীতিমালা অনুযায়ী আরো নানা সুবিধা।

আবেদন যেভাবে : আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সূত্র: কালবেলা