কোটচাঁদপুরে মৎস্যজীবীদের উপদেষ্টা বরাবর খোলা চিঠি

ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে বাঁওড়সহ দেশব্যাপী সকল জলমহালে মৎস্যজীবী জেলেদের সমাজভিত্তিক সমবায় মালিকানা প্রতিষ্ঠার ৪ দফা দাবিতে বাংলাদেশ বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যেগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর বলুহর বাসস্ট্যান্ডে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মৎস্যজীবী জেলে জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা শত শত নারী পুরুষ এই বিক্ষোভে অংশগ্রহন করে। মিছিলে অংশগ্রহনকারীরা দাবি-দাওয়াসহকারে ফেস্টুন হাতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। উপজেলার বলুহর বাসস্ট্যান্ডে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নির্মল হালদারের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব সুজন বিপ্লবের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আন্দোলনের উপদেষ্টা বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, ক্ষেতমজুর সমিতির ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি কাজী ফারুক, বাঁওড় আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বাসুদেব বিশ্বাস, বাঁওড় আন্দোলন সংগঠক এসএম চন্দন প্রমুখ।




“জল যার, জলা তার” এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করব

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ সময় তিনি বাওড়পাড়ের হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাঁদের দুঃখ–দুর্দশার কথা শোনেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে তিনি বলুহর বাওড় পরিদর্শনে যান। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এতে আরও বক্তব্য দেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান এবং মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতের আমির তাজুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি এস.কে.এম. সালাউদ্দিন বুলবুল সিডল, প্রগতিশীল নাগরিক সমাজের সভাপতি শরিফুজ্জামান আগা খান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সংগঠক হৃদয় হাসান।

সভায় হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, শত বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা এই বাওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু বর্তমান জলমহাল নীতিতে পরিবর্তন এনে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে প্রভাবশালী অমৎস্যজীবীদের হাতে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। তাঁরা জানান, এসব ইজারাদার বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাওড়ে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক ব্যবহার করছেন, যা পরিবেশ ও মাছের স্বাভাবিক প্রজননব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।

মৎস্যজীবী নির্মল হালদার বলেন, “বাওড় এখন আমাদের জন্য নিষিদ্ধ। জীবিকা নেই, কর্ম নেই, পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে।”

বক্তারা বলেন, “জাল যার, জল তার” এই প্রবাদ শুধু মুখের কথা নয়; এর বাস্তবায়ন জরুরি। তাঁরা দেশের সব বাওড়ের বর্তমান ইজারা বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বণ্টনের দাবি জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, “জল যার, জলা তার এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। এই প্রজন্মই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাওড়ের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলব। পরিবেশ রক্ষা ও মৎস্যজীবীদের জীবনধারা টিকিয়ে রাখতে একটি সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।”




মেহেরপুরের ময়ামারি স: প্রা: বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরিকল্পনা সভা

মেহেরপুরের ময়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে এক বিদ্যালয়ভিত্তিক বার্ষিক পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ময়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের সহযোগিতায় মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মউক) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ আরিফ হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মউক) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোছা: কাজল রেখা।
তিনি বিগত এক বছরের সার্বিক কার্যক্রমের অগ্রগতি, অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণে আগ্রহ সৃষ্টি, ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষক-অভিভাবক সহযোগিতা এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিক-নির্দেশনা দেন।

সভায় আরও আলোচনা হয় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পাঠদান পদ্ধতির আধুনিকায়ন এবং অভিভাবক সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে। এসব বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ওয়াচ গ্রুপের সদস্য ও সমাজসেবক আব্দুর রকিব, মোঃ শহিদুল্লাহ, পিটিএ সদস্য মোঃ মিল্লাত হোসেন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ হোসনে আরা।

সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, “বিদ্যালয়ের উন্নয়ন শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এর জন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং একটি বাস্তবভিত্তিক বাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়।




মুজিবনগরে দুই দিনের ব্যবধানে আরও ৩০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ (ভিডিও)

মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে দুই দিনের ব্যবধানে আরও ৩০ জন বাংলাদেশি নারী ও শিশুকে ঠেলে (পুশব্যাক) দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

মঙ্গলবার ভোররাতে মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়।

তারা সীমান্ত পার হয়ে উপজেলার কেদারগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করলে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

পুশব্যাক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার টগরপাড়া গ্রামের আজারুলের ছেলে মোহাম্মদ বজলুর (৪০), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৪), মেয়ে মর্জিনা খাতুন (৯), মোছা মিম (৪), ছেলে মোহাম্মদ রাসেল (২১);
একই জেলার ফুলবাড়ী থানার নগরাজপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে আলিমুদ্দিন (৫০), আলিমুদ্দিনের ছেলে আতিকুর (৩০), আব্দুল আলীর মেয়ে আমিনা খাতুন, মমতাজের মেয়ে মনিরা খাতুন (৪০), হুজুর আলীর মেয়ে হালিমা (১৮), আতিকুরের মেয়ে হামিমা (৩);
নাগেশ্বরী থানার বালাসিপাড়া গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে ইচা আলী, তার স্ত্রী আকলিমা খাতুন, ছেলে ইসমাইল (৮), ইব্রাহিম (১৫), মেয়ে ইসমি (৩), শহিদুল ইসলামের মেয়ে সুমনা খাতুন (১৭); ফুলবাড়ী থানার নগরাজপুর গ্রামের হারুনের স্ত্রী ববিতা খাতুন (১৫), ছেলে ওবায়দুর (৭ মাস); ধর্মপুর গ্রামের কিতাব আলীর মেয়ে কল্পনা বেগম (২৭), অজয়টারি গ্রামের আমিনুরের মেয়ে ইয়াসমিন (২০), আতিকুলের ছেলে ইয়ানুর (২), ইয়াসিন (৫), মেয়ে ফাতেমা (১);
ফুলবাড়ী উপজেলার ভোগারকুটি গ্রামের হুজুর আলীর ছেলে মনির হোসেন, মেয়ে আদরি (২), ছেলে মনির হোসেন (৭); ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিয়াবাড়ী গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে শাহানুর (২৯), নুর ইসলাম (৯); বালাসিপাড়া ডাঙ্গা গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে আরিফ (১৯)।

আটককৃতরা জানান, তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে তারা ভারতে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, আটককৃতরা কেদারগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করে থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার নাজমুল আহসান জানান, বিএসএফ যে ব্যক্তিদের ঠেলে দিয়েছে, তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। তাদের অধিকাংশই অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন।

বিএসএফ তাদের আটক করে মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের পুলিশে সোপর্দ করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার ভোরে একই সীমান্ত এলাকা দিয়ে আরও ১৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুশব্যাক করেছিল বিএসএফ।




চুয়াডাঙ্গায় সার ডিলারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের কৃষকদের উদ্যোগে বিতর্কিত সার ডিলার আকবর আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর এবং উপজেলা কৃষি অফিস প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শতাধিক কৃষক অভিযোগ করেন, বিসিআইসির সার ডিলার আকবর আলী দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত সার সরবরাহে অনিয়ম, অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি এবং প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের মাঝে সার বিতরণসহ নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ফলে কৃষকরা তাদের মৌসুমি চাষাবাদে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কৃষক মো. সোহাগ হোসেন (৬০) জানান, “সরকার নির্ধারিত ১৩৫০ টাকার টিএসপি সার আমাদের ১৫০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও সব ধরনের সার অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আবার অনেক সময় সারের যোগানই থাকে না। এতে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তেমনি ফসল উৎপাদনেও বিঘ্ন ঘটছে।”

বেগমপুর ইউনিয়নের কৃষক আরিফ (৩২) বলেন, “ডিলার আকবর আলীর অবস্থান থাকার কথা বেগমপুরে, কিন্তু তিনি অবস্থান করেন হিজলগাড়ি ইউনিয়নে। এতে কৃষকদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে সেখানে যেতে হয় এবং সার সংগ্রহ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।” এছাড়াও অনেকেই বলেন, “আমরা বছরের পর বছর খেটে জমিতে ফসল ফলাই। অথচ সময়মতো সার না পেলে সেই ফসল উৎপাদনই দুরূহ হয়ে পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে কৃষিকাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবো।”

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কৃষকরা সরকারের কাছে আকবর আলীর বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। তারা জানান, “আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখি। তবে যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য হবো।”




চুয়াডাঙ্গায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ সময় তাঁকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান কমিটির সদস্যরা।

সোমবার সকাল ১০টায় জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ শরীফুজ্জামান শরীফের নির্দেশনায় সংগঠনকে আরোও সুসংগঠিত ও গতিশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘এই পরিবর্তনটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে আইনজীবী ফোরামের নেতৃত্বে যারা ছিলেন, সেসময় আমাদের ওপর চলেছে নানা নির্যাতন ও নিপীড়ন। ভয়ের আবহে আমাদের পথ চলতে হয়েছে। আমরা স্বৈরাচারবিরোধী লড়াই করে বহু চেষ্টা করেও কোনো সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নিতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন কেউ আইনজীবী ফোরামের সদস্য হতে চাইতো না। জোর করে সদস্য করা হতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। দেশে একটি সুষ্ঠু চর্চার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই চর্চাকে অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে আমরা নতুন করে আবারও গণতান্ত্রিক ধারায় সামনে এগিয়ে যেতে পারি। নবগঠিত আইনজীবী ফোরামের এই কমিটির মাধ্যমে আমরা চাই সদস্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে সম্মেলন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হোক।’

তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় অতীতে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রতি জেলা বিএনপিতে অনীহা ছিল। কেউ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। তবে বর্তমান সভাপতি ও আমরা যারা এখন জেলা বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছি, আমরা চাই সব সংগঠনকে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করতে। আইনজীবী ফোরামের এই নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের বলবো, আপনারা আপনাদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং একইসঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আসুন।’ যেন তুলতে পারেন।’

শরীফুজ্জামান, নতুন কমিটির সদস্যদেরকে পূর্বের হতাশা ভুলে আগামী দিনের এই ফোরামকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী রূপে গড়ে তুলতে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

সাক্ষাতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক কাঠামো ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশুলী (জিপি) অ্যাড. আব্দুল খালেক, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মারুফ সরোয়ার বাবু, চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবি সমিতি সাধারণ সম্পাদক আহসান আলী, নবগঠিত আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাড. আ.স.ম আব্দুর রউফ, সদস্য সচিব অ্যাড. মানজার আলী জোয়ার্দ্দার হেলাল, আইনজীবী ফোরামের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম, অ্যাড. মো. বদিউজ্জামান, অ্যাড. খন্দকার অহিদুল আলম মানি খন্দকার, অ্যাড. রুবিনা পারভীন প্রমূখ।




কোটচাঁদপুর পৌরবাসী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার অধিকাংশ এলাকাই আজ নাগরিক দুর্ভোগের প্রতীক। পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অকার্যকারিতা এবং সড়কবাতির অপ্রতুলতায় নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে।
বৃষ্টি হলে রাস্তাগুলো যেন রূপ নেয় কাদা-পানিতে ভরা ফাঁদে। সড়কজুড়ে খানাখন্দে চলাচল হয়ে পড়ে কষ্টসাধ্য। সন্ধ্যা নামতেই ডুবে যায় ঘোর অন্ধকারে, অধিকাংশ সড়কে জ্বলে না সড়কবাতি। পৌরসভার সামনের সড়কেও নিয়মিত যানজট লেগে থাকে, যা প্রশাসনের উদাসীনতার জীবন্ত প্রমাণ।
নাগরিকরা নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করলেও সেবার দেখা মিলছে না। ভাঙাচোরা রাস্তা, নষ্ট ড্রেন, অপ্রতুল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সব মিলিয়ে পৌরসভার অবস্থা করুণ। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবতা ও প্রয়োজনের প্রতিফলন ঘটায় না। তারা বলছেন, সেবার নামে যেন চলছে প্রহসন।
এ নিয়ে নাগরিক সমাজের ক্ষোভ প্রবল। সচেতন মহলের দাবি, কোটচাঁদপুর পৌরসভা যেন বর্তমানে নাগরিক ভোগান্তির এক প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকায় সেবার মান আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। যারা বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ।
স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর সড়ক সংস্কার হয়নি। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ থাকলেও সড়কবাতি নেই। রাত হলেই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা, পানি নিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা—সবখানেই চরম অব্যবস্থা বিরাজ করছে।
যেখানে এটি একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা, সেখানে নাগরিক সেবার মান যেন তৃতীয় শ্রেণির। অনেকেই বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের সেবাও এর চেয়ে ভালো। একদিকে নাগরিক অধিকার ও কর পরিশোধ, অন্যদিকে প্রশাসনের চূড়ান্ত দায়হীনতা—এই বৈপরীত্যে প্রশ্ন উঠছে, এই পৌরসভা কি শুধুই কর আদায়ের একটি যন্ত্র?
প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষের বসবাস এই পৌরসভায়। কিন্তু তাদের অধিকাংশই প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার মুখোমুখি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, খানাখন্দে ভরা সড়ক বর্ষা মৌসুমে হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক রেজাউল করিম বলেন, “প্রতিদিন রাস্তায় চলতে গিয়ে পায়ে কাদা লাগে, কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহত হন। কর দেই, কিন্তু সেবা কোথায়? পৌরসভার লোকজন শুধু কর তুলতেই ব্যস্ত, কিন্তু কাজের সময় তাদের পাওয়া যায় না।”
ঈশী খোন্দকার জানান, “সরকারি কলেজ ও খোন্দকার পাড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এক সপ্তাহ ধরে সড়কবাতি জ্বলছে না। কাউন্সিলর ও পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাহলে আমরা কী সেবা পাচ্ছি?”
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি আল-মামুন বলেন, “নামমাত্র উন্নয়নের অভিনয় দিয়ে জনগণকে বেশি দিন বোকা বানানো যাবে না। সময় এসেছে টেকসই পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার।”
এ বিষয়ে পৌরসভার সরকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, “সড়কের বাতি ইতোমধ্যে কিছু স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। নতুন করে আবার টেন্ডার হয়েছে। আমি সদ্য জয়েন করেছি, পুরো শহর এখনো দেখা হয়নি। পুরাতন ড্রেনগুলো সংস্কার করলে পানি নিষ্কাশনের কিছুটা উন্নতি হবে। নতুন ড্রেন করতে হলে সময় লাগবে। বরাদ্দ সীমিত হলেও কাজ চলমান রয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক কাজী আনিসুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।




মেহেরপুরে মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় মাঠ দিবস পালিত

২০২৪-২৫ অর্থবছরে “মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ” প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুরে মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) এর আয়োজনে এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আলমগীর বিশ্বাস।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “মাশরুম চাষ একটি সম্ভাবনাময় খাত। এটি পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারের কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনায় মাশরুম চাষকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইনজামামুল হক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সামসুল আলম, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. শায়খুল ইসলাম, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুজ্জামান, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইমরান হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম প্রমুখ।




মেহেরপুর সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন

মেহেরপুর সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ২০২৫-এর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে চারটি পদের বিপরীতে মোট পাঁচজন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিটির সভাপতি মো. মাহবুবুল হকের নিকট জমা পড়া মনোনয়নপত্র অনুযায়ী, সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো. হাফিজুর রহমান ও মো. আব্দুল মজিদ। সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন মো. আবু তালেব।

নির্বাচনী এলাকা ‘ক’ (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা) থেকে সদস্য পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো. শহীদুল্লাহ এবং ‘খ’ এলাকা (গাংনী উপজেলা) থেকে সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছেন এস. এম. ফয়েজ।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর সমবায় ব্যাংকের বর্তমান সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা সমবায় অফিসের পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান এবং অফিস সহকারী রানা।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ মে ২০২৫, মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।




গাংনীতে আইনশৃঙ্খলা ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা আইনশৃঙ্খলা ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (২৬ মে) সকালে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন। সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ইউএনও বলেন, সুশাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

কোনো ধরনের অপরাধ, বিশেষ করে মাদক ও চোরাচালান, বরদাশত করা হবে না। তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন শাখাকে তথ্যভিত্তিক ও সমন্বিত অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল। তিনি চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি ও জনসচেতনতা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজ নিজ এলাকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলো তুলে ধরেন এবং সেগুলোর দ্রুত সমাধানে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কমিটির পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি চালানো হবে এবং প্রয়োজনে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। সভা শেষে জনগণের স্বার্থে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।