বাড়ি মেহেরপুর গ্রুপের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

“পরিবেশ, প্রতিবেশ রাখতে প্রাণবন্ত, বৃক্ষরোপণের নেই বিকল্প” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাড়ি মেহেরপুরের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কের দুই পাশে পরিবেশবান্ধব ও ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত নিম গাছ রোপণ করা হয়।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে পরিবেশ সুরক্ষা ও বৃক্ষের উপকারিতা বিষয়ে আলোচনা ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাড়ি মেহেরপুর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ আসাদুজ্জামান খান রাজ (অ্যাডমিন), আঃ হাদী (মডারেটর), আব্দুর রব, আহসান হাবিব শুভ, আরিফুল ইসলাম, এস এম নয়ন, বদরুজ্জামান মুকুল, কৃষিবিদ মো. জুয়েল রানা ও একরামুল হক।

আয়োজকরা জানান, পরিবেশ রক্ষায় ভবিষ্যতেও এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।




গাংনীর সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালন

মেহেরপুরের গাংনীর সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন সিনিয়র শিক্ষক সাইফুর রহমান মিলন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সন্ধানী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু জাফর।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল আলম বকুল এবং কলেজের উপাধ্যক্ষ রাজু আহমেদ।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, নুরুন্নাহার খাতুন এবং শিক্ষার্থী এশা মনি।

অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন শিক্ষক খলিলুর রহমান।

বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান।




মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালন

৩৬ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গণঅভ্যুত্থানে নিহত সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করেছে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগে মেহেরপুর কলেজ মোড়ে শহীদ স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একান্ত সচিব ড. তারিক আজিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক শেখ মোস্তাক আলী।

প্রফেসর ড. বখতিয়ার উদ্দীন তার বক্তব্যে জুলাই বিপ্লবের পটভূমি ও ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ যেখানে মানুষ মানুষকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবে, এবং অফিস-আদালতসহ সমাজের প্রতিটি স্তরে মানুষ তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে।

তিনি আরও বলেন, ৩৬ জুলাই যেমন আনন্দের, তেমনি বেদনার দিনও বটে। শুরুতে এই আন্দোলন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সার্বজনীন পেনশন স্কিমকে কেন্দ্র করে। পরে এটি ছড়িয়ে পড়ে ছাত্রদের কোটা ও অন্যান্য যৌক্তিক দাবির মধ্য দিয়ে। এ আন্দোলন ছিল না কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলের এটি ছিল ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের যৌথ প্রয়াস।

তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল, ছাত্ররা কোনো দলের বা গোষ্ঠীর লেজুড়বৃত্তি না করে নিজেদের স্বাধীন চেতনায় দেশের কল্যাণে কাজ করবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সে প্রত্যাশা আজও পূরণ হয়নি।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান একদিন এগিয়ে আনার মধ্য দিয়ে আন্দোলনটি আশীর্বাদে পরিণত হয়েছিল। কোনো অবস্থাতেই সরকারের বর্বরতা সমর্থনযোগ্য নয়—সে সময় সকল শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণই ছিল তার প্রমাণ।

তিনি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে তিনি সকল প্রকার বৈষম্য, অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

আলোচনা সভা শেষে জুলাই বিপ্লবে নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দোয়া করা হয়।




চুয়াডাঙ্গায় দেশীয় অস্ত্রসহ দুই চাঁদাবাজ আটক

চুয়াডাঙ্গায় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে পৌর এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ দুইজন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে ক্যাপ্টেন মঞ্জুরুল রহমান মাসফির নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কলোনি পাড়ায় মঞ্জু হোসেনের বাড়িতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ৫টি রামদা, ১টি চাপাতি, ২টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও ১টি বাটন ফোনসহ আসামিদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কলোনি পাড়ার মৃত বাবর আলীর ছেলে মোঃ মঞ্জু হোসেন (৫২) এবং
একই এলাকার সেলিম হোসেনের ছেলে মোঃ রাতুল (২২)।

ক্যাপ্টেন মঞ্জুরুল রহমান মাসফি বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং আইন-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে। যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের তথ্য নিকটস্থ সেনা ক্যাম্প অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হচ্ছে।




মেহেরপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি

মেহেরপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুর কলেজ মোড়ে নির্মাণাধীন ‘জুলাই অভ্যুত্থান শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা।

সর্বপ্রথম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। পরে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাজওয়ার আকরাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা আখতারসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।




আজ ৫ আগষ্ট চুয়াডাঙ্গা স্থানীয় শহীদ দিবস

আজ চুয়াডাঙ্গা জেলায় স্থানীয় শহীদ দিবস। দিনটি উযাপন উপলক্ষে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে আজ সকাল ৮টায় পাকবাহিনীর হাতে নিহত ৮জন মুক্তিযোদ্ধার সৃস্মিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পন, জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

১৯৭১ সালের ৫ আগষ্ট চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মধ্যবর্তী স্থান রতনপুর ও বাগোয়ান গ্রামের মাঝামাঝি মাঠে পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে সমর সম্মুখ যুদ্ধে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। এ যুদ্ধে ৭জন প্রাণে বেঁচে যায় ৮জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়।

পাক হানাদার বাহীনির সাথে সমর সম্মুখ এ যুদ্ধে পাক-বাহিনীর ব্রাস ফায়ার ৮জন নিহত হয়। নিহতরা হলেন,শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান জামান, আবুল কাশেম, রবিউল ইসলাম, কিয়ামুদ্দিন, আফাজ উদ্দিন, আলাউল ইসলাম খোকন, রওশন আলম, খালেদ সাইফুদ্দিন ও আহম্মেদ তারেক।

যুদ্ধে নিহত ৮জনের লাশ দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে কিতাব হালদারের জমিতে চাপা মাটি দেয় পাক-হানাদার বাহিনী। এরপর ১৯৯৮ সালে ৮কবর স্মৃতিস্তম্ভ নিমার্ন করা হয়। এরা পর থেকে আট কবর নামে এ স্থানটি পরিচিতি লাভ করে। আটকবর স্মৃতিস্তম্ভে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জাতীয় পতাকা,মুক্তিযোদ্ধা পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে বলেন জানান দামুড়হুদা উপজেলা নিবার্হী অফিসার তীথি মিত্র।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট বাগোয়ান গ্রামের রাজাকার কুবাদ আলী ও তার সহযোগিরা ভারতের ভাতগাছী ও ব্রম্মনগর সীমান্তে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মিথ্যা সংবাদে দেয় পাকবাহীনি রতনপুর ও বাগোয়ান মাঠের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে রাজাকাররা।
এ খবর পেয়ে ১৫জন মুক্তিযোদ্ধা তাদের অস্ত্র ও গোলা বারুদ নিয়ে বিকাল ৩টার দিকে রওনা ৪টার দিকে বাগোয়ান ও রতনপুর মাঠে পৌঁছায়। এদিকে আগে থেকে রাজাকার কুবাদ আলী ও তার সহযোগীদের প্লান অনুযায়ী নাটুদহ ক্যাম্পের পাক হানাদান বাহিনী ইংরাজী ইউ (ট) আকৃতিতে আবস্থান বা ওৎ পেতে ছিলো।

এ সময় ১৫জন মুক্তিযোদ্ধা রতনপুর ও বাগোয়ান মাঠে পৌছালে। মুক্তিযোদ্ধারা কিছু বুঝে ঊঠার আগে ওৎ পেতে থাকা পাকবাহিনী তিন দিক থেকে বৃষ্টিরমত গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুক্তিবাহিনীও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলাগুলির এক পযার্য় মুক্তি বাহিনীর গুলা বারুদ শেষ হয়ে যায়।

এর মধ্যে ৭জন মুক্তিযোদ্ধা পিছু হটে প্রাণে বেঁচে গেলেও বাকি ৮জন মুক্তিযোদ্ধা ঘটনাস্থলে নিহত হয়। যরে যুদ্ধ শেষে পাক-বাহিনী ৮জন মুক্তিযোদ্ধার লাশ গুরুর গাড়িতে করে নিয়ে নাটুদহের জগন্নাথপুর গ্রামের নিকট মাঠে একটি গর্ত করে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের যানাজা করতে চাইলে পাক-হানসাদার বাহিনী তাদের যানাজা করতে দেয়নি। গণকবর দেওয়া সেই ৮জন মুক্তিযোদ্ধার কবরটি ৮ কবর নাম পরিচিতি পায়।

১৯৯৮ সালে ৬৬ শতক জমির উপর তৎকালিন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক একাট স্মৃতিস্তম্ভ নিমার্ন করে দেন। এবং বর্তমান সরকারের চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়াদ্দার নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যাদু ঘর নিমার্ন করে দিয়েছেন।

এ আট কবরটি ৩৩ শতক জমির উপর বিভিন্ন প্রজাতির ১১২টি গাছের ছায়া দিয়ে ঘিরে আছে আট কবর সৃস্মি স্তম্ভটি।




গাংনীতে তিন প্রকল্পের সাড়ে ৫ কোটি টাকা নয়ছয়! (পর্ব-১)

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলাতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে টিআর, কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে।

কাবিটা-কাবিখা প্রকল্পের ১ম ও ২য় কিস্তির কাজ চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এবং ৩য় কিস্তির কাজ চলতি বছরের ১৫ মে’র মধ্যে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু গেল অর্থবছরে কোন কাজ না করে ১ম ও ২য় কিস্তির পুরোটাকা উত্তোলন করেছেন। তবে ৩য় কিস্তির টাকা উত্তোলন করার চেষ্টা করলেও ইউএনও’র হস্তক্ষেপে ৬৭টি প্রকল্পের টাকা পিআইসি সভাপতিদের নামে পে অর্ডার করে রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ টাকা কেটে নিয়ে পিআইসির কাজ করতে দিয়েছেন। এছাড়া অফিসের দুই স্টাফকেও পিআইসির সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের খবর মেহেরপুর প্রতিদিনের কাছে আসলে, ‘মেহেরপুর প্রতিদিন’ এ প্রকল্প নিয়ে প্রকল্প এলাকাগুলো পরিদর্শন ও অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানের ১ম পর্বে শুধুমাত্র ভাটপাড়া ডিসি ইকোপার্কের ৬টি প্রকল্পে সাড়ে ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি প্রকল্পগুলোর নিয়ে পর্ব আকারে প্রকাশ করা হবে।

গাংনী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কাবিটাতে ৭৮টি প্রকল্পের অনুকুলে ২ কোটি ৪০ লাখ ৫৩৭২ টাকা, টিআরের ১২৫টি প্রকল্পের অনুকুলে ২ কোটি ১৬ লাখ ৬৭২৪ টাকা এবং কাবিখার ৪৭টি প্রকল্পের অনুকুলে ১৩৬ মেট্রিক টন চাল এবং ১৩৬ মেট্রিক টন গম, যার বাজার মূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে গাংনী উপজেলায় তিন প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।

বরাদ্দের মধ্যে গাংনী ডিসি ইকো পার্কে ১ম ও ২য় কিস্তির বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে ডিসি ইকোপার্কের শিশু পার্ক হতে বধ্যভ’মি পর্যন্ত ও কাজলা নদীর পাড় হতে আশ্রয়ণ মুখি রাস্তা এইচবিবিকরণ এবং দোকানের সামনে মাটি ভরাট বাবদ ৮লাখ টাকা, ডিসি ইকোপার্কের প্রধান গেট নির্মাণ ও গেটের পাশে মাটি ভরাট বাবদ ৭ লাখ টাকা, ডিসি ইকোপার্কের ভিতরে শিশু পার্কের রাইড স্থাপন, ফেন্সিকরণ ও রংকরণ বাবদ ২লাখ ৫০ হাজার টাকা, ওয়াশরুম সংস্কার ও পিকনিক সেড মেরামত বাবদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পার্কের অস্থায়ী দোকান সেড নির্মাণ বাবদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩য় পর্যায় প্রকল্পের টিআর প্রকল্পের ডিসি ইকোপার্ক ওয়াল প্লাস্টার ও পয়েন্টিং করণ বাবদ ৩লাখ ৯৮ হাজার ২৭৮ টাকা। গত রবিবার ভাটপাড়া ডিসি ইকোপার্ক সরেজমিন পরিদশনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়াল প্লাস্টারের কাজ চলমান রয়েছে।

ওয়াল প্লাস্টারের দায়িত্বরত রাজমিস্ত্রি সরদার হিরক আলী বলেন, সাড়ে ৩শ ফুট লম্বা, ৭ফুট উচু ওয়ালের দুই পাশ প্লাস্টার করতে মিস্ত্রি খরচ, বালি ও সিমেন্ট মিলিয়ে পৌনে ২ লাখ টাকা খরচ হবে।

ডিসি ইকোপার্কের প্রধান গেট নির্মাণ ও গেটের পাশে মাটি ভরাট বাবদ বরাদ্দ ৭ লাখ টাকা থাকলেও শুধুমাত্র এসএস পাইপের গেট সেখানে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কোন মাটি ভরাটের চিহৃ পাওয়া যায়নি। এসএসপাইপের যে গেটটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

এ প্রকল্পের পিআইসি সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য জরিমন নেছা বলেন, গেটের কাজ করা হয়েছে। মিথ্যা কথা বলবো না একবার টাকা তুলে ৫ হাজার দিয়েছে, আর কিছু দিবে কিনা জানিনা।

পাকের্র অস্থায়ী দোকান সেড নির্মাণ বাবদ সাড়ে ৩লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলে কোন দোকান নির্মাণ করা হয়নি।

ডিসি ইকোপার্কের ভিতরে শিশু পার্কের রাইড স্থাপন, ফেন্সিকরণ ও রংকরণ বাবদ ২লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া থাকলেও।

রবিবার পর্যন্ত কোন রাইড স্থাপন করা হয়নি। পুরাতন রাইডগুলোও ফেন্সিকরণ কিংবা রংকরণ কোনটাই করা হয়নি।

ওয়াশরুম সংস্কার ও পিকনিক সেড মেরামত বাবদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওয়াশরুমের বাইরের অংশ নতুন করে রং করা হয়েছে তবে ভিতরে কোন সংস্কার করা হয়নি, এবং পিকনিক সেড নির্মাণ করা হয়নি।

শিশু পার্ক হতে বধ্যভ’মি পর্যন্ত ও কাজলা নদীর পাড় হতে আশ্রয়ণ মুখি রাস্তা এইচবিবিকরণ এবং দোকানের সামনে মাটি ভরাট বাবদ ৮লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বধ্যভুমি থেকে কাজলা নদী পর্যন্ত এইচবিবি করণ করা হয়েছে। বাইরে থেকে মাটি এনে ভরাটের পরিবর্তে পার্কের উচু স্থানের মাটি কেটে দোকানের সামনে মাটি ভরাটের জন্য ফেলে রাখা হয়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ময়না খাতুন বলেন, স্মৃতিসৌধ (বধ্যভ’মি) থেকে ঘাট পর্যন্ত ইটের হিয়ারিং রাস্তা করা হয়েছে ১০ দিন হলো। বিভিন্ন যায়গার উচু মাটি কেটে সমান করছে। বাথরুম (ওয়াশরুম) দুদিন ধরে রং করতে দেখলাম।

ডিসি ইকোপার্কের কেয়ারটেকার সোলাইমান বলেন, আমি সাড়ে ৯ বছর ধরে এই পার্কের দেখাশুনা করছি। ইউএনও স্যার বলেছেন সবকিছু দেখেশুনে রাখতে। প্রধান গেট নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, গেটের কোন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়নি। গেট আগে থেকে আছে। গত বছর ৫ তারিখের পর ছাত্ররা গেটটা ভেঙে দিয়েছিলো। তাই শুধুমাত্র স্টিলের গ্রিল দিয়ে নতুন গেট লাগানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুনছি অনেক কাজ হবে না হলে তো বলতে পারবো না।

তবে, এ বিষয়ে সরাসরি তাঁর কার্যালয়ে কথা হয় গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনসুর রহমানের সাথে। কাজ হয়নি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করতে পারবো।’

কাজ না করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুনের মধ্যে টাকা তোলার নিয়ম আছে তাই ২৬ জুন টাকা উত্তোলন করেছি। ৩য় কিস্তির ৬৭টি প্রকল্পের বিলের চেকও দেখান তিনি। তবে ১ম ও ২য় কিস্তির বিল উত্তোলনের কথা বলতে তিনি পিআইসির মাধ্যমে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। ’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আনোয়ার হোসেন মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি মে মাসে জয়েন করেছি। তার আগে এ প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় হচ্ছে এমন কিছু অভিযোগ পেয়ে আমি পিআইওকে বলেছি পুরো কাজ বুঝে নেওয়া হবে। ৩য় কিস্তির টাকা উত্তোলন করে পে-অডার করে রাখার নির্দেশে আমি দিয়েছি এবং পিআইসি সভাপতিদের বলেছি সরকারি টাকা তছরুপাত করা যাবে না। তবে, প্রকল্পের কাজ স্টিমেট অনুযায়ী বুঝে নেওয়া হবে। বুঝে না পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’

(এ বরাদ্দের বাকি প্রকল্পগুলোর অনুসন্ধান চলছে। যেগুলো পরবর্তিতে পর্ব আকারে প্রকাশ করা হবে… )




মুজিবনগরে উপজেলা প্রশাসন গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন

মুজিবনগরে তারুণ্য উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উপজেলা পর্যায়ের খেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে উপজেলার দারিয়াপুর ফুটবল খেলার মাঠের উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে উপজেলা পর্যায়ের এই ফুটবল খেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পলাশ মন্ডল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নাজমুস সাদাত রত্ন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার রকিবউদ্দিন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য জহিরুল ইসলাম হাসান মুস্তাফিজুর রহমান, সাহার আলি।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পলাশ মন্ডল বলেন প্রথমে আমরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে এই টুর্নামেন্ট শুরু করি প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের খেলোয়াড়রা ইউনিয়ন ভিত্তিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে খেলোয়ার বাছাই করে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের দুইটা টিম গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা পর্যায়ের খেলায় প্রত্যেকটি ইউনিয়ন থেকে দুটি টিম নকআউট পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল পর্যায় থেকে ভালো খেলোয়াড় বাছাই করে উপজেলা পর্যায়ের একটি টিম গঠন করা। সেই সাথে সমাজকে মাদকমুক্ত নেশা মুক্ত এবং মোবাইল গেম থেকে দূরে রাখার জন্য খেলাধুলার মধ্যে নিমজ্জিত করা। আমরা আশা করি তরুণ এবং যুবকদেরকে খেলার মাঠে ফিরিয়ে এনে একটি সুস্থ মাদকমুক্ত যুব সমাজ গঠনে সহায়ক হিসেবে কাজ করা।

উদ্বোধনী খেলায় মোনাখালী ইউনিয়ন বি-টিম এবং দারিয়াপুর ইউনিয়ন বি -টিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় মনাখালী ইউনিয়ন বিটিম ৩-০ গোলে দারিয়াপুুর ইউনিয়ন বি-টিম কে পরাজিত করে।




ঝিনাইদহে সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন

‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে ৭ দিন ব্যাপী বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে শহরের পায়রাচত্বর থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। সেসময় কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা,সহকারী বন সংরক্ষক গিয়াস উদ্দিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সামাজিক বনায়ন জোন ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি বেসরকারি ২৪ টি নার্সারী স্টল প্রদর্শণ করেছে। সুলভ মুল্যে বিভিন্ন ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছের চারা বিক্রয় করা হবে স্টলগুলোতে।




মেহেরপুরের গোপালপুরে দোকানে চুরি করতে গিয়ে ধরা: গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুরে সকাল বেলায় মোমিন ষ্টোর নামে একটি দোকানে চুরি করার সময় রাফি (২৩) নামের এক চোরকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।

আজ সোমবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে গোপালপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

আটক চোর মেহেরপুর শহরের বন বিভাগ পাড়ার রকিব উদ্দিনের ছেলে।

দোকানের মালিক আব্দুল মোমিন জানান, “আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে চোর দোকানে এসে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে কায়দা কৌশলে মালামাল নেই, এবং এক হেরোইন ব্যবসায়িক এর কাছ থেকে হেরোইন নিয়ে দোকানে আসে। এরপর পুলিশ কে জানানো হয়। ”

স্থানীয়রা পুলিশে সংবাদ দিলে ঘটনাস্থলে সদর থানা পুলিশ উপস্থিত হন। স্থানীয়রা চোরকে পুলিশে সোপর্দ করে।