মেহেরপুরের বিখ্যাত হিমসাগর আমসহ আম-দই-চিঁড়া-মিষ্টি উৎসব

ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাড়ি ফিরে আসা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মেহেরপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে গত পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত ‘আম-দই-চিঁড়া-মিষ্টি উৎসব’ উদযাপন করেছেন।

শনিবার (১৪ জুন) প্রাণবন্ত এই মিলনমেলায় তারা পুরোনো স্মৃতি ভাগাভাগি করেন এবং আনন্দ-উৎসব করেন।

এবারের আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ ছিল মেহেরপুরের বিখ্যাত হিমসাগর আম। এই আম তার রসালো স্বাদ, গন্ধ ও মিষ্টতার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশংসিত। সঙ্গে পরিবেশিত হয় খাঁটি দই, ভেজানো চিঁড়া, দেশি মিষ্টান্ন, পিঠা ও মৌসুমি ফল।

উৎসবে তরুণ ও প্রবীণ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা একে অপরের সঙ্গে কলেজ জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “হিমসাগর আমের রসালো স্বাদ আর পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে এই আয়োজনটি আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।”
অন্য একজন তরুণ অংশগ্রহণকারী যোগ করেন, “কলেজ জীবনের বন্ধুত্ব নতুন করে জেগে উঠেছে, আর এই মিলনমেলা আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।”

আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন স্টুডেন্ট কেয়ার একাডেমির পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান হীরা, কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং উদ্যোক্তা রাজু আহম্মেদ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জজ কোর্টের পেশকার হাসানুজ্জামান মিলন, জারাফাত, নাফিউল, আল-আমিন, রোকুনুজ্জামান তুষার, নোমানসহ আরও অনেকে।

আয়োজকরা জানান, “আগামী বছর আরও বৃহৎ ও সংগঠিতভাবে এই উৎসবটি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।”

এভাবে প্রতিবারের মতো এবারও মেহেরপুর সরকারি কলেজে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে।




দর্শনা সীমান্তে ৬ বাংলাদেশিকে পুশব্যাক

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে ৬ বাংলাদেশিকে পুশব্যাক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

১৩ জুন শুক্রবার দিবাগত ভোর ৪ দিকে ঠাকুরপুর সীমান্তের ৮৭ নং পিলালের কাছ দিয়ে তাদেরকে পুশব্যাক করে ভারতীয় বিএসএফ।

শুক্রবার ভোরেই চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির ঠাকুরপুর ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার আনোয়ার হোসেন ৬ জনকে আটক করে দর্শনা থানায় সোপর্দ করে।এরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার মৃত্য কিতাব আলীর ছেলে শাহাজান (৪০) মৃত্য নজির হোসেনের মেয়ে ও শাহাজানের স্ত্রী (কহিনুর (৩৫)সাবিহা খাতুন (১৮)শারমিন (১৫) সাথী খাতুন (৮) নাজমুল (১)।এ বিষয়ে শাহাজান বলেন, গত ১৯/২০ বছর আগে আমরা কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যায়।কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় লোকজন আমাদেরকে জোর পূর্বক তাড়িয়ে দিচ্ছে। কোন বাংলাদেশী লোক ভারতে থাকবে না।

এ ঘটনায় দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন,বিজিবি আমাদের কাছে একই পরিবারের ৬ জনকে হস্তান্তর করেছে।আমরা তাদের কাছে শুনে তাদের আত্নীয় স্বজনকে খবর দিয়ে কুড়িগ্রাম থানাকে একটি বার্তা প্রেরন করেছি।এ ঘটনায় দামুড়হুদা উপজেলার ভৃমি এসিল্যান্ড এ এইচ এম তাসফিকুর রহমান জানান,দর্শনা থানার ওসি আমাকে জানালে আমি তাদের ৬ জনকে পূর্ব রামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখছি এবং তাদের দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা করে দিয়েছি।

তবে তাদের আত্নীয় স্বজনকে খবর দেওয়া হয়েছে তারা আসলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।




১৬বাংলাদেশী নাগরিককে হস্তান্তর করলো বিএসএফ

ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৬ জন বাংলাদেশী নাগরিক বিএসএফ কর্তৃক আটকের পর বিজিরি নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবি সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গতকাল রাত ১২টার সময় ১৯৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন অধীনস্থ ভারতের কুমারিপাড়া বিএসএফ কোম্পানী কমান্ডার মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর অধীনস্থ বাঘাডাংগা কোম্পানীর খোসালপুর বিওপি কমান্ডার’কে অবগত করেন যে, ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৬ জন বাংলাদেশীকে (পুরুষ-৪, নারী-৪ এবং শিশু-৮) বিএসএফ কর্তৃক আটক করা হয়েছে।

বিএসএফ উক্ত ১৬ জন বাংলাদেশিকে ফেরত নেয়ার জন্য বিজিবি’কে অনুরোধ করে এবং ১.৩০ মিনিটের সময় ওই ১৬ জন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত বিস্তারিত বিজিবি’কে প্রেরণ করে। বিজিবি কর্তৃক উল্লেখিত ১৬ জন ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত কওে সন্ধ্যা ৬টার দিকে (বিএসটি) সীমান্ত পিলার ৬০/৮৫-আর (পিলার) এর নিকট শূন্য লাইন বরাবর কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ এর নিকট থেকে গ্রহন করে।

হস্তান্তরকৃত ব্যক্তিদের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।




মুজিবনগরে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১

মেহেরপুরের মুজিবনগরে বিশেষ অভিযানে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে শনিবার (১৪ জুন) ভোর পর্যন্ত মুজিবনগর থানা পুলিশের পরিচালিত ২৪ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের মৃত সাত্তারের ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম (৪৫)।

তার বিরুদ্ধে মুজিবনগর থানায় দায়েরকৃত এফআইআর নং-০৯, তারিখ ১০ জুন ২০২৫; জি.আর. নং-৬৩, তারিখ ১০ জুন ২০২৫ অনুযায়ী রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে মামলা রুজু করা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৮৬০-এর ধারা 143/324/325/323/307/379/34/506(2) অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, জেলার সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে।




মেহেরপুর সীমান্তে সাড়ে তিন মাসে ৮৬ পুশ ইন

সাড়ে তিন মাসে মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ৮৬ বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে এসব বাংলাদেশি বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে যায়। কেউ ১৫ বছর আগে, কেউ ১০ বছর আগে, কেউবা চার-পাঁচ বছর আগে ভারতে যায়। ভারতে তারা বিভিন্ন ইটভাটা, কলকারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় অবৈধ বাংলাদেশিদের আটক করে হাজত পাঠায়। সেখান থেকে বের করে রাতের আঁধারে তারা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে (পুশ ইন)।

এ নিয়ে সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। পুশ ইন ঠেকাতে বিজিবিকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাস পর‌্যন্ত মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৮৬ জন বাংলাদেশিকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এসব ব্যক্তি আটক ও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ১০ জুন ভোরে মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস সীমান্ত দিয়ে ১২ জনকে, ৪ মে ভবেরপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে, ২৫ মে সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে এবং ২৭ মে সোনাপুর সীমান্ত পিলার ১০১ কাগমারী মাঠ দিয়ে আরও ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

পুশ ইন হওয়া বাংলাদেশিদের অধিকাংশের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এর পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, ফরিদপুর, পিরোজপুরের নাগরিক রয়েছেন।

ফেব্রুয়ারি মাসে যাদের পুশ ইন করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন, পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের শিবাস হালদার (৫০), তাঁর ছেলে হরিদাস হালদার (২৪), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (২০), নরেন্দ্রপুর থানার আক্কাস আলী (২৮), রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সারেংপুর গ্রামের শাহিন আলী (২৭), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কাজীব আলী (২৩), হরিশপুর গ্রামের আবদুল্লাহ (২৭), পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের ইসাহাক আলী, তাঁর ছেলে আজিল আলী (৪৫), কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা-১৬ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করা তরুণ রিয়াজ (২৪)। বাকি পাঁচজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

মে মাসে যাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন এবং তার ৩ ছেলে মোজাম্মেল হক (২৩), মোস্তাক আহমেদ (১৯) ও কাবিল (১১)। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয় মঙ্গল (১১), মাথা গ্রামের জালালউদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, স্ত্রী কাঞ্চন বেগম এবং ছেলে কারণ (১৪), রবিউল (৭) এবং মেয়ে মরিয়ম (৪), লালমনিরহাট জেলার সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তার স্ত্রী গীতা রানী পাল, মেয়ে পার্বতী পাল (১৫), পূজা রানী পাল (৭) ও আরতী পাল (৩), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের খলিলের ছেলে আমিনুল ইসলাম, স্ত্রী পারুল, দুই মেয়ে আমেনা (৪) ও আরফিনা (১১ মাস), কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার টগরপাড়া গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে বজলে (৪০), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩৫), মেয়ে মর্জিনা খাতুন (৯), মিম (৪), ছেলে রাসেল (২১) এবং ববিতা (১৫), নাতি ওবায়দুল (৮)।

কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শাহানুর (২৯), তার স্ত্রী কল্পনা (২৭) এবং ছেলে নুর ইসলাম (৯)। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার বালাসিপাড়া গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে ইচা আলী (৪৪), তার স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪০), ছেলে আরিফ (১৯), ইব্রাহিম (১৫), ইসমাঈল (৮) এবং ছেলে আরিফের স্ত্রী সুমনা (১৫)। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার নগরাজপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে আলিমুদ্দিন (৫৫), তার স্ত্রী আমিনা (৩৫), ছেলে আতিকুল (২৫), আতিকুলের স্ত্রী ইয়াসমিন (২০), ছেলে ইয়াসিন (৫), ইয়ানুর (২) এবং মেয়ে ফাতিমা (১)। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার ঘোগারকুঠি গ্রামের বাটালের ছেলে হুজুর আলী (৪০), তার স্ত্রী মনিরা (৩৫), ছেলে মনির হোসেন (৭), মেয়ে আদুরি (৩), হালিমা (১৮) ও নাতি হামিম (২)।

জুন মাসে পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার ফুলমতি গ্রামের রহমত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪২), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শাহাজাদী খাতুন (৩০), ছেলে মিরাজ আলী (১৫), একই থানার কবুরামাবুদ গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী লাভলী খাতুন (৪২), ছেলে হাসেন আলী (২০), বাবুল হোসেন (২৪), বাবুল হোসেনের স্ত্রী জেনমিন খাতুন (২০), ছেলে জহিদ হোসেন (৩), জাকির হোসেন (১), হাসেন আলীর স্ত্রী জান্নাতী খাতুন (১৮), ১০ দিন বয়সী মেয়ে হাসিনা খাতুন, শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন হোসেন (২৫)।
প্রশাসনের মতে, এসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। অনেকেই পারিবারিক বা কাজের কারণে ভারতে গিয়ে সেখানে আটক হন। নির্দিষ্ট কোনো চুক্তি বা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই বিএসএফ এসব বাংলাদেশিকে মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করছে।

ভারত থেকে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানকার পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে এনে কাঁটাতারের গেট খুলে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

কক্সবাজারের রিয়াজ আলী বলেন, প্রায় চার বছর হলো জীবিকার আশায় চোরাইপথে ভারতে গিয়েছিলাম। নয়ডা জেলার একটি লোহার কারখানায় চাকরি করতাম। ২ মে পুলিশ এসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা আমাকে নদীয়া জেলার কারাগারে পাঠায়। সেখান থেকে একটি ট্রাকে সীমান্তে এনে ফেলে দেয়।

কুড়িগ্রাম জেলার জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল হোসেন বলেন, তারা দুজনই পরিবার নিয়ে প্রায় এক যুগ আগে ভারতে গিয়েছিলেন। গত বছরের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বহরমপুর বাজারে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। ভারতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। গত মাসে পরিবার নিয়ে দেশে ফেরত আসার সময় বিএসএফ আটক করে তাদের জেলে পাঠায়। জেল থেকে হৃদয়পুর সীমান্ত এলাকায় ট্রাকে করে এনে তাঁদের জড়ো করে এবং কাঁটাতারের মাঝখানে যে দরজা আছে, সেটা খুলে আমাদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দেয়।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের বিজিবি থানায় হস্তান্তর করলে আমরা আইনানুগভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। কোনো ব্যক্তি যাতে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে দেশে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি, যেসব ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশ ইন-এর চেষ্টা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিতভাবে বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন পর‌্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।




চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ইন্তেকাল

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ইন্তেকাল করেছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।




মহাজনপুর ইউপির সাবেক মেম্বার আব্দুর রশিদ আর নেই

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজ গ্রাম গোপালপুর ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে ওই দিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাড়িতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মুত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে , এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন।

সাবেক মেম্বার আব্দুর রশিদের জানাযায় মেহেরপুর -১ আসনের সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কামরুল হাসান, যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সদস্য ইলিয়াস হোসেন, আনছারুল হকসহ বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন।

প্রয়াত আব্দুর রশিদ ১৯৭৮ সালে মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদে ১ম বারের মত সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মেহেরপুর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এবং মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক বারের নির্বাচিত সদস্য মেহেদী হাসান রোকনের পিতা।




সিঙ্গাপুর ফেরত যুবকের মালামাল লুট: মেহেরপুরে ৫ ডাকাত গ্রেফতার

সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরা এক প্রবাসীর মালামাল লুটের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে মেহেরপুরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডাকাতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত বিদেশি পণ্য ও মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ১১ জুন রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার কোলা-আশরাফপুর কড়ইতলা সড়কে অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফেরার সময় সিঙ্গাপুরফেরত মো. ইউসুফ আলী (২০) এবং তার নানা মো. রেজাউল হক ইজারুল (৫৭) ডাকাতদের কবলে পড়েন। ৬-৭ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ইউসুফের কাছে থাকা সিঙ্গাপুরের ৬৭ ডলার, তিনটি মোবাইল ফোন, চার্জার লাইট, বিদেশি চকলেট, সাবান, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, পেইন রিলিফ মলম, টুথপেস্ট ও সিটি গোল্ডের একটি নেকলেস লুট করে।
এ ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানায় মামলা রুজু হলে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালায়। পরদিন ১২ জুন সদর ও মুজিবনগর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মুজিবনগর উপজেলার যতারপুর গ্রামের আমজাদ সরদারের ছেলে বাবু ওরফে বাবুল(৪০), জামিরুল (২৬), মৃত মকছেদ মন্ডলের ছেলে বাবুল (৫১), সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের খোকন পাইকের ছেলে দিপন পাইক (৩৫), নুরপুর গ্রামের রুবেলের ছেলে মোঃ রাব্বী (২০)।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি রেডমি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, তিনটি সাবান, দুইটি ডাভ শ্যাম্পু, তিন প্যাকেট চকলেট, দুটি বডি স্প্রে, তিনটি ব্যথানাশক মলম, একটি টুথপেস্ট, একটি ফেসওয়াশ, একটি চার্জার লাইট ও একটি সিটি গোল্ড নেকলেস।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতার বাবু ওরফে বাবুলের বিরুদ্ধে চোরাচালান, নারী নির্যাতন, বিস্ফোরক, ডাকাতি ও গুরুতর জখমসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে। দিপন পাইকের বিরুদ্ধে মাদক, দস্যুতা ও চুরির ৩টি এবং জামিরুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির প্রস্তুতির ২টি মামলা রয়েছে।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, এ ঘটনায় অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




মুজিবনগর উপজেলা কৃষকদলের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের অগ্রযাত্রায় গণ-মানুষের অবিসংবাদিত দল বিএনপি’র নির্বাচনের যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করেছে মুজিবনগর উপজেলা কৃষকদল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার সময় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স পর্যটন হোটেলে এ ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মুজিবনগর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আরমান আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তেব্যে শফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কৃষক বান্ধব দল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলার কৃষকদের উন্নয়নের জন্য জাতিয়তাবাদী কৃষকদল গঠন করে। জন্ম লগ্ন থেকেই জাতীয়তাবাদী কৃষক দল বাংলাদেশের কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত ১৭ টি বছর আমরা নির্যাতিত হয়েছি। শান্তি মত পরিবার নিয়ে বাড়িতে ঘুমাতে পারি নাই স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারি নাই। রাস্তায় ঠিকমতো বের হতে পারি নাই। সব সময় ভয়ে থাকতাম কখন পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে যাবে। কখন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের তুলে নিয়ে যাবে।

৫ আগস্টের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ১৭ বছরের নির্যাতনকারী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমরা পেয়েছি নতুন স্বাধীনতা। আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমাদের নেতাকর্মীদের যে সকল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানী করেছে আমরা তাদের কড়ায় গুন্ডায় হিসাব নেবো।

মুজিবনগর উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক কুন্নুত আলীর সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ, মেহেরপুর জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক মিরাজ উদ্দীন, যুগ্ম সম্পাদক মকবুল, সহসভাপতি লিয়াকত, মুজিবনগর উপজেলা কৃষকদলের সহসভাপতি রমজান আলী, উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা প্রমুখ।

এ সময় কৃষকদলের মুজিবনগর উপজেলাসহ ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে রহিত আলী মন্ডল কে সভাপতি এবং জাকির হোসেন কে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়ন জাতিয়তাবাদী কৃষকদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।




জনতার কণ্ঠস্বরের মুখোশে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইল!

লন্ডন প্রবাসী শহিদুল ইসলাম শাহিন। বাড়ি মেহেরপুরের মল্লিক পাড়ায়। স্থানীয়ভাবে তিনি শাহিন খরা বলে পরিচিত। গত এক বছর ধরে ফেসবুক লাইভে বলিষ্ঠ কণ্ঠে উপস্থিত হয়ে আলোচনায় আসেন এই প্রবাসী।

আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্য, কড়া সমালোচনা, আর রাজনৈতিক নেতাদের একের পর এক এক্সপোজে নিজেকে তুলে ধরেন জনতার কণ্ঠস্বর হিসেবে। তবে এবার তার বিরুদ্ধেই উঠেছে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির মত ভয়ানক অভিযোগ।

মুখে জুয়া বিরোধী, পেছনে ডলার বাণিজ্য!

২০২৪ সালের আগস্ট থেকে শহিদুল ইসলামের পরিচিতি বাড়তে থাকে রাজনৈতিক লাইভ ও কড়া সমালোচনার মাধ্যমে। রাজনৈতিক নেতাকর্মী, গণমাধ্যম কর্মী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, আদালতের বিচারক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মেহেরপুর জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার, এমনকি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি বিশিষ্ট সাংবাদিক মনির হায়দার কেউ বাদ পড়েননি তার খিস্তিখেউড়ের তালিকা থেকে।

তবে তার প্রকৃত পরিচয় সামনে আসে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে মহৎ সামাজিক যুদ্ধের আড়ালে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, শহিদুল ইসলাম শাহিন জুয়াড়িদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ তৈরি করেন এবং পরে তাদের ফোন দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করতে থাকেন।

সাইবার ইনভেস্টিগেশন সেলে জমা পড়া স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, শহিদুল ইসলাম কারও কাছ থেকে তিন হাজার ডলার, কারও কাছ থেকে পাঁচ হাজার ডলার দাবি করেছেন ‘ ডলার দও অথবা জুয়া বন্ধ করবা, নইলে সেনাবাহিনী দিয়ে তুলে নেব’ এমন হুমকিও উঠে এসেছে কথোপকথনে। স্ক্রিনশট গুলি জেনুইন বলে নিশ্চিত করেছে মেহেরপুরের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।

ছিল জনসমর্থন, এখন প্রশ্নের মুখে গ্রহণযোগ্যতা

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার ভূমিকায় অনেকেই শহিদুলকে সমর্থন দিতেন। তার মাধ্যমে স্থানীয় চক্রের তথ্য ফাঁস হবে, এমন প্রত্যাশাও ছিল অনেকের। কিন্তু এখন প্রমাণসহ অভিযোগ আসার পর সাধারণ মানুষ বলছে, “যাকে আমরা দেখছিলাম রক্ষক, সে-ই এখন ভক্ষক!”

দীর্ঘদিনের অভিযোগ, এবার মিলেছে প্রমাণ

শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ একদিনের নয়। স্থানীয় অনেকেই বলছেন, আগে এসব বলার সাহস ছিল না। কেউ প্রমাণও রাখতে পারেননি। তিনি মূলত ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে তাদের আওয়ামী লীগ ট্যাগ দেওয়া এবং মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে আক্রমণ শুরু করেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই ব্যক্তির সঙ্গে গোপন কোন সমঝোতা হয় ততক্ষণ তিনি তার আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকেন। এরপর হঠাৎ পূর্বের পোস্ট গুলো ডিলিট করে দেন। এভাবেই চলে আসছিল কয়েক মাস। এমনকি খুলনার রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক তার বড় ভাইয়ের বন্ধু এমন দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন মহলে হুমকি প্রদানের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

তবে এবার মেহেরপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জমা পড়েছে অসংখ্য স্ক্রিনশট, কললগ এবং ভয়েস রেকর্ডিং যা তাকে রক্ষা করার সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে বলেই মত সংশ্লিষ্টদের।

মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ওসি গোপাল কুমার কর্মকার বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম শাহিনের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদান, ব্ল্যাকমেইল এবং চাঁদাবাজির একাধিক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ আমাদের দপ্তরে জমা পড়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কল রেকর্ড এবং হুমকিমূলক মেসেজের স্ক্রিনশট সাইবার ক্রাইম বিভাগে জমা দিয়েছেন, যা বর্তমানে যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। এছাড়া গৃহীত ব্যবস্থা ও পদক্ষেপের বিস্তারিত অনুলিপি যথাযত কতৃপক্ষ/সংস্থার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হবে, যাতে বিষয়টির সঠিক প্রতিফলন ঘটে।”

তবে এ বিষয়ে লন্ডন প্রবাসী শহিদুল ইসলাম শাহিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কে অভিযোগ দিয়েছে সেটা আগে খুঁজে বের করি। আর যে অভিযোগ দিয়েছে সে পারলে প্রমাণ করুক আমি চাঁদাবাজি করেছি। ‘