মোছাঃ ফারজানা খাতুন, একজন সংগ্রামী তরুণী। দুইবার ব্যর্থতার পরও হাল ছাড়েননি। অবশেষে নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তিনি এবার প্রাথমিকভাবে পুলিশের চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার ফরম পূরণ করতে ১২০ টাকা লেগেছে, এর বাইরে আমার এক টাকাও খরচ হয়নি। আমি সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় এখানে এসেছি। আজ আমি খুবই খুশি, কারণ দুইবার ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে নিজের যোগ্যতায় আমি পুলিশের চাকরিতে নির্বাচিত হয়েছি। শুধু আমি নয়, আমার বাবা-মাও অনেক খুশি।
তিনি আরও জানান, তার বাবা একজন কৃষক। অনেক কষ্ট করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আজকের এই সাফল্যে তিনি যেমন গর্বিত, তেমনি তাঁর বাবা-মাও আনন্দে আপ্লুত।
নির্বাচিত একজন বলেন, চাকরি পাওয়া অবশ্যই আনন্দের বিষয়। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা ও অধ্যবসায়ের পর নিজের যোগ্যতায় এই চাকরি পাওয়া সত্যিই গর্বের। আমার বাবা একজন কৃষক। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করিয়েছেন, যার ফল আজ আমি হাতে পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক কষ্টের পর এই সাফল্য আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত। এ অর্জন শুধু আমার একার নয়, আমার পরিবারের, বিশেষ করে আমার বাবার স্বপ্নপূরণের এক গর্বিত মুহূর্ত।
মেহেরপুরে পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষায় শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ হয়ে প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছেন ৮ জন পুরুষ এবং ১ জন নারীসহ মোট ৯ জন।
নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিয়োগ বোর্ড।
মেহেরপুর পুলিশ লাইন্সে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে প্রার্থীরা শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে ৯ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। ওয়েটিং লিস্টে আছেন ২ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে সাড়ে ৫ টায় মেহেরপুর পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিকভাবে ৯ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন এবং আরও ২ জন ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন। তাদের কারো সাথেই কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। যদি কারো সঙ্গে লেনদেন হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিন, আমরা সেই টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করব। তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
যারা এখানে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সম্পূর্ণ নিজেদের যোগ্যতার ভিত্তিতেই নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে কোনো তদবির বা সুপারিশের ভূমিকা ছিল না। অর্থাৎ, শুধুমাত্র মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন হয়েছে।
জেলা পুলিশ পুরোপুরি স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা যদি কোনো লেনদেন বা অনিয়মের প্রমাণ পান, তাহলে যথাযথ ডকুমেন্টসহ আমাদের সামনে তুলে ধরুন। আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এমন কোনো অনিয়ম ঘটার সুযোগ ছিল না।
ফলাফল ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জামিনুর রহমান খান, মাগুরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.এস.এম মুক্তারুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার সরকার।
নতুন চাকরি পাওয়া তরুণ-তরুণীরা তাদের মেধা ও যোগ্যতায় বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে উচ্ছ্বসিত এবং আনন্দিত।