ভোক্তার অভিযান, গাংনীতে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা

মেহেরপুরের গাংনীতে প্রতিষ্ঠানে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ভোক্তাদেরকে প্রতারিত করে পণ্য বিক্রির দায়ে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

আজ  সোমবার দুপুরে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও গাংনী পৌরশহরে অধিদপ্তরের মেহেরপুরের সহকারী পরিচালক মো: মামুনুল হাসান এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দণ্ডিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দু’টি হলো- বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মেসার্স মিজান ব্রাদার্সের মালিক রুবেলকে ১৫ হাজার টাকা এবং গাংনী পৌর শহরের মেসার্স আকমল স্টোর এ্যান্ড গিফট কর্নারের মালিক আকমল হোসেনের নিকট থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনীর বাঁশবাড়িয়া গ্রাম ও গাংনী বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে দুটি প্রতিষ্ঠানকে নকল গনি গুল বিক্রিসহ বেশকিছু কসমেটিক্স পণ্যের তদারকি করা হয়। এসময় মেসার্স মিজান ব্রাদার্স নামক প্রতিষ্ঠানে তদারকিতে প্রচুর নকল গনি গুল ও কোম্পানির নাম বিহীন শিশু খাদ্য পণ্য জব্দ করা হয়।

আকমল কসমেটিক্সে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত তালিকার ১৭ টির মধ্যে প্রায় ১৩ টি পণ্য পাওয়া গেছে। ওই অপরাধে প্রতিষ্ঠান দু’টিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারায় ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সাথে প্রতিষ্ঠান দু’টিকে মনিটরিং করে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে সাথে আগামী দুই দিনের মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত মালামাল দোকান থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তিন বছর যাবত শিশু খাদ্য বিক্রি করলেও নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। আগামী বুধবারের মধ্যেই শিশু খাদ্য বিক্রির আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অভিযানে মেহেরপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা রিয়াজ মাহমুদ, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি কর্মকর্তা মশিউর রহমান এবং জেলা পুলিশের একটি টিম অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।




তীব্র গরমে বেলের শরবত খেলে যেসব উপকার পাবেন

শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকাল। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ সবাই। তীব্র এই গরমে সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য হাইড্রেটেড থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এ জন্য খাদ্যতালিকায় শীতল পানীয় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। বেলের শরবত এমন একটি সতেজ বিকল্প যা একইসঙ্গে তৃষ্ণা নিবারণ করতে সাহায্য করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিও সরবরাহ করতে পারে।

তাহলে জেনে নিন তীব্র এই গরমে কেন খাবেন বেলের শরবত:

১. হাইড্রেশন

বেলের রসে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। এটি শরীরে পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

২. হজমে সহায়তা

অতিরিক্ত তাপ হজমকে ধীর করে দিতে পারে এবং বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে। বেলের শরবতে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৩. শরীরকে ঠান্ডা রাখে

বেলের শরবতে শীতল করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরের তাপ ভেতর থেকে কমাতে সাহায্য করতে পারে। যার ফল গ্রীষ্মের দিনের জন্য এটি একটি আদর্শ পানীয়।

৪. পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ

বেলের রস কেবল হাইড্রেটিংই নয়, অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি ভিটামিন সি, ফাইবার এবং ভিটামিন এ সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস। বেলের রসে বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং কিছু রোগের ঝুঁকি কমায়।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য বেলের রস উপকারী হতে পারে। এতে ক্যালোরি কম এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, যা অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়াতে সাহায্য করে।

৬. ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে

বেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী। এটি তাপ এবং সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসা ত্বকের সমস্যাগুলো কমাতে পারে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে পারে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি




আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই ক্লাস বিমুখ- অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল-আমিন

মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর  আবদুল্লাহ আল-আমিন বলেছে, সারা দেশেই শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতির হার কমছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু বাড়িতে পড়ে কি একজন শিক্ষার্থী পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারে? আমরা সব সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। অভিভাবকগণ হচ্ছেন শিক্ষার্থীদের প্রথম বিদ্যালয়, যেখানে তারা নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা ও পাঠ্যাভ্যাস শেখে।

এই কারণেই, আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই আপনারা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে পাঠানোর জন্য সচেষ্ট হবেন।

সোমবার সকালে মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজে অনুষ্ঠিত এক অভিভাবক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল্লাহ আল-আমিন আরো বলেন, আমরা একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি: আমাদের বার্ষিক পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবে, শুধুমাত্র তাদেরই দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে। এখন যদি আপনারা এই প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।

আপনাদের অনেকের বিভিন্ন ধরনের শক্তি রয়েছে কাউকে প্রশাসনিক শক্তি, কাউকে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক শক্তি, আবার কারো কারো লোকবল রয়েছে। এসবের সম্মুখীন হওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

আপনাদের সন্তানদের স্বার্থেই অনুরোধ করছি আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আপনার সন্তান যদি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, তাহলে সে পরবর্তী শ্রেণিতে যাবে; আর যদি না হয়, তাহলে তাকে বর্তমান শ্রেণিতেই পুনরায় অধ্যয়ন করতে হবে।

অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক কাজী আশরাফুল আলম, মিরাজ উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া ইসলাম, প্রভাষক রূপালী বিশ্বাস, ইকরামুল হাসান, খাইরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

কমিউনিটি পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার মানোন্নয়ন, কলেজ পরিচালনায় অভিভাবকদের মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে কলেজ মিলনায়তনে এ অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় অভিভাবকদের মধ্যে তৌহিদ মুর্শেদ অতুল, দাউদ আলী, ফরহাদুর রেজা, হালিমা খাতুন, শাহনাজ আকতার, জহিরুল ইসলাম, সুধারাণী রায়, আবদুল মাবুদ নান্নু, জয়া সরকার, সাহাজুল ইসলামসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।




দীপিকার সৌন্দর্যের রহস্য হাইফু, কিভাবে কাজ করে এই পদ্ধতি

বয়স কমাতে কে না চায়, কে চায় শরীরে বার্ধ্যকের ছাপ পড়ুক! বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনও চাননি। তাইতো চেহারা ধরে রাখতে হাইফু। চির সবুজ থাকছেন। কিন্তু ত্বকে লাবণ্য ধরে রাখার এই হাইফু পদ্ধতি কি—এটি কাজ করে কিভাবে?

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, হাইফু (HIFU) হচ্ছে হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আল্ট্রাসাউন্ড। দীপিকা এটি করিয়েছিলেন ‘সিংগম এগেইন’ মুভির শ্যুটিং চলাকালে। এটি বিশেষ ধরনের নন-ইনভেসিভ থেরাপি। যা সার্জারির চেয়েও বেশি কার্যকর।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দীপিকা বলেছেন, তিনি সার্জারির মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধির পক্ষে নন। ছুঁরি-কাচির নিচে বসতে চাননি। এতে মুখের স্বাভাবিক কাঠামো বদলে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। বলিউড অভিনেত্রীর মতে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনি বেছে নিয়েছেন হাইফু, যা কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং কার্যকর।

কীভাবে কাজ করে এই থেরাপি

হাইফু হলো একধরনের উন্নত প্রযুক্তি, যা ছুরি-কাঁচি ছাড়াই ত্বকের গভীরে কাজ করে। আল্ট্রাসাউন্ড তরঙ্গের সাহায্যে কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে বলিরেখা ও ঢিলে হয়ে যাওয়া ত্বক মসৃণ করে। মুখ ছাড়াও গলা, হাত, বুক এবং ঊরুতেও এই থেরাপি প্রয়োগ করা যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চামড়ার ঝুলে যাওয়া এবং বলিরেখার সমস্যা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব এই পদ্ধতিতে।

ত্বক চিকিৎসক ড. শরিফা চৌসের মতে, হাইফু থেরাপি বোটক্স বা ফিলারের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ। বোটক্স বা ফিলারে ত্বকের অবাঞ্ছিত পরিবর্তন স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। তবে হাইফুতে এমন ঝুঁকি তুলনামূলক কম। ভুল প্রয়োগ হলেও পরবর্তীতে শুধরে নেওয়া সম্ভব।

বলা হয়, কুড়িতে বুড়ি আর চল্লিশে চালশে। তবে দীপিকার ক্ষেত্রে যেন উল্টে যাবে এই প্রবাদ। চল্লিশের কোঠায় পৌঁছে দীপিকা আজও নিজের সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতন রয়েছেন। তা অনেকে কাছে অনুপ্রেরণার।

সূত্র: যুগান্তর




বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আইনের সমান আশ্রয় লাভ করবে- জেলা জজ

মেহেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) নূর নবী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আইনের সমান আশ্রয় লাভ করবে এবং ন্যায়বিচার সহজলভ্য হবে। তিনি বলেন, আইনগত সহায়তার মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগণের জন্য ন্যায়বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এ উদ্দেশ্যেই ২০০০ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন প্রণয়ন করা হয় এবং এর আলোকে বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।

সোমবার সকালে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূর নবী আরও বলেন, “বিচারপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে মেহেরপুর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিতভাবে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্য বিনামূল্যে মামলা দায়ের, মামলা পরিচালনা, পরামর্শ প্রদানসহ নানামুখী সেবা দেয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে বিচারক, আইনজীবী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সচেতন নাগরিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। আমরা চাই, ন্যায়বিচারে যেন কারও বিঘ্ন না ঘটে এবং আর্থিক দৈন্যতা যেন কাউকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না করে। ন্যায়বিচারে সহজ প্রবেশ এবং ন্যায্যতায় সমান সুযোগ তৈরিতে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করবো। এতে করে আমাদের কাঙ্ক্ষিত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।”

জেলা লিগাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মাসুদ রানার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক তহিদুল ইসলাম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত মেহনাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিলুর রহমান খান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাহান আলী, জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন এবং পাবলিক প্রসিকিউটর সাইদুর রাজ্জাক টোটন।

আলোচনা সভার আগে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিতে জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনজীবী, শিক্ষার্থী ও সুধীজন অংশগ্রহণ করেন। ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা আইনি সহায়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির বার্তা ছড়িয়ে দেন।

অনুষ্ঠানে লিগ্যাল এইড আইনজীবী প্যানেলের সেরা আইনজীবী নির্বাচিত হওয়ায় রুতশোভা মণ্ডলকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল “দ্বন্দ্বে কোন আনন্দ নাই, আপস কর ভাই; লিগ্যাল এইড আশেপাশে, কোন চিন্তা নাই।”




প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের

গত ২৭/০৪/২০২৫ তারিখে মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত মেহেরপুর হাসপাতালে নারী ও শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা বন্ধ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.শাহারিয়া শায়লা জাহান প্রতিবাদ পত্র মেহেরপুর প্রতিদিনকে পাঠিয়েছেন।

প্রতিবাদ পত্রে তিনি বলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মেহেরপুরের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমানের সাথে রোগীর স্বজনদের সহিত কথাকাটাকাটি হয় এবং শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু অত্র হাসপাতালের ৩য় তলায় শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল না বা বর্তমানে বন্ধ নাই। হাসপাতালের ২য় তলায় মহিলা ও মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীর স্বজন ও স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের প্রভাবে চিকিৎসাসেবা সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হলেও চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল না বা বর্তমানে বন্ধ নাই।




চট্টগ্রাম টেস্টের সকাল জিম্বাবুয়ের

দ্বিধা ছাড়াই বলা যায়—চট্টগ্রামের সকালটা জিম্বাবুয়ের। নাজমুল হোসেন শান্ত পাঁচজন বোলার ব্যবহার করেছেন। সাফল্য পেয়েছেন দুজন। বাংলাদেশ তবে রান আটকাতে পারেনি। লাঞ্চের আগে সফরকারী দল জমা করেছে ৮৯ রান। উইকেট হারিয়েছে মোটে দুটি।

বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দারুণ শুরু পায় জিম্বাবুয়ে। ক্রেইগ আরভিন জেতেন টস। ওপেনিং জুটিতে আসে ৪১ রান। এরপর অভিষেক হওয়া তানজিম হাসান সাকিবের এবং তাইজুলের আঘাত। মাঝে কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ, তবে তা লুফে নিতে পারেননি টাইগাররা। চাপ সামলে পরে ট্রাকে ফেরে সফরকারীরা। লাঞ্চের আগে তারা দারুণ গতিতে জমা করেছে রান।

সকালে মাথাব্যথার হয়ে ওঠা ওপেনিং জুটি ভাঙেন সাদা পোশাকে প্রথমবার খেলতে নামা তানজিম। জিম্বাবুয়ের ওপেনার ব্রায়েন বেনেটকে ক্যাচ বানান জাকের আলীর। পরে বেন কারানকে পরাস্ত করেন তাইজুল। প্রতিপক্ষের দুই ওপেনারই আনেন ২১ করে রান। ৭ ওভারে ৩৬ রান খরচায় একটি উইকেট তুলেছেন তানজিম। ৯ রান খরচায় একটি উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তাইজুল। জিম্বাবুয়েকে ৩২ রান করে এগিয়ে নিচ্ছেন নিক উইলস। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামস (৬)।

আজ তিনটি পরিবর্তন নিয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় ও খালেদ আহমেদ হারিয়েছেন জায়গা। পিএসএল খেলতে যাওয়ার কারণে দলে নেই নাহিদ রানা। তার জায়গায় অভিষেক হয়েছে তানজিমের। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়। স্পিনার নাঈম হাসানকে রাখা হয়েছে বোলিং আক্রমণে।

সূত্র: যুগান্তর




পাল্টে গেছে মেহেরপুর সরকারি কলেজের দৃশ্যপট

একাদশ শ্রেণির ক্লাসে এখন এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা ড্রেস কোড মানে, নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হয়, মনোযোগী হয়ে ক্লাস করছে। এক সময় যেখানে ধারাবাহিক ক্লাসের ধারনাই অসম্ভব ছিল, সেখানে এখন নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষার পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

কয়েক বছর আগেও এই দৃশ্য কল্পনা করা কঠিন ছিল। ব্যবহারিক ক্লাস তো দূরের কথা, সাধারণ ক্লাসের উপস্থিতিও ছিল হতাশাজনক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন, পরীক্ষাগুলো হচ্ছে নির্ধারিত নিয়ম মেনে। কিছু শিক্ষক নিয়োজিত আছেন ক্যাম্পাসের পরিবেশ তদারকিতে, যাতে ক্লাস চলাকালে শিক্ষার্থীরা বাইরে ঘোরাঘুরি না করতে পারে।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের বর্তমান চিত্র এটি। বিশেষ করে বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম নজরুল কবিরের যোগদানের পর কলেজের চেহারায় এক অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে কলেজের অব্যবস্থাপনা দেখে দ্রুত সংস্কারে হাত দেন।

তিনি শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিয়মিত ক্লাস পরিদর্শন শুরু করেন, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝেও। আগে যেখানে শিক্ষার্থীরা অনিয়মিত ছিল, এখন তারা আগ্রহ নিয়ে ক্লাস করছে। পরীক্ষাগুলোও এখন জাতীয় মানের সিট প্ল্যান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হচ্ছে, রেজাল্ট প্রকাশ হচ্ছে নির্ধারিত নিয়মে।

কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক এস এম আশরাফুল হাবিব বলেন, “কলেজটি আগে গোচারণ ভূমি ছিল। আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার যোগদানের পর থেকে কলেজকে দৃষ্টিনন্দন করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। তিনি কলেজে সূর্যমুখী ফুলসহ বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করে সবুজে ভরিয়ে তুলেছেন। আইটি খাতে আধুনিকায়নে স্যারের অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যার ফলে এখন রেজাল্ট গ্রহণ, অর্থ জমা দেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।

তিনি আরও বলেন, “স্যার দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসী এবং সবকিছুতেই তা বাস্তবায়ন করেছেন। কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করতে তিনি পুরো সিস্টেম কম্পিউটারাইজড করেছেন। কলেজের হিসাব রক্ষণ বিভাগ আধুনিকায়ন করা হয়েছে, আইটি সেকশনে চালু হয়েছে বিশেষ ট্রেনিং কোর্স।”

অধ্যক্ষের উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় কলেজের পরিবেশে নতুন প্রাণ ফিরে এসেছে। শিক্ষকরা একযোগে কাজ করছেন শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়ায় মেহেরপুর সরকারি কলেজ এখন শুধু জেলারই নয়, গোটা অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গনে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “আমাদের নতুন প্রিন্সিপাল স্যার যোগদানের পর কলেজ যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিনি কলেজে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছেন এবং বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন। আমাদের সকলের জন্য ড্রেস কোড নির্ধারণ করেছেন। এছাড়াও এখন নিয়মিত ক্লাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা আমরা আগে এই কলেজে কখনও দেখিনি।”

কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আব্দুল লতিফ বলেন, “যে কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি নেতৃত্ব ভালো হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান হোক তা কলেজ বা অন্য কোনো ইন্ডাস্ট্রি, ভালোভাবে পরিচালিত হয়। আমাদের বর্তমান প্রিন্সিপাল স্যার যোগদানের পর থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কলেজকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশের অনেক কলেজে টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নেয়া হয় না, কিন্তু স্যার এখানে নিজ উদ্যোগে বিনা খরচে চারটি টিউটোরিয়াল পরীক্ষা পরিচালনা করছেন। আমাদের সিলেবাস এমনভাবে সুষমভাবে বণ্টন করা হয়েছে যে, টেস্ট পরীক্ষায় কী হবে এবং ফাইনাল পরীক্ষায় কী থাকবে, তা স্পষ্টভাবে নির্ধারিত আছে। প্রতিটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে নিয়মিত ক্লাসও পরিচালিত হচ্ছে। এই সবকিছু মিলিয়ে কলেজের আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম নজরুল কবির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে জানান, “একটি নামকরা কলেজ একদিনে গড়ে ওঠে না। যদি আমরা আমাদের মেহেরপুর সরকারি কলেজকে সেই আদলে গড়ে তুলতে চাই, তবে শিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের একযোগে কাজ করতে হবে।”

তিনি আশা প্রকাশ করে আরও বলেন, “মেহেরপুরের এই ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন কলেজের পুরনো গৌরব আমরা অবশ্যই ফিরিয়ে আনতে পারবো।”




গাংনীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত ১, ছিনতাইকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খায়রুল ইসলাম (৪০) নামে একজন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত খায়রুল ইসলাম তেরাইল গ্রামের মৃত বিচার উদ্দীনের ছেলে। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে খায়রুল ইসলামের ওপর ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে হামলা চালান সানোয়ার হোসেন (৩৫) সহ কয়েকজন ছিনতাইকারী। এসময় ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর খায়রুলের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে সানোয়ারকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সানোয়ার হোসেন বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার কড়ুইবাড়িয়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাণী ইসরাইল জানান, খবর পেয়ে বামুন্দি ক্যাম্প পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সানোয়ার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান।




মুজিবনগরের মোনাখালী ইউপি প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নবনিযুক্ত প্রশাসক মুজিবনগর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব উদ্দিন রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান প্রায় ছয় মাস ধরে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আটক থাকায় ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের স্বাক্ষরিত আদেশে মোহাম্মদ রকিব উদ্দিনকে মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়, পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা, নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখা এবং আইনানুগ দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মোহাম্মদ রকিব উদ্দিন। এ সময় ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ, পরিষদের সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

দায়িত্ব গ্রহণের পর মোহাম্মদ রকিব উদ্দিন বলেন, “প্রশাসন আমার উপর যে আস্থা রেখেছে, সেই আস্থার প্রতিদান দিতে আমি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবো। মোনাখালী ইউনিয়নের জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছি। সকলের সহযোগিতায় ইউনিয়নের চলমান কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে চাই।” তিনি ইউনিয়নের সকল সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।