কোটচাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও যুবলীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা

কোটচাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও যুবলীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ভাংচুর চালিয়েছেন আওয়ামীলীগ কার্যালয়েও। রবিবার বিকেলে গণমিছিলের পর এ ঘটনা ঘটান আন্দোলনকারীরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেল ৩ টার সময় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কোটচাঁদপুরে গনমিছিলের হওয়ার কথা ছিল। এরমধ্যে বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা প্রশাসন পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি মাইকিং করেন। এ খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে মুহুর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় শহরের সব দোকান পাট। অফিসগুলো ও দেখা যায় তালা বদ্ধ।

এরপর আন্দোলনকারীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে গণমিছিল করেন। পরে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দিয়ে বাজার ঘুরে আবার মেইন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।

তবে এর আগে আন্দোলনকারীরা কোটচাঁদপুর বাজারের পৌর শহরের মুক্তি যোদ্ধা ও যুবলীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। পরে ভাংচুর চালান কোটচাঁদপুর মেইনবাসস্ট্যান্ডে সড়কের আওয়ামীলীগ অফিসে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী । তিনি বলেন,যাদের ভাংচুর করার তারাই করেছেন। তবে এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নাই। ভাল হয় অন্য নেতাদের কাছ থেকে তথ্যটি জেনে নেয়া। তারা বিষয়টি ভাল বলতে পারবেন।

কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল- মামুন বলেন, আমরা জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। তবে এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ বা মামলা করেনি।




কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ: সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক

কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথমদিন পুলিশের সঙ্গে ছাত্র–জনতার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে দশটা থেকে শহরজুড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আন্দোলনকারী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষ চলাকালে মজমপুর এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়, এনএস রোডে পাঁচরাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, থানা মোড়ে মডেল থানার প্রধান ফটক, জেলা পরিষদ ভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা–ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মার্কেটে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দফায় দফায় কাদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছুড়েছে। তবে এ সময় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের কোথাও দেখা যায়নি। এসব ঘটনায় ছয় সংবাদকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ আন্দোলনকারী, পথচারীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে ১০টার পর থেকে শহরের মজমপুর বাস ডিপো মসজিদের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনতা। পরে বেলা ১১টার দিকে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এ সময় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের দুই পাশ থেকে শত শত মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে যোগ দেন। পরে তাঁরা চৌড়হাস মোড়ে গিয়ে সেখানে মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এ সময় কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ১০-১২ জন পুলিশ সদস্যের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে সেখানে ছয়-সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন। স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। চৌড়হাস মোড়ে মুক্তিমিত্র স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর করা হয়।

চৌড়হাস মোড়ে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর ছাত্র-জনতা আবার মিছিল নিয়ে মজমপুর রেলগেটের দিকে রওনা হয়।
পরে রাইফেলস ক্লাবের পাশে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কার্যালয় ভেঙে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সাদ্দাম বাজার মোড়ে শেখ রাসেল মার্কেটের দোতলায় কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মানজিয়ার রহমান চঞ্চলের ব্যক্তিগত কার্যালয় ও নিচতলায় সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। এরপর মিছিলকারীরা একে একে মজমপুর রেলগেটে জেলা ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে তাণ্ডব চালান; আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কুষ্টিয়া মডেল থানা ও জেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষতি করা হয়। হামলার সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েক নেতা-কর্মী শান্তি সমাবেশ করছিলেন। এ ছাড়া বড়বাজার রেলগেটের কাছে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন। বেলা দুটোর পর আন্দোলনকারীরা পুনরায় মজমপুর বাস ডিপো মসজিদের সামনে জড়ো হন। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর কুষ্টিয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক শরীফ বিশ্বাস, ক্যামেরা পারসন এস আই সুমন, একাত্তর টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাহিন আলী, স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক শিকল এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, দেশ টিভির ক্যামেরাপারসন ইরফান রানা ছররা গুলিতে আহত হন। এ ছাড়া দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বিকেল সাড়ে চারটার দিকেও চলছিল। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শহরের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে।

এসব বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সর্তক অবস্থানে ছিল। কিন্তু পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা পুলিশের স্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়েন।




মেহেরপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল

সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বাসভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের শামসুদ্দোহা পার্কে এসে আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

মিছিলটির নেতৃত্ব দেন বাড়াদি ইউনিয়ন পরিষদের ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোমিনুল ইসলাম মোমিন।

এসময় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ইব্রাহিম শাহিন, উপ-প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাশেম, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জামান, শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন, মেহেরপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহমেদ সহজেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।




একদিন এগিয়ে সোমবার ‘মার্চ টু ঢাকা’

আন্দোলনকারীদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগস্ট করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

রোববার (৪ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানান তিনি।

আসিফ মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগস্ট করা হলো। অর্থাৎ আগামীকালই সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজ প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতার প্রাণহানি হয়েছে। চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন এবং যারা পারবেন আজই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোতে অবস্থান নিন।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, চূড়ান্ত লড়াই, এই ছাত্র নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ থেকে সবাই ঢাকায় আসুন। যে যেভাবে পারেন ঢাকায় কালকের মধ্যে ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাবে।

এর আগে, এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামীকাল সোমবার (৫ আগস্ট) সারা দেশে শহীদদের স্মরণে শহীদ স্মৃতিফলক উন্মোচন করার কথা জানানো হয়েছিল। এ ছাড়া শাহবাগে সকাল ১১টায় শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকেল ৫টায় নারী সমাবেশে ডাক দেওয়া হয়। পরের দিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সারা দেশের ছাত্র-নাগরিক-শ্রমিকদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানানো হয়। যেটিকে লংমার্চ টু ঢাকা নাম দেওয়া হয়েছে। এখন লংমার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আনল আন্দোলনকারীরা।

এদিকে বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত ১৪ জেলায় ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জে দুজন, মাগুরায় পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, রংপুরে তিনজন, সিরাজগঞ্জে সাতজন, বরিশালে একজন, ভোলায় তিনজন নিহত, বগুড়ায় দুজন, জয়পুরহাটে একজন, ফেনীতে পাঁচজন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, কুমিল্লার দেবিদ্বারে একজন নরসিংদীতে ছয়জন ও সিলেটে দুজন নিহত হয়েছেন।

সূত্র: কালবেলা




তিন দিন বন্ধ থাকবে ব্যাংক

আগামী তিন দিন (সোম-মঙ্গল-বুধবার) বন্ধ থাকবে ব্যাংক। আজ রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে সারা দেশে তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় সব ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

এদিকে, বিকালে দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সূত্র: ইত্তেফাক




চুয়াডাঙ্গা দর্শনা ও জীবননগরে কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ

একদফা দাবীতে চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে কর্মসূচী পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন তারা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। জেলাজুড়ে এমন পরিস্থিতি অব্যাহত আছে। রবিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ভালাইপুর বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

এসময় তারা একদফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে যান চলাচল বন্ধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। সড়কের দু পাশে সৃষ্টি হয় যানজট। একই সময় জেলা শহরের কোর্টমোড় এলাকাতে বিক্ষোভ করতে গেলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। শহরের হাসপাতাল সড়কে সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালালে সেখানে ৩ জন আহত হন।

দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শহরে ছাত্র ছাত্রী ও জামাতের লোকজন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তার মোড়ে জড়ো হলে কিছুটা চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।তারপর মানুষের মনে আতঙ্কসৃষ্টি হয়। মুহূর্তে জনশূন্য পরিনত হয়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা। রোকসানা মিতা প্রশাশন সাথে নিয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ দর্শনাকে শান্ত করার জন্য মটরসাইকেল মহড়া দেয় এবং তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য প্রকাশ্যে পটকা ফুটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।

এছাড়া জেলার বদরগঞ্জ, জীবননগর ও আলমডাঙ্গাতেও সড়কে নামে আন্দোলনকারীরা। এদিকে, এমন পরিস্থিতিতে জেলাজুড়ে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।




৩ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা

দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (০৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্‌ উদ্দিন বলেন, তিন দিন সাধারণ ছুটির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগির এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করে রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম শনিবার (৩ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিন চলছে। রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫২ জন।

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে গণবিক্ষোভের নামে ছাত্র-জনতার তান্ডব, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত ২৫

ঝিনাইদহে গণবিক্ষোভের নামে ছাত্র-জনতার তান্ডব, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া পুলিশের রাবার বুলেট সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ বিভিন্ন স্থপনা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করেছে আনোদলনকারীরা। একজন সাংবাদিকসহ আহত ২৫।

আজ রবিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল প্রায় ২টা পর্যন্ত চলে এই তান্ডব ও গণ মিছিল। আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ, থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এছাড়া আন্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, বঙ্গবন্দু ও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত আওয়ামী লীগ নেতাদের পোস্টার, ব্যানার, ছাত্রলীগের অফিস ও ঝিনাইদহ ডাকঘরের গ্লাসসহ বিভিন্ন স্থপনা ভাংচুরের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসুচির প্রথম দিন অতিবাহিত হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলে শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ ২৫ জন আহত হন। ভাংচুর করা হয় দুইটি পুলিশ বক্সও। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ও কয়েক জনকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, সাবিক, সবুজ, আপন, মহিবুল্লাহ, আল-কাবির, মৃদুল, পারভেজ, সিফাত, পিকুল, ফয়সাল সোয়াদ, সজল রাব্বি, সাব্বির, রাজু, হাসিব, মেহেদী, আসিফ, নয়ন, আবিদ, সাগর ও শাওন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ নুসরাত জাহান জানান, আহত শিক্ষার্থীদের বয়স ১৬ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৩ জনের গায়ে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। বাকীরা কাঁদানে গ্যাসে আহত হয়েছেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরের ছবি তুলতে গিয়ে সময়ের আলোর সাংবাদিক কাজী আলী আহম্মেদ লিকু, সাংবাদিক মিরাজ, সুজন, ও হাসান বিক্ষোভকারীদের হাতে আহত হন।

এ সময় চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত ‘ঝিনেদা টিভি’ নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়া অফিসের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন এলাকা বিক্ষোভকারীদের দখলে ছিল। জেলা সদরের সব পুলিশ এ সময় সদর থানার মধ্যে অবস্থান গ্রহন করে।

আজ রোববার সকাল থেকেই ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট দখল করে নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। বেল ১১টা থেকে জেলা বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্ররা ঝিনাইদহ শহরে সমবেত হতে থাকেন। এরপর ঝিনাইদহ পাবলিক হেলথ জামে মসজিদ, আরাপপুর ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে এক যোগে ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল ও শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ঝিনাইদহ শহর। প্রথম থেকেই ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। দুপুরের দিকে মিছিলটি পায়রা চত্বর থেকে থানার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভকারীরা জানতে পারে তাদের দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের ছাড়াতে ছাত্র জনতা জোটবদ্ধ হয়ে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এ সময় বিক্ষোভকারীরাও থানার মধ্যে অবস্থান নেয়া পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘন্টাব্যাপী চলার পর আবারো জোটবদ্ধ হয়ে তারা পায়রাচত্বর ও পোষ্ট অফিস মোড়ে অবস্থান নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের ব্যানার, ফেষ্টুন, দুইটি পুলিশ বক্স, প্রেরণা একাত্তরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী শারমিন সুলতানা, রায়হান ও হুসাইন কর্মসুচি শেষ করার ঘোষনা দেয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা বাড়ি ফেরার পথে পানি উন্নয়ন বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন, শহরের মডার্ন মোড়ে নির্মিত আ’লীগের সভামঞ্চ ও বিদ্যুত উন্নয়ন অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করতে দেখা যায়। এসময় আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কোন নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। তবে তারা বিকাল ৪টার পর মাঠে নামেন এবং একটি শান্তি মিছিল করেণ।




শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সমর্থনে ফেসবুক লাল করলেন তাপস

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুক লাল করে ফেললেন গান বাংলার কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপস। ফেসবুকে ‘লাল রঙ’ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে একটি বার্তাও দিয়েছেন কৌশিক হোসেন তাপস।

তিনি লিখেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি ব্যথিত, মর্মাহত। একজন সচেতন নাগরিক, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী ও সর্বোপর একজন মানুষ হিসেবে আর চুপ করে থাকা সম্ভব নয়। যা ঘটেছে তা অন্যায়।

হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বন্ধ হোক সকল হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা। ধ্বংসযজ্ঞ চাই না, সুবিচার চাই। কে নিশ্চিত করবেন? মাননীয় তথ্য প্রতিমন্ত্রী কী জবাব দেবেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সবসময় মানবতার পাশে ছিলেন, এই দুর্দিনে আপনি জানাবেন কি এর সমাধান কোথায়?

এর আগে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে লাল রঙের মাঝে মানচিত্রের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। যেই একই ছবি প্রকাশ করতে দেখা গেছে স্বনামধন্য গীতিকার প্রিন্স মাহমুদকেও।

সূত্র: ইত্তেফাক




 মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচি

সারা বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে জামাত-বিএনপি’র যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তার মোকাবেলা এবং জনগণের জানমাল রক্ষার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ।

মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারে বেলা বারোটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, মোনাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফা গাইন,দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তাকিম হক খোকন কমান্ডার, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তকলিমা খাতুন, দারিয়াপুর চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম রবি, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমানসহ ছাত্রলীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ কৃষক লীগ, তাঁতী লীগ সহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীবৃন্দ।

এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দেওয়ার সময় সাব্বির নামে এক শিক্ষার্থী রাস্তাদিয়ে মটরসাইকেরে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগকে টোকায় লীগ বলে কটুক্তি করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি সহ অন্যান্য নেতাকর্মীর এগিয়ে গিয়ে ছেলেটিকে রক্ষা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।