ইকো ফ্রেন্ডলি ফ্যাশন বাঁচাবে পরিবেশ

পুরো পৃথিবী এখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত। রাষ্ট্রীয় নীতিমালা থেকে শুরু করে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এখন ইকো ফ্রেন্ডলি ব্যবস্থাপনার ব্যবহার বাড়ছে। ইকো ফ্রেন্ডলি পোশাকও সম্প্রতি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইকো ফ্রেন্ডলি এই পোশাককে এখন ফাস্ট ফ্যাশন বলা হয়। এই ফাস্ট ফ্যাশন বিশাল এবং দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

আমরা জানি, পোশাক তৈরি নানা পর্যায়ে বর্জ্য তৈরি হয় এবং এই বর্জ্যগুলো বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করে। এসব বর্জ্য জমির ক্ষতি করে। পাশাপাশি মাটি ও পানিকে দূষিত করে ফেলে। ফাস্ট ফ্যাশন এখন জলবায়ু সংকটের একটি বড় সমস্যা। বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের ১০ শতাংশ এর জন্য দায়ী। পরিবেশকে বাঁচাতে তাই টেকসই বা ইকো ফ্রেন্ডলি ফ্যাশন অনুশীলনের বিকল্প নেই। কিন্তু সেটা কিভাবে করা যায়?

টেকসই উপকরণের ব্যবহার
ফ্যাশনের পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে টেকসই উপকরণ নির্বাচন করা। ক্ষতিকারক কীটনাশক ছাড়া জন্মানো জৈব তুলা পরিবেশবান্ধব উপকরণ হতে পারে। শণ, বাঁশ, পাটের মতো উপকরণ বেছে নিতে পারেন ফ্যাশন অনুষঙ্গ ও পোশাকের জন্য। পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে তৈরি কাপড় যেমন পলিয়েস্টার এবং নাইলন, বর্জ্য কমাতে সাহায্য করে।

এখন চল বেড়েছে হ্যান্ডলুমের- পোশাকে হ্যান্ডলুমের চাহিদা এখন তুঙ্গে। কারণ খাঁটি দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হয় এই হ্যান্ডলুমের পোশাক। তাঁতঘরে তৈরি হচ্ছে সুতো। ব্যবহার করা হচ্ছে প্রাকৃতিক রং। সেই সঙ্গে এই ধরণের পোশাক কাচা-ধোওয়া খুব সুবিধাজনক। এমনকি এখান থেকে দূষণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে না। এই সব কাপড় কিন্তু বায়োডিগ্রেডেবল।

অনেক বেশি করে ব্যবহার করা হচ্ছে ভেজিটেবল ডাই-ভেজিটেবল ডাই ইদানিং খুব জনপ্রিয়। কোনও রাসায়নিকের ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিক ভাবে রং তৈরি করা হচ্ছে। আর সেই রঙে রাঙানো হচ্ছে পোশাক। এই ভাবে রং তৈরি করলে তা পরিবেশের জন্য ভালো তেমনই কিন্তু পোশাকও দীর্ঘদিন ভালো থাকে। তবে সঠিক ভাবে তার সংরক্ষণ প্রয়োজন।

কমে আসছে সিন্থেটিকের ব্যবহার
সিন্থেটিক কাপড় কিংবা রঙের ব্যবহার আগের থেকে এখন অনেকটাই কমেছে। বরং সুতি, লিনেন, সিল্ক এসব অনেক বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। খাঁটি লিনেন কাপড় তৈরি হয় তিসি থেকে। আর এই শস্যের ফলনে তেমন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। তাই প্রকৃতিও থাকে নিরাপদে।

মিনিমালিজম ও মননশীল খরচ অনুশীলন
আমরা অনেকেই এক পোশাক একবারের বেশি পরতে চাই না। প্রকৃতির জন্য মারাত্মক হুমকি এই অভ্যাস। অতিরিক্ত খরচ এবং অপচয় এড়াতে এক পোশাক অনেকবার ব্যবহার করুন। কেনার আগে পোশাক বা ফ্যাশন অনুষঙ্গওটি সত্যিই প্রয়োজন কিনা তা বিবেচনা করুন।

মেরামত, পুনরায় ব্যবহার ও আপসাইকেল
মেরামত এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে পোশাকের আয়ু বাড়ানো বর্জ্য কমানোর একটি শক্তিশালী উপায়। সেলাইয়ের বোতাম, মেন্ডিং টিয়ার এবং হেমিং এর মতো সহজ মেরামত পোশাকগুলোকে অনেক দিন পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী রাখে। আপসাইক্লিং বা সৃজনশীলভাবে পুরানো জামাকাপড়কে নতুন আইটেমে রূপান্তর করা আরেকটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি।

শুধু তাই নয়, পোশাক ধোওয়ার ক্ষেত্রেও কিন্তু সচেতন হতে হবে- জামাকাপড় কাচতে এখন সব বাড়িতেই ভরসা ওয়াশিং মেশিন। পুরনো পোশাক ফেলে না দিয়ে রিমডেলিং করতে হবে। ছেঁড়া থাকলে নিজের মতো সেলাই চালিয়ে কিংবা পেন্ট করে অন্যরকম লুক দেওয়া যেতে পারে। কীভাবে পুরনো পোশাককে একদম অন্যরকম ভাবে লুক পরিবর্তন করা যায় এই সংক্রান্ত অনেক রকম ভিডিও পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

জামা কেনায় মিতব্যয়ীতার পরিচয় দিন
জামা কাপড় পরিমাণে কম কিনুন। অধিক কিনে নষ্ট করবেন না। এমন কিছু কিনুন যা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার অতিরিক্ত পোশাক কাউকে দিয়ে দেবেন বলে ভাবছেন। কিন্তু আপনার এই অতিরিক্ত পোশাক নেওয়ার মতো লোকজন কিন্তু এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে।

ইকো ফ্রেন্ডলি পোশাকের জন্য সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে। এব্যাপারে বিভিন্ন ব্র্যান্ড যাতে এগিয়ে আসে সেইদিকে নজর দেওয়া দরকার।

সূত্র: ইত্তেফাক




চুয়াডাঙ্গার অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা 

চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন রাজনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন, যৌতুক দাবী ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।

আজ শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ সেকেন্দার আলী মামলা রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামের মরহুম দলিল বিশ্বাসের ছেলে শাহাবুদ্দীন রাজন। তিনি প্রায় এক যুগ আগে একই গ্রামের জেসমিন আরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করেন। তাদের শাবাব (৯), সাদমান (৭) ও শায়ন (২) নামে তিনটি ছেলে সন্তান রয়েছে। রাজন বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবী করে আসছেন। তিনি জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার একটি মাদ্রাসায় চাকরীর কথা বলে শ্বশুরের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়ে আর ফিরিয়ে দেননি। এরপর আবারও তিনি টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে তার স্ত্রীকে শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করেন।

মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন,তার স্বামীকে মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি নিষেধ করলেও তিনি না শুনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ জুলাই বিকেলে চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার শান্তিপাড়া স্কুলমোড়ের বাবুর ভাড়া বাসায় থাকাকালীন স্বামী ও শ্বাশুড়ী মিলে টাকার দাবীতে তাকে নির্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে ধরেন। পরে মাটিতে ফেলে মারপিট করে গুরুতর আহত করলে স্থানীয়দের সহায়তায় সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। ২৫ জুলাই সকালে ঘটনাটি তিনি তার পরিবারকে জানালে তার স্বামী আবারও তাকে মারপিটের চেষ্টা করলে তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। প্রাণ বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে।

অধ্যক্ষের স্ত্রী মামলার বাদী জেসমিন আরা বলেন, তিন শিশু সন্তান নিয়ে বিচারের আশায় পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছেন। নির্যাতন, হত্যা চেষ্টা ও যৌতুক দাবীর ঘটনায় সদর থানায় স্বামী ও শ্বাশুড়ীর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছি। অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুক তিনি সেটাই চান। তিনি আরো জানান, তার স্বামী গত ৭ মাস বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া, গোসল করেন না। মাঝে মাঝে বাইরে রাত যাপন করেন। সন্তানসহ তাকে ভাড়া বাসায় রেখে নিজের ইচ্ছা মত চলাফেরা করেন। প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠে চাকরী পাওয়ার পর নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ সেকেন্দার আলী জানান, প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ)/৩০ তৎসহ পেনাল কোডের ১১৪/৫০৬ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। সদর থানার মামলা নং-০২, তারিখ ০১/০৮/২০২৪ ইং। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে তিনি গাঁঢাকা আছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেছেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি শহরের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেও দায়িত্ব পালন করেন। তারা জানান, অধ্যক্ষ নিজের খেয়াল খুশি মত বিদ্যালয় পরিচালনা করার পাশাপাশি বিদ্যালয় ও পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কয়েকজন নারী অভিভাবকের সঙ্গে খোসগল্পে মেতে থাকেন। এতে ঐতিহ্যবাহী প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এমন নারীলিপ্সু অধ্যক্ষ এ স্কুলটির সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা প্রত্যাশা করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীনের কাছে মামলা ও নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন নাম্বারে কল দেওয়া হয়। ০১৭৩৭-১৩৫০৫৪ নম্বর মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। ০১৬১৭-১৪৫১২০ নম্বর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বললে তিনি কলটি কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়ে থাকলে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। মামলা দায়েরের কাগজপত্র আমরা চাইবো। প্রতিষ্ঠানের বিধান মোতাবেক যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সেই আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরীর বিষয়টি তার জানা নেই বলে তিনি জানান। তবে খোঁজ নেয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। তিনি আরো বরেন, ওনার বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন কর্ণার থেকে আমরা খবর পাচ্ছিলাম। আমরাও তথ্য সংগ্রহ করার জন্য কাজ করছি। মূল প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




ফের মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও

আবারও মোবাইল নেটওয়ার্কে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল নেটওয়ার্কে রাশিয়াভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামও বন্ধ করা হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুরু হলে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে ৩ জুলাই দুপুর পর্যন্ত মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ ছিল। গত ৩১ জুলাই বেলা ২টার পর থেকে তা চালু হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টার পর মোবাইল নেটওয়ার্কে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোর ক্যাশ বন্ধ করা হয়। পাশাপাশি এই নেটওয়ার্কে টেলিগ্রামও বন্ধ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাত থেকে দেশে ইন্টারনেটে গতি স্বাভাবিক হচ্ছিল। দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১২ কোটির বেশি। ফেসবুক মোবাইল ডেটায় বন্ধ থাকলে আবার ভিপিএনের ব্যবহার বাড়বে এবং তা ইন্টারনেটের গতির ওপর প্রভাব ফেলবে।

গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে এবং ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়েছে। কিন্তু বন্ধ ছিল মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম। এ ছাড়া টিকটকও বন্ধ রাখা হয়। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড সংযোগে ইউটিউব চালু থাকলেও মোবাইল ডেটায় তা বন্ধ ছিল।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ফেসবুকের ভূমিকার কথা বলেছিলেন। ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে এসব প্ল্যাটফর্মগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি গত ৩১ জুলাই ফেসবুকের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন। ইউটিউব ইমেইলে ব্যাখ্যা দেয় এবং টিকটকের প্রতিনিধি সেদিন হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন।

আন্দোলনের মধ্যে সরকার ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবের কাছে কনটেন্ট সরানোর অনুরোধ করেছিল। বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৬ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ফেসবুক সরকারের অনুরোধের বিপরীতে ১৩ শতাংশ এবং ২৫ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ৭ শতাংশের বেশি আধেয় সরিয়েছে। ইউটিউব ১৭ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সরিয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। টিকটক সরিয়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ।

সূত্র: প্রথম আলো




আর একটা গুলিও যেন ছাত্রদের ওপর না চলে: হামিন আহমেদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবার মাঠে নেমেছে সংগীতশিল্পীরা। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার পর সংগীতশিল্পী ও সংগীত অনুরাগীরা রবীন্দ্র সরোবরে জড়ো হতে থাকেন। এরপর তারা র‍্যালি করে শহীদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। এসময় কথা বলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হামিন আহমেদ।

হামিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আপনারা যারা আন্দোলন করছেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে একমত। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। একটা কথা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, আর একটা গুলিও যেন ছাত্রদের ওপর না চলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর একটা জীবনও যেন না যায়। যাদের ধরপাকড় করা হয়েছে তাদের যেন অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হয়। যে জীবনগুলো গেছে এর সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। কোনো দলের কমিটি দিয়ে নয়।’

গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে হামিন বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার চাই। আমরা বাকস্বাধীনতা চাই। আমরা আশা করবো যারা জনসাধারণের মনের কথা বুঝতে পারবে আমরা তাদেরকে চাই।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারকাদের অনেকেই। এদিকে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, গণমাধ্যমসহ দৃশ্যমাধ্যমের বিভিন্ন শাখার শিল্পী ও কর্মীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ শিল্পীরা।

সূত্র: ইত্তেফাক




অন্তিম যাত্রার আয়োজন

আমাবস্যার ঘোর অমানিশায় বিনিদ্র নিম রজনীর নিঃসীম ঘণ,গাঢ় আঁধারে খুঁজেছি
হারিয়ে যাওয়া,দূ-স্নৃতির আড়ালে তলিয়ে যাওয়া তোমায় দৃষ্টির নিভূ নিভূ প্রদীপ জ্বেলে।
পাইনি কোথাও তোমায়,পাইনি তোমার ছায়াকে,
পাইনি আমার আলেয়ার আলোকেও।
নিঃসঙ্গ,অসহায়,একলা আমি হাঁতড়ে বেড়িয়েছি জীবনের ডায়েরী থেকে হারিয়ে যাওয়া ধূসর,
মুছে যাওয়া কত স্নৃতির!
পারিনি ব্যর্থ আমি! পারিনি,আমাতে জড়িয়ে থাকা তোমাকে আমা হতে ভিন্ন,আলাদা করতে!পারিনি,দু’হাতে সরিয়ে দিতে আমার চারপাশে অক্টোপাশের মত আষ্টে-পিষ্টে আঁকড়ে থাকা শত-সহস্র কষ্টের জাল ছিন্ন করতে!
নিরাশার ধূ ধূ বালুচরে ডুবে যেতে থাকা আশা-আকাঙ্খারাও ভয় পায় এখন আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে।
সারথিহীন স্বপ্নরা এখন আর ডানা ঝাপটে উড়ে বেড়ায় না ঐ অসীম গগণতলে।
এই নশ্বর ধরিত্রী এখন আর আমাকে চায় না ঠিক তোমার মত।
নিরবিচ্ছিন্ন একাকীত্ব এখন আমার অন্তিমশয্যার পুষ্পসজ্জা।
নিদারুণ মর্মভেদী অসহায়ত্ব ওপারে যাবার ভেলা।

অতএব, একাকীত্ব ও অসাহয়ত্বকে সঙ্গী করেই তবে আরম্ভ হোক আমার তিরোধানের,অন্তিম যাত্রার!!!




সরকারের সাথে বসার কোনো পরিকল্পনা নেই: সমন্বয়ক নাহিদ

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এরই প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।

শনিবার (৩ আগস্ট) একটি সংবাদমাধ্যমকে নাহিদ বলেন, যখন আমরা ডিবি হেফাজতে ছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডিবি হেফাজতে অনশন করেছিলাম।

জানা গেছে, সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও করেছে আওয়ামী লীগ। যেখানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা শুক্রবার (২ আগস্ট) ঘোষণা দিয়েছেন, তারা সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং তাদের নয় দফা দাবি আদায়ে রোববার (৪ আগস্ট) থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন শুরু করবেন। এদিকে নয় দফা দাবি আদায়ে তারা শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। তাদের কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের মানুষকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

তাদের নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমা চাও এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের পদত্যাগ।




সমন্বয়কদের সঙ্গে আমি বসতে চাই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।

দেশের চলমান পরিস্থিতি শান্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে চান বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩ আগস্ট) গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




 জামিন পেল ৮০ এইচএসসি পরীক্ষার্থী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের বিশেষ উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ৮০ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৬ জন, খুলনা বিভাগের ছয়জন এবং রংপুর বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয় জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতা ও নাশকতামূলক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে আইনমন্ত্রী তাদের জামিনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এ জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের দ্রুত জামিন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে সারা দেশের প্রসিকিউশন টিমকে (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) নির্দেশনা দেন।

এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ছুটির দিনেও ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে ৩৭ জন এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে পাঁচজন পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে কারাগারে যেতে না হয় সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, কিন্তু প্রসিকিউশন টিম আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই যারা সহিংসতায় সম্পৃক্ত নয়, যারা এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাদের জামিনের ব্যাপারে উদ্যোগী হতে প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হওয়া ১৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. শহিদুল ইসলামের আদালত তিনজনকে জামিন দেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহর আদালত আরো ১৩ জনকে জামিন মঞ্জুর করেন।

চট্টগ্রামের জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময় অন্য কোনো এইচএসসি পরীক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়ে থাকলে তাদের অভিভাবকরা যেন দ্রুত যোগাযোগ করেন।




দর্শনায় অধিকার বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর স্যানিটেশন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন

মৌচাক সমাজ উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে দর্শনায় অধিকার বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর স্যানিটেশন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় দর্শনা পৌরসভার রামনগর কালিদাসপুর আদিবাসী পাড়ায় বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, মৌচাক উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি তক্কেল আলী, মৌচাক উন্নয়ন সংস্থার ম্যানাজার মকগুল হোসেন।




ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া খ্রীষ্ট্রিয়ান কর্মজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি হলেন জেমস স্বপন মল্লিক

ঢাকাস্থ বৃহত্তর কুষ্টিয়া খ্রীষ্ট্রিয়ান কর্মজীবি সমবায় সমিতি ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

আজ শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ছাতা প্রতীকে ১৬৬ ভোট পেয়ে মেহেরপুরের জেমন স্বপন মল্লিক বাবু সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যান্টনী এডুওয়ার্ড ম-ল পেয়েছেন চেয়ার প্রতীকে ১১৮ ভোট। এছাড়া বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন সহ-সভাপতি পদে সেরাফিন ম-ল, ট্রেজারার পদে জর্জ সুমন ম-ল, পরিচালক ম-লির সদস্য পদে পঙ্কজ সরকার টুটুল, ভিনসেন্ট বিশ্বাস ও সলিল ম-ল।

নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তেজগাঁজ থানা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজ্জাক উল্লা পাটওয়ারি, সদস্য ঢাকা জেলা সমবায় কার্যালয়ে পরিদর্শক মুন্সী আব্দুল কাউয়ুম ও তেজগাঁও সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্শক মো: হাবিবুর রহমান।