ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে বাড়ি-ঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে প্রতিপক্ষের হামলায় বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মারামারিতে মোশারফ নামে একজনের মৃত্যু হয়।

এরই জেরে গত কয়েকদিন ধরে ওই গ্রামের জব্বার মন্ডল, সাঈদ মন্ডল, রমজান, নাজমুল, ঠাণ্ডুসহ বেশ কয়েকজনের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করছে প্রতিপক্ষরা বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে আকুলের বাড়ি ভাংচুর ও ফসলি জমি লুটপাটের শিকার হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ খান জানান, উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা শোনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।




ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অস্থায়ীভাবে ৩টি পদে মোট ১৮ জনকে নিয়োগে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পদগুলোর যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে যোগ দিতে পারবেন আপনিও। অনলাইনে পদগুলোর জন্য আবেদন শুরু হবে ২৪ মার্চ। আবেদন করা যাবে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত। ঝালকাঠির স্থায়ী বাসিন্দারা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম ও পদসংখ্যা

১. অফিস সহায়ক

পদসংখ্যা: ১৫

বেতন গ্রেড: ২০

বেতন স্কেল: ৮২৫০-২০০১০ টাকা

২. নিরাপত্তা প্রহরী

পদসংখ্যা: ২

বেতন গ্রেড: ২০

বেতন স্কেল: ৮২৫০-২০০১০ টাকা

৩. পরিচ্ছন্নতাকর্মী

পদসংখ্যা: ১

বেতন গ্রেড: ২০

বেতন স্কেল: ৮২৫০-২০০১০ টাকা

চাকরি আবেদনের বয়স

প্রার্থীর বয়স ২৩-০৪-২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। বয়স প্রমাণের জন্য এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য নয়।

আবেদনের নিয়ম

আগ্রহী প্রার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন। সেখানে আবেদনের বিস্তারিত তথ্যও পাবেন।

সূত্র: যুগান্তর




ঝিনাইদহে ইমামের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

ঝিনাইদহে এবার আব্দুর রহিম নামে এক ইমামের বিরুদ্ধে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর ওই ইমামকে এলাকাবাসী আটক করে।

অভিযুক্ত আব্দুর রহিমের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের আরাপপুর সোনালীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুটি শহরের একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

ভিকটিম শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে শিশুটিকে মসজিদের একটি ঘরে ডেকে নেয় আব্দুর রহিম। পরে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম তাকে ছেড়ে দেয়। পরে শিশুটি বাড়িতে ফিরে তার মায়ের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে।

ঘটনার পরে স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিযুক্ত আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি ও ভিকটিম শিশু কর্তৃক বর্ণনার ভিডিও সংরক্ষিত আছে। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে অপরিচিত কয়েকজন এসে অভিযুক্ত আব্দুর রহিমকে তাদের হেফাজতে নেন। আব্দুর রহিমকে কারা নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জানা গেছে, অভিযুক্ত আব্দুর রহিম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার পাশাপাশি আরাপপুরের সোনালীপাড়া জামে মসজিদে তারাবি নামাজের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

অভিযুক্ত আব্দুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বুধবার দুপুরে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে অভিযুক্তকে ঘটনার দায় স্বীকার করতে দেখা গেছে। ওই ভিডিওতে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম বলেন, আমি শিশুটির সঙ্গে অন্যায় করেছি। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। ধর্ষণের অভিযোগ সত্য নয়।

আরাপপুর সোনালীপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ওই শিশুর বাবা মায়ের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন এই ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নাই।

অভিযুক্তের ভিডিও স্বীকারোক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি ভিডিওতে কি বলেছেন তা আমি জানিনা। আপনাদের কাছে স্বীকারোক্তির ভিডিও থাকলে যা ইচ্ছা লিখতে পারেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ধরনের ঘটনা জানতে পারিনি। কোন অভিযোগও পায়নি। অভিযোগ পেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।




মেহেরপুরের বেড়পাড়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে নির্মাণ কাজ

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ উঠেছে আজিজুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগ তুলে সদর থানায় অভিযোগ করেছেন নুরুল ইসলাম নামের এক হোমিও চিকিৎসক।

অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, মেহেরপুর শহরের বেড়পাড়ার ওয়াজেদ ব্যাপারীর ছেলে আজিজুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম তার প্রতিবেশী। তারা আমার সীমানায় জোরপূর্বক পাকা বসত বাড়ি নির্মান করছেন। এঘটনায় মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

মামলায় বিচারক ১৪৫ ধারা আদেশ দিয়ে উভয়পক্ষকে নির্মান কাজ বন্ধ রেখে শান্তি—শৃঙ্খলা বজার রাখার নির্দেশ দিৃয়েছেন। আদালতের নির্দেশে মেহেরপুর থানা থেকে তাদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন।

এ নিয়ে গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিবাদীরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করেননি। এসময় বিবাদীরা বলেন, আমরা আমিন দিয়ে মেপে নিজের জমিতে কাজ করছি।




মেহেরপুরে পুলিশের অভিযানে চার আসামি গ্রেফতার

মেহেরপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে চার জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই চার জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন মৃত হাফেজ মন্ডলের ছেলে মোঃ হাতেম আলী (৫০), ইসলামপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তালেবের ছেলে মোঃ মেহেরুল্লাহ (কাদা), বেড়পাড়ার আঃ রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রাজিব হাসান (৩৮) ও টাঙ্গাইল দেলদুয়ারের সবদের দেওয়ানের ছেলে শহিদুল (৪৭)।

গ্রেফতাকৃতকে আদালতে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করতে বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।




ইফতারে চিয়াসিডের শরবত কতটা উপকারী

সারাদিন রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা, দুর্বলতা এবং পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। ইফতারে চিয়াসিডের শরবত পান করলে এই সমস্যাগুলো অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। চিয়াসিডের শরবত একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর পানীয়। এটি রোজার সময় শরীরকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

ইফতারে চিয়াসিডের শরবতের উপকারিতা

দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে রাখা: চিয়াসিড ধীরে ধীরে হজম হয়, ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। ইফতারে এটি খেলে রাতের খাবারে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

পানিশূন্যতা দূর করে: চিয়াসিড প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করতে পারে। এটি শরীরকে দীর্ঘক্ষণ আর্দ্র রাখে, যা রোজার সময় পানিশূন্যতা রোধ করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: চিয়াসিডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: চিয়াসিড ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে: চিয়াসিড ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: চিয়াসিডে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, যার ফলে ত্বক সুস্থ থাকে।

চিয়াসিড সালভিয়া হিসপানিকা নামক উদ্ভিদের বীজ। এটি ছোট, ডিম্বাকৃতির এবং ধূসর-কালো রঙের হয়ে থাকে। চিয়াসিডকে ‘সুপারফুড’ বলা হয়, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে।

সূত্র: যুগান্তর




জেফার কি অ্যালেন স্বপনের ’বৈয়াম পাখি’

গানে গানে অ্যালেন স্বপন এমন বাসনার কথা জানালেও তা একদম নাকচ করে দিয়েছেন সংগীতশিল্পী জেফার রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমি বৈয়াম পাখি নই’। গানে গানে এই দ্বন্দ্ব হয়তো থাকবে আরও কিছু দিন। আসছে ঈদুল ফিতরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে সিরিজটি মুক্তির পর পরিষ্কার হতে পারবেন দর্শক-শ্রোতারা।

গতকাল বুধবার (১৯ মার্চ) বিকালে প্রকাশ পেয়েছে চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’-এর গান ‘বৈয়াম পাখি ২.০’। নতুন ভার্সনের এই গানটির মাধ্যমে চরকি আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো সিরিজটিতে যুক্ত হয়েছেন জেফার রহমান। তিনি শুধু গানটিতে কণ্ঠই দেননি, সেই সঙ্গে অভিনয়ও করেছেন। এর আগে চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘মনোগামী’তে অভিনয় করেন এ সংগীতশিল্পী। এবার প্রথমবারের মতো তাকে দেখা যাবে সিরিজে।

চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’-এর গান ‘বৈয়াম পাখি ২.০’ এবং চরিত্রটি নিয়ে আগে থেকেই জানা ছিল গায়িকা জেফার রহমানের। নির্মাতা শিহাব শাহীন যখন অভিনয়ের জন্য তাকে প্রস্তাব দেন, তখন আর বেশি ভাবতে হয়নি গায়িকাকে, রাজি হয়ে যান।

জেফার রহমান বলেন, ‘ইন্টারেস্টিং চরিত্র হলে আমি অবশ্যই অভিনয় করতে রাজি।’ কিন্তু তিনি যেহেতু গানের মানুষ, তাই গানকে বাদ দিতে পারেননি। ‘বৈয়াম পাখি ২.০’ গানে কণ্ঠও দিয়েছেন তিনি।

গানটি মূলত ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ সিরিজের ‘বৈয়াম পাখি’ গানের নতুন ভার্সন। প্রথম গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন অ্যালেন স্বপন চরিত্রে অভিনয় করা নাসির উদ্দিন খান। নতুন ভার্সনে তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন জেফার রহমান। খৈয়াম শানু সন্ধির সুর ও সংগীতায়োজনে গানটি লিখেছেন খৈয়াম শানু সন্ধি, ম্যাক্স রহমান ও শেখ কোরাশানী।

গানে জড়িত হওয়ার প্রসঙ্গে জেফার রহমান বলেন, ‘গানটি একজন গ্যাংস্টারের কণ্ঠে শুনেছে সবাই। সেখানে তার বেপরোয়া ভাবটা উঠে এসেছে। এবার তাকে একজন চ্যালেঞ্জ করছে এবং তিনি একজন নারী। ব্যাপারটা ভালো লেগেছে, সে জন্যই গানটিতে যুক্ত হওয়া।’

উল্লেখ্য, স্টপ মোশনের ধারণা থেকে বানানো অ্যানিমেশন দিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘বৈয়াম পাখি ২.০’-এর ভিডিও। টুডি, থ্রিডি অ্যানিমেশনের কাজও আছে এখানে। গানটির সুর ও কথার মতো ভিডিওটিও দর্শকদের মজা দেবে বলে মনে করে চরকি কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’-এর প্রথম সিজন।

সূত্র: যুগান্তর




চিৎলা পাটবীজ খামারের জেডির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দ মোনালিসা ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে বিগত বছরগুলোতে এশিয়া মহাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম চিৎলা ভিত্তি পাটবীজ খামারটি নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও চুরি করে খামারটি দেওলিয়া করার অভিযোগ উঠেছে যুগ্ম পরিচালক (জেডি) মোর্শেদুল ইসলাম।

পতিত স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও বহাল তবিয়তে তার দূর্ণীতি, অর্থলোপাট ও অপকর্মচালিয়ে আসছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রীর এই দোসর।

খামারটিতে টেন্ডার বিহীন গাছ কেটে সাবাড়, বিনা টেন্ডারে ড্রেন নির্মাণের নামে অর্থ লোপাট, রং করণ, বিচুলি, খড়, অবীজ আলু, ধান বিক্রি, চুরি করে বীজ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, অতিরিক্ত শ্রমিক দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, যন্ত্রপাতি মেরামতের নামে অর্থ লোপাট, জ্বালানি তেলের বরাদ্দ আত্মসাৎ, রাসায়নিক ও কীটনাশকের অর্থ আত্মসাৎ করে বিগত বছর গুলোতে কোটি কোটি টাকা পকেটস্থ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া টেন্ডারের নামে নিজের আত্মীয় স্বজনকে কৌশলে টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছে এই কর্মকর্তা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে অফিসের এক নারী অফিস সহকারির সাথে গোপনে অপকর্মের অভিযোগ।

গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারের ফলকর বাগান, পাটখড়ি ও নন সীড ধানের টেন্ডার নিয়ে এলাকার ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, খামারের যুগ্ম পরিচালক মোর্শেদুল ইসলাম টেন্ডার নীতিমালা বহির্ভূতভাবে মনগড়া নিয়ম তৈরী করে পছন্দের লোককে টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার পন্থা অবলম্বন করছেন। এনিয়ে এলাকার ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার নুর ইসলাম, নাজমুল হোসাইন ও ইমনসহ কয়েকজন জানান, চিৎলা পাটবীজ খামারে আজ টেন্ডার ছিলো। এতে এলাকার ব্যবসায়ী ও ঠিকাদাররা অংশগ্রহণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী বেলা ১২ টার মধ্যে শিডিউল ড্রপ করতে হবে। আমরা সে অনুযায়ী শিডিউল ড্রপ করি। নিয়ম ছিল শিডিউল ড্রপ করার পর সবার উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে ১২ টায় শিডিউল অপেন করা হবে। কিন্তু খামার কর্তৃপক্ষ হঠ্যাৎ করে একটা নোটিশ টাঙিয়ে দিয়ে আমাদেরকে বলে আজ আর শিডিউল অপেন করা হবে না।

আগামীকাল বুধবার অপেন করা হবে। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় কোন শিডিউল ড্রপ হয়নি। কিন্তু জেডি মোর্শেদুল আজ শিডিউল অপেন না করে, চুয়াডাঙ্গায় গিয়ে নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরেও অনৈতিক ভাবে শিডিউল ড্রপ করার পর, এখানে ফোন দিয়ে জানায় চুয়াডাঙ্গায় একটি শিডিউল ড্রপ হয়েছে। ইতিপূর্বেও উনি টেন্ডার নিয়ে এমন অনিয়ম করেছে। নিজের ঠিক করা লোক দিয়ে শিডিউলে সর্বোচ্চ দাম দিয়ে টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছে। পরে শিডিউল কাটাছেরা করে দাম কমিয়ে নতুন করে শিডিউল তৈরি করার মতো অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

খামারের শ্রমিকদের উপদেষ্টা শফিউর রহমান ট্রমা জানান, খামারের বর্তমান যুগ্ম পলিচালক সবসময় শেখ হাসিনার পরিচয় দিতেন। চুয়াডাঙ্গার সেলুন জোয়াদ্দারের পরিচয় দিতেন। আর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি করে পার পেয়ে যেতেন। এই খামারের বড় বড় গাছ উনি কেটেছেন আর বাড়ীর ফার্নিচার তৈরির জন্য চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে গেছেন। সেখানে তিনি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। আর গরুর খাবার হিসেবে এই খামারে যত ধান চাষ হয়। তার সব বিচালি খামারের গাড়ী ব্যবহার করে কোন টেন্ডার ছাড়াই নিয়ে যান। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা থেকে তার আত্মীয়ের সারের দোকান থেকে নিম্নমানের সার ও বিষ নিয়ে আসেন।

তিনি মনে করেন এই খামার তার পৈত্রিক সম্পাতি। খামারের কেউ কিছু বললেই তাকে কাজ থেকে ছাটাই করা হয়। সে যোগদানের পরে শ্রমিকদের কাজও কমে গেছে। শ্রমিকদের কাজে না লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কারের জন্য নিন্মমানের কীটনাশক প্রয়োগ করে জমির ফসল পুড়িয়ে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে জেডির বিরুদ্ধে। এই ঐতিহ্যবাহী খামারের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য বর্তমান যুগ্ম পলিচালককে এখান থেকে দ্রুতই অপসারণ করা প্রয়োজন।

তিনি আরো জানান, খামারে আগের মতো উন্নতি না হলেও বর্তমানে যেটুকু হচ্ছে। তার আংশিক চুরি হয়ে যায়। আর এসকল অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সহযোগিতা করেন জেডি’র নিজস্ব নিয়োগকৃত নাজিম উদ্দিন নামের এক শ্রমিক।

স্থানীয়রা জানান, মোর্শেদুল ইসলাম খামারে যোগদানের পর থেকে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের বীজ বিক্রি, টেন্ডার ছাড়া গাছ বিক্রি, গোপনে খামারের পুরানো গাড়ীর যন্ত্রাংশ বিক্রি, শ্রমিকদের ভুয়া বিল ভাউসার তৈরি ও টেন্ডার বানিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া কৌশলে তার নিজ এলাকা থেকে নাজিম উদ্দিন নামের একজনকে খামারে অঘোষিত জেডি নিয়োগ দিয়েছেন। তার মাধ্যমে খামারে বিভিন্ন অনিয়ম সংঘটিত হয়। শ্রমিকের ভুয়া তালিকাও সে তৈরী করে।

জানা গেছে, যুগ্ম পরিচালকের জন্য সরকার মাসিক বাসা ভাড়া দিলেও সে ভাড়া বাসায় না থেকে অবৈধভাবে খামারের অতিথি ভবন (রেস্ট হাউজ) ব্যবহার করে আসছেন। অতিথি ভবন নিজের বাসা হিসেবে ব্যবহার করলে তাকে প্রতি মাসে সরকারের নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ করার কথা থাকলেও তিনি কোন টাকা জমা দেননি। ফলে সরকারকে তিনি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। এছাড়া বিনা কারনে সরকারকে বাবুর্চি, পাহারাদার এবং বিদ্যুৎ ও এসি বিল বাবদ গুনতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়াও সরকারি গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

মোর্শেদুল ইসলাম সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে চুয়াডাঙ্গায় তার শশুরের এলাকায় গরুর ফার্ম করেছেন। তার এই অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে খামার এলাকার চিৎলা, জুগিন্দা, নিত্যানন্দপুর ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সচেতন মহল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশও করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে তিনার অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে এখন পর‌্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেননি।

এ ব্যাপারে জেডই মোর্শদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সব প্রশ্নের উত্তরে বলেন নো কমেন্টস।




‘কোপার ফাইনালে আর্জেন্টিনার পক্ষ নিয়েছিলেন ব্রাজিলের রেফারি’

বিশ্ব ফুটবলে চলছে আর্জেন্টিনার দাপট। সবশেষ আট মাস আগে হওয়া কোপা আমেরিকার ফাইনালেও শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে লিওনেল মেসির দল। এবার যা নিয়েই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। দলটির অধিনায়ক হামেস রদ্রিগেজের দাবি, ম্যাচ পরিচালনা করা ব্রাজিলিয়ান রেফারি হোদোলফো তস্কি আর্জেন্টিনার পক্ষ নিয়েছিলেন।

গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো সেই ফাইনালে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে লাউতারো মার্তিনেজের ১১২ মিনিটের গোলে লাতিন আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। এবার সেই ম্যাচেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনলেন রদ্রিগেজ।

আসরসেরার পুরস্কারজয়ী এই প্লে মেকার স্প্যানিশ সাংবাদিক এদু আগিরেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, বাড়তি সুবিধা পেয়েছিল আর্জেন্টিনা।

তিনি বলেন, ‘কোপা আমেরিকা আমাদের দারুণ কেটেছিল। বাইরের কিছু ব্যাপার জড়িত না থাকলে আমরাই হয়তো জিততাম। ব্রাজিলিয়ান রেফারি (ভিএআর) হোদোলফো তস্কির অনেক বড় প্রভাব ছিল। তিনি একটি বা দুটি পেনাল্টি দেননি। আমার মতে, এটা খুবই পরিষ্কার ছিল।’

টুর্নামেন্টের সূচিতে আর্জেন্টিনাকে সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রদ্রিগেজের, ‘আমরা এমন সব শহরে খেলেছিলাম, যেগুলো একটা থেকে অন্যটা অনেক দূরে। সে তুলনায় আর্জেন্টিনা অনেক কম ভ্রমণ করেছে। আমরা খুব ভালো ছন্দ নিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে এসেছিলাম। ফাইনালে খুব ভালো খেলছিলাম। কিন্তু সব কিছু ওদের পক্ষে গেছে। আমি বলছি না, জয় ওদের প্রাপ্য নয়, তবে সত্যিটা হচ্ছে বাইরের প্রভাব ছিল এবং সেটাই আমাদের পিছিয়ে দিয়েছিল।’

সূত্র: যুগান্তর




ধর্ষনের জন্য দায়ী কে! পোশাক নাকি সঠিক শিক্ষা!- সুখী ইসলাম

ধর্ষণ এখন যেন মহামারীতে রুপ নিয়েছে। ধর্ষণ মহামারি যেন করোনা ভাইরাসকেও ছাড়িয়ে গেছে। ধর্ষণ এখন একটি নিত্যদিনের ঘটনা মনে হচ্ছে।

প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে কোথাও না কোথাও কোনো নারী, কোনো কিশোরী , কোনো শিশু ধর্ষিত হয়েছে।

টেলিভিশনের স্ক্রলে দশ মিনিট ধরে ধর্ষনের সংবাদ। কোন জেলায় কত জন ধর্ষণ হয়েছে। কোন জেলায় কত কম বয়সী শিশু ধর্ষণ হয়েছে। এ যেন অসভ্য জাতির নির্লজ্জ কর্মকান্ডের বহিঃপ্রকাশ।

ধর্ষণ কেন মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, তার কারণ অনুসন্ধান জরুরি। অপরাধবিজ্ঞানী, সমাজকর্মীরা গভীর অনুসন্ধান, গবেষণা করলে হয়তো ধর্ষণের প্রকৃত কারণ বের করতে পারবেন।

তবে, ধর্ষণের কিছু কারণ সাধারণ নাগরিকের খালি চোখেও ধরা পড়ে। যদিও এদের মধ্যে মতবিরোধ, বিভক্তি রয়েছে। একপক্ষ ধর্ষণের জন্য কেবল পুরুষকে দায়ী করছে, অন্যপক্ষ দুষছে নারীর পোশাককে। প্রথম পক্ষের অভিযোগে সিংহভাগ সত্যতা মিললেও দ্বিতীয়পক্ষের দাবি ষোলো আনাই অন্তঃসারশূন্য; এর কারণও স্পষ্ট।

পোশাক নাকি মানসিকতা দায়ী, তার বিচার করতে হলে আরেকটি বিষয় না বললেই নয়। আচ্ছা, বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা অনেক সময়ই উঠে আসে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আরও বহু দেশে শিশু ধর্ষণ নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু শিশু ধর্ষণ হয় কেন? শিশুরা মিনি স্কার্ট পড়ে থাকে বলে ? শিশু বাচ্চাদের দেখেও কী মনের মধ্যে কামনার সৃষ্টি হয়? তাহলে কী জন্মের পর থেকেই শিশু বাচ্চাদের পা পর্যন্ত আলখেল্লা পড়িয়ে রাখতে হবে? নাকি নিজের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে?

৭১ এর যুদ্ধে পাকিস্তানিরা এবং রাজাকাররা যে হাজারো মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে , এ সব কী পোশাকের কারণে? ৭১ এ কী তারা মিনি স্কার্ট পরে ঘুরে বেড়াতো ? নাকি নিজেদের ভোগী মানসিকতার খোরাক মিটাতে জানোয়ারগুলো ধর্ষণ করতো?

পোশাকই যদি ধর্ষণের মূল কারণ হবে, তাহলে আরব দেশগুলোতে কেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যেখানে সবাই বোরখা পড়া? খারাপ মানসিকতা সৃষ্টির জন্য আপনি নারীর অর্ধনগ্ন পোশাককে দায়ী করছেন?

একটু পিছনে ফিরে তাকায়, তনুকে যখন ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো , তখনো বাংলাদেশের ধর্মান্ধরা অপপ্রচার চালিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলো যে তনুর ধর্ষণের জন্য তনুর পোশাকই দায়ী।

কিন্তু তনুর ছবিগুলো তখন সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে সে বোরখা পরিহিতা ছিল। কতটা নির্লজ্জ মানসিকতা হলে একটি মৃত মেয়ের উপর মিথ্যে দোষ চাপানো যায় ভাবতে পারেন? কিংবা কিছু দিন আগে যে ছয় বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো তার কথাই বা কী বলবেন? আছিয়ার ক্ষেত্রেও কি পোশাকের দোষ? এমন নিচ মানসিকতার বলেই তো ধর্ষণ সম্ভব, পোশাকের কী দোষ!?

নারী ধর্ষণে যদি পোশাকে ত্রুটি খোঁজেন তাহলে কোলের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মহিলা, কিশোরী, রাস্তার ধারের মানসিক ভারসাম্য হারানো কিছু না বোঝা মেয়েটি সহ কেউই রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষণের হাত থেকে। ঘরে-বাইরে সব জায়গায়ই যেন যৌনতার আশায় নারীকে ভোগ করার লালসায় থাকছে পুরুষরা। তারা যেন জঙ্গলের হিংস্র পশুর চেয়ে বেশি ক্ষুধার্ত হয়ে ঘুরছে আমাদের চারপাশে। আর তাদের ক্ষুধা রক্ত-মাংসে গড়া নারীর শরীরের প্রতি।

কখনো এই ধর্ষণের পেছনে থাকছে চেনামুখের অচেনা হিংস্রতা কখনো-বা অচেনা মুখের হিংস্রতা! তাদের লালসা মেটানোর সময় সামনে কাকে ভোগ করছে, সেটা ভাবার সময়ও তাদের নেই। সম্পর্কে হতে পারে বাবা মেয়ে।

যেন এই সমাজ এবং রাষ্ট্র এক ধর্ষণের মহামারী আকার ধারণ করছে। নারীর মূল্যবান সম্পদ সতীত্বকে হরণ করে সমাজে নারীর সম্ভ্রম হারিয়ে ও সামাজিকভাবে নারীকে হেও প্রতিপন্ন করার পৈশাচিক খেলায় মত্ত হয়েছে পুরুষ।

ধর্ষণ এই ছোট শব্দটির অর্থ এতটাই বড় বিশাল।যে এর গ্লানি বর্ণনা করলে সারা জীবনেও শেষ হবেনা।বা শব্দটির ক্ষতিপুরনও সম্ভব না।ধর্ষণ একটি অমার্জনীয় অপরাধ। এটি একজন মানুষকে খুনের অপরাধের চেয়েও কম বলে বিবেচিত হওয়া উচিত নয়।

আজকাল হাতের মুঠোয় স্মার্ট ফোনের কল্যাণে পর্ন দেখছে। স্বপ্নে পর্ন নায়িকার সাথে যাচ্ছে স্বপ্নসর্গে । বাস্তবে তার দেখা নেই। এসবের কারণে, মানুষ সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। পর্ন দেখা বা মেয়ে মানুষের শরীর পাওয়া একেবারেই অসামঞ্জস্য থেকে তাদের বানিয়ে দিচ্ছে ‘ধর্ষক’। তাদের ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই বললেই চলে। অথচ ধর্ষণ করে খুন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে না।এদের কাছে মেয়ে মানুষ যে বয়সেরই হোক না কেন তারা শুধু একটি ‘অবজেক্ট’। মানুষ নয়। তাদের মাথায় একটাই পোকা নারী মাত্রই ভোগের সামগ্রী। তাদের ভোগ করো, খুন করো, অত্যাচার করো।তা যে বয়সেরই হোক না কেন। কোনও ব্যাপার না।

আমাদের অন্যায্য সমাজে ধর্ষকরা নন্দিত, ধর্ষিতারা নিন্দিত।ধর্ষণের সমস্ত দায় ভার, সমস্ত লজ্জা,অপমান আর উপহাস ধর্ষিতার উপর।
ধর্ষণ ধর্ষিতার মেধা,বল,আশা,স্বপ্ন, লক্ষ্য ও সম্ভ্রমকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। শারীরিক ধর্ষণের পর ধর্ষিতার শুরু হয় মানসিক ধর্ষণ।পত্রিকার পাতায় কলামে,থানায় পুলিশের ডায়েরীতে,আদালতে উকিলের অসভ্য জেরায়।দিনের পর দিন ধর্ষিত হয় পাড়ার বুড়োদের চায়ের আড্ডায়,ছোড়া ছোকড়াদের মুখে মুখে কিংবা পাড়াতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে। ধর্ষিতা শিশু, কন্যা নারীরা বেঁচে গেছে তাই অবহেলা করে মা বাবা। ভাই বোনেরা ঘৃণা করে।পাড়া প্রতিবেশিরা দিনের পর দিন তার চরিত্রের কুলশতা এবং পঙ্কিলতা নিয়ে খোটা দেয়।ধর্ষিতা মেয়েটার সঙ্গ ত্যাগ করে বান্ধবীরা।জীবনটা বিভীষিকা বানিয়ে দেয়।আর ধর্ষক কলার উঁচু করে ঘুরে বেড়ায়।চায়ের দোকানে বিড়ি ফু্ঁকে কিংবা অলিতে গলিতে বন্ধুদের সাথে ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে থাকে ধর্ষণের সময় সে কী কী করেছে।ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে ইরোটিক সুখ অনুভব করে।

ধর্ষিতার ধর্ষণ যেন দান্তের নরকে প্রবেশের ওয়ান ওয়ে টিকিট। আত্মহত্যা না করলে আমরণ হেঁটে যেতে হবে নরকে।জলজ্যান্ত নরক থেকে মুক্তির আশায় অনেক ধর্ষিতা মেয়েই আত্মহনন বেছে নেই।

নারী যদি ছালার বস্তা পরে ঘরের কোণায়ও বসে থাকে পুরুষের শকুন চোখ বস্তার ফাক ফোকর দিয়ে দেখে নিবে নগ্ন শরীর।এই সব শকুনের চোখ উপড়িয়ে ফেলতে হবে সমাজ থেকে।

আমি কোন ধর্ষকের বিচার চাইনা কারণ কারও বিচার হয়নি।বিচার হয়নি আড়াই বছরের শিশু, আফসানা,বিচার হয়নি তনুকিংবা বিউটি কারও শেষ পর্যন্ত বিচার হয়নি।বিচার হবেও না আছিয়ার।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর সম্ভ্রমহীনতার সনদ বোঝা নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে এরা।শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে বিচার।

লেখক: কবি ও সাহিত্যিক