ডিজিটাল রূপান্তরে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকাডিজিটাল, রূপান্তর, গ্রামীণ, নারী, ভূমিকা

কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার চর এলাকা কোদালকাটি ইউনিয়নের নতুন পাড়া গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে নূর জাহান শিমুল এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েই ঢাকার একটি অনলাইন আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে ছয় মাসের গ্রাফিক ডিজাইনের উপর একটি কোর্স করে। শিমুলদের এলাকার অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র। আইটি প্রতিষ্ঠানে কোর্স করার সময় সহপাঠী হিসেবে পরিচয় হয় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামের ইতু মন্ডলের সাথে। ইতু ও শিমুলের মতো এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েই কোর্সটিতে ভর্তি হয়েছে। সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা কাদাকাটি গ্রামের অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র। সুপেয় পানির অভাব, কাজের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখানকার মানুষের অভাব শেষ হতে চায় না। দেশের দুই প্রান্তের পশ্চাৎপদ দরিদ্র পীড়িত এলাকার দুই মেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও নিজেকে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ঘরে বসেই রিমোট হায়ারিং করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বায়ারদের চাহিদামতো কাজ করে ভালোই আয় করছে। পরিবারের দারিদ্র্য দূর করার পাশাপাশি গ্রামের অন্যান্য ছেলে মেয়েদের আইটি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করে তাদেরও আয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।

সারা পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত রূপান্তর ও ডিজিটাল শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীরা পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, তাঁদের অবদানের কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীর অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। বাংলাদেশে ৮৬ হাজারেরও অধিক গ্রাম রয়েছে। এখনো দেশের বেশিরভাগ জনগণই গ্রামে বসবাস করে। জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। আবার এ অর্ধেক নারীর সিংহভাগই বসবাস করে গ্রামে। আমাদের গ্রাম বলতে চোখের সামনে চিরাচরিতভাবে ফুটে ওঠা সেটা অজপাড়াগাঁ এখন আর খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। শহরের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামগুলোতে। বিদুৎ সুবিধা এখন সব গ্রামেই আছে। একসময় যোগাযোগব্যবস্থা বলতে ছিলো গরুর গাড়ি আর নৌকা। এখন সেই গরুর গাড়ি আর নৌকা দেখতে হলে যেতে হবে জাদুঘরে।

বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশের গ্রামীণ অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। গ্রামে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। যার সিংহভাগ অবদান নারীর। গ্রামীণ নারীরা এখনো উচ্চশিক্ষা বা সুশিক্ষা থেকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে আছে। তারপরও নিজেদের অদম্য ইচ্ছা, সরকারি-বেসরকারি যে সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেগুলিকে কাজে লাগিয়ে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। গ্রামীণ নারীরা কুটির শিল্প, বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ, সেলাইসহ নানা ধরনের কাজে যুক্ত থাকলেও এখন অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। গ্রামীণ নারীরা এখন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে বেশি মনোযোগী। সংসারের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার পর ঘরে বসে রিমোট হায়ারিং করছে। ডিজিটাল রূপান্তরে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকা বহুমুখী। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছে এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হচ্ছে। শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন বাজার এবং কৃষি-সম্পর্কিত তথ্যের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতেও তারা পিছিয়ে নেই। তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার পাশাপাশি ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

গ্রামীণ নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জ্ঞান এবং ব্যবহারের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করে সমতা আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নারীর ব্যবহার উপযোগী প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যাবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়নসহ সব ক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং সব ক্ষেত্রে নারীর সমান প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য কার্যকর এবং টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সম-অংশগ্রহণ এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীর প্রতিবন্ধকতা এবং সীমাবদ্ধতাগুলো প্রতিনিয়ত চিহ্নিত করে সে গুলো দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ নারী-পুরুষের সমান অংশীদারত্ব নিশ্চিত করার জন্য গ্রাম ও শহরকে সমান গুরুত্ব দিয়ে ডিজিটালকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

১৯৭৪ সালে শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ। ১৯৯০ সালে ১৪ শতাংশ। ২০১০ সালে নারীর অংশগ্রহণ ৩৬ শতাংশ। ২০২২ সালে নারীর অংশগ্রহণ ছিলো কম-বেশি ৪৩ শতাংশ। বাংলাদেশের জিডিপিতে নারীর অবদান কম-বেশি ২০ শতাংশ।নারী শিক্ষার হার বেড়েছে এবং এতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় নারীরা তাদের দক্ষতা প্রমাণ করছে এবং কর্মক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছে। সামাজিক স্বীকৃতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া নারীপ্রধান পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নারীদের আরও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষণ। এর ফলে নারীরা এখন পরিবারের সীমানা পার হয়ে সমাজ এবং দেশের উন্নয়নে বড়ো ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ নারী শ্রমিকের কমবেশি ৭৭ শতাংশ গ্রামে বাস করে। নারীরা শুধু কৃষি শ্রমিক হিসেবে নয়, বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ ও কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। যদিও তাদের কাজ এখনও যথাযথভাবে স্বীকৃত হয়নি, তবুও তাদের অবদান দেশের কৃষি-খাতকে শক্তিশালী ও উন্নত করছে।

দেশের কৃষি এবং কৃষি সম্বন্ধীয় ব্যাবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প আধুনিকতার ছাপ পড়েছে। হস্তশিল্প, বয়নশিল্প, খাদি ও গ্রামোদ্যোগের প্রভাব আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া মৎস্য চাষ, ফুল চাষ, পাট চাষ, পান চাষ, পশুপালন, দুগ্ধ প্রকল্প, ইক্ষু চাষ এবং তৎসঙ্গে চা-শিল্প ও কাগজ শিল্পও আশার আলো দেখাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে স্বনির্ভরতা দিয়ে আমাদের উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে। শিক্ষা পদ্ধতিকে সে ধরনের কর্মমুখী করার উদ্দেশ্য সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাহাড়ি জুম চাষ আমাদের অর্থনীতিতে যথেষ্ট সমাদৃত। এসব ক্ষেত্রে তাদেরও উন্নত চিন্তাধারা এবং সহযোগিতার প্রয়োজন। বনজ সম্পদের অবাধ ধ্বংস রোধ করে জুম চাষির চাষ ক্ষেত্রকে উন্নত প্রকল্পের আওতায় আনতে সরকারি সহযোগিতা রয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর অবদান চিরন্তন। আমরা বাংলাদেশি নারীকে ঘরের লক্ষ্মী বলে জানি। বাস্তবে নারী দূরদর্শী ও অধ্যবসায়ী। আদর্শ সমাজ গঠনের অগ্রদূত। গ্রামীণ অর্থনীতিতে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। এক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। কৃষিক্ষেত্রে এখন অনেক শিক্ষিত মহিলা ও তরুণীর প্রত্যক্ষ অবদান চোখে পড়ার মতো। তারাই মাঠে বর্ষাকালীন শস্য থেকে রবিশস্য উৎপাদনের সময় পর্যন্ত নিরলস পরিশ্রম করছে। গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সিংহভাগই মহিলাকেন্দ্রিক ও মহিলানির্ভর। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাম-শহর নির্বিশেষে মহিলাদের শ্রমবিমুখতাও দেখা গেলেও কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্পে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত নারীরা চাকরির পিছনে না ছুটে নিজেরাই এখন উদ্যোক্তা হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তি তাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে।

একসময় নারীদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত ছিল। তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সেই বাধাকে দূর করে দিয়েছে। বিভিন্ন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নারীরা ঘরে বসেই নতুন দক্ষতা শিখতে পারছেন। অনেক নারী অনলাইন কোর্স করে সফ্‌টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং গ্রাফিক ডিজাইন শিখছেন। উদ্যোক্তা হাওয়ার প্রতি নারীদের আগ্রহ বাড়ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম শুধু ব্যাবসা বা চাকরির জন্য নয়, এটি নারীদের সামাজিক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়েছে। ডিজিটাল রূপান্তরে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর সুফল পাচ্ছে দেশের জনগণ। নারী সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি নারীর কর্মসংস্থানসহ অর্থনৈতিতকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। গ্রামীণ নারীরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নতুন ব্যাবসা শুরু করছে এবং সফলও হচ্ছে। আমাদের গ্রামীণ অর্থনৈতিক তাগিদে নারীদের আরও সক্রিয় হতে হবে এবং তাদের প্রতি সমাজ ও সরকারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় আরও সহায়তা দান করতে হবে। তাদের প্রেরণায় সমাজের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর নারীরা আরও তৎপর হয়ে উঠবেন এটাই প্রত্যাশা।

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, খাদ্য মন্ত্রণালয়




হরিণাকুণ্ডুতে খুচরা সার বিক্রেতাদের মানববন্ধন

ঝিনাইদহের হডিরণাকুণ্ডুতে খুচরা সার বিক্রেতাদের বহাল রাখা ও টিও লাইসেন্সের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা মোড়ে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে খুচরা সার বিক্রেতা এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খুচরা সার বিক্রেতারা অংশ নেয়। কর্মসূচীতে সংগঠনটির সদস্য শামীম আহম্মেদ চাঁদ, নয়ন হোসেন, মনির হোসেনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা বলেন, খুচরা সার বিক্রেতাদের বাতিল করতে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন হলে দেশের ৪৪ হাজার ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারসহ ৫ কোটি কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই এ সিন্ধান্ত বাস্তবায়ন না করার আহ্বান জানানো হয় কর্মসূচী থেকে।

পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপজেলা কৃষি অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষি সচিব বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন ব্যবসায়ীরা।




মুজিবনগরে মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক প্রচারণা

“ভালো প্রতিবেশী বিশ্বের জন্য ভালো পরিবর্তন”, সুস্থ মন সুস্থ ভবিষ্যৎ, তুমি গুরুত্বপূর্ণ, তোমার মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ এই স্লোগানে মুজিবনগরে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক প্রচারণা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার সকালে গুডনেইবার্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির আয়োজনে উপজেলার ভবেরপাড়া সেন্ট জেভিয়ার জুনিয়র হাই স্কুলের হলরুমে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এই প্রচারণা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই গুডনেইবার্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার বিপুল রেমার নেতৃত্বে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক প্রচারণার লক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

র‍্যালি শেষে বিদ্যালয়ের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গুডনেইবার্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার বিপুল রেমার সভাপতিত্বে প্রচারণা অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ডা. মেহেদী হাসান সুইট।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, সেন্ট জেভিয়ার জুনিয়র হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিস্টার মালতি মালো, আনন্দবাস মিয়া মনসুর একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান, আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, জয়পুর তারানগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম, আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিবপুরের প্রধান শিক্ষক এস.এম. আব্দুস সালাম।

গুডনেইবার্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির প্রোগ্রাম অফিসার এনটন ফলিয়ারের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন মানসিক স্বাস্থ্য কী, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আমরা কী করতে পারি, কিশোর-কিশোরীদের বিভিন্ন ঝুঁকির লক্ষণ, নীরবতা কেবল কষ্ট বাড়ায় নীরবতা ভেঙে কী করতে হবে, মন খারাপ থাকলে কার সঙ্গে কথা বলতে হবে, অভিভাবকের করণীয়, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কারা দায়িত্ব নেবেন, সহপাঠীদের করণীয়সহ আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রচারণার মাঝে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে গান, নৃত্য এবং নাটক পরিবেশিত হয়।




মেহেরপুরে ভৈরব সাহিত্য সাংস্কৃতিক চত্বরের মাসিক সাহিত্য বাসর

মেহেরপুরের অন্যতম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ভৈরব সাহিত্য সাংস্কৃতিক চত্বরের উদ্যোগে মাসিক সাহিত্য বাসর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে মেহেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ সাহিত্য বাসরে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব অ্যাড. এম. আনোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভৈরব সাহিত্য সাংস্কৃতিক চত্বরের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. এম. এ. বাশার, সহ-সভাপতি রফিকুল আলম এবং সহ-সভাপতি নুরুল আহমেদ।

সাধারণ সম্পাদক মেহের আমজাদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সায়েদুর রহমান সাজু, শিক্ষক ও কবি মো. আনিছুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিলুফার বানু, মো. শাহজাহান ও সমাজকর্মী দিলারা পারভীন প্রমুখ।

সাহিত্য বাসরে কবিতা পাঠ করেন কবি রফিকুল আলম, ম. গোলাম মোস্তফা, মেহের আমজাদ, এস. এম. এ. মান্নান, আবুল হাসেম, রফিকুল ইসলাম, ডা. মহিবুল ইসলামসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে কবি, লেখক ও সংস্কৃতিকর্মীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে মিলনায়তন মুখরিত হয়ে ওঠে।




মেহেরপুরে শীতার্তদের মাঝে এনসিপির কম্বল বিতরণ

মেহেরপুরে শীতার্ত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তীব্র শীতের কনকনে ঠান্ডায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এনসিপির উদ্যোগে গতকাল শনিবার এ কম্বল বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এনসিপির মেহেরপুর জেলার যুগ্ম-সমন্বয়কারী আরিফ খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কম্বল বিতরণ করেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও মেহেরপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোঃ সাজেদুর রহমান এবং মুজাহিদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম-সমন্বয়কারী আশিক রাব্বি, মোঃ তামিম ইসলাম, হাসনাত জামান সৈকত, তৌহিদ রবিন, আমির হামজা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ জানান, মানুষের দুঃসময়ে তাদের পাশে থাকা এনসিপির অঙ্গীকার। শীতের এই দুর্দিন কাটানো পর্যন্ত অসহায় মানুষের মাঝে সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা।




মেহেরপুর জেলা এপেক্স ক্লাবের কমিটি গঠন

২০২৬ সালের জন্য মেহেরপুর জেলা এপেক্স ক্লাবের জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবে বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা এপেক্স ক্লাবের যৌথ আয়োজনে বার্ষিক এজিএম অনুষ্ঠিত হয়।

জুলফিকার আলী ভুট্টোর সভাপতিত্বে এবং বর্তমান সভাপতি রফিকুল আলম বকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সন্ধানী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু জাফর, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও মেহেরপুর প্রতিদিনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাহবুব চান্দু, এপেক্স বাংলাদেশের জাতীয় কমিটির ন্যাশনাল এক্সটেনশন ডিরেক্টর এপেক্সিয়ান শাহনাজ পারভীন সেতু এবং চুয়াডাঙ্গা এপেক্স ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দীন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গেস্ট অব অনার এপেক্স ক্লাব ডিস্ট্রিক্ট-০৬ এর ডিজি অ্যাডভোকেট আমির হামজা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ভালো কাজ করতে হলে নিজেকে ভালো হতে হবে। পরিবার থেকেই ভালো কাজের উদাহরণ তৈরি করতে হবে। সমাজে কম সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র আমাদের অনেক দিয়েছে এখন আমাদেরই সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে হবে।

তিনি এপেক্সের তিনটি মূলমন্ত্র সার্ভিস, সিটিজেনশিপ ও ফেলোশিপ স্মরণ করে এপেক্সিয়ানদের সমাজ উন্নয়নে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পার্থেনিয়াম গাছের অপকারিতা তুলে ধরে এ গাছ নির্মূলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে ডিনার মিটিং, ডিরেক্টর রিপোর্ট, ক্লাব স্কুলিং ও ক্লাব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে এপেক্স ক্লাব অব মেহেরপুরের ২০২৬ সালের জন্য সভাপতি হিসেবে বিশিষ্ট সংগঠক জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তরুণ সংগঠক নাফিউল ইসলাম নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১১ সদস্যের নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়।




গাংনীতে বিএনপির প্রার্থী আমজাদ হোসেনের গণমিছিল

মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেনের ধানের শীষের পক্ষে এক বিরাট গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঁশবাড়িয়া থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে গাংনী বাজার এলাকায় এসে শেষ হয়।

শনিবার বিকেলে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী অংশজুড়ে এ গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

গণমিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির দলীয় প্রার্থী, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোরাদ আলী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মতিয়ার রহমান মোল্লাহ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান গাড্ডু, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খোকন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলাম, মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, গাংনী পৌর বিএনপির নেতা খাইরুল আলম কালাম, বিএনপি নেতা মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা ও তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, মটমুড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সোহেল রানা, মহিবুল ইসলাম, গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলেরি আলভী, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান হাকা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইন, কাথুলি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হুসাইন আহমেদ, সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আসমা তারাসহ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা খণ্ড খণ্ড মিছিলকে ঘিরে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ মিছিলে যোগ দেন। পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, মাথার ওপর উড়তে থাকা ধানের শীষের প্রতীক সব মিলিয়ে মহাসড়কজুড়ে তৈরি হয় নির্বাচনী উচ্ছ্বাস।

মিছিল চলাকালে আমজাদ হোসেন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে অভিবাদন জানান। নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। মিছিলে অংশ নেওয়া অনেক নারী ভোটার বলেন, পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে তারা ধানের শীষকে সমর্থন করছেন। দিনভর আয়োজনে অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে গণমিছিলটি পরিণত হয় এক বিশাল শো অফ স্ট্রেংথে।




কোটচাঁদপুরে ডাকাতি: ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার পাশপাতিলা গ্রামে অভিনব কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রধারী ডাকাতরা বারান্দার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, রাত আড়াইটার দিকে পাশপাতিলা গ্রামের আবুল হোসেন ধনীর ছেলে তরিকুলের বাড়ির প্রাচীর টপকে ৫/৬ জনের ডাকাতদল বারান্দার গ্রিল কেটে এবং লক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ডাকাতদল নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে কোনো চিৎকার করতে নিষেধ করে বলে যে বাড়িতে ইয়াবা আছে, এই অভিযোগের তদন্তের জন্য তারা বাড়িতে ঢুকেছে। পরে গৃহকর্তা তরিকুল ও তার স্ত্রী নাসরিনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ঘরের একটি কক্ষে নিয়ে চেতনানাশক স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে। তরিকুলের শাশুড়িকে অন্য কক্ষে আটক রেখে তরিকুলের রুমের আলমারি থেকে স্বর্ণালঙ্কার যার মধ্যে আট আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের চেইন, দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার, ২ ভরি ওজনের স্বর্ণের চুড়ি, ১২ আনা পরিমাণ এক জোড়া কানের দুল, ৪ আনার স্বর্ণের আংটিসহ প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ ৯০ হাজার টাকাসহ ৭/৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নির্বিঘ্নে চলে যায়।

পরে তরিকুলের শাশুড়ি তাদের ডাকতে গিয়ে তরিকুল ও তার স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। তিনি আশপাশের লোকজনকে ডেকে কোটচাঁদপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘ সময়েও তারা স্বাভাবিকভাবে সুস্থ হতে পারেননি বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, চুরির কায়দায় বাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কারসহ মালামাল নিয়ে গেছে বলে খবর পেয়েছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।




শৈলকুপায় পানিতে ডুবে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

ঝিনাইদহে পানিতে ডুবে আবরাম নামের দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে জেলার শৈলকুপা পৌর এলাকার ঝাউদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিশু আবরাম ওই গ্রামের মুরগী ব্যবসায়ী আজাদ মৃধার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে শিশু আবরাম খেলতে খেলতে বাড়ীর নিচে কুমার নদে কচুড়িপানার ফুল তুলতে গিয়ে সে ডুবে যায়। খোঁজাখুঁজির পর পানির নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো।




ঝিনাইদহে জমির লিজ নিয়ে বিরোধে প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা

জমির লিজ নিয়ে বিরোধের কারণে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের জেরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালা গ্রামে মাহবুল হোসেন (৪০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষরা। আহত মাহবুল ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মরদেহ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের কালা-লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাহবুল হোসেন কালা গ্রামের সাবদার বিশ্বাসের ছেলে। তিনি কম্বোডিয়াতে থাকেন। সম্প্রতি ছুটিতে তিনি বাড়িতে এসেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় হুমায়নের সমর্থক সিরাজ মোল্লার কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করতেন জিয়ারুল ইসলামের সমর্থক বাটুল বিশ্বাস। সম্প্রতি সিরাজ মোল্লা তার জমি ফেরত নিতে বাটুল বিশ্বাসকে লিজের টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু ওই জমিতে ফসলের আবাদ থাকায় ফসল না তোলা পর্যন্ত জমি ফেরত দিতে আপত্তি করেন বাটুল বিশ্বাস। এ নিয়ে সিরাজ মোল্লার লোকজন জমির দখল নিতে শনিবার সকালে জড়ো হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে। পরে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাটুল বিশ্বাসের সমর্থক কম্বোডিয়া প্রবাসী মাহবুল হোসেনকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে সিরাজ মোল্লা ও হুমায়নের সমর্থকরা। স্থানীয়রা মাহবুল হোসেনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে মাহবুল হোসেন মারা যান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলম মিয়া বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের বিষয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে স্থানীয় মাতব্বর সহ আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। শনিবার এ বিষয়ে মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জমির লিজ ফেরত নেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে একজন নিহত হয়েছেন। মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।