আদম (আঃ)- এম.এ.এস ইমন (পর্ব ২)

যখন আল্লাহর সরাসরি আদেশ অমান্য করেছিল সে আল্লাহকেই দোষারপ করেছিল (নাউযুবিল্লাহ) সে বলেছিল নিশ্চয়ই আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, অতএব আমি মানুষকে পথভ্রষ্ট করব। অন্যদিকে আদম আলাইহিস সালাম নিজের ভুলের দায়ভার পুরোপুরি নিজের কাঁধে নিয়ে আল্লাহর কাছে নিজেকে সঁপে দিয়ে বলেছেন, আল্লাহ যদি তাকে ক্ষমা না করেন তার আর কোন আশা থাকবে না তার আর কোন উপায় থাকবেনা এবং আল্লাহ আদম আলাইহিস সালাম ও মা হওয়ার দোয়া কবুল করলেন কিন্তু তাদেরকে এও আদেশ করলেন যেহেতু তারা সেই গাছের ফল খেয়ে ছিল তাই তাদেরকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীতে কাটাতে হবে।

মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে আল্লাহ তা’আলা আদম আলাইহিস সালামকে শুক্রবারে সৃষ্টি করেছেন, তাকে শুক্রবারে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন, আর শুক্রবারেই তাকে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছিল।

আদম আলাইহিস সালাম আর মা হাওয়া পৃথিবীর দুটি আলাদা স্থানে অবতীর্ণ হলেন, তাঁরা ঠিক কোথায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন সে বিষয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে, তবে সব বর্ণনাই যা আসে তা হলো তারা দুজন পৃথক পৃথক জায়গায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জান্নাতের মতো জায়গায় একে অপরের মধুর সঙ্গ পাওয়ার পর দুনিয়ার মতো জায়গায় এসে নিঃসঙ্গ দিন কাটানো অনেক বড় একটা পরীক্ষা ছিল।

একবার ভেবে দেখুন আপনার জীবন সঙ্গী যাকে আপনি সবসময় কাছে পাচ্ছেন, ঘরে ফিরলেই যার দেখা হয় যাকে ঘিরে আপনার সব পরিকল্পনা। তাকে যদি হঠাৎ করে আপনি হারিয়ে ফেলেন এবং কতদিনের জন্য আপনি হারিয়ে ফেলেছেন আপনি জানেন না এবং আপনি যেই রবের কাছে দোয়া করছেন আপনার ভয় হচ্ছে, সেই রব আপনার উপর রেগে আছেন।

আপনি এমন একটি জায়গায় আছেন যা অন্ধকার যা ভয়ানক এবং আপনি জানেন না আপনার জীবনসঙ্গী কেমন জায়গায় আছেন। এমন অবস্থায় নিজেকে কতটা অসহায় মনে হবে তারা ব্যাকুল হয়ে একে অপরকে খুঁজতে লাগলেন, খুঁজতে খুঁজতে কতদিন হয়ে গেল তার কোনো নির্দিষ্ট হিসেব নেই। কিন্তু অবশেষে তারা একে অপরকে খুঁজে পেলেন এবং মা হওয়া এবং আদম আলাইহিস সালাম তাদের দুনিয়ার জীবনের সংসার শুরু করলেন।

বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে আদম আলাইহিস সালাম দুনিয়াতে প্রায় এক হাজার বছর বেঁচে ছিলেন এবং এই সময়ে মা হওয়া অনেকবার মা হয়েছিলেন এবং প্রতিবার তার কোলে আল্লাহর হুকুমে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল এবং সেই সময়ের বিধান ছিল এক কোলের সন্তানকে আরেক কোলের সন্তানের সাথে বিয়ে করতে হবে।

অর্থাৎ যেহেতু তখন প্রতিটি মানুষই সরাসরি একে অপরের ভাইবোন ছিল তখন ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে করার নিষেধাজ্ঞা জমজ ভাই বোনদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আদম আলাইহিস সালামের প্রথম পুত্র সন্তানের নাম ছিল এবং এরপর এর পুত্র সন্তানের নাম ছিল হাবিল। কাবিল ছিল কৃষক আর হাবিল পশুপাখি পালত। কাবিল ছিল কিছুটা রাগী প্রকৃতির এবং সে হাবিলের বোনকে বিয়ে করার ব্যাপারে অসম্মতি জানাল। তার দৃষ্টিতে তার নিজের বোন ছিল আরো বেশি রূপবতী। এই অবস্থায় আদম আলাইহিস সালামের মাধ্যমে ওহী আসল তারা দুই ভাই যেন আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী করে এবং কোরবানি কবুল হবে তার পছন্দই চূড়ান্ত হবে।

হাবিল তার খামার থেকে সবচেয়ে সুন্দর পশুটি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী করল, অন্যদিকে কবিল তার সবচেয়ে খারাপ ফসলটি কোরবানির নিয়তে উঠিয়ে রাখল এবং হাবিলের কোরবানি কবুল করলেন এবং কবিলের কোরবানি কবুল হলো না। এবং হাবিলের আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী কবিলের বোনকে বিয়ে করার জন্য সম্মতি জানাল। কিন্তু এতে কবিলের অন্তর হিংসা-বিদ্বেষ ভরে গেল এবং সে একপর্যায়ে হাবিলকে বলল সে হাবিলকে হত্যা করে ফেলবে।

হাবিল তার ভাইকে বলল তুমি আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হাত বাড়ালেও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য হাত বাড়াবো না, কারণ আমি আল্লাহকে ভয় করি এবং তার কথা শুনে কাবিল আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলো এবং হাবিলকে হত্যা করার জন্য তার গলা চেপে ধরলো কিন্তু তাকে হত্যা করতে পারল না। তখন ইবলিশ তাদের কাছে আসলো এবং হাবিলকে হত্যা করার পদ্ধতি শেখানোর জন্য একটি পশুর মাথায় পাথর দিয়ে পশুটিকে হত্যা করল এবং কবিল একিভাবে একটি পাথর নিয়ে হাবিলের মাথায় আঘাত করলো এবং এভাবেই হাবিল হয়ে গেল মানব ইতিহাসের প্রথম শহীদ হয়ে গেল মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকারী।

যতক্ষণ পর্যন্ত আদম আলাইহিস সালাম এর কাছে খবর এলো ততক্ষণে তার কর্মের পরিনাম এর কথা চিন্তা করে পালিয়ে গিয়েছে, সে ভাবল তার আর কোনো আশা নেই। আদম আলাইহিস সালাম ও মা হাওয়া তার দুই সন্তানকে এভাবে হারিয়ে বুকের গভীর শোক ধারণ করে তাদের বাকি সন্তানদের সদুপদেশ দিতে থাকলেন এবং আল্লাহর এবাদত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করতে থাকলেন। ধীরে ধীরে বহু বছর পার হয়ে গেল এবং তাদের অনেক সন্তান জন্ম হলেও কেউ কেউ বলেন মা হওয়ার ২০ জোড়া যমজ সন্তান হয়েছিল, আবার কেউ কেউ বলেন সে সংখ্যা একশোর বেশী এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার কোন উপায় নেই।

তবে তাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে একজন সন্তান ছিলেন শীষ, যে তার বাবার মতো সমাজের মানুষকে ভাল কাজ করার উপদেশ দিতেন এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিতেন। আদম আলাইহিস সালাম যখন অনেক বৃদ্ধ তখন একদিন তিনি ফল খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, বাস্তবে তার জান্নাতের ফলের কথা খুব মনে পড়ছিল এবং তিনি সেই ফলই খেতে চাচ্ছিলেন।

কিন্তু তার সন্তানেরা যখন শুনলো তাদের বাবা ফল খেতে চাচ্ছেন তারা দ্রুত বেরিয়ে পড়ল সেই অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ফল নিয়ে আসার জন্য। তারা যখন ফলের সন্ধানে জঙ্গলে গেল তখন সেখানে তাদের কিছু ফেরেশতাদের সাথে দেখা হয় সেই ফেরেশতারা বলল তোমাদের বাবা যে ফল চেয়েছেন তা এখানে নেই, তোমরা বরং তার কাছে ফিরে যাও এবং আমরাও তার সাথে সাক্ষাৎ করব।

আদম আলাইহিস সালামের সন্তানেরা যখন সেই ফেরেশতাদের নিয়ে বাড়ী ফিরল তখন সেই ফেরেশতাদের একজন কে চিনতে পারলো। কারণ সেই ফেরেশতা এর আগেও একবার দেখা দিয়েছিল যখন তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বুঝতে পারলেন মালাকুল মাওত তার স্বামীর আত্মাকে নিতে এসেছে। জান্নাতে বহু বছর সুখে শান্তিতে কাটানোর পর যখন তাদেরকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল তখন যে
সময়টা মা হাওয়া আদম আলাইহিস সালামকে ছাড়া একাকী কাটিয়েছিলেন সেই কষ্টকর সময়ের কথা তার মনে পড়ে গেল, এবং তিনি মালাকুল মাওতকে বাধা দিলেন।

কিন্তু আদম আলাইহিস সালাম মা হাওয়াকে বুঝিয়ে বললেন তাকে তার রবের কাছে ফিরে যেতে হবে। অবশেষে মা হাওয়া সরে দাঁড়ালেন এবং মালাকুল মউত আদম আলাইহিস সালামের আত্মা নিয়ে নিলেন। তারা আদম আলাইহিস সালাম এর মরদেহকে গোসল করালেন দাফন করলেন এবং মাটিতে কবর দিলেন এবং সেই প্রথা আমরা আজ পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

আদম আলাইহিস সালামের মৃত্যুর সময় মানব সমাজ অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছিল এবং সেখানে ভালো কাজের পাশাপাশি নানা ধরনের পাপ কাজ বাড়তে লাগল এবং এই অবস্থায় আল্লাহর বাণী প্রচার করার কাজে নামলেন আদম আলাইহিস সালামের সন্তান শীষ আলাইহিস সালাম।

সংকলনেঃ এম.এ.এস ইমন
প্রকাশক, দৈনিক ‘মেহেরপুর প্রতিদিন’




মুজিবনগরে পুলিশের অভিযানে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার

মেহেরপুরের মুজিবনগরে পুলিশের বিশেষ অভিযানের ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ শনিবার অভিযান চালিয়ে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৫০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

মুজিবনগর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংগীয় ফোর্স নিয়ে উক্ত এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ফেলে রাখা অবস্থায় ফেনসিডিলের বোতলগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও জানান, মাদকবিরোধী এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে এবং মুজিবনগর থানা পুলিশ মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।




মুজিবনগরে বিএনপি’র উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

মুজিবনগরে দারিয়াপুর বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে দারিয়াপুরে মুজিবনগর সরকারী ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গনে দারিয়াপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার বিএনপি’র নেতাকর্মীর উপস্হিতিতে এই ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

দারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মাষ্টারের সভাপতিত্বে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য এবং মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র (সাবেক) সভাপতি ও সাবেক মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মেহেরপুর বার কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদুল হক জাহিদ।

উপস্থিত ছিলেন, মুজিবনগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান, যুগ্ন আহবায়ক শাহিনুর রহমান, যুবদল নেতা আরিফ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাবেদ সেনজির, মেহেরপুর জেলা জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট সেলিম গাজী, ছাত্রনেতা মিঠুন সহ দারিয়াপুর বিএনপি’র নেতাকর্মীবৃন্দ।

ইফতারের আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত ও বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায এবং ছোট্ট শিশু আছিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত।




যেসব অভ্যাসের কারণে নষ্ট হচ্ছে লিভার

নয়াদিল্লির ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সের পরিচালক এবং ভারতের অন্যতম বিশিষ্ট লিভার চিকিৎসক ডাক্তার. সারিন ‘ওন ইওর বডি’ নামে একটি বই লিখেছেন।

বইটিতে তিনি লিখেছেন যে, আজ মানুষের জীবনযাত্রা এতটাই খারাপ যে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে তিনজনের ফ্যাটি লিভার রোগ রয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ খাদ্যাভ্যাস এবং খারাপ জীবনধারা। ডা. সারিন লিভারকে সুস্থ রাখার জন্য লাইফলাইনের কথাও বলেছেন।

কোন অভ্যাসগুলি লিভারের ক্ষতি করছে?

ডা. শিব কুমার সারিন বলেন যে আপনার সবচেয়ে খারাপ অভ্যাস যা আপনার লিভারের ক্ষতি করতে পারে তা হলো আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং বসে থাকা শরীর। যদি আপনার শরীর না নাড়াচাড়া করো, তাহলে আপনার লিভার এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করবে না। এজন্য প্রতিদিনের ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও যদি আপনি খুব বেশি তৈলাক্ত খাবার, ভাজা খাবার, প্যাকেটজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার খান, তাহলে এটি আপনার লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। এতে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হবে। অতএব, এই জিনিসগুলি ছেড়ে দিন অথবা কমিয়ে দিন।

তৃতীয় অভ্যাস হলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খাওয়া। ব্যথানাশক এবং অ্যান্টিবায়োটিক সরাসরি লিভারকে দুর্বল করে দেয়।

এতে লিভারের উপর অনেক চাপ পড়ে। এছাড়াও, টিবির ওষুধ লিভারেরও ক্ষতি করে। অতএব, শেষ বিকল্প হিসেবে এই ওষুধগুলি গ্রহণ করুন।

লিভারের ক্ষতির পঞ্চম বৃহত্তম কারণ হলো অ্যালকোহল সেবন। অ্যালকোহলের কারণে লিভার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে, অ্যালকোহল শরীরের প্রতিটি অংশের ক্ষতি করে।

এই জীবনরেখাগুলি লিভারের জন্য প্রয়োজনীয়

ড. এস. এর সারিন ব্যাখ্যা করেন যে লিভারকে সুস্থ রাখার জন্য চারটি প্রধান জীবনরেখা প্রয়োজন।

প্রথমত, স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা। প্রতিদিন তাজা সবুজ শাকসবজি খান। এরপর, তাজা ফল খান এবং বাড়িতে অন্যান্য জিনিস তৈরি করে খান। খুব বেশি তেল খাবেন না।

ব্যায়াম আপনার দ্বিতীয় জীবনরেখা। শরীরে যত বেশি নড়াচড়া থাকবে, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে তত বেশি আশীর্বাদ থাকবে। অতএব নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রচুর ঘামযুক্ত ব্যায়াম লিভারকে শক্তিশালী করবে।

তৃতীয় জীবনরেখা হলো আপনার জীবনধারা। যদি আপনি মানসিক চাপে থাকেন এবং শান্তিপূর্ণ ঘুম না পান, তাহলে আপনার লিভার অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতএব, একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করুন। রাতে শান্তিতে ঘুমান।

সকালে ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম এবং ব্যায়াম করুন। আনন্দের সঙ্গে কাজ করেন অথবা পড়াশোনা করেন। দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতায় ভুগবেন না।

লিভারের চতুর্থ জীবনরেখা হল ওষুধ। যদি আপনি লিভারের রোগে ভুগছেন তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং ওষুধ খান।

যদি আপনি প্রথম তিনটি জীবনরেখা সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তাহলে আপনার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু যদি লিভারে সমস্যা থাকে তাহলে তার চিকিৎসা করান।

সূত্র: যুগান্তর




ঝিনাইদহে মানবাধিকার রক্ষা বিষয়ক সংলাপ

ঝিনাইদহে নেটওয়ার্কিং শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ের এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ওয়েলফেয়ার এফোর্টস এর প্রশিক্ষণ হলে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ওয়েলফেয়ার এফোর্টস ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক সেলিনা রহমান, ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম, সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর টিপু সুলতান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার ডিফেন্ডার ফোরামের সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু ও পরিচালনা করেন উই এর পরিচালক শরিফা খাতুন।

এ্যাডভোকেসি সভায় মানবাধিকার কর্মী, সমাজসেবক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, প্রবীণ নাগরিক, নারী নেত্রী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা মানবাধিকার রক্ষায় নেটওয়ার্কিং ও পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নাগরিক অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।




মেহেরপুরে অতিরিক্ত লোড নেওয়ায় চালকের বিরুদ্ধে মামলা, ট্রাক জব্দ

মেহেরপুর পৌরসভার সামনে অতিরিক্ত লোড নিয়ে পার হওয়ার সময় বিদ্যুতের তারসহ কয়েকটি ইন্টারনেট তার ছিঁড়ে যাওয়ায় ট্রাক জব্দ করেছে ট্রাফিক পুলিশ।

এ ঘটনায় ট্রাকচালক সালু মিয়ার বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক পরিদর্শক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

তিনি জানান, অতিরিক্ত লোড বহন করা ট্রাফিক আইন অনুযায়ী অপরাধ। তাই ট্রাকচালক সালু মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।

ট্রাকের মালিক সদর উপজেলার হিজুলী গ্রামের ফিরোজ আহমেদকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ছিঁড়ে যাওয়া তারের ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।




শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহীরা আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

প্রতিষ্ঠানের নাম: শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি

বিভাগের নাম: সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এমআইএস

পদের নাম: অফিসার

পদসংখ্যা: নির্ধারিত নয়

শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি/স্নাতক (সিএসই)

অভিজ্ঞতা: ২ বছর

বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে

আবেদনের ঠিকানা: হিউম্যান রিসোর্সেস ডিভিশন, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, করপোরেট হেড অফিস, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক টাওয়ার, লেভেল-১১, প্লট# ৪, ব্লক# সিডব্লিউএন (সি), গুলশান এভিনিউ, ঢাকা-১২১২।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক

সূত্র: যুগান্তর




মেহেরপুরে ২০ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার

মেহেরপুরের গাংনীতে ২০ বয়সী বিবাহিত মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের আশারুল ইসলাম (৪৫)। আজ শনিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ২৮ ফেব্রয়ারি ভিকটিম বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওইদিন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে ভিকটিম ঘুমিয়ে পড়ে। পরে আনুমানিক ২ টার দিকে ভিকটেমর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে কারো স্পর্শ অনুভব হওয়ায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভেঙে মোবাইলের আলোতে দেখে যে, তার বাবা আশারুল হক তার বিছানায় বসে আছে।

সে তাকে জিজ্ঞাসা করে ‘‘আব্বু তুমি এতো রাতে এখানে কি করো’’ এই কথা বলার সাথে সাথে আসামী কোন কথা না শুনে জানোয়ারের মত তার বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে আসামীর তার নিজ কক্ষে চলে যায়। সে তার পিতার এ ধরণের কাজের ফলে জ্ঞান শুন্য হয়ে নিজেকে ছয় দিন র্পযন্ত ঘরে বন্দি করে রাখে।

ভিকটিমের মা ভিকটিমকে ঘর থেকে বের না হবার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম তার মাকে বিস্তারিত কারণ খুলে বলে। ভিকটিম তার মাকে জানায় পূর্বেও আসামী আশারুল হক বিভিন্ন সময়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতো কিন্তু লজ্জায় এ কথা কাওকে বলতে পারেনি।

পরবর্তীতে গত ১৪ মার্চ গাংনী থানায় এসে ভিকটিম তার বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ১৭, তারিখ ১৪/০৩/২৫ ইং।

গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল বলেন, ভিকটিম মামলা সেই মামলায় ওই দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ তার বাড়ি থেকে আশারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।




আদম (আঃ)- এম.এ.এস ইমন (পর্ব ১)

প্রথমে আল্লাহ ছিলেন, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। এমন কোনো মুহূর্ত ছিল না যখন তিনি ছিলেন না। তিনি ব্যতীত কোন বাস্তবতা ছিলনা। কোন এক পর্যায়ে অসীম জ্ঞান এর মালিক সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি সৃষ্টি করবেন।

একে একে সম্ভাবনার জগত থেকে বাস্তবতার জগতে নিয়ে আসতে লাগলেন তাঁর প্রথম সৃষ্টিগুলোকে। যেহেতু অসীম জ্ঞানের মালিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সৃষ্টি বলে কিছু থাকবে, তার মানে সৃষ্টির অস্তিত্ব থাকাটাই শ্রেয়। সেই সৃষ্টি ভালো কিছুই করুক বা খারাপ কিছু।

আল্লাহ তার আরশ সৃষ্টি করলেন, পানি সৃষ্টি করলেন, কলম সৃষ্টি করলেন, এবং সেই কলমকে আদেশ করলেন লেখ। কলম বলে বসল, আমার রব আমি কি লিখবো? আল্লাহ বললেনঃ সময়ের শেষ পর্যন্ত, অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সব কিছু লিখো। আরশ শব্দের অর্থ আসন। আসন, পানি, কলম এই শব্দগুলোর অর্থ আমরা জানি। কিন্তু আল্লাহর সেই আরশ, সময়ের শুরু সেই পানি এবং সবকিছুর নিয়তি লেখা সেই কলম কেমন তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, এবং একমাত্র আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। মহাবিশ্ব তৈরির ৫০ হাজার বছর আগে আল্লাহর হুকুমে, সেই কলম সবকিছু নিয়তি লিখে রেখেছিল লাওহে মাহফুজে। ৫০ হাজার বছর পর আল্লাহ আসমান এবং যমীন সৃষ্টি করলেন।

অতঃপর কোন এক পর্যায়ে আল্লাহ সৃষ্টি করলেন ফেরেশতাদের, নূর থেকে তৈরি আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি প্রকৃতিগতভাবে আল্লাহর এবাদত নিমজ্জিত থাকে, এবং আল্লাহর হুকুম অমান্য করে না, এবং তাদের মধ্যে থেকে সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম। আল্লাহ নূর থেকে ফেরেশতা তৈরি করার পর আরও কিছু সময় পার হলো এবং এরপর এক নতুন জাতি সৃষ্টি করলেন এবং তাদের সৃষ্টি করলেন এক ধরনের ধোয়াবিহীন আগুন থেকে। এই জাতির নাম হল জীন। ফেরেশতা আর জীনদের মধ্যে মূল পার্থক্য হল, জীন জাতি প্রকৃতিগতভাবেই আল্লাহর ইবাদত করে না বরং তারা চাইলে তার হুকুম অমান্য করতে পারে। আল্লাহ জীনদের দুনিয়াতে খালিফা হিসেবে পাঠালেন। আগুন থেকে তৈরি এই সৃষ্টি ছিল উত্তেজনা প্রবণ, তারা ঘনঘন যুদ্ধও খুনাখুনিতে লিপ্ত হতে লাগল এবং দুনিয়াতে অন্যায়-অনাচার ছড়িয়ে পড়লো। কিছু পুণ্যবান থাকা সত্বেও বেশিরভাগ আল্লাহকে অমান্য করতে লাগলো।

কিন্তু একজন ছিল যে বিশেষভাবে আল্লাহর এবাদত করত এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার চেষ্টা করত। এক পর্যায়ে তার এবাদত এর পুরস্কার স্বরূপ আল্লাহ তাকে তার এতটা কাছে আসার অনুমতি দিলেন যে সে ফেরেশতাদের অবস্থানে গিয়ে আল্লাহর এবাদত করার সুযোগ পেলো। অন্যদিকে দুনিয়াতে জীন জাতির অপকর্ম চলতে থাকায় আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের হুকুম দিলেন দুনিয়াতে গিয়ে সেই জীনদের বিতাড়িত করার জন্য। এই দায়িত্ব পালন করার জন্য ফেরেশতাদের সাথে পাঠানো হল আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করা সেই জীনকেও।

দুনিয়ায় অন্যায় অনাচার সৃষ্টিকারীদের ফেরেশতারা ধ্বংস করল এবং খুব অল্পসংখ্যক জীন রেহাই পেল। আল্লাহর হুকুম পালন করে ফেরেশতারা আসমানে ফিরে আসলো এবং তাদের সাথে সেই পুণ্যবান জীন। এরপর কতটুকু সময় পার হল তা আমরা জানিনা। কিন্তু একপর্যায়ে রাব্বুল আলামীন ঘোষণা দিলেন তিনি এক নতুন জীব সৃষ্টি করবেন। যখন আল্লাহ ঘোষণা দিলেন তিনি মানুষ সৃষ্টি করবেন, ফেরেশেতারা অবাক হয়ে যায়। তারা দেখেছিল স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন জীন দুনিয়াতে কত অন্যায়-অনাচার করেছিল, তারা জানত মানুষকেও যদি স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দেওয়া হয় তাহলে তারাও পৃথিবীতে একিরকম অন্যায়-অনাচারে লিপ্ত হবে। তবু কেন আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করবেন। তারা আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপরে প্রশ্ন তুলছিল না বরং তাদের বিস্ময় প্রকাশ করছিল।

আল্লাহ খুব সহজভাবেই বুঝালেন তাঁর কাছে এমন জ্ঞান রয়েছে যা ফেরেশতাদের কাছে নেই, অর্থাৎ মানুষকে সৃষ্টি করার পর তারা দুনিয়াতে নানা অপকর্মে লিপ্ত হলেও তাদের সৃষ্টি করার পিছনে কারণ রয়েছে, এবং শিঘ্রই সেই কারনগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ নিজ হাতে আদম আলাইহিস সালাম কে সৃষ্টি করলেন, এবং তাকে সৃষ্টি করলেন মাটি থেকে এবং তার দৈহিক গঠন সম্পন্ন করার পর তাঁর ভেতর রূহ বা আত্মা ফুকে দিলেন। এবং তিনি (আল্লাহ) আদম আলাইহিস সালাম কে সবকিছুর নাম শিখালেন, এবং তিনি ফেরেশতাদের হুকুম দিলেন আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করার জন্য, ফেরেশতাদের আসনে তখন সেই পুণ্যবান জিনেরও জায়গা ছিল। সেই আদেশটি তার ওপরেও প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু প্রতিটি ফেরেশতা তাৎক্ষণিকভাবে আদম আলাইহিস সালামকে সম্মান স্বরূপ সেজদা করলেও, সেই জিন তাকে সেজদা করল না। প্রথমবারের মতো কেউ স্বয়ং আল্লাহর উপস্থিতিতে আল্লাহর হুকুম অমান্য করার ধৃষ্টতা দেখালো, এবং সাথে সাথে তারা এতো বছরের ইবাদতের উদ্দেশ্যে প্রকাশ পেল। সে আল্লাহকে বেশি বেশি ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা কামনা করেনি, কামনা করেছিল মর্যাদা সম্মান।

আগুনের তৈরী হয়ে ইবাদতের মাধ্যমে নূরের তৈরী ফেরেশতাদের মধ্যে জায়গা করে সে এতটা অহংকারী হয়ে গিয়েছিল, যে সে মাটির তৈরি আদম আলাইহিস সালামকে তাকে ছোট করে দেখলো। সে যে গোটা মহাবিশ্বের স্রষ্টা মহান রব্বুল আলামীনের অমান্য করার মাধ্যমে সবচেয়ে অপদস্ত অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছিল তা বুঝতে পারল না, এবং হয়ত আল্লাহকে অমান্য করার চেয়েও বড় ভুলটা সে তার পরে করল। সে আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহের ব্যাপারে হতাশ হয়ে গেল, সে ধরে নিল সে যে ভুল করেছে এর থেকে আল্লাহ তাকে আর কোনদিন ক্ষমা করবেন না। এই হতাশ হয়ে যাওয়াকে আরবিতে বলা হয় আবলাসা, এবং সেই থেকে তার নাম হয়ে গেল ইবলিশ। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা ইবলিসকে বিতাড়িত করলেন।

ইবলিসের মনে এত প্রবল হিংসা আর ক্রোধ জন্ম নিল, যে সেই অভিশাপের মুহূর্তেও আল্লাহর কাছে দোয়া করে ফেলল। কিন্তু সে মাগফেরাতের জন্য দোয়া করল না, বরং আল্লাহর কাছ থেকে কিছু সময় রেহাই চাইলো, যেন সে আল্লাহর কাছে প্রমাণ করতে পারে মানব জাতি কতটা খারাপ। এবং মহান রব্বুল আলামীন এত বেশি দয়াশীল তাঁর সৃষ্টিকে তিনি এতটাই ভালোবাসেন যে, তার সরাসরি হুকুম অমান্য করার পর যখন তার কাছেই দোয়া করল, তিনি তার দোয়া কবুল করে নিলেন।

তাহলে আমরা যখন ভুল করে ফেলি বারবার একই গোনায় লিপ্ত হতে থাকি, এবং এরপর মনে করি আমরা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেছি আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন না। আমাদেরকে এমন চিন্তা করার কোনো কারণ রয়েছে।

আল্লাহ আদম আলাইহিস সালামকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন, এবং তিনি সেখানে তার রবের নেয়ামত উপভোগ করতে লাগলেন, এবং ইবলিশ গোপনে তাকে ধোঁকা দেয়ার পরিকল্পনা করতে লাগলো।

ইবলিশ যখন বছরের পর বছর আল্লাহর ইবাদত করার পর, এবাদত কারিদের মধ্যে অত্যন্ত সম্মানিত অবস্থানে পৌঁছে যায়। যখন সে আল্লাহর এমন নৈকট্য লাভ করার সুযোগ পায়, যা শুধুমাত্র বিশেষ কিছু ফেরেশতারাই পেয়েছিল। তখন আল্লাহ তাকে আরও একটি বিশেষ ইবাদত করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তাকে বলেছিলেন আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করতে। কিন্তু সে আল্লাহর আদেশ অমান্য করল, আল্লাহর আদেশ অমান্য করার মাধ্যমে তার এত বছরের এবাদত এর একটি দিক প্রকাশ পেল। তার এত বছরের ইবাদত জুড়েই ছিল আরও মর্যাদা পাওয়ার আকাঙ্খা, নিজের মাহাত্ম প্রমাণের আকাঙ্খা।

আল্লাহ যেহেতু লাতিফুল খবির, তিনি প্রতিটি অন্তরের সবচেয়ে গোপন বিষয়গুলো স¤পর্কে অবগত। তাই তিনি সবসময়ই জানতেন ইবলিসের ইবাদতের গভীরে কেমন উদ্দেশ্য লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু আরহামুর রাহিমীন তাই তিনি ইবলিসকে ধীরে ধীরে তার কাছে টেনে নিয়েছেন, তাকে শ্রেষ্ঠতর সঙ্গীদের সাথে তার রবের ইবাদত করার সুযোগ করে দিয়েছেন। কিন্তু তার অন্তরের অহংবোধ এত প্রবল ছিল সৃষ্টির সেরা ইবাদতকারীদের সঙ্গ পেয়েও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অতঃপর আল্লাহ তার সামনে এমন এক পরীক্ষা দিলেন যা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল তার অন্তরে আসলে কি ছিল।

যে সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে ভালোবেসেছে, একনিষ্ঠভাবে তাঁরই নৈকট্য লাভ করার জন্য ইবাদত করেছে, সে আল্লাহর হুকুম মানার জন্য উৎসুক হয়ে থাকবে আল্লাহ তাকে যে হুকুমই দেন না কেন। ইবলিস যখন আল্লাহর আদেশ অমান্য করল তখন সবার কাছেই এ ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেল। তার অন্তরে আল্লাহর আনুগত্যের চেয়ে নিজের পদমর্যাদা প্রাধান্য পেয়েছে, এবং সে এতটাই হতভাগা যে সেই পদমর্যাদার কামনায় নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিলো। সেই পদমর্যাদা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর আনুগত্য করলে এমনি তার হয়ে যেত এবং হাজার হাজার বছর পর আজ কত মানুষ সেই একই ধোঁকার মধ্যে পড়ে রয়েছে।

দ্বিতীয়তঃ সামান্য মাটির তৈরি আদম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ নূরের তৈরী ফেরেশতা ও আগুনের তৈরী জীনদের সেজদা করতে বললেন কেন? এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে জ্ঞানের মর্যাদা। আল্লাহ আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার সাথে সাথেই তাকে সিজদা করার হুকুম দেননি। বরং তিনি প্রথমে তাকে শিক্ষা দিয়েছেন, এবং আদম আলাইহিস সালাম সেই শিক্ষা গ্রহণ করার পরই বাকিদের কাছ থেকে সিজদা করার মতো অবস্থানে পৌঁছেছেন।

আল্লাহর রহমতে আদম আলাইহিস সালাম জান্নাতে বাস করতে লাগলেন এবং ইবলিস নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়ে ওত পেতে বসে থাকলো আদম আলাইহিস সালামকে ফেলার জন্য। অন্যদিকে আদম আলাইহিস সালাম জান্নাতের অগনিত নেয়ামত উপভোগ করতে লাগলেন। কিন্তু বছরের পর বছর পার হয়ে যাওয়ার পর তিনি তার অন্তরে এক নতুন ধরনের অনুভূতি আবিষ্কার করলেন। এই অনুভূতি ছিল একাকীত্ববোধ তিনি ধীরে ধীরে লক্ষ্য করলেন, আল্লাহর জগতে এত এত ফেরেশতা এত এত পশুপাখি কিন্তু তার মত আর কেউ নেই।

অতঃপর আল্লাহ তার জন্য একজন জীবনসঙ্গী সৃষ্টি করলেন, এবং আমাদের মা হাওয়া আলাইহিস সালামের জন্ম হলো এবং তাকে পাওয়ার সাথে সাথে আদম আলাইহিস সালামের নিঃসঙ্গতা দূর হয়ে গেল। এবং আল্লাহ বললেন আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহিস সালাম এর জন্য আল্লাহ পুরো জান্নাত উন্মুক্ত করে দিলেন এবং শুধুমাত্র একটি গাছের ব্যাপারে তাদের সতর্ক করে দিলেন এবং বললেন এই গাছের কাছে এসো না। এই আদেশকে ঘিরেই ইবলিস তার ফাদ পাততে লাগলো ধাপে ধাপে আদম আলাইহিস সালামকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে লাগল এবং অবশেষে সে আল্লাহর কসম খেয়ে বলল সে তাদের সদুপদেশ দিচ্ছে এবং তারা যদি সেই গাছের ফল খায় তারা অমর হয়ে যাবেন ফেরেশতা দের মত হয়ে যাবেন।

আদম আলাইহিস সালাম এবং মা হাওয়া এত পবিত্র পরিবেশে জীবন যাপন করেছিলেন যে, তারা কখনো মিথ্যা কথার সম্মূখীনই হননি আল্লাহর কসম খেয়ে মিথ্যা কথা বলা তো অনেক দূরের কথা।

তারা ইবলিশের ফাঁদে পা দিলেন, এবং সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেললেন এবং সাথে সাথেই তারা তাদের নগ্নতার উপলব্ধি করলেন এবং যে আলো দ্বারা তাদের নগ্নতার সুরক্ষিত ছিল সেই আলো নিভে গেল এবং তারা গাছপালা দিয়ে নিজেদের ঢেকে নিলেন এবং আদম আলাইহিস সালাম ও মা হাওয়া সাথে সাথে তাদের ভুল বুঝতে পারলেন এবং যদিও ইবলিস তাদেরকে ফাসিয়েছিল তারা বুঝতে পারলেন। যখন আল্লাহ পরিষ্কার আদেশ করেছিলেন তাদেরকে সেই গাছ থেকে ফল না খাওয়ার জন্য, তখন তাদের ইবলিসের কথায় কান দেয়া উচিত হয়নি এবং তাই এতে তাদেরও দোষ ছিল। এবং তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করে বললেন, ‘রাব্বানা জলামনা আনফুসানা অইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কূনান্না মিনাল খাসেরীন’ হে আমাদের রব আমরা আমাদের নাফসের উপর জুলুম করেছি এবং যদি আমাদেরকে আপনি ক্ষমা না করেন এবং আমাদের উপর রহম না করেন তবে নিশ্চয়ই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব এবং এখানে আদম আলাইহিস সালাম এর মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।

সংকলনেঃ এম.এ.এস ইমন
প্রকাশক, দৈনিক ‘মেহেরপুর প্রতিদিন’




যেভাবে কাটল টালি তারকাদের হোলি খেলা

বাংলা বিনোদন দুনিয়ার প্রায় সব খ্যাতনামা শুক্রবার শুটিংয়ের ব্যস্ততা ভুলে রঙের নেশায় মাতেন। দেব থেকে অঙ্কুশ হাজরা, যশ দাশগুপ্ত, নুসরত জাহান, মধুমিতা সরকার, ঊষসী চক্রবর্তী সবাই রঙিন আজকের দিন। কেউ গানের তালে মাথা ঢেকে উদ্দাম নেচেছেন, কেউ সঙ্গিনীকে সঙ্গে নিয়ে ফাগ আবিরে রাঙা! আবার কেউ তো সাজসজ্জায় ‘মৃচ্ছকটিক’ নাটকের ‘বসন্তসেনা’। বাড়তি আকর্ষণ– ডায়েট ভুলে দেদার খানাপিনার আয়োজন।

কেমন হলো বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামাদের দোল উদযাপন?এমন প্রশ্নে অঙ্কুশ কখনো উদযাপনের সুযোগ ছাড়েন না বলে জানান। নিজের বাড়িতে হোক কিংবা স্টুডিওতে অভিনেতা সব সময় রসেবশে। দোলে তিনি যে ঐন্দ্রিলা সেনকে নিয়ে মনের আনন্দে রঙ খেলায় মাতবেন, অনুরাগীরা জানতেন। সেসব মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন যুগল। পরনে সাদা টি-শার্ট আর শর্টস, মাথা ঢেকেছেন পরচুলায়। পোশাক, শরীর রঙে মাখামাখি। নেপথ্যে অমিতাভ বচ্চনের ‘সিলসিলা’ সিনেমার বিখ্যাত গান ‘রঙ বরষে’ বাজছে। তাল মিলিয়ে উদ্দাম নৃত্য অভিনেতার! নাচতে নাচতেই তিনি রঙ মাখিয়েছেন ঐন্দ্রিলাকে ও বন্ধুদের। প্রেমিকার সঙ্গে আদুরে ছবি তুলতেও ভোলেননি!

মিমি চক্রবর্তী আধ্যাত্মিক। সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এ নায়িকার বাড়িতে উৎসব মানে ঈশ্বরের আরাধনা। এদিনও সেই পর্ব বাদ যায়নি। মিমি নিজে হাতে গোপালের পূজা করেছেন। সঙ্গী দুই সারমেয় ‘সন্তান’, মা-বাবা। বড়দের পায়ে আবির আর দুই সন্তানের কপালে ছোট্ট করে ফাগের টিপ। নিজেও বেশ খানিকটা লাল রঙে রঙিন। মিমির দোল জমে গেছে এভাবেই।

প্রযোজক-অভিনেতা-সংসদ সদস্য দেব। এদিন তিনি আক্ষরিক অর্থেই ‘খোকাবাবু’। দিনটি শুরু করেছেন মায়ের হাতে আবির মেখে। ঝাঁকড়া চুল, দাড়ি-গোঁফে ঢাকা ‘রঘু ডাকাত’ মায়ের সামনে যেন শিশু! ব্যস্ত ছেলেকে হাতের কাছে পেয়ে মা-ও মনের সুখে তাকে আবির মাখিয়েছেন। দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারীও ছিলেন সেই দলে। পরে দেবের রঙে রঙ মেশাল রুক্মিণী মৈত্রও।

দেব যখন মায়ের ‘খোকাবাবু’, তখন তার ‘কিশোরী’ ইধিকা পাল কী করছেন? তিনিও মাটির থালায় রকমারি রঙ সাজিয়ে হাজির। পরনের সাদা শাড়িতে ফুলেল নকশা। চুলে বাসন্তী গাদা ফুল। এদিন তিনি ‘কিশোরী’র মতোই প্রাণোচ্ছ্বল! কিন্তু তার গালে রঙ দিল কে? রহস্য সেটাই।

এদিকে যশ দাশগুপ্ত, নুসরাত জাহানকে দেখুন! জুটিতে সাদা পোশাকে রঙমিলন্তি। তার পরেই ডুব দিয়েছেন লাল, নীল, সবুজ রঙের আবির-ফাগে। দুই ছেলেই বেশ ছোট। দুজনে তাই দুজনের রঙ খেলার দোসর। বিধায়ক-অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী সব দর্শক-অনুরাগীকে দোলের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

মধুমিতা সরকার এমনিতেই রঙিন। সব রকম উৎসব নিজের মতো করে উদ্যাপন করেন। দোলে সাজপোশাকে, ভঙ্গিতে যেন রাই কিশোরী! সাদা শার্ট পেটের কাছে ‘নট’ করা। সঙ্গে ডেনিম শর্টস। খোলা চুল বসন্তের হাওয়ায় এলোমেলো। মুখে, পোশাকে, চুলে রঙবাঙার। ঋতুরাজ যেন নিজের হাতে যত্ন করে রঙিন করেছে তাকে! এমন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি না করে থাকা যায়! কিন্তু ছবিগুলো তুললেন কে? নায়িকার ছবি যে বারে বারে এই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।

এক মাত্র সন্তান ধীর আগের তুলনায় বড়। ছেলেকে নিয়েই তাই রঙের উৎসবে মাতোয়ারা চক্রবর্তী পরিবার। গৌরব চক্রবর্তী এবং ঋদ্ধিমা ঘোষের পোশাক এ দিন সাদা। থালায় সাজানো নানা রঙের ফাগ। তাতে ছোট্ট ছোট্ট আঙুল ডুবিয়ে ঠাম্মা মিঠু চক্রবর্তীর গাল রঙিন করেছে একরত্তি। নাতির দেওয়া রঙে রঙিন হতে হতে খুশির হাসি সব্যসাচী চক্রবর্তীর ঘরনির চোখেমুখে।

শ্রীলেখা মিত্র ব্যতিক্রমী। রঙ খেলতে তিনি ভালোবাসেন সে কথাও জানিয়েছেন। আবার রঙ খেলার দোসর নেই তার এ কথা জানাতেও ভোলেননি তিনি। তা হলে কি তিনি মনোকষ্টে ভুগছেন? না, তিনি বেশ ভালই আছেন পোষ্যদের নিয়ে। তারাও যাতে ভাল থাকে তার জন্য সাধারণকে সতর্ক করতেও ভোলেননি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘ওরা অবলা। ওরা তাই বলতে পারে না, রঙ ওদের জন্য ক্ষতিকারক। দোল ওদের জন্য নয়। আপনারাই বরং বিষয়টি মনে রেখে রঙ থেকে ওদের দূরে রাখুন। ওদের রঙ মাখিয়ে কষ্ট দিয়ে নিজে আনন্দ পাবেন না।

শেষ হইয়াও হইল না শেষ ঊষসী চক্রবর্তী। তিনি এ দিন সাজসজ্জায় যেন ‘মৃচ্ছকটিকম’ নাটকের ‘বসন্তসেনা’। এ দিন তিনি আপাদমস্তক সাদা পোশাকে সেজেছেন। কাঁচুলির মতো ব্লাউজ, শিফনের শাড়িতে তার বাঁধভাঙা সৌন্দর্য। কোমরে সাদা পাথরের সরু চেন। সঙ্গে হাজার ওয়াটের হাসি। অভিনেত্রীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ এক অনুরাগী মন্তব্য বিভাগে অভিনেত্রী লিখেছেন— এ যে কলকাতার মালাইকা! সে খবর আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন তিনিই।

যোগাযোগ করতেই ফোনের ওপার থেকে হাসি ছড়িয়ে দিলেন ঊষসী। বললেন, উদযাপনকে সামনে রেখে নিজেকে ভালোবাসার পাঠ পড়িয়েছি। দেখুন, নিজেকেই কীভাবে নানা রঙে রঙিন করেছি। তার মতে, নিখুঁত কেউ নন। কিন্তু খুঁতগুলো আঁকড়ে ধরে খুঁতখুঁতে না হয়ে নিজেকে খুঁতসহ ভালোবাসুন। তা হলেই আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী।

সূত্র: যুগান্তর