মেহেরপুর সদরে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারুল ইসলামের নির্বাচনী মতবিনিময় সভা

আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারুল ইসলামের মটরসাইকেল মার্কার সমর্থনে নির্বাচনী মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে আশরাফপুর বাজারে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোরদ্দীন মনোর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন বুলবুল।

সম্মানিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জামান, সেলিম রেজা, মতিউর রহমান, আমঝুপি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, পিরোজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। আমঝুপি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ চুন্নুর ছেলে সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও এসময় শহর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, আমঝুপি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, বুড়িপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আলমগীর হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাব্বারুল ইসলাম, জেলা ছাত্র লীগের দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গা চেয়ারম্যান পদে প্রতীক নিয়ে কাড়াকাড়ি, লটারিতে সমাধান

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পাঁচজন জন চেয়ারম্যান পদে পছন্দের প্রতীক নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। আনারস প্রতীক প্রার্থীর পছন্দের তালিকায় থাকায় লটারির মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসকের হলরুমে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান ও ভাইসচেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী একই প্রতীক দাবি করে বসেন। সমস্যা সমাধানে রিটার্নিং কর্মকর্তা লটারির উদ্যোগ নেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে চারজন প্রার্থীর সবাই লটারির মাধ্যমে প্রতীক পেয়েছেন। তবে ভাইসচেয়ারম্যান (পুরুষ) ও ভাইসচেয়ারম্যান (মহিলা) তাঁদের পছন্দের প্রতিক পেয়েছেন।

এদিকে প্রতীক পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোটের প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। উপজেলা জুড়ে পোস্টার টাঙানোর কাজ শুরু করেছে নেতাকর্মীরা। দ্বিতীয় ধাপে আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামি ২১ শে মে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন (দোয়াত কলম) প্রতীক, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক জিল্লুর রহমান (ঘোড়া), সাবেক হারদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিক্ষানুরাগী নুরুল ইসলাম (কাপ পিরিচ), রাজধানী ঢাকার দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোমিন চৌধুরী ডাবু (আনারস) ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কে.এম মঞ্জিলুর রহমান (মোটরসাইকেল) প্রতীক পেয়েছেন।

মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাঁদের পছন্দের প্রতীক পেয়েছেন। বর্তমান উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু (হাঁস) প্রতিক পেয়েছেন। এছাড়া মনিরা খাতুন (কলস) ও কাজল রেখা (ফুটবল) প্রতীক পেয়েছেন।

এদিকে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইসচেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছেন ৮ জন প্রার্থী। টিউবওয়েল প্রতিক চেয়ে তিনজন ও চশমা প্রতিকে চেয়ে ৪ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লটারির মাধ্যমে আহমেদ হাসিব খাঁন (তালা), মামুনুর রহমান (বই), আজিজুল হক (উড়ো জাহাজ), আজিজুল হক (টিয়া পাখি), মকলেছুর রহমান (টিউবওয়েল), মাসুম বিল্লাহ (মাইক), মিজানুর রহমান (চশমা), সোহেল রানা শাহীন (পালকি) প্রতিক পেয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং অফিসার আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মো. নাজমুল হামিদ রেজা জানান, বেশির ভাগ চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী একই প্রতীক দাবি করেন, যা লটারির মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। যা, পরবর্তীতে তাঁরা লটারিতে পাওয়া প্রতীক পেয়ে খুশি হয়েছেন।




আলমডাঙ্গার শ্রীপুর-নারায়ণপুর মাঠে পান বরজে আগুন

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডে ১৬ বিঘা পানের বরজ ও কলা বাগান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের দুয়ারপাড় মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা ও হরিণাকুন্ডু ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে জামজামি ইউনিয়নের দুয়ারপাড় মাঠের একটি পান বরজে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তেই আগুন পাশের পান বরজে ছড়িয়ে পড়ে। একে একে প্রায় ৩০টি পান বরজ ও ২টি কলা বাগান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়।

ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন-লিফাজ উদ্দিন ২ বিঘা, রফিকুল ১০ কাঠা, রাহুল ১বিঘা,খাজা ১০ কাঠা,মানোয়ার ১০ কাঠা, আলী হোসেন ১০ কাঠা, জয়বদ্দিন ১০ কাঠা, ঝন্টু ১ বিঘা, শীলু ১৫ কাঠা, রবিউল ১৫ কাঠা, ডাবু ১ বিঘা, বকুল ১৫ কাঠা, রইছ ১ বিঘা, জোরাপ ১০ কাঠা, হারুন ১০ কাঠা, পাপ্পু ১০ কাঠা, সুজন ১০ কাঠা, মধু ১০ কাঠা, আদম ১০ কাঠা, বাবুল ১০ কাঠা, মুনিয়ার ৫ কাঠা, ফরিদ ১০ কাঠা, কদম ১০ কাঠা, জমির ১০ কাঠা, বাচ্চু ১০ কাঠা। মোট ২৬ জন কৃষকের প্রায় ১৬ বিঘা জমি ভস্কিভূত হয়েছে।

ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, আগুনের সূত্রপাত হলে, গ্রামের শতাধিক লোকজন নিয়ে আগুন নেভাতে ছুটে যান। মাঠে পুকুর কিংবা ডোবা না থাকায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে বসতবাড়ির পাশের বাঁশবাগানের আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুয়ারপাড় মাঠে ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনি। এছাড়া মাঠের ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিনও তালাবদ্ধ থাকায় পানি পায়নি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এতে আগুন নেভাতে তাদের বিঘ্ন ঘটে। পরবর্তীতে বসতবাড়ির নলকূপের পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন তারা।

আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন সমকালকে জানান, রাত সাড়ে ৭টার দিকে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গার দুইটি ইউনিট ও হরিণাকুন্ডুর দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভির জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। দুয়ারপাড় মাঠের ৩০ টি পান বরজ ও ২টি কলা বাগান পুড়ে গেছে। এতে কৃষকের প্রায় ২০-২৫ লাখ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। তাদের ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষি সহায়তা করা হবে।




ঝিনাইদহে জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাশেদ আল মামুনকে হত্যার হুমকি

ঝিনাইদহে জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাশেদ আল মামুনকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তিনি সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, শহরের আরাপপুর খাজুরা এতিমখানা মোড় এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে রাশেদ (৩৫) ও একই এলাকার এবাদত আলীর ছেলে রাজু (৩০)সহ আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী গত ৩০ মার্চ দুপুর ২:৪৫ মিনিটের সময় আল মামুন হাসপাতালের নিজ চেম্বারে রোগী দেখে ফেরার পথে হাসপাতাল গেটে ডা: রাশেদ আল মামুনের গতিরোধ করে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে হুমকিদাতারা তাদের পকেট থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র বের করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারতে আসলে ডা: রাশেদ আল মামুন দৌড়ে ক্লিনিকে ঢুকে জীবন রক্ষা করে।

ডা: রাশেদ আল মামুন বলেন, ওরা আমাকে হত্যা করতে না পেরে হুমকি দিতে থাকে। তিনি বলেন, পূর্বে আমি শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে ডাঃ মাহবুব পারভেজ এর কিছু অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সেই সূত্র ধরে ১ নং বিবাদী তাহার ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে তাদের মধ্যে কেস মিমাংসার জন্য আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আমি যদি উক্ত কেস দ্রুত মিমাংসা না করি তাহলে বিবাদীরা আমাকে যেকোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এমতাবস্থায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন উদ্দিন জানান, জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাশেদ আল মামুন এর হত্যার হুমকির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত স্বাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




প্রকাশ্যে মডেলকে গুলি করে হত্যা

সাবেক মিস ইকুয়েডর প্রতিযোগী ল্যান্ডি প্যারাগাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল ইকুয়েডরের কুইভেডোরের একটি রেস্তোরাঁয় গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। তার বয়স হয়েছিল ২৩ বছর।

জানা গেছে, কুখ্যাত গ্যাং বসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ল্যান্ডির। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হলো না। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাং বসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণেই হত্যা করা হয়েছে এই মডেলকে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে একটি রেস্তোরাঁয় বসে অপেক্ষা করছিলেন ল্যান্ডি। তখন দুই বন্দুকধারী খাবারের দোকানে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া শুরু করলে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন ল্যান্ডি। মডেলের গায়ে গুলি লাগার পরই ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান দুই বন্দুকধারী।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে মিস ইকুয়েডর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ল্যান্ডি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী রয়েছে তার। গেল বছরের ডিসেম্বরে মাদক পাচারকারী হিসেবে ল্যান্ডির নাম ওঠে পুলিশের খাতায়।

সূত্র: ডেইল মেইল




গাংনীতে মানব সেবায় ছাত্রলীগ নেতা অনিক

করোনা দূর্যোগের সময় থেকে অক্সিজেন, ঔষধ সরবরাহ, অসহায়দের মাঝে খাদ্য সহায়তা, সচেতনতা কার্যক্রম, মাস্ক বিতরণ করে আসছেন গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো: আসিফ ইকবাল অনিক।

এবার পথচারীদের মাঝে শরবত, খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরনের পাশাপাশি তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে ও এসডিজি বাস্তাবায়নের লক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সড়কের পাশে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩ শতাধিক গাছ রোপন করে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের কাছে নিজেকে তুলে ধরেছেন মানবিক ছাত্র নেতা হিসেবে। তার সামাজিক ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে খুশি আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

আসিফ ইকবাল অনিক মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক। পড়াশুনা করছেন মেহেরপুর সরকারী ডিগ্রী কলেজে। চৌকস, মেধাবী ও দক্ষ সংগঠক আসিফ ইকবাল অনিক ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি ছোটকাল থেকেই, মানবসেবামূলক কাজ করছেন।

কৃষকের ধানকাটা থেকে শুরু করে ইতিবাচক নানা কর্মসূচির জন্য আসিফ ইকবাল অনিককে দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে ও এসডিজি বাস্তাবায়নের লক্ষে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো: আসিফ ইকবাল অনিকের উদ্যাগে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে। রাসের সংক্রামণ ঠেকাতে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক মাইকিং সহ মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোবস, লিফলেট বিতরণ শহরে জীবানুনাশক স্প্রে দেয়াসহ নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছিলো ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিকের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবার কখনও নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সঙ্কটের ফোনকল পেয়ে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে চলে তারা। ‘ত্রাণ নয় উপহার’ এই শ্লোগান দিয়ে পৌঁছে দেয়া হয় ছাত্রলীগের খাদ্য সামগ্রী।

গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক বলেন, কোন প্রতিদান পাওয়ার জন্য নয় সেবার ব্রত নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আদর্শের সাথে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।

আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দরা জানান,গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক সহ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা করোনা দূর্যোগ সহ নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অবদান রাখে। যা সেবার মাধ্যমে জনগনের কাছে নিজেকে ছাত্ররাজনীতির মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক।
গাংনী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আসিফ ইকবাল অনিক প্রায় প্রতিদিনই অসহায় রুগীদের সেবা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এছাড়া ভর্তি রুগীদের পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা করেন তিনি।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক বলেন, বৃক্ষ রোপন, শরবত ও পানি পান, করোনা দূর্যোগ সহ জনগনের নানা সমস্যায় পাশে থেকে সেবা করা অত্যান্ত মানবিক ও ভালো কাজ। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসিফ ইবাল অনিক মানব সেবায় যে কাজ করছে এটা সকলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।




চার জেলায় নিয়োগ দিবে নাবিল গ্রুপ

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নাবিল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সিডস অ্যান্ড পেস্টিসাইড বিভাগ ‘মার্কেটিং অফিসার ’ পদে ৭ জনবল নিয়োগ দেবে।

প্রতিষ্ঠানের নাম : নাবিল গ্রুপ

পদ ও বিভাগের নাম : মার্কেটিং অফিসার (সিডস অ্যান্ড পেস্টিসাইড)

পদসংখ্যা : ৭টি

বয়স : নির্ধারিত নয়

কর্মস্থল : বগুড়া, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর

বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে

অভিজ্ঞতা : ২ থেকে ৫ বছর

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ : ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

কর্মক্ষেত্র : অফিস

কর্মঘণ্টা : ফুল টাইম

প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়)

আবেদনের শেষ তারিখ : ১১ মে, ২০২৪

শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্নাতক/সম্মান ডিগ্রি

অন্যান্য সুবিধা : টি/এ, মোবাইল বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বছরে ২ বোনাসসহ প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

যেভাবে আবেদন করবেন : আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

ঠিকানা : ১৫/২, আহমদনগর, সপুরা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী- ৬২০৩, কর্পোরেট অফিস : সিলভার স্টোন, রোড নং # ২৩, বাড়ি নং # ০৯; ব্লক-বি, বনানী, ঢাকা-১২১১ কারখানা : ভেরাপোরা বাজার, দাওকান্দি, পবা, রাজশাহী।




গাংনী উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ১৪ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ‌

আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানভীর রুম্মন আহমেদ প্রতীক বরাদ্দ করেন।

এ সময় চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ খালেক-আনারস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম শফিকুল আলম-কাপ পিরিচ, জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো-কৈই মাছ, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল-হেলিকপ্টার, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক লায়লা আরজমান বানু -দোয়াত কলম, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম জুয়েল-ঘোড়া, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন-মোটরসাইকেল ও আওয়ামী লীগ কর্মী মুকুল আহমেদ-শালিক পাখি।

ভাই চেয়ারম্যান পদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মিঠু-তালা, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন-টিউবওয়েল এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রেজাউল করিম-চশমা প্রতিক পেয়েছেন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং যুব মহিলা লীগ নেত্রী ফারহানা ইয়াসমিন-হাঁস, নাসিমা খাতুন-ফুটবল এবং জাকিয়া আক্তার আলপনা-কলস প্রতীক পেয়েছেন।

চেয়ারম্যান পদে একই প্রার্থী একই প্রতীক দাবি করায় লটারির মাধ্যমে প্রতীক নির্ধারণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গাংনী উপজেলা পরিষদের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জনসহ মোট ১৪ প্রার্থী প্রতীক নিয়ে আজ থেকে মাঠে লড়বেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে শুধুমাত্র জুলফিকার আলী ভুট্টো বিএনপি নেতা। বাকি ১৩ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।




জিম্বাবুয়ে সিরিজ সহজ হবে না: শান্ত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে বিশ্বকাপের উদ্দেশে যাত্রা করবে টাইগাররা। শুক্রবার (৩ মে) সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ম্যাচের আগের দিন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অধিনায়ক শান্ত। জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। শান্ত বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে বড় দল, ছোট দল নেই। আপনি যেটা বললেন, উগান্ডার কাছে জিম্বাবুয়ে হেরে গেছে। আবার জিম্বাবুয়ে শ্রীলঙ্কাকে কিছু দিন আগে হারিয়েছে। সেভাবে চিন্তা করলে খুব বেশি পার্থক্য আমার কাছে লাগে না।’

শক্তির বিচারে বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে থাকলেও সিরিজটা সহজ হবে না বলে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক। শান্ত আরও বলেন, ‘ম্যাচটা কীভাবে খেলছি, নিজেদের কীভাবে প্রস্তুত করছি, আত্মবিশ্বাস তৈরি করছি এটা গুরুত্বপূর্ণ। এতটুকু বলতে পারি, সিরিজটা সহজ হবে না, অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কারণ তারাও ভালো দল।’

সূত্র: ইত্তেফাক




আমার প্রথম সমুদ্র যাত্রা

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম থেকে পাসিং আউটের পর আমি ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের একটি জাহাজ বাংলার কাকলিতে ডেক ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করি। এটি ছিল জেনারেল কার্গো জাহাজ। প্রায় সব ধরনের ড্রাই কারগো বা মালামাল এটিতে পরিবহন করা হতো।

জাহাজটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৫৫ মিটার প্রস্থ ২২ মিটার, সামার ডেড ওয়েট ১৭২৩৪ টন এবং পোর্ট অফ রেজিস্ট্রি ছিল চট্টগ্রাম। জাহাজটি তৈরি জাপানে এবং সবদিক দিয়েই এটি একটি ভালো জাহাজ ছিল। জাহাজটিতে কার্গো গেয়ার ছিল ক্রেন,ডেরিক এবং জাম্বো ডেরিক কারগো অপারেশন এর জন্য।

জাহাজে আমার প্রথম ভয়েজ ছিল মোংলা থেকে করাচি বন্দর। আমরা মোংলা বন্দর থেকে জুট বা পাট বেল আকারে লোড করি। কারগো লোড করতে প্রায় ১৫ দিনের মতো সময় লেগেছিল। বৃষ্টি হলে কারগো বন্ধ থাকতো এ কারণেই লোডিং এ একটু বেশি সময় লেগেছিল। এছাড়া কারগো জাহাজের ক্রেন দিয়ে দিয়ে লোড করা হতো। আমরা সে সময় রিভার মোরিং এ কারগো লোড করেছিলাম পাকিস্তানের করাচি বন্দরের জন্য।

মোংলা থেকে বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগর হয়ে আমরা করাচি বন্দরে পৌঁছাই। আমাদের করাচি যেতে প্রায় ১২ দিনের মতো সময় লেগেছিল।

আমরা মে মাসে মংলা থেকে করাচির উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। মুনসনের প্রভাবে এই সময়ে বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগর দুটোই উত্তাল থাকে। বঙ্গোপসাগরে পড়তেই জাহাজে রোলিং পিচিং শুরু হয়ে গেল। আমার জন্য এটি ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতা। কখনো কখনো আস্তে জাহাজটি দোলে আবার কখনো কখনো বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেশি দুলতে থাকে। এভাবে আমাদের যাত্রা শুরু হল।

জাহাজে আমরা তিনজন ব্যাচমেট ছিলাম, দুইজন ডেক ক্যাডেট এবং একজন ইঞ্জিন ক্যাডেট। তিনজনই আমরা সবেমাত্র জাহাজে যোগদান করেছি। ক্যাডেটদের রুমে ছিল ডাবল বাঙ্ক বেড বা দোতলা খাট। ডেক ক্যাডেট কেবিনে আমি এবং আমার একজন ব্যাচমেট থাকতাম আর ইঞ্জিন ক্যাডেট রুমে আমার আরেকজন ব্যাচমেট একাই থাকতো।

ক্যাডেট হিসেবে জাহাজে যোগদানের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় ট্রেনিং। সব ধরনের কাজেই অংশগ্রহণ করতে হতো। কখনো অফিসারদের সাথে কখনো ক্রুদের সাথে আবার কখনো ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কাজ করতে হতো। জয়েনিং এর পরে প্রথম ৬ মাস আমাদের প্রতিদিন ১২ ঘন্টার বেশি কাজ করতে হতো। তারপর আস্তে আস্তে কাজ শিখে গেলে কাজের সময় কিছুটা কমে আসে। ক্যাডেটদের প্রধান কাজ হল সবার সাথে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা। এভাবেই জাহাজের ক্যাডেটরা ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে যা পরবর্তীতে প্রতিটি পদেই কাজে আসে।

এভাবে আমরা রোলিং পিচিং নিয়ে চলতে থাকি এবং আমাদের ক্যাডেটদের সকলেরই কিছুটা সী সিকনেস দেখা দেয়। মাথা ঘুরতে থাকে এবং বমি বমি ভাব হয়,কখনো কখনো আবার বমিও হয়েছে। যদিও এসব কিছুর মাঝেই আমাদের কাজ করতে হয়েছে। যখন আমরা আরব সাগরে পড়ি তখন সমুদ্র আরো বেশি উত্তাল হয়ে যায়। সামুদ্রিক নিম্ন চাপের কারণে জাহাজটি আরো বেশি দুলতে থাকে। কখনো কখনো ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রির মত রোলিং হয়। আমরা যারা নতুন জাহাজে জয়েন করেছি তাদের জন্য দিনগুলো খুব কষ্টের ছিল। এভাবে কয়েকদিন চলার পর সমুদ্র কিছুটা ভালো হয়ে যায়। তখন আমরা কিছুটা স্বস্তি বোধ করি। এভাবে আস্তে আস্তে আমাদের সী সিকনেস কেটে যায়। সকল নাবিকদেরই প্রথমদিকে এরকম সী সিকনেস হয়।
১২ দিন পর যখন করাচি বন্দরে পৌঁছাই তখন খুব শান্তি লেগেছিল। এটিই আমার প্রথম ফরেন পোর্ট। আমাদের জুট বা পাট ডিসচার্জ করতে ৭ দিনের ও বেশি সময় লেগেছিল।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ হওয়াতে জাহাজটিতে ফ্যামিলি নিয়ে সেইল করা যেত। আমাদের জাহাজে চিফ অফিসার এবং সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার স্যারের ফ্যামিলি ছিল। জাহাজের পরিবেশটাও ছিল চমৎকার। সবাই বাংলাদেশী হওয়াতে খাওয়া-দাওয়াতে কোন কষ্ট হয়নি। মাঝে মাঝে ভাবিরাও রান্না করে আমাদের খাবার খাইয়েছে। সমুদ্রের অবস্থা ভালো থাকলে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর টেবিল টেনিস খেলা হত মাঝে মাঝে টুর্নামেন্টও হত। এভাবে কাজের মধ্যেও বেশ আনন্দে কেটেছে আমাদের দিনগুলো। জাহাজে সিনিয়রদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। শাসন করলেও তারা আমাদের অনেক কিছুই শিখিয়েছেন।

বন্দরে আমাদের জাহাজটি বেশ কিছুদিন অবস্থান করায় করাচি শহরটি ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল। করাচি পাকিস্তানের প্রধান সমুদ্র বন্দর। এটি আরব সাগরের উপকূলে অবস্থিত। রাস্তায় আলোর কারণে এটিকে আলোর শহরও বলা হয়। করাচি পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবেও পরিচিত। এটি ক্রীড়া জগতের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। করাচির সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময় কারণ এখানে মহাজির,সিনজি, পাঞ্জাবি সহ বিভিন্ন সম্প্রদায় একত্রে বসবাস করে। এছাড়াও এখানে প্রায় দুই মিলিয়নের মতো বাঙালি বসবাস করে। দুঃখের বিষয় হল সেখানকার বসবাসরত বাঙালিরা ভোটাধিকার এবং দেশের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। জানা যায় তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না এবং সরকারি চাকরি পায় না। তাই বাঙালি পরিবারগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাঙালিরা এখনো সেদেশের নাগরিকত্ব পায়নি।

সমুদ্রের কাছাকাছি থাকায় করাচি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। বিন কাশিম বন্দর এবং জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখানেই অবস্থিত। এখানকার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কায়েদে আজম মাজার,মহাত্মা প্যালেস, ফ্রিরিহল,ডলমেন শপিং মল, আলাদিন পার্ক, পিএএফ মিউজিয়াম,সীভিউ বিচ ইত্যাদ।

আমার সে সময় কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর মাজার,কয়েকটি শপিং মল এবং সীবিচে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছিল। সেই সাথে বেশ কয়েকটা রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছি। এখানকার খাবারের মধ্যে লাহরি বিরিয়ানি,আফগান রুটি, কাবাব, তন্দুরি রুটি অন্যতম। এছাড়াও কাটোয়া গোশত,সিরি পায়া, কাবুলি পোলাও, চারসি টিক্কা,দুম্বা কারাহি কয়েকটি জনপ্রিয় খাবার। এর মধ্যে কয়েকটি খাবার খেয়েছিলাম সে সময়। খাবারগুলো খুব টেস্টি বলে মনে হয়েছে। টুকটাক শপিংও করেছিলাম। করাচি থেকে কেনা একটি পাঞ্জাবী আজও আমার কাছে অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।

এভাবেই আমি আমার প্রথম ভয়েজে সুন্দর কিছু সময় পার করেছিলাম। এখনো মনের মধ্যে প্রথম সমুদ্রযাত্রার স্মৃতিগুলো গাঁথা রয়েছে।

লেখক: মাস্টার মেরিনার, (এ এফ এন আই), এক্স ক্যাডেট, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম।