জেএমবি’র হামলায় নিহত ২ বিচারককে স্মরণ করলো মেহেরপুর বিচার বিভাগ

ঝালকাঠিতে ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) বোমা হামলায় নিহত সিনিয়র সহকারী জজ শহীদ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়েকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলো মেহেরপুরের বিচার বিভাগ।

আজ মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৩ টায় মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনির্মিত সম্মেলন কক্ষে বিচার বিভাগ মেহেরপুরে কর্মরত বিচারকবৃন্দ, মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং আদালতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে নিহত ২ বিচারকের স্মরণে শোকসভা, নীরবতা পালন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এর আগে আদালত প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত নিহত দুই বিচারকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শহিদুল্লাহ্ জানান, নিহত বিচারকদের স্মৃতি অম্লান রাখার জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবন মিলনায়তনের নাম ‘জগন্নাথ-সোহেল স্মৃতি মিলনায়তন’ রাখা হয়েছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, ‘মামলাটি বিচারকালে ৪৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং এজারভুক্ত সকল আসামীকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। বিচারক হত্যা মামলার মামলার পিপি মোঃ হায়দার হোসেনকেও পরবর্তীতে জেএমবি’র সদস্যরা হত্যা করে। যার প্রেক্ষিতে আরেকটি মামলা দায়ের হলে সেই মামলাতেও ৫ জন আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়।’

আলোচনা সভায় মেহেরপুর জেলা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ শহিদুল্লাহ্’র সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্নু জেলা ও দায়রা জজ-১ম শাহিনুর রহমা, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২য় এইচ এম কবির হোসেন, সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম ও মোঃ নাহিদ হোসেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহার, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল-আমীন জয় ও মোঃ জাহিদুর রহমান, মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খ.ম. ইমতিয়াজ বিন হারুন জুয়েলসহ মেহেরপুর জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণ।




প্রেসক্রিপশনের “শর্তহীন সংলাপ”- কার সঙ্গে কে করবে?

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে নতুন মার্কিন উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছেন শর্তহীন সংলাপে বসার আহবান জানিয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, আসলে কি এবার শর্তহীন সংলাপ নিয়ে ভাববে এই তিন দল? তবে, তফসিল ঘোষণার এক দুইদিন আগে হাসের এ ধরনের উদ্যোগকে “কিছুটা লোক দেখানো” মনে করছেন রাজনীতিবিদরা। তাদের প্রশ্ন- সংলাপ কার সঙ্গে কে করবে?

সোমবার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত তাদের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর লিখিত একটি চিঠি নিয়ে এসেছেন। চিঠিতে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র যা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী বলেন, সংলাপের কথা যে বলছেন, কার সঙ্গে সংলাপ হবে? ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরে যারা বলেছেন এটা আওয়ামী লীগ নিজে করেছে, তাদের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা করবে? আর ২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশের নামে যে হামলা যে নারকীয় কাণ্ড ঘটানো হয়েছে, এরপরে কিসের আলোচনা করতে বলবেন পিটার হাস?

যুগপৎ আন্দোলনের সিনিয়র নেতা সাইফেল হক মনে করেন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে সংলাপের মধ্য দিয়ে বের হতে হবে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করে সৃষ্ট পরিবেশের দিকে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই।

এর আগে ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নে বিরোধী দলগুলোর সাথে সংলাপের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ”যেদিন ট্রাম্প আর বাইডেন ডায়ালগ করবে, সেদিন আমিও ডায়ালগ করব।” সেদিন বিকেলে বেলজিয়াম সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সেইদিনই সকালের দিকে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের সব পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসার অনুরোধ জানান। গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে পিটার হাসের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যারা খুন করছে তাদের সাথে ডায়লগ করতে বলে, ট্রাম্প সাহেবের সাথে কী বাইডেন ডায়লগ করছে? যেদিন ট্রাম্প সাহেব আর বাইডেন ডায়লগ করবে, সেদিন আমিও ডায়ালগ করবো।”




আগুন সন্ত্রাসের ছোবলে বার্ন ইন্সটিটিউটে কাতরাচ্ছে নিম্ন আয়ের সাতজন

রিকশাচালক আব্দুল জব্বার দিনভর রিকশা চালিয়েও সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন। তার বড় ভাইয়ের পরামর্শে পরিবারকে পাঠিয়ে দেন নারায়ণগঞ্জে কাজের উদ্দেশ্যে। সারাদিন রিকশা চালিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাতে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে রওনা হলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আগুন সন্ত্রাসের কবলে পড়েন তিনি। আর নিমিষেই ঘুরে দাঁড়ানোর সব স্বপ্ন ধুলোয় মিশে যায়। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের বিছানায় এখন কাতরাচ্ছেন তিনি। তার শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

জব্বারের মতো বিএনপি ও সমমনাদের ডাকা চলমান অবরোধে আগুনে পুড়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন সাতজন। তারা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ পেশায় পোশাকশ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক কিংবা দিনমজুর। আগুন সন্ত্রাসের কবলে পড়ে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা কেউই শংকামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা সামন্ত লাল।

আগুনে পুড়ে হতাহতরা হচ্ছেন- পোষাক শ্রমিক মো: মাহমুদ হাসান (২৩), মেরাদিয়ার পরিবহন শ্রমিক সবুজ মিয়া (৩০), কালীগঞ্জে কাভার্ডভ্যানে অবস্থানরত বিপ্রজীদ ভাওয়ালী (২০), কাকরাইলে শ্রমিক শাখাওয়াত হোসেন (২৮), ডেমরায় বাসে ঘুমন্ত থাকা হেলপার মো. রবিউল ইসলাম রবি (২৫) এবং মানিক দাস (৪৫) নামে বিমানের এক ক্লিনার।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, পেট্রোলে দগ্ধের কারণে তাদের শরীরে ক্ষতগুলো গভীর। তাদের অনেকেরই অপারেশনের প্রয়োজন হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের চামড়া লাগাতে হচ্ছে। আমরা তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।

দগ্ধদের মধ্যে, জব্বারের ২০ শতাংশ, হাসানের ১১ শতাংশ, সবুজের ২৮ শতাংশ, বিপ্রজীত এর ৭ শতাংশ, শাখাওয়াত এর ১০ শতাংশ, রবির ১৭ শতাংশ দগ্ধ এবং মানিক দাসের ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।

যাত্রাবাড়ীতে গত শনিবার (১১ নভেম্বর) রাতে অনাবিল পরিবহনের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে বাসযাত্রী দগ্ধ রিকশা চালক আব্দুল জব্বার ও গার্মেন্টেস কর্মী মাহমুদ হাসান দগ্ধ হন। ওই রাতেই তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। জব্বারের বড় ভাই জিকরুল ইসলাম জানান, জব্বার রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে পারতো না। সংসারে অভাব লেগেই থাকতো। তাই শনিবার তার পরিবারকে কাজের উদ্দেশ্যে সকালে আমার বাসায় নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আসি। জব্বার তার কাজ শেষ করে রাতে আমার বাসার উদ্দেশে বাসে চড়ে। পথে যাত্রবাড়ীতে আগুনে দগ্ধ হয়।

তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে আবার ভাই দগ্ধ হয়েছে। তার চিকিৎসা করার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতায় চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে।

একই বাসে দগ্ধ হওয়া যাত্রী মাহমুদুল হাসান জানান, আমার এক বন্ধুর মোবাইল ফোন কিনতে বসুন্ধরা মার্কেটে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে তাকে দিয়ে কমলাপুর থেকে বাসে উঠে মাঝামাঝি বসেছিলাম। যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসটি আসার পর হঠাৎ দেখি আমার পায়ের নিচ দিয়ে আগুন লেগে গেছে। পরে দ্রুত ওই সিট থেকে কোনরকমে বের হয়ে যাই। ততোক্ষণে আমার দুই পা ও ডান হাত ঝলসে গেছে।

অন্যান্যদিনের মতোই রমজান পরিবহনের বাস চালক সবুজ মিয়া অছিম পরিবহনে করে বাসা থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন। পথে মেরাদিয়া বাঁশপট্টির কিছু আগে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঝলসে যান তিনি। তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিয়ে আসা হয়। শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের শয্যায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাতরাচ্ছেন সবুজ মিয়া। সংসারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বলতে তিনিই আছেন বলে জানান তার স্ত্রী। কিন্তু রোজগার বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে স্বজন আর পরিচিতজনদের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। কবে সুস্থ হয়ে গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে নিতে পারবেন এবং আয়ে ফিরবেন সেই দুশ্চিন্তায় দিন পার করতে হচ্ছে তার পরিবারকে।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এরপর থেকে হরতাল এবং দফায় দফায় ডাকা অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে ২৮ অক্টোবর থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৫০টিরও বেশি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।

বাসে আগুনের ঘটনায় একজন পরিবহনকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। গত ২৯ অক্টোবর ভোরে ডেমরার দেইল্লা বাস স্টেশনে রাস্তার পাশে রাখা অছিম পরিবহনের একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মারা যান ওই বাসের হেলপার নাঈম। ওই ঘটনায় দগ্ধ হন নাঈমের বন্ধু আরেকটি বাসের হেলপার রবিউল ইসলাম রবি।

অন্য দিকে, গত ৮ নভেম্বর ভোরে গাজীপুরের কালীগঞ্জে কাভার্ডভ্যানে আগুন দেন দুর্বৃত্তরা। ওই ভ্যানে থাকা বিপ্রজীত ভাওয়ালী ও আনোয়ার নামে দুইজন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আনোয়ার বাসায় চলে যান। বিপ্রজীত চিকিৎসাধীন আছেন। পরে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।

বার্ণ ইনস্টিটিউটে তার মা স্বপ্না ভাওয়ালী তার পাশে বসে থাকেন। বিপ্রজীত ভাওয়ালী জানান, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বগুড়ায় তাদের কোম্পানির গাড়ির সমস্যা হয়। তাই সেখানে গিয়েছিলেন, সেখানে গাড়ির কাজ শেষ করে একই কোম্পানির একটি কাভার্ডভ্যান যোগে ফেরার পথে, কালিগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় ৯/১০ জন তাদের গাড়িটিকে পথরোধ করে ভাঙ্গচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ি থেকে নামতে নামতে শরীরের আগুন ধরে যায়।

রবিবার (১২ নভেম্বর) রাতে দগ্ধ হন বিমানের ক্লিনার মানিক দাস। রাজধানীর বনানী এলাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে তিনি দগ্ধ হন। তিনি জানান, রাতে এয়ারপোর্টে ডিউটি শেষে ২০-২৫ জন কর্মী বিমানের স্টাফ বাসে করে বাসায় ফিরছিলেন। এয়ারপোর্ট থেকে বনানীতে ঢোকার সময় জানালা দিয়ে তরল পদার্থ ছুড়ে মারা হয়। এতে গাড়িতে আগুন ধরে গেলে তার ডান হাত ও বাম পা দগ্ধ হয়। পরে ওই বাসে থাকা তপু নামে এক সহকর্মী তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় ওই বাসে থাকা আরও পাঁচ ছয় জন আহত হয়েছে। তবে কোথায় তাদের চিকিৎসা চলছে তা বলতে পারেননি।

ডা সামন্ত লাল সেন বলেন, কয়েকজনের ২৭-২৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। পেট্রোলের কারনে বাকিদের ক্ষত বেশি। তাদের অপারেশনেরও প্রয়োজন আছে। তারা সবাই নিম্নআয়ের মানুষ। তারা তো সহজে সুস্থ হবে না। তাদের অন্তত মাসখানেক কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।




শর্তহীন সংলাপের প্রস্তাবে কেন ভিসানীতির হুমকি?

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করার পর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে শর্তহীন আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। পাশাপাশি যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করবে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত মার্কিন ভিসানীতি (থ্রিসি) কার্যকর হবে বলে হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি এক বিবৃতিতে জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আমরা সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই। যুক্তরাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না।’বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির বিষয়টি মনে করিয়ে বলা হয়, যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করবে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত মার্কিন ভিসানীতি (থ্রিসি) কার্যকর হবে।

এরআগে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। গত শনিবার ভারত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়, যা আমেরিকার সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারতের বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা জানিয়ে দেন, মার্কিন প্রশাসনকে তাঁরা বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অভিমত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত মনে করে বাংলাদেশের নির্বাচন সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্য কোনও দেশের সেখানে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।’ শুধু সংবিধান ও আইন অনুযায়ীই বাংলাদেশে নির্বাচন চায় চীন। আর ওই নির্বাচন নিয়ে বাইরের কারো হস্তক্ষেপ চায় না দেশটি। চীন নিজেও অন্য দেশে হস্তক্ষেপ করে না। ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এমনকি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু রাশিয়াও বাইরের হস্তক্ষেপের চায় না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

এর আগেও দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। জবাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ‘জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প কি কথা বলেন, মুখোমুখি বসে বৈঠক করেন? ওঁরা যেদিন করবেন, সেদিন আমি করব।’একই ভাবে সোমবার খুলনায় আওয়ামী লীগের জনসভায় শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন, ‘বিএনপি মুন্ডুহীন দল। তাদের এক নেতা পলাতক আসামি, এক নেতা কারাগারের আসামি। সেই দল দেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, কেউ যদি গাড়িতে আগুন দিয়ে পোড়াতে চেষ্টা করে, ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন, উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন, যেন আর কেউ সাহস না পায় দেশের মানুষের ক্ষতি করতে।’

প্রধানমন্ত্রীর কথায় পরিস্কার বিএনপির সাথে কোনো সংলাপে বসবে না আওয়ামী লীগ। যদিও এই প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিষয়ে অনেকটা নমনীয় ছিল। দাবি আদায়ে বিএনপি যদি কার্যালয় ঘেরাও করতে চায়, তাহলে তাদের চা খাওয়ানোর কথা জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও প্রধানমন্ত্রীর এই আমন্ত্রণ নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছিল বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘চা খাওয়ার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নেওয়ার কথা বলুন।’

বিএনপি বরাবরই বলে আসছে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অবিচল দলটি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের কথা বললেও বিএনপি তার আগে একটি শর্ত জুড়ে দিয়ে এসেছে। স্বভাবতই এখন প্রশ্ন উঠেছে- এতো দিন যে দলটি শর্তহীন সংলাপ বসতে চায়নি, সেই দলটি লুর কথায় সংলাপে বসবে? সংলাপে বসা ছাড়া বিএনপির সামনে সত্যিই কী আর কোনো পথ খোলা আছে? বিএনপি সংলাপ চাইলেও আওয়ামী লীগ কি তাদের সাথে সংলাপে বসতে রাজি হবে? সংলাপে বসে হবে টা কী? তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কেন সংলাপের কথা বলছেন? বাংলাদেশ নিয়ে তাদের এতো আগ্রহ কেন? কেনই বা তারা সংলাপের আহবান জানানোর পাশাপাশি ভিসানীতির হুমকি দিয়েছে?

যে দলটির জন্য যুক্তরাষ্ট্র শর্তহীন সংলাপের আহবান জানিয়েছে, সেই দলটি কখনই সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাসী ছিলোনা। ফলে আজ পর্যন্ত কোনো সংলাপেই সফলতা আসেনি। যখনই সংলাপের কথা এসেছে, তখনই হয় সংলাপ বর্জন করেছে অথবা শর্ত জুড়ে দিয়ে তা বানচাল করে দিয়েছে তারা। এবারের মতো ২০১৪ তেও সংলাপে অংশ নেয়নি, আর ২০০৭ ও ২০১৮ তে সংলাপে বসলেও শর্ত জুড়ে দিয়ে ও মিথ্যাচার করে সংলাপগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছ। এছাড়া নির্বাচন কমিশন যত বারই আলোচনার জন্য বিএনপিকে ডেকেছে, তারা যোগদান করেনি। গত বছরেও একই কাজ করেছে দলটি। যদিও তাদের প্রভুর আহবানে ‘আত্মগোপনে’ থাকা দলটি সংলাপে বসতে পারে। কিন্তু বিএনপি আলোচনা বসতে চাইলে যে সংলাপ হবে এমনটি নয়। কারণ সংলাপের ট্রেন হাতছাড়া করেছে বিএনপি। কারণ আওয়ামী লীগ শর্তহীন সংলাপের কথা এতো দিন বলে এসেছিল। সেই আহবানকে কোনো পাত্তাই দেয়নি বিএনপি। এখন আওয়ামী লীগ কী তাদের সাথে সংলাপে বসবে? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন ‘খুনি দলের সাথে কিসের সংলাপ।’ কিন্তু রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে কোনো কাজ করানো যায়না। তবে ভালোবাসায় তাকে জয় করা সম্ভব। এমন উদাহরণ ভুরিভুরি আছে। খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য টানা আন্দোলন করেছিল বিএনপি। তবুও প্রধানমন্ত্রীকে এক চুলও নড়াতে পারেনি তারা। অথচ খালেদা জিয়ার ভাই শামিম ইস্কান্দারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারাগারের পরিবর্তে বেগম জিয়াকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে যাকে টলানো যায়নি অথচ তিনিই মানবতার জন্য আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।

এই খালেদা জিয়া কিন্তু শেখ হাসিনার মুখের সামনে তার বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অথচ ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে শান্তনা দিতে ওই বাসায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খালেদার বড় ছেলের পরিকল্পনায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল, জিয়াউর রহমানের মদদে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল। তবুও বয়স্ক খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভুতি দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন কঠিন, তেমনি মহানুভবও। তাই ভয় দেখিয়ে নয়, ভালোবেসে খুব সহজে তাকে জয় করা সম্ভব।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




ঝিনাইদহের মহেশপুরে লিটন হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন

ঝিনাইদহের মহেশপুরে কৃষক লিটন হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে এ কর্মসূচীর আয়োজন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নিহতের পরিবারের সদস্য, জনপ্রতিনিসহ স্থানীয়রা অংশ নেয়।

ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে নিহতের পিতা আজিজুল ইসলাম, চাচাতো ভাই মজনুসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। সেসময় বক্তারা কৃষক লিটনকে পিটিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শ্রীরামপুর বাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

গত ১০ নভেম্বর রাতে জমির ক্ষেত তছরূপ করাকে কেন্দ্র করে লিটনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে মালেক ও তার পরিবারের লোকজন। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার প্রথমে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।

এ ঘটনায় লিটনের চাচাতো ভাই মজনু বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। তবে আসামিদের এখনো আটক করতে পারিনি পুলিশ।




আলমডাঙ্গার বাড়াদি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত

আলমডাঙ্গার বাড়াদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় উপজেলার মীর খুস্তার আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ১ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়াদ্দার ছেলুন এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলুন জোয়াদ্দার বলেন, এই এলাকায় আপনারা বসবাস করেন। যখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলো না, তখন ভয়ে অনেকেই আলমডাঙ্গায় বসবাস করত। এই সরকারের আমলে সকল সন্ত্রাস নির্মূল করা হয়েছে। আপনারা সমালোচনা করছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ের কথা বলছেন না। কেনো, দেশে কর্ণফুলী টালেন, পদ্মাসেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেস সহ মেট্রোরেল এখন দৃশ্যমান।

তিনি আরো বলেন, রাস্তা, কমিউনিটি ক্লিনিক স্কুল-কলেজ গুলো ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিতে হবে। এই কর্মী সভায় যারা আসেনি, তাদের জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কেনো নৌকায় ভোট দিবেন না। সরকার এখন দেশে ৫১ রকম ভাতা দিচ্ছে। এই এলাকার অনেক রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো দ্রুতই নতুন করে সংস্কার করা হবে। প্রতিটি স্কুলে নতুন ভবনও নির্মাণ করা হবে।

প্রধান অতিথি বলেন, শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে নৌকায় ভোট দিতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমানের নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা মানেই উন্নয়ন। এক সময় অনেকে মন্তব্য করেছিল। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে মাথায় সিঁদুর দিতে হবে। শেখ হাসিনা প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করেছেন।

নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশে অর্ধেক ভোটার নারীরা। এদেশের নেত্রীও একজন নারী। শেখ হাসিনার নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে আবারো উন্নয়নের সুযোগ করে দিবেন।

বাড়াদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মীসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্নসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম টোটন জোয়াদ্দার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমঙ্গীর হান্নান, মাসুদুজ্জামান লিটু বিশ্বাস, সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা শওকত আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুছা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হেলা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের, আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।

সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, রেজাউল হক, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, সাবেক প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানা তুহিন, পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান লাল্টু, জেলা পরিষদ সদস্য মজনুর রহমান, সাইফুর রহমান পিন্টু, জয়নাল আবেদীন, আবু তাহের আবু, বিল্লাল হোসেন।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম লাল্টুর উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা শামীম বিশ্বাস, আব্দুর রাজ্জাক, সিনজাতুল মুস্তাহাব, জহুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান লালটু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আমিনুদ্দিন, শরিফুল ইসলাম মেম্বার, কলিমুদ্দিন বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলী, আওয়ামীলীগ নেতা আসাবুল হক হক সম্রাট, ইলিয়াস হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, ফজিরুল ইসলাম, আসাদুল হক আশা, শরিফুল ইসলাম শরীফ, তহিদুল হক চন্দন, জয়নাল আবেদীন, আব্দুল হান্নান, হাফেজ মোঃ ইসমাইল হোসেন, সাইদুর রহমান প্রমূখ।




 চুয়াডাঙ্গায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অস্ত্রসহ প্রশিক্ষনার্থীদের পাঠদান

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অস্ত্রসহ ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণে (পুরুষ) অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের পাঠদান করানো হয়েছে।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চুয়াডাঙ্গা কর্তৃক আয়োজিত জেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ে সকাল সাড়ে এগারোটার সময় ৫ম ধাপ অস্ত্রসহ ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণে (পুরুষ) অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, কমিউনিটি নিরাপত্তা, ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, সাইবার ক্রাইম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তা বিধানে আনসার ও ভিডিপির ভূমিকা ও করণীয় সম্পর্কে পাঠদানে বিশদ আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ রিয়াজুল ইসলাম।

উক্ত আয়োজনে আরোও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর চুয়াডাঙ্গা জেলা কমান্ডার সঞ্জয় চৌধুরী সহ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীরা।




শুরু হচ্ছে শীত, ফিট থাকতে যা করবেন

শীতের আমেজ যেন তার সাথে নিয়ে আসে উৎসবের আমেজকেও। শীত আসতে না আসতেই শুরু হয়ে যায় বিয়ে, বনভোজন, নানারকম মেলা আরো কত কি! উৎসবমুখর এ পরিবেশ সবার মনে ভালো লাগার সৃষ্টি করে। কিন্তু শীতকে উপভোগ করতে গিয়ে আমরা যাতে আমাদের স্বাস্থ্যের কথা ভুলে না যাই। বিয়ে বাড়ি কিংবা বন্ধুদের আড্ডা কিছুই যেন খাবার ছাড়া জমে না আবার হরেক রকমের শীতের পিঠাপুলির আয়োজন তো রয়েছেই। তাই শীত আসলে অন্যান্য সময় থেকে যেন সবারই একটু প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়াদাওয়া হয়ে যায়৷ বিনিময়ে দেখা দেয় নানারকম স্বাস্থ্যগত সমস্যা যেমন ওজন বেড়ে যাওয়া, গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা ইত্যাদি। তাই বলে সামাজিকতা এড়িয়ে যাওয়া তো যাবে না, তাই শীতকে উপভোগ করার পাশাপাশি নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেবেন তা নিয়ে আমাদের আয়োজন।

প্রতিদিন হাঁটুন
শীতের সময় সবার শরীর জুড়েই কিছুটা আলসেমি দেখা দেয়। কিন্তু ফিট থাকতে চাইলে আলসেমিকে বিদায় জানিয়ে রোজ ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন সঠিক গতিতে হাঁটলে রক্তের চলমান ফ্যাট ধ্বংস হয়ে যায়। নিয়মিত হাঁটার ফলে হজমের সমস্যা দূর হয় ও হার্ট ভালো থাকে। শীতের মৌসুমে কমবেশী অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়ে থাকে, নিয়মিত হাঁটলে সেই খাবারের ক্যালরি বার্ন হয়ে যাবে। টানা হাঁটতে না চাইলে হা কয়েক ভাগে ভাগ করে নিন যেমন এক বেলা পনেরো মিনিট হাঁটুন পরের বেলা আবার পনেরো মিনিট।

প্রোটিনকে প্রাধান্য দিন
যেকোনো দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে গেলে চেষ্টা করুন কার্বোহাইড্রেট কম গ্রহণ করে প্রোটিন বেশি করে খেতে। যেমন ভাত বা রাইস জাতীয় খাবার কম নিয়ে মাছ, মাংস, ডিম খেতে পারেন। প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে ও অনেকক্ষণ আমাদের পেটে ভরা অনুভূতি দেয়। প্রতিবেলার খাবারের সাথে বেশি করে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুন ও খেয়াল রাখুন আপনার খাবারে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে যেমন টমেটো, লেবু, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি।
খাবারের পর এক বাটি টক দই খেতে পারেন টক দই হজমের ক্ষমতা বাড়ায় ও ক্যালসিয়াম দেয়।

শাক সবজি খান
যারা স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন বেছে নিতে চায় শীত তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হতে পারে। কারণ এ সময় বাজারে সাশ্রয়ী দামে প্রচুর তাজা শাকসবজি পাওয়া যায়। তাই আপনার খাবারের পাতে ভাতের তুলনায় বেশি শাকসবজি রাখুন। শাক সবজিতে ক্যালরি কম থাকে ও প্রচুর পুষ্টি ও ভিটামিন থাকে।
যেমন শীতের সময় সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুলকপি, ফুলকপিতে ওমেগা – ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা কোলেস্ট্রলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত রাখে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন
গবেষণায় দেখা গেছে যারা খাবারের পনেরো মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করে তারা তুলনামূলকভাবে কম খায়। কারণ পানি পেট ভরিয়ে দিয়ে খিদা অনুভূতি অনেকটা কমিয়ে দেয়৷ তাছাড়া শীতকালে অন্যান্য ঋতুর তুলনায় সবার পানি কম পান করা হয়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। অনেকে মনে করে গ্রীষ্মকালে বেশি পানি পান করার প্রয়োজন হয়। আসলে তা নয় বারো মাসই আমাদের শরীরের পানি প্রয়োজন।

ঘরের খাবার খান
যেকোনো দাওয়াতে যাওয়ার আগে পুরোপুরি খালি পেটে ক্ষুধা নিয়ে যাবেন না, এতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা হয়ে যাবে। তাই দাওয়াতে সবার আগে ঘরের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে যান ফলে ক্ষুধা থাকবে না ও বাইরের খাবার কম খাওয়া হবে। বাইরের কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে চেষ্টা করুন তা ঘরে তৈরি করে নিতে৷ কারণ বাইরের খাবারের অতিরিক্ত তেল মসলা ব্যবহার করা হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর৷

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ঝিনাইদহে ট্রাকের ধাক্কায় রাসেল ফেরদৌস নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও একজন। মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের নগরবাথান বাজারের পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রাসেল ফেরদৌস শৈলকুপা উপজেলার ভাটই বাজার এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে।

গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার নয়মাইল বাজার থেকে ট্রাকে করে ১৬টি গরু বোঝাই করে ফরিদপুর জেলায় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে নগরবাথান বাজারের পশ্চিম পাশে পৌঁছলে ট্রাকের পিছনের ডানপাশের চাকা খুলে যায়। এসময় মোটরসাইকেল যোগে আরোহীরা চুয়াডাঙ্গার দিকে যাচ্ছিলেন। ট্রাকের খুলে যাওয়া চাকায় ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল আরোহী ছিটকে পড়ে। মোটরসাইকেলে থাকা দুই জনের মধ্যে ঘটনাস্থলে এক জনের মৃত্যু হয় এবং আরো একজন আহত হয়। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে লাশটি উদ্ধার করে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।




নির্বাচন কোন একটা রাজনৈতিক দলের জন্য আটকে থাকবে না : হানিফ

যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কোন একটা রাজনৈতিক দলের জন্য আটকে থাকবে না। যে সমস্ত দলের নির্বাচন করার সক্ষমতা আছে তারা নির্বাচন করবে। যদি কোন দল নির্বাচনে না আসে সেটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তবে নির্বাচন যথাসময়েই হবে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উদ্বোধনের আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য বা বাধাগ্রস্থ্য করার জন্য বিএনপি ও তার পক্ষে কিছু দল তৎপরতা চালাচ্ছে এতে কোন লাভ হবে না। কারণ নাশকতা মূলক কর্মকান্ড করে নির্বাচন বাধাগ্রস্থ্য বা বানচাল করা যাবে না। পরে তিনি সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষন দেন।

এসময় কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা, পুলিশ সুপার এএইচ এম আবদুর রকিব, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সহসভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি ২৪ টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৫৭ টি বিভিন্ন প্রকল্প/ কার্যক্রমের আওতায় দেশব্যাপী ৬৪৪০ টি অবকাঠামো এবং ৫৩৯৭ টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পের শুভ উদ্ভাধন ঘোষণা করেন। এই ১৫৭ টি প্রকল্প/ কার্যক্রমের আওতাধীন কুষ্টিয়া জেলার ০৯ টি প্রকল্প রয়েছে।