আলমডাঙ্গার গোকুলখালিতে অ্যাম্বুলেন্স বাই-সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে স্কুলছাত্র নিহত

দ্রুতগতির অ্যাম্বুলেন্স ও বাই-সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর আঞ্চলিক সড়কের গোকুলখালি ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিয়াম (১২) গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। সে চিৎলা ইউনিয়নের কয়রাডাঙ্গা গ্রামের জুমাত আলীর ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার দুপুরে গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বাই-সাইকেল যোগে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল সিয়াম। এ সময় রাস্তা পারাপারের সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতির  অ্যাম্বুলেন্সের সাথে তার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্কুলছাত্র সিয়াম ছিটকে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়।

স্থানীয়রা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে, পথেই সে মারা যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গোকুলখালি ব্রিজ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

হাঁপানিয়া পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, দুপুরে স্কুল ছুটির পর বাইসাইকেল যোগে বাড়ি যাচ্ছিল সিয়াম। এসময় রাস্তা পারারের সময় অ্যাম্বুলেন্সের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে গুরুত্বর আহতাবস্থা স্থানীয়রা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত স্কুলছাত্রের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




জিজ্ঞাসাবাদে হামলার দায় স্বীকার করে নিলো বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা

গত ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী পেট্রোল বোমা হামলা, বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণসহ সহিংসতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এসব ঘটনায় জড়িত আটককৃতরা গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে। তথ্য প্রমাণ দেখে তাতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন গ্রেফতার হওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেছেন- এগুলো করা ঠিক হয়নি।

আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুর রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিএমপি’র ডিবি প্রধান জানান, গ্রেফতারকৃত কামরুজ্জামান টুকু নিজে স্বীকার করেছেন বাস পোড়ানোর কথা। হৃদয় স্বীকার করেছেন তিনি বাংলামোটর, মৌচাক ফ্লাইওভার, কাকরাইল মোড়ে শুধু আগুন লাগিয়েছেন। পেট্রোল বোমা ও ককটেল সরবরাহ করেছেন রবিউল ইসলাম নয়ন। সবার নেতা হচ্ছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তার নেতৃত্বেই গত ২৮ তারিখ থেকে চলমান সময় পর্যন্ত বাসে আগুন, ককটেল নিক্ষেপ, পেট্রোল বোমা বা পেট্রোল লাগিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, গত ২৮ তারিখ যারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ, বিআরটিসি বাসে আগুন, পুলিশ হাসপাতালে আগুন, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে, পুলিশ মার্ডার মামলার আসামিদের অনেকের নাম সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। পাশাপাশি গ্রেফতাররা আরও অনেকের নাম বলেছেন। তাদের ছবি পেয়েছি, তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

হারুন অর রশীদ বলেছেন, রাজধানীর পল্টনে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও বিআরটিসির বাসে আগুনসহ কয়েক দফার অবরোধে নাশকতার দায় স্বীকার করেছেন রিমান্ডে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এমনকি এ ধরনের নাশকতা করা ঠিক হয়নি বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, প্রথমত যেসব কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের কাছে রিমান্ডে আছেন তারা প্রথমে বলছিলেন, নাশকতা আমাদের দলের লোকজন করেনি, মনে হয় অন্য কেউ করেছে। এটা নিয়ে তারা সন্দিহান ছিলেন। তখন আমাদের কাছে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, স্মার্ট টিমের করা ভিডিও তাদের (বিএনপি নেতাকর্মীদের) দেখানো হয়।

আমরা বলেছি -আপনারা স্টেজে ছিলেন, সমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন। এছাড়া ভিডিওতে তারা দেখেছেন, সমাবেশের দিন মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কে কী রোল প্লে করেছেন। সুলতান সালাউদ্দিন কোথায় লাঠি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, রবিউল ইসলাম নয়ন কোথায় আগুন লাগাচ্ছেন, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মিন্টুর বাসা থেকে যে গানপাউডার আমরা পেয়েছি, মিন্টু এর স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন। সবকিছু দেখার পরে তারাও (কেন্দ্রীয় নেতা) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এটা ঠিক হয়নি।

মূল পরিকল্পনাকারী কারা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। অংশগ্রহণকারী অনেকের নাম পেয়েছি। তাদের মধ্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সাইদ হাসান মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে ৮ কেজি গান পাউডার উদ্ধার করা হয়। মিন্টু স্বীকার করেছেন, বাশার এবং মাসুদকে দিয়ে এগুলো তিনি বানান। রবিউল ইসলাম নয়ন ও সুলতান সালাউদ্দিন যে সহায়তা করেছেন তিনি সেটিও স্বীকার করেছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ ডিভিশন ও মতিঝিল ডিভিশন অভিযান চালিয়ে অংশগ্রহণকারীকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা হাসান হাওলাদার। তিনি প্রথমে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গুলতি নিয়ে পুলিশের ওপর মারবেল নিক্ষেপ করে ও বিআরটিসি বাসে আগুন দেন। কবি নজরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জুয়েল নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের ওপরে হামলা করে, এর ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। পুলিশ মার্ডারের মামলায় যে দুজন ১৬৪ দ্বারা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা বলেছেন ছাত্রদলের মুগদা থানার সাধারণ সম্পাদক রানা মিয়া পুলিশ হত্যায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাকেও আমরা গ্রেফতার করেছি।




আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন,শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ফেসবুক, ইন্টারনেট ইউটিউবের দিকে আকৃষ্ট হয়ে যেনো লেখাপড়ায় অমনযোগী হয়ে না পড়ে সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে।

অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। তারা যেনো লেখাপড়ার প্রতি মনযোগী হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঠিকমত স্কুলে আসা বাল্যবিয়ের শিকার না হয় সেদিকটাও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।এছাড়াও নতুন শিক্ষাক্রম বিশেষ করে ষষ্ট ও শপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষা কারিকুলামের উপর গুরুত্ব দেন,শিক্ষকদের পাঠদানে মনোযোগী হতে পরামর্শ দেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, অভিভাবক সদস্য সোহেল রানা শাহিন,মহিলা সদস্য নাসরিন সুলতানা।

শিক্ষক প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলামের উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত শামসুজোহা সাবু,হাসিনুর রহমান,আশরাফুল ইসলাম,প্রমুখ।সভায় প্রায় ৭শতাধিক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।




হাফিজের মতো পরীক্ষিত নেতাদের বিএনপি নিয়ে এত অভিযোগ কেনো?

নিজ দল বিএনপি নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে শমসের মুবিন চৌধুরী একাধিকবার গণমাধ্যমে কথা বলে তাদের দলে না থাকতে পারার বিষয়গুলো সামনে এনেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দল হিসেবে এটা বিএনপির ব্যর্থতা।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হাফিজ উদ্দিন। আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে সে নির্বাচনে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমার পক্ষে অংশগ্রহণ করা সম্ভব না। তবে আমি মনে করি, বিএনপির এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত। দলটিতে অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া উচিত ছিল বলেও তিনি মনে করেন।

এসময় তিনি যে অভিযোগগুলো তুলে ধরেন তা হলো-জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে বিএনপি ক্ষমতার বাহিরে, বিএনপিতে সত্যি কথা বলার মতো লোক নেই, চেয়ারপারসনের সামনে কোনো নেতা ইয়েস স্যার, রাইট স্যার বলা ছাড়া আর কোনো কিছু জানেন না। এসময় তিনি দাবি করেন, বিএনপিতে একনায়কতন্ত্র, কমিটি বাণিজ্য চলছে। এভাবে দল চলতে পারে না।

এদিকে গত সেপ্টেম্বরে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে তৃণমূল বিএনপিতে স্বাগত জানান দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা। শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারকে স্বাগত জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা সেসময় বলেন, আমি আশা করি, তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এ দল আরও গতিশীল হবে। তাদের এ যোগদান তৃণমূল বিএনপি তথা আমার প্রয়াত বাবার দেশ গড়ার প্রত্যয় আরও এগিয়ে যাবে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে পররাষ্ট্র-সচিব ছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এবং সেখান থেকেও তিনি বেরিয়ে আসেন।

এদিকে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে দলে যোগ দিলেন বিএনপির সাবেক জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন পরিচিত মুখ। বিএনপি ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। যোগ দিয়েই তারা দলটির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় মনে করেন কোন বিবেকবান মানুষ তারা যতই কোনো দলের সাথে থাকুক, যখন দেখা যায় দলটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে তখন তারা সেই দলে থাকতে পারবে না। এমনকি তারা বিএনপির জোট নিয়েও ভীতসন্ত্রস্ত। নেতাদের ধারণা, জোটের কারণে তারা থাকতে পারবে না। লক্ষ্য করে দেখবেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের মতো নেতারা একসময় তারেক রহমানের শাসনামল মানবে না। যেভাবে হ্যান্ডমাইক ধরায়ে দিয়ে তাকে দিয়ে হরতাল অবরোধের ডাক দিতে বাধ্য করা হলো, এই নেতারা কীভাবে দলে থাকবেন?




লক্ষ্মীপুর নির্বাচনের ভাইরাল ছবি ও কিছু প্রশ্ন

৫৩ সেকেন্ড ৪৩টি ব্যালটে ভোট! ছবিটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। সঙ্গে আরেকটি স্টিল ছবি। যিনি জাল ভোট দিচ্ছেন তিনি এবং যিনি বিজয়ী হয়েছেন তিনি। দুজনের গলায় ফুলের মালা দিয়ে বিজয় উদযাপন করছেন। ছবির না বলা বার্তাটি অনেকটা এরকম যে, জাল ভোট দিয়ে বিজয়ী করার পর তাঁর সঙ্গে ছবি তুলেছেন অনেক আগে বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আজাদ। পুরো বিষয়টার মধ্যে একটা পরিকল্পনার ছাপ পাওয়া যায়। যেন একটি প্রচারের জন্যে আরেকটি ছবি তোলা। প্রথম প্রশ্ন, কেন এই পরিকল্পনা?

একটি নির্বাচন। একজন ছাত্রলীগ নেতা একজন পোলিং অফিসারের সামনে নিয়ে ব্যালট ধরলো, আর তিনি ভোট দিতে থাকলেন! পাশাপাশি একজন ছবি তুললেন। কিন্তু ছড়িয়ে পড়া সেই ছবি দেখার পর, পুরো বিষয়টার মধ্যে গোপন কিছু দেখিনি। অথচ যে কাজটি তারা করছিলেন সেটা তো চুরি। একটা ভোট কেন্দ্র সেখাানে আর কোন লোক নেই? সবার সামনে এভাবে সিল মারা যাবে? ধরা যাক গেলো, কিন্তু যিনি ছবি তুলবেন তাকে কেউ কিছু বলবে না!

যাদের গোপন কাজের ছবি তারাও কিছু বলছেন না। বরং ছবি তুলতে সহায়তা করছেন। কেন ? সহজ উত্তর হতে পারে এরকম, যাদের ছবি তোলা হচ্ছে, তারা চান ছবিটি প্রচার হোক। নতুন প্রশ্ন, তারা কেন চান এই ছবি প্রচার হোক ? এরকম একটি ছবি প্রচার হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে এটা তো জানা কথা। তাহলে কেন একজন ছাত্রলীগ নেতা কাজটি করতে চাইবেন? হ্যাঁ চাইতে পারেন যদি তিনি আসলে বিরোধীদের অ্যাজেন্ট হন। অথবা যদি কোন কারণে তিনি প্রতিশোধ নিতে চান।

এখনই বিরোধী দলের এজেন্ট ভাবার মত সহজ সমীকরণে না যাই। কিন্তু যদি প্রতিশোধের বিষয়টি সামনে আনা হয় তাহলে ব্যাখ্যা করা সহজ। কারণ মাত্র এক মাস আগে এই ভোট দাতা আজাদকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করার প্রেস রিলিজ পাওয়া যায়। এই বহিস্কারের ক্ষোভ থেকে তিনি এটা করতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বহিস্কার হওয়ার পরেও কেন তিনি কেন্দ্রের দায়িত্ব পেলেন?

আজাদ কেন্দ্রের দায়িত্ব পেলেন না দায়িত্ব দেয়া হলো? সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। কে দিল এই দায়িত্ব? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার। বর্তমান সময়ের জন্য আরও বেশি দরকার। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মিয়ান আরেফিন আমেরিকা থেকে বাইডেনের উপদেষ্টা হয়ে আসতে পারেন। আর ছাত্রলীগ থেকে মাত্র বহিষ্কৃত আজাদ লক্ষ্মীপুরের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার অ্যাসাইন্টমেন্ট পাবেন না তা এমন ভাবনা আসা অমুলক নয়।
সবাই জানে এই নির্বাচন নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। এতে বিজয়ী প্রার্থী একবার সংসদে বসতেও পারবেন না।

নির্বাচনের চার প্রার্থীর দু’জন নির্বাচনের দিন দুপুরের পর অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেন। তার পরেও কেন ব্যালট নিয়ে জাল ভোট দিতে হবে? এক লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছেন বিজয়ী প্রার্থী। বাকি তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই ৪৩ ভোট ভোট না পেলে কী হতো ফারুকের? এই সব প্রশ্নের সহজ উত্তর নিশ্চয়ই জানেন বিজয়ী গোলাম ফারুক। তাহলে কেন তাকে এমন ভোট দেয়াতে হলো আর কেনই বা ছবি তোলাতে হলো ?

যদিও ছবিটি কে তুলেছেন এবং কোন কর্মকর্তা ব্যালট পেপার তার সামনে ধরেছেন তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। আজাদও গ্রেপ্তার হয়নি। নির্বাচন কমিশন তদন্ত শুরু করেছেন। এই লেখার সহজ প্রশ্নের উত্তরও হয়তো পাওয়া যাবে তদন্তে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে, নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি যে অনাস্থা তৈরি হলো তা কীভাবে ফেরাবে? এখন শেষ প্রশ্ন করি এই পুরো প্রক্রিয়াটি সেই উদ্দেশ্যে নয়তো?

এ কে এম শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনে ভোট হয় রোববার। চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে গোলাম ফারুক পিংকু (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ রাকিব হোসেন (লাঙ্গল), জাকের পার্টির শামছুল করিম খোকন (গোলাপ ফুল) ও ন্যাশানাল পিপলস পার্টির সেলিম মাহামুদ (আম)। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ রাকিব হোসেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৬ ভোট। এ উপ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

আজাদ হোসেন ছাত্রলীগের ‘কেউ নন’ বলে দাবি করেন এই আসনে জয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু। তিনি বলেন, “ আজাদ হোসেন এক সময়ে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে থাকলেও। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাকে দুইবছর আগে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। তবে এখন সে ছাত্রলীগের কেউ নয়।”

নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় এদিন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কমিশন ভবনে যান পিংকু। এসময় তিনি বলেন “খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আজাদের বাবা বিএনপির সঙ্গে জড়িত। জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্য তার। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।”

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের পরদিন সোমবার লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এই নির্দেশনা দেয় ইসি।




সহিংসতা ও ভুল তথ্য মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মিত্রদের বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে সহিংসতা ও ভুল তথ্য বা গুজব দুটি প্রধান বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা। ‘সহিংসতা ও ভুল তথ্য: বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মিত্রদেরকে বাংলাদেশের পাশে থাকা উচিত বলে মনে করেন তারা। বাংলাদেশের অগ্রগতি, বিশেষ করে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল এবং মেট্রোরেলের মতো বৃহৎ অবকাঠামোগত উন্নয়নের (মেগা প্রকল্প) কথা উল্লেখ করে টানা ১৫ বছর সরকারের ধারাবাহিকতাকে কৃতিত্ব দেন তারা।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলম্যান, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট লেখক ড. নুরুন নবী। এতে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী, অধ্যাপক এবিএম নাসির, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সেথ ওল্ডমিক্সন এবং জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. মাজহারুল ইসলাম রানা।

বক্তারা লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্রতা থেকে বের করে আনতে মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের উপবৃত্তিসহ সামাজিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া জামায়াত-বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদল নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টি না করলে বাংলাদেশ আরও অগ্রগতি অর্জন করতে পারে বলেও দাবি করেন তারা।

তাদের মতে, গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদীর তলদেশে তৈরি টানেল উদ্বোধনের দিন বিএনপি জামায়াত ঢাকায় সরকারবিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে, সহিংসতা চালায়, একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে, হাসপাতালে বেশ কয়েকটি বাস ও অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দেয়, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে আহত করে।

বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বিরোধী দলগুলোর দাবির কথা উল্লেখ করে বক্তারা প্রশ্ন রাখেন- কেন তারা অসাংবিধানিক কিছু দাবি করেছে? তারা সংবিধানের কথা উল্লেখ করে জানান, নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই নির্বাচন হওয়া উচিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী বলেন, ‘গোল্ডম্যান স্যাকস অ্যান্ড চেজ’ বাংলাদেশকে বিশ্বের পাঁচটি উদীয়মান অর্থনীতির একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে এ পর্যায়ে উঠে আসা এক আশ্চর্যজনক অগ্রগতি। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে। বাংলাদেশ কাজ করছে এর বিশাল মানব সম্পদ থেকে দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়ে।‘ তিনি বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিশেষ করে ধারাবাহিক ও বৈচিত্র্যময় খাতে বিদেশি বিনিয়োগের পক্ষে মত দেন।

ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউটের (আইআরআই) সাম্প্রতিক এক জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দবর্তমান সব অর্থনৈতিক ইস্যু সত্ত্বেও শেখ হাসিনার ৭০ শতাংশ অনুমোদন রেটিং রয়েছে। সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছেন- ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াইয়ে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের কারণে ফ্রান্স বাংলাদেশে তৃতীয় ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করবে।‘

ব্ল্যাকবার্ন উল্লেখ করেন যে, জামায়াত-বিএনপি নেতৃত্বাধীন একচেটিয়া ভুল তথ্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে, তাই ইউরোপীয় ও আমেরিকান উভয় অংশীদারদেরই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এগিয়ে আসা উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারেক জিয়া সহিংসতার প্রতীক! যুক্তরাজ্য সরকার তারেক জিয়ার ও বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের একই চোখে দেখে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষতি করছে এবং বিএনপি এটা খুব ভালো করেই জানে। কিন্তু বিএনপি অগ্নিসংযোগ ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ড. মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশে ভুল তথ্য ও ভুল তথ্যের প্রভাব এবং এটি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ক্রমাগত ভুল তথ্য, ভুল তথ্য ছড়িয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার চক্রান্ত তৈরি করেছে এবং একই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি পলাতক বিএনপি নেতা তারেক জিয়া, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক আসামি ও জামায়াতে ইসলামীর নির্দেশনায় আজও সক্রিয় রয়েছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা, আসন্ন নির্বাচন এবং সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সাম্প্রতিক হুমকি সম্পর্কে তারা ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বাজে উদাহরণগুলো হল, সাংবাদিক চন্দন নন্দীর ‘রান্না করা গল্প’। ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ইইউ পার্লামেন্টে অধিকারের মামলা নিয়ে রেজুলেশন পাস এবং ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে বিএনপির সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে ৩১ অক্টোবরের প্রেস ব্রিফিং নোটগুলো ভুল তথ্যের ফসল।’

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ধারাবাহিক সহিংসতার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল ছিল দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস সময়। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ও উগ্র ইসলামপন্থীদের সহিংসতা অব্যাহত ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নেতাকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু এবং প্রগতিশীল ব্লগারদের লক্ষ্য করে এর পুনরাবৃত্তি ঘটে।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে একই ধরনের সহিংসতা পুনরায় দেখা দিয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কেবল তখনই কার্যকর হবে যখন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সহিংসতা ও ভুল তথ্যের এজেন্টদের সরিয়ে দেওয়া হবে।

সেথ ওল্ডমিক্সন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সহিংস চরমপন্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে জনবল নিয়োগ এবং বাংলাদেশে সহিংসতা উস্কে দিতে বেশ সক্রিয়।

মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দূতাবাসকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। জামায়াত একটি জটিল এবং কঠিন সমস্যা, তারা রাজনৈতিক দল হিসাবে বিবেচিত না। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত যদি বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে, ওই সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্পর্ক রাখতে হবে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জটিল কাজ।’




চুয়াডাঙ্গায় যুব মহিলা লীগের অবস্থান কর্মসূচি পালন ও শো ডাউন

বিএনপি- জামায়াতের ডাকা তৃতীয় ধাপের মতো অবরোধের নাশকত ঠেকাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি আফরোজা পারভীনের নেতৃত্ব অবস্থান কর্মসূচি পালন ও শো ডাউন করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগ।

আজ বুধবার সকাল ৯ টা থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও ভ্যানযোগে নেতাকর্মীদের নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বড় বাজার কোর্ট মোড় একাডেমি মোড় রেল স্টেশন এলাকায় সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি জামায়াতয়ের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি বানচান করার জন্য এবং সাধারণ মানুষ ভয় না পেয়ে যাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে এই জন্য উৎসাহিত করেন এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে শো ডাউন করেন জেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দের।

বিএনপি জামায়াত জোটের তৃতীয় ধাপের মত ছিল অবরোধের প্রথম দিন। এদিকে, বিএনপি নির্বাচন বানচালে নাশকতা করতে চায় জানিয়ে আওয়ামী লীগও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

অবস্থান নেওয়া চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আফরোজা পারভিন বলেন ,বিএনপি-জামায়াত হরতাল, অবরোধ ও সমাবেশের নামে যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট এবং ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা নামে নির্বাচন বানচাল করা সহ তারা দেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। আমরা তাদের এই সহিংসতার বিরুদ্ধে, জনগণের জানমাল রক্ষায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগ ও সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান তিনি। শো ডাউন শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি ও চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, পূর্ণিমা হালদার, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন,মিমি খাতুন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ রাতুল, সাকিব শেখ , মাহফুজ, আকাশ,কুতুব, রিপন,শাওন, সিফাত,জিরান,সেজান ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ।




ঝিনাইদহে স্বপ্ন সারথী উদ্যোগে শিশুদের মাঝে পোষাক বিতরণ

ঝিনাইদহে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্ন সারথীর উদ্যোগে দুস্থ-অসহায় বাঁচ্চাদের মাঝে পোষাক বিতরণ করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিকালে ঝিনাইদহ উপশহরপাড়া প্যারাডাইস স্কুল মাঠে অসহায় শিশুরদের মাঝে এই পোষাক বিতরণ করা হয়।

ড: তপন কুমার গাংগুলির সভাপেিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সফল মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম, সাংবাদিক কাজী আলী আহম্মেদ লিকু, স্বপ্নসারথীর সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী পিকু, কৌতুক অভিনেতা হুমায়ন কবিরী টুকুসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক শাহানুর আলম। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথির মাধ্যমে ৬০জন দুস্থ-অসহায় শিশুদের হাতে পোষাক তুলে দেওয়া হয়।




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে : ইনু

‘আওয়ামী লীগ ও জাসদের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক বিরোধ নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল-জাসদ সভাপতি ও হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, খন্দকার মুশতাকের দালালেরা দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করে। মুশতাকের মত ঘাপটি মেরে থাকা দালালদের পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাধানোকে আমরা আমলে নিচ্ছি না।’

আজ বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত এবং কতিপয় বিদেশি চক্র নির্বাচন ও গণতন্ত্র নিয়ে হৈচৈ করছে। এর ভেতরে বিএনপি-জামায়াত চক্র এমন সব কর্মসূচি দিচ্ছে তাতে দেশের অর্থনীতি, মানুষের জানমাল এবং শান্তি নষ্ট হচ্ছে। হৈচৈর আড়ালে চক্রটি সরকার অদল-বদলের একই সুরে তানপুরা বাজাচ্ছে। এর মাধ্যমে ৭৫, ৮২ ও ১/১১ ঘটানোর একটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। একটা তাবেদার সরকার বানানোর চেষ্টা চলছে।’ কোনো অজুহাতেই বা চক্রান্তে সাংবিধানিক ধারা বানচাল করতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করেজাসদ সভাপতি বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছেন আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রামে কিংবা শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে সরকার।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে কষ্ট করে গ্রামের যে রাস্তা ও বিদ্যুৎ দিয়েছে এই (কচুবাড়ীয়া) গ্রামের রাস্তা কি কখনো শেখ হাসিনা দেখেছে। এটা দেখেছে এই আসনের এমপি হাসানুল হক ইনু। শেখ হাসিনার চোখ হলো ইনুর চোখ আর ইনুর চোখ মানেই এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারের চোখ।

তিনি আরও বলেন, সরকারের প্রচেষ্টা ছিল বলেই উন্নয়ন তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নয়ন টেকসই হবে। এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারন সম্পাদক আহম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম, উপজেলা সহাকরী কমিশনার ভুমি) হারুন অর রশীদ, জেলা জাতীয় যুবজোটের সাধারন সম্পাদক মাসুদুর রহমানসহ জাসদ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




জীবননগরে সুবিধাভোগীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্তমান সরকারের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সুবিধাভোগী মানুষদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল ১১ টার সময় মনোহরপুর,কেডিকে ও বাকা ইউনিয়ন পরিষদ ও জীবননগর পৌরসভার আয়োজনে জীবননগর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর, কেডিকে ও বাকা ইউনিয়ানের সহ জীবননগর পৌরসভার বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাভোগিদের সাথে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাতৃত্বকালিন, প্রতিবন্ধি, বয়স্ক, বিধবা ভাতাসহ সকল ভাতার আওতায় থাকা অসহায় মানুষদের সাথে এ মতবিনিময় করেন চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর।

ভাতাভোগি প্রায় ১৩হাজার জন নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

জীবননগর উপজেলা নিবাহী অফিসার হাসিনা মমতাজের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান,দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু, জীবননগর পৌর সভার মেয়র রফিকুল ইসলাম,দশনা পৌর সভার মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু, জীবননগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মোতুজা,জীবননগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আঃসালাম ঈশা, মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন,বাকা ইউপি চেয়ারম্যান আঃকাদের প্রধান,কেডিকে ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল বাশার শিপলু,জেসিআইয়ের পরিচালক মুনতাসির আজগার আকাশ প্রমুখ।

উক্ত অনুষ্ঠানটি সাবিক পরিচালনা করেন জীবননগর পৌর সভার সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।