মেহেরপুর ডিবির অভিযানে মুজিবনগরে ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক

মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মুজিবনগরে অভিযান চালিয়ে ২ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর তারানগর এলাকা থেকে মাজেদুল ইসলাম (৩০) ও বিপ্লব আলী(১৯) কে ২০ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক করে ডিবি পুলিশ। আটক মাজেদুল ইসলাম জয়পুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ও বিপ্লব আলী একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে গোপন খবরের ভিত্তিতে এসআই উত্তম সহ ডিবি পুলিশের একটি টিম মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের তারানগর জয়পুর সড়কে অভিযান চালিয়ে মাজেদুল ও বিপ্লবকে ২০ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক করে।

ওসি ডিবি সাইফুল আলম জানান, আটককৃতদের মুজিবনগর থানায় সোপর্দ করা হয়েছ। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।




ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ নিয়ে ইইউ পার্লামেন্টে রেজুলেশন: জার্মান এমপি

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে ‘অধিকার’ ইস্যুতে রেজুলেশন সম্পর্কে জার্মান এমপি ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ বলেছেন, ‘আমি এর বিরুদ্ধে ছিলাম, কারণ সাধারণভাবে আমি এই প্রস্তাবগুলোর বিরুদ্ধে সত্যিই সন্দিহান। কারণ- প্রথমত এগুলো খুব তড়িঘড়ি করে এনজিওগুলো থেকে উত্থাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যের ইউটুডে- কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা জানান তিনি।

ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ বলেন, ‘তারা (এনজিওগুলো) সাধারণত পুনরায় নিরীক্ষা না করা তথ্যকে গুরুত্ব দেয়। এজন্য আমি নিজে পুনরায় নিরীক্ষা করি। এরপর দুতাবাসগুলোকে তাদের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দেই এবং এটি সব দিক থেকে গুগলে সার্চ করি। সাধারণত আমি মনে করি না যে, এই ঘটনাগুলো বিশ্বাসযোগ্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ঘটনাটি বিশ্বাসযোগ্য ছিল না কারণ একজন এনজিও কর্মী পুলিশের সহিংসতা সম্পর্কে একটি ভুল বিবৃতি দিয়েছিলেন এবং এটি সত্যিকারের উত্থান বা দাঙ্গার কারণ হতে পারে এমন ঝুঁকি ছিল। এ ধরনের ভুল তথ্য ইউরোপেও শাস্তিযোগ্য।

তার মতে, ভুয়া এনজিও, যারা প্রায়শই মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে, প্রায়শই আইনপ্রণয়ন প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার জন্য ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সম্প্রতি ‘কাতারগেট কেলেঙ্কারির’ মতো তারা কখনও কখনও সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে প্রায়শই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতিকে প্রভাবিত করার জন্য বিদেশি কুশীলবদের নিয়ে কমিশন করা হয়। এই ধরনের ঘটনাগুলো ইইউ প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে সমাধান করতে চাইছে।

বিষয়টি কীভাবে মোকাবেলা করা যায় সে সম্পর্কে তার নিজস্ব সুপারিশ জিজ্ঞাসা জানতে চাইলে ক্রাহ বলেন, ‘অবশ্যই ভুল তথ্যের ক্ষেত্রে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে- আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করা, তবে সাধারণভাবে আপনাকে এই এনজিও শক্তির পুরো কাঠামোর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

তার মতে, একটি বিশাল মানবাধিকার শিল্প রয়েছে যা বিশ্বজুড়ে পশ্চিমা বৈদেশিক নীতির স্বার্থপ্রচারের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এর অর্থ হচ্ছে- আপনাকে সচেতন হতে হবে যে মানবাধিকার ইস্যুগুলো সংবেদনশীল বিষয় এবং এর জন্য নিবেদিত চমৎকার এনজিওগ্রুপ রয়েছে। তবে আপনাকে এটিও সচেতন হতে হবে যে, এটি এখন সমগ্র বিশ্বে তার বৈদেশিক নীতির এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পশ্চিমের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই প্রস্তাব বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইইউ এখন বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। বাণিজ্যিক সম্পর্ককে পরবর্তী উচ্চপর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমি বিষয়টিকে এতটাই স্পষ্ট মনে করি যে, শেষ পর্যন্ত এই রেজুলেশন, যার কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই, এমন কোনও হুমকি হবে না যা আমরা অতিক্রম করতে পারবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা খুবই অর্থবহ ছিল। অবশ্যই, সংসদ সদস্যরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গল্প শোনার পরে ভাল ব্যাখ্যা বোঝাতে চেয়েছিলেন। আমি পুরোপুরি বুঝতে পারি যে তারা সংবেদনশীল ছিল, তবে তারা পুরো চিত্র সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত ছিল না।’

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন অক্সফোর্ড ম্যাট্রিক্সের লিগ্যাল কনসালটেন্ট ড. রায়হান রশিদ । ড. রশিদ প্রস্তাবটিকে সমানভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং এটিকে “মূলত ভুল তথ্য” হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।

এটা কীভাবে ঘটতে পারে জানতে চাইলে ড. রশিদ বলেন, ‘পুরো মামলাটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলাটি শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‘দেশ তখন তালেবানবাদী জঙ্গি অভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং হেফাজতে ইসলাম ছিল তাদের দল, যার অর্থ তারা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অগ্রসর হচ্ছে। অতএব, এটির উপর একটি ক্র্যাকডাউন ছিল, তবে এটি উন্মুক্ত ছিল এবং বিবিসিসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল সেখানে। গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে এ ধরনের ইসলামি জঙ্গিদের ছত্রভঙ্গ করতে চেয়েছিল পুলিশি অভিযান।’

তিনি জানান, পরের দিন ‘অধিকার’ (বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে ৬৩ জনকে হত্যার কথা বলা হয়। হেফাজত (মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের একটি কট্টর ডানপন্থী ইসলামী এক্টিভিস্ট গ্রুপ) এমনকি ২০ হাজার লোকের মতো বড় জনবল নিয়ে ঢাকায় এসেছিল। হেফাজতের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে অধিকার বলেছে, অভিযানের কারণে ৬৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন।

ড রশিদ বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি একজন মানবাধিকার কর্মী। সবাই উদ্বিগ্ন ছিল এবং প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিল এবং কয়েক দিন পরে, আমরা দেখলাম যে, যাদের নিখোঁজ বলে দাবি করা হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে তারা সামনে এসেছিল। সুতরাং, বিষয়গুলোর শুরুতেই আমি এটি বুঝতে পারি। গণমাধ্যম বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে স্কুপ আছে, কিন্তু সব সংশোধনের পরও তারা তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেনি।’

ইউ টুডে ড. রশিদের জাছে জানতে চায়- অধিকার কি সরকারের কাছে বিশেষ কোনো দাবি করেছে?

তিনি তখন জানান, যখন তারা এই স্কুপটি নিয়ে এসেছিল, তখন তারা তদন্তের দাবি করেছিল। কারণ একটি দেশে, এমনকি একটি ইসলামী অভ্যুত্থান বা বিদ্রোহের প্রচেষ্টার পরেও ৬৩ জনের নিখোঁজ হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এটাই ছিল পরিস্থিতি। আমিসহ সবাই তদন্তের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু পরে তা বাতিল হয়ে যায়। অধিকারের সমস্যা ছিল যে তারা তাদের গল্পটি সংশোধন করেনি যা তারা আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থার কাছে বারবার পুনরাবৃত্তি করেছিল। আর সেসব প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে কোনো অফিস নেই, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কোনো সক্রিয় তদন্ত ব্যবস্থা নেই, তাদেরকে অধিকারের ভাষ্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। এভাবেই অধিকারের গল্প বার বার রিসাইকেল করা হয়েছে।

অধিকারকে তালেবানের সাথে যুক্ত করার কোনও প্রমাণ আছে কিনা জানতে চাইলে ডঃ রশিদ বলেন, ‘না, অধিকারের ক্ষেত্রে আমি এটা বলবো না। আমি মনে করি এটা অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানের ব্যাপারে বেশি ছিল। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী ছিলেন, কিন্তু বিএনপি শাসনামলে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলও ছিলেন। আমি জানি না তার মনে বা সংগঠনের মধ্যে কী চলছে বা কোনও রাজনৈতিক প্রেরণা ছিল কিনা।’




আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে মহড়া

আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে সচেতনতামূলক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ‘অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ স্লোগানে দিবসটি পালিত হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা মূলক মহড়া প্রদর্শন করে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।

সচেতনতা মহড়া প্রদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহি অফিসার ( ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালমুন আহম্মেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, শিক্ষা অফিসার সামসুজ্জোহা, কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভির, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরিফুদ্দৌলা, মহিলা তথ্য আপা স্নিগ্ধা দাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজিদ আহমেদ।

ভূমিকম্প প্রতিরোধ ও অগ্নি নির্বাপক মহড়ার নেতৃত্ব দেন আলমডাঙ্গা ফায়ার স্টেশনের আল মামুন ।




আলমডাঙ্গায় ইউপি মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন

আলমডাঙ্গা উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় থানাপাড়া কমিউনিটি সেন্টারে এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লাবলুর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সদস্য মজনুর রহমান জান্টু।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম রেজা, নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রনি আহমেদ। আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লিটন মোল্লার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাদল রশিদ, জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনারুল ইসলাম, জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাসেম আলী, খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহাবুল ইসলাম, জামজামী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাহবুবুল হক, বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহাদাত হোসেন, জামজামী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাশেদুজ্জামান রাজিব।

সভা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে জেলা পরিষদের সদস্য মজনুর রহমান জান্টুকে আহবায়ক ও ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলুর রহমান ও বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম রেজাকে যুগ্ন আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আলমডাঙ্গা উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করা হয়। অবশিষ্ট কমিটির নাম পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।




চুয়াডাঙ্গার কোটালী গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা কেটে মটর চুরি

চুয়াডাঙ্গার কােটালী স্কুল পাড়ায় অবস্তিত কমিউনিটি ক্লিনিকের তালাকেটে মটর পাম্প চুরির ঘটনা ঘটছে। কােটালী গ্রামের একের পর চুরির ঘটনায় ভাবিয়ে তুলছে গ্রামবাসিকে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের কােটালী স্কুল পাড়ায় অবস্তিত কমিউনিটি ক্লিনিকের তালাকেটে রুমের মধ্যে চাের ঢুকে মটর পাম্প চুরি করে নিয়েগেছে চাের।

এদিকে গত এক সপ্তাহর ব্যাবধানে কােটালী গ্রাম থেকে মাটরসাইকল চুরি, পাখি ভ্যান চুরির ঘটনা ঘটেছ। কােটালী গ্রামের একের পর চুরির ঘটনায় ভাবিয়ে তুলছে গ্রামবাসিকে।




মেহেরপুরে নারী উদ্যোক্তার জুয়েলারী শোরুম উদ্বোধন

মেহেরপুরে নারী উদ্যোক্তা সাবিনা ইয়াসমিন (স্বপ্না)র জুয়েলারী সামগ্রীর শো-রুম স্বপ্না গোল্ড প্লেট জুয়েলারী হাউজের উদ্বোধন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে মেহেরপুর কাঁসারী বাজারের অবস্থিত স্বপ্না গোল্ড প্লেট জুয়েলারী হাউজ শো-রুমের উদ্বোধন করেন মেহেরপুর হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল শিমন।

এসময় সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি কিশোর পাত্র, সাধারণ সম্পাদক শেখ মমিনুল ইসলাম মমিন, গাংনী উপজেলা সমবায় অফিসার মাহবুবুল হক মন্টু,
আব্দুল মজিদ, মনা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর মনা, মোস্তাফিজুর রহমান তপন সহ কাঁসারী বাজারের ব্যবসায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।

স্বপ্না গোল্ড প্লেট জুয়েলারী হাউজের স্বত্তাধিকারী সাবিনা ইয়াসমিন (স্বপ্না) জানিয়েছেন, সকল প্রকার মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে সুলভ মূল্যে আধুনিক ডিজাইনের গোল্ড প্লেটড জুয়েলারী সামগ্রী পাওয়া যাবে স্বপ্না গোল্ড প্লেট জুয়েলারী হাউজ শো-রুমে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে স্বপ্না গোল্ড প্লেট জুয়েলারী হাউজের সাফল্য ও উন্নতির কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ।




বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রপচার বন্ধে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সভা

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন ও অপপ্রচার বন্ধে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর) ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টাডি সার্কেলের যৌথ পরিচালনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ এবং বক্তা হিসেবে ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ক্রিস ব্যাক বার্ন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ক্রিস র্ল্যাকবার্ন আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ রশিদ রায়হান বিন এবং স্টাডি সার্কেল লন্ডনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোজাম্মেল আলী।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলোচনা সভায় বিভিন্ন পেশার মানুষ একত্রিত হন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে তথ্যের অপপ্রচার চলছে তা কীভাবে মোকাবেলা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।

ড. ক্রাহ সংবাদ উপস্থাপনে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এনজিও মানে বেসরকারি সংস্থা কিন্তু প্রায় সব এনজিওরই একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।কিছু সংস্থা হয়ত নিজস্ব স্বার্থে তথ্য বিকৃত করে প্রচার করে, যার ফলাফল হয় আরো ভয়াবহ।’

বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ও উন্নয়নের চিত্র সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন মোজাম্মেল আলী। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এতো কাজ বর্তমান সরকার ছাড়া আর কেউই করেনি।

বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রসঙ্গে রাশিদ বিন রায়হান বলেন, আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যবেক্ষকদের উচিত বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ে প্রচারিত সংবাদগুলোর তথ্য যাচাই করে দেখা যেন কেউ কোনও বিকৃত সংবাদের ফাঁদে না পড়ে।




অধিকারের মামলা নিয়ে ইইউ রেজোলিউশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পার্লামেন্টে প্রবাসীদের চিঠি

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অধিকারের মামলার বিষয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদে গৃহীত রেজোলিউশনের প্রতিবাদ ও তা বাতিলের জন্য চিঠি দিয়েছে ইউরোপে বসবাসরত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা নবম ইউরোপীয় সংসদের উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল, ১৪ জন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দা লেফট, ভার্টস/এএলই, রিনিউ, এস এন্ড ডি, পিপিই-এর প্রতিনিধি এমইপিদের কাছে চিঠি দেন।

চিঠিতে প্রবাসীরা জানান, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে অধিকারের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে যে রেজোলিউশন পাস করা হয়েছে তার জন্য তারা সকলেই ক্ষুব্ধ। “অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে এই দণ্ড প্রত্যাহার করার এবং অধিকারের নিবন্ধন পুনঃস্থাপন করার” অনুরোধ জানিয়ে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে তারা সে বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যা তারা একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ আইনি বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন।

‘অধিকার মামলাটি’ বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকার কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কারণে করা হয়েছিল। বাংলাদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হেফাজতে ইসলাম নামের ‘ জঙ্গি সংগঠন’ দ্বারা ২০১৩ সালের ৫ মে, ধ্বংসাত্মক ইসলামিক এজেন্ডা দাবি এবং একটি সহিংস ভাঙচুর ও জনগণের অধিতার নস্যাৎ করার জঙ্গি আন্দোলন ব্যর্থ করে। এই ঘটনায় গত একই বছরের ১০ জুন অধিকার রিপোর্টে ৬১ জন নিহত হওয়ার দাবি করা হয়েছে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্বাধীন সংস্থাগুলো অধিকার এর দেওয়া মৃত্যুর তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম এবং ভুল তথ্য পায়।

চিঠিতে বলা হয়, উদাহরণস্বরূপ- তালিকায় ১০ তম এন্ট্রি খালি ছিল। অধিকারের তালিকায় তিনজনের নাম নিহত হওয়ার দাবি করলেও পরে জীবিত পাওয়া যায়। এতে নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে নিহত আরও পাঁচজনের নাম ছিল যারা ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলো না । তালিকায় পাঁচটি নাম রয়েছে যা দুবার গণনা করা হয়েছে। তালিকায় প্রথম নাম, সিদ্দিকুর রহমান, পুলিশ কর্তৃক রিকুইজিশন করা বাস চালক যাকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা হত্যা করেছে। ৫৭ তম নাম- কামাল উদ্দিন খান, একজন জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপক, সেই রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া আরো ১৯ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রবাসীরা জানান, অধিকারের রিপোর্ট উগ্র ইসলামপন্থীদের তুষ্ট করেছে এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে তাদের ক্রোধ উস্কে দিয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিশ্চিত করার জন্য লড়াইরত প্রগতিশীলদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য এই ‘৬১ জন’ মৃত্যুর সংখ্যা হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতে ইসলামের মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলোর জন্য একটি ভিত্তি হয়ে উঠেছে । হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে কওমি মাদ্রাসা এবং তাদের ছাত্রদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের ১৩ দফা দাবির সনদ – যার মধ্যে ব্লাসফেমির জন্য মৃত্যুদণ্ড, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা, সমস্ত স্তরে লিঙ্গ বিচ্ছিন্নতা, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো ধ্বংস করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে হেফাজত তালেবানের সাফল্যকে অনুকরণ করছে । তারা বাংলাদেশকে একচেটিয়া ইসলামী ধর্মতত্ত্বে পরিণত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে যা খুবই উদ্বেগজনক।

এতে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষায় একটি প্রশংসনীয় ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। তবুও, একটি রেজোলিউশন বিরাজমান উদ্বেগগুলোকে মোকাবেলা করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা অপরিহার্য। হেফাজতে ইসলামের ক্রিয়াকলাপ এবং তাদের ১৩ দফা দাবিগুলো তাদের একটি রক্ষণশীল ইসলামী এজেন্ডা অনুসরণ করে এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ধ্বংসাত্মক জঙ্গি প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। এই ধরনের সহিংস আন্দোলনের মুখে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

বাংলাদেশে অধিকার মামলাটি ঢাকা শহরে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের সহিংস কর্মকাণ্ডের সময় মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে। তাদের বক্তব্য মানবাধিকার প্রতিবেদনের চেয়ে রাজনৈতিক। এটি ইসলামিক জঙ্গিদের রক্ষা করছে বলে মনে হচ্ছে এবং প্রগতিশীল শক্তিকে খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে।

আদিলুর খান ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী জোট সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস সরকার ছিল। তাদের ‘হরকাত-উল-জিহাদ’ নামের একটি তালেবান-সংযুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করার ইতিহাস রয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, উগ্র ইসলামপন্থীদের সাথে তার অতীতের সম্পর্ক স্পষ্টভাবে তার পক্ষপাতিত্ব প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র জঙ্গিবাদী ইসলামপন্থীদের পক্ষপাতমূলক নয়, অপ্রমাণিত দাবি এবং মিথ্যা যুক্তিতেও পূর্ণ। ইইউ পার্লামেন্ট স্বচ্ছ ও ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়ার পক্ষে ওকালতি করতে পারে যা অবশ্যই ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের নীতিগুলিকে সমর্থনের ভিত্তিতে হবে। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের আইনের শাসনকে সম্মান করার, দেশের আইনি কাঠামো এবং সেই মোতাবেক গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বজায় রাখার গুরুত্বের উপর জোর দিতে হবে। একটি জাতির সার্বভৌমত্বকে সম্মান করা এবং মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে ওকালতি করার মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকা আবশ্যক।

চিঠিতে প্রবাসীরা ইইউ পার্লামেন্টকে প্রস্তাবটি পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য অনুরোধ করেন।




চুয়াডাঙ্গার দর্শনাতে মাদক মামলায় এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চুয়াডাঙ্গায় মাদক মামলায় দর্শনা আকন্দবাড়িয়া ফার্মপাড়ার রাশিদা খাতুন (৬৪) নাম এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরা এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

আজ বহস্পতিবার (১২ অক্টাবর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক হুমায়ুন কবির সরকার আসামীর উপস্ততিতে এ রায় ঘােষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রাশিদা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজলার আকুদবাড়ীয়া ফার্মপাড়ার রবিউল ইসলামর স্ত্রী।

মামলার বিবরণ জানা যায়, ২০১২ সালের ১লা আগস্ট সকালে চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজলার আকন্দবাড়ীয়া ফার্মপাড়ার রাশিদা খাতুনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তার বসত ঘরের একটি স্টীলের বড় বাক্স রক্ষিত প্লাস্টিকের বস্তায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৫০ বােতল ভারতীয় অবৈধ ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক লাকিয়া খানম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের উপ-পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান একই বছরের ১০ই সেপ্টম্বর রাশিদা খাতুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবদন দাখিল করেন।

৬ জন সাক্ষীর মধ্য ৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক হুমায়ুন কবির সরকার আসামীর উপস্থিতে উল্লেখিত রায় ঘােষনা করেন।




সেই আমেরিকার কাছেই অভিযোগের ঝাঁপি খুলল বিএনপি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে ৭ অক্টোবর ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের ৭ সদস্য। সরকারি দল, বিরোধী একাধিক দলের সঙ্গে সভা শেষে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সভা করেছে। এরমধ্যে বিএনপি ও এবি পার্টির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে যখন তাদের কাছে নালিশ জানাচ্ছে বিরোধীদলগুলো তখন মার্কিন মদদে গাজায় ইজরাইলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে হাজারও মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র যখন সরকারি বিরোধীদল নির্বিশেষে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তথন তাদের প্রতিনিধি দলের সামনে বিএনপির তুলে ধরা খণ্ডিত চিত্র নিয়ে সমালোচনা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সেপ্টেম্বরে জানানো হয়, মার্কিন ভিসানীতির কারণে বাংলাদেশের কিছু বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের রাজনীতিক ভিসা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র জানায় বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অযাচিত হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের কারণে তাদের উপর এই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হতে পারে। এর আগে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, আমাদের মতো তৃতীয়বিশ্বের দিশগুলোকে পশ্চিমারা শেখানোর চেষ্টা করে। যেখানে তাদের ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট আছে সেসব জায়গার গণতন্ত্র মানবাধিকার যদি ধুলিসাৎ হয়ে যায় তাতেও পশ্চিমাদের কিছু যায় আসবে না। তারা যেখানে কর্তৃত্ব চায় সেখানে কাজটি যদি সহজ না হয় তাহলে তারা নানাবিধ হয়রানি তৈরি করে।

সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক দল যখন প্রাক নির্বাচনী পরিস্থিতি দেখতে এসেছেন তখন জাতিগতভাবে এক থাকা জরুরি বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলো অভিযোগ জানাতে আগ্রহী বেশি ছিলো। আলেচনা শেষে বিএনপি জানায়, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে বলে আসছি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। বিগত দুই-তিনটি নির্বাচনে তারা বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যাদের বয়স ৩০-৩২ বছর হয়েছে তারা বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রশাসন ওবিচারবিভাগ দলীয় করণ করা হয়েছে দাবি করে তারা বলে, এখন নিপীড়ন-নির্যাতনসহ ভোট চুরির প্রকল্প অধিকতর শক্তিশালী হয়েছে। একেবারে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, লুটেরা ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ তারা একটা প্রজেক্টের মাধ্যমে আবারও তারা বাংলাদেশের মানুষের ভোট চুরি করার অভিপ্রায়ে কাজ করে যাচ্ছে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন হতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার মতমতের ভিত্তিতে আরেকটি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি‘এবিপার্টি’। সোমবার (৯অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে এই সাক্ষাতটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে এবি পার্টির নেতারা প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন প্রতিনিধি দলকে বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ১১টি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে ক্ষমতাসীনদের অধীনে অনুষ্ঠিত ৭টি নির্বাচনই ছিল বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য। বাকী ৪টি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছিল তুলনামূলকভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য।

যুক্তরাষ্ট্রেরপ্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সাথে খোলামেলা আলোচনা শেষে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতাগোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা আছে। বিএনপি নির্বাচন করবে না, তারা আন্দোলন করবে- সেখানে সহিংসতা হতে পারে। নির্বাচন নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে, এসব বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে ইসিরও বৈঠক হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। তাদের সঙ্গে ইসির বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় ছিল অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। সিইসি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল কী করবে আমরা জানি না। ইসির সঙ্গে বৈঠকে আইআরআই ও এনডিআইয়ের যৌথ এই দলটির মূল ফোকাস ছিল অবাধ, সুষ্ঠ, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। ওরা ইসির ভূমিকা, সরকারের ভূমিকা, দায়িত্ব এবং কার্যক্রমসহ অনেক কিছু জানতে চেয়েছে। আমরা সবকিছু তাদের সামনে তুলে ধরেছি। তারা যা যা জানতে চেয়েছিল, আমরা জানিয়েছি। এখন তারা কী করবে, তা আমরা জানি না। হয়তো তারা দেশে ফিরে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে; নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কী পাঠাবে না। অথবা পাঠালে কীভাবে পাঠাবে।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নূহ উল আলম লেনিন বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি এর চেয়ে অনেক খারাপ পরিস্থিতি অনেক দেশে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ সেসব দেশে হস্তক্ষেপ করছে না। তারা হিসেবে ভাবমূর্তির অভিভাবক হতে চায়। এর পিছে জিও পলিটিকাল স্ট্র স্ট্র্যাটেজিক্যাল কারণ আছে। বাংলাদেশ যে ভারত চীনের সাথে একই রকম সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে এটা আমেরিকার পছন্দ না।’ নির্বাচনের এত আগে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের কাছে দেশ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেওয়ার অর্থ নেই উল্লেখ করে শামসুদ্দিনচোধূরী মানিক বলেন, ‘যারা নালিশ দিচ্ছে তারা দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে, আর যারা নালিশ শুনছে তাদের এইএখতিয়ার নেই। এটা বুঝে নেওয়া ভালো। এটা নির্বাচনের পর্যবেক্ষক দল। নালিশ তাদের কাছে না করে দেশের অথরিটির কাছে করুন।’

উল্লেখ্য, এই সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যারা সারাবিশ্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বললেও তাদের মদদে লঙ্ঘিত হয় অনেক জায়গায়। শনিবার থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার অন্তত ৭০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। গাজা উপত্যাকার ওপর সোমবার নেতানিয়াহু সরকারের সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের পর হামলা আরও বেড়েছে। এতে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েছে অবরুদ্ধ গাজা।