গাংনীতে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে মাঠ দিবস

মেহেরপুরের গাংনী পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি (পিএসকেএস)- সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর কৃষি খাতের আওতায় উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী) প্রদর্শনীর আওতায় মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে কাজীপুর শাখার হাড়াভাঙ্গা গ্রামে সদস্যের (গেন্ডারী প্রদর্শনী) জমির পাশে ৭৫ জন কৃষক কৃষাণী নিয়ে একটি মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয় । উক্ত মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহা: ইমরান হোসেন ।

কাজিপুর শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, স্থানিয় ইউপি সদস্য মো: মহিবুল ইসলাম, স্থানিয় স্কুল শিক্ষক মো: মুখলেছুর রহমান, ও সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথিগন উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী ) চাষের পদ্ধতি, গুরুত্ব ,বালাইদমন ব্যবস্থাপনা, আখজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপনন নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন। এ সময় স্থানিয় চাষিগণ উচ্চমূল্যের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী) চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন




যুক্তরাষ্ট্রের `যুদ্ধ’ নিয়ে দেশের মানবাধিকার কর্মীরা চুপ কেন?

একের পর এক দেশের সঙ্গে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে লিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র। ‘বাধানো’ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকার সৈন্যসহ অসংখ্য নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিক। এনিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন খোদ মার্কিন নাগরিকরা। তবে তাতে তোয়াক্কা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের নানা বিষয়ে মানবাধিকার কর্মীরা সরব ভূমিকা পালন করলেও যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ যুদ্ধ নিয়ে কোনো টুঁ শব্দ করছেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তারা বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশের অর্থায়নে কাজ করেন। সুতরাং মানসিকভাবেই তারা পশ্চিমাজগতে বাস করেন।

হঠাৎ করেই শুরু হওয়া ফিলিস্তিন-ইজরায়েল ‘যুদ্ধ’ বিষয়ে মানবাধিকারের কথা না বললেও যুদ্ধে জয়ী হতে সরাসরি ইজারায়েলকে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে ইজরায়েলকে সহায়তা দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মদদে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অধিকাংশ যুদ্ধের আইনি ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আইনি বিশ্লেষকরা।

একটি পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৩টি অঞ্চলে সংঘটিত ২৪৮টি সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে ২০১টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা সমর্থিত ছিল, যা মোট সংখ্যার ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে কয়েকটি যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘বৈধ পদ্ধতির’ মাধ্যমে চালিয়েছিল যা তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য জাতিসংঘকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে এর বেশির ভাগই ছিল মানবাধিকারের নামে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে শুরু করা অবৈধ যুদ্ধ।

২০০৪ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান ইরাক যুদ্ধ নিয়ে অনেক সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’ নয়। নিরাপত্তা পরিষদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যুদ্ধে যাওয়ার পদক্ষেপের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয় ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ইরাকে ঠিকাদারি কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োজিত থাকার সময় এক ঠিকাদারের কাছ থেকে হাজার হাজার ডলার গ্র্যাচুইটি গ্রহণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে।

আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘দীর্ঘ ও ভিত্তিহীন’ যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ এবং মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘন করে অঘোষিত যুদ্ধ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই যুদ্ধগুলো রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক উভয় দলের এবং আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম দ্বারা ব্যাপকভাবে সমর্থিত ছিল। তার আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে সামাজিক আন্দোলন তৈরি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বিতর্কিত হাতিয়ার হচ্ছে ড্রোন হামলা। নিউইয়র্ক টাইমস এক অনুসন্ধানি প্রতিবেদনে বলেছিল ড্রোন হামলায় কে মারা যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই! যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। কেউ কেউ এটাকে বিচারবহির্ভূত হত্যা হিসেবেও আখ্যায়িত করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের সর্বশেষ মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বলেছে, গতবছরের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলা হত্যার নিন্দা জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়সহ একাধিক স্বাধীন তদন্তে দেখা গেছে, একজন ইসরায়েলি সৈন্য তাকে হত্যা করেছে। গত বছরের নভেম্বরে এফবিআই তার মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে। ইসরায়েল গত সেপ্টেম্বরে স্বীকার করে যে আবু আকলা সম্ভবত একজন ইসরায়েলি সৈন্যের গুলিতে নিহত হয়েছেন, তবে যদি তাই হয় তবে এটি দুর্ঘটনাজনিত এবং তারা মার্কিন তদন্তে অংশ নেবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন গুয়ানতানামো বে-তে অবস্থিত মার্কিন সামরিক কারাগার বন্ধ করার অঙ্গীকার করলেও ৩৬ জন বিদেশি মুসলিম এখনো রয়ে গেছেন, যাদের অধিকাংশই দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক রয়েছেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় অভিযুক্ত পাঁচ গুয়ানতানামো বন্দির বিচার ত্রুটিপূর্ণ সামরিক কমিশনে স্থগিত করা হয়েছিল। আসামিরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ দোষীদের আবেদনের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছিলেন।

বাংলাদেশে মানবাধিকারের ইস্যু তুলে বারবার সরকারকে কাঠগোড়ায় তোলার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল আগ্রাসনসহ নানা মানবাধিকারহরণ করা ঘটনায় নীরব যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের বিমান হামলায় এ পর্যন্ত কয়েকশত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রাণ গেছে শিশু-নারীদের। মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে নিশ্চুপ ওয়াশিংটন, তবে ইজরায়েলকে সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ’র মতে, বেশিরভাগ যুদ্ধই আইনসিদ্ধ না। তিনি বলেন, ‘যেভাবে সাধারণ জনতাকে বিশেষ করে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া কঠিন। মুসলিম উম্মাহ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমাদের দরদ ও সহানুভূতি বেশি। নিকট অতীতের ২০০৮, ২০১৪ এবং বর্তমান ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে বারবার। অবশ্য হামাসের কর্মকান্ড ও হামলাকেও অনেক অর্থেই বৈধ বলা যাবেনা।’

তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ আন্তর্জাতিক আইন বিশ্লেষকরা মনে করেন যে গত কয়েক দশক ধরে, অকুপেশন ফোর্স হিসেবে, ইসরায়েল যে আধিপত্যমূলক বসতি নীতি অনুসরণ করে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইয়াহুদীদের আবাসন কায়েম করেছে তা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের লঙ্ঘন। সমগ্র জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরায়েল তাঁর ষোলোকলা পূর্ণ করতে চায়, যা আমেরিকাসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া অনুমোদন করে না। জাতিসংঘও এমন আইডিয়া সমর্থন করেনা। এমন ধারণা নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশনেরও লঙ্ঘন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ইতিহাস দেখলে বুঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড খুবই খারাপ। ভিয়েতনাম থেকে শুরু করে যত যুদ্ধ হয়েছে কোনটাই তো আইনসিদ্ধ না। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ কিংবা কোথাও যুদ্ধগুলো পাশ করে করা হয় নাই। সরাসরি প্রেসিডেন্টের অর্ডারের যুদ্ধ পরিচালনা হয়েছে। কোরিয়ান যুদ্ধে কিছুতা জাতিসংঘের সায় ছিল। কিন্তু সেটি বাদ দিলে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কোন যুদ্ধে সফল হয়নি।’

তিনি বলেন, প্রতিটি যুদ্ধ ছিল আইন বহির্ভূত। প্রতিটি যুদ্ধে আইন বহির্ভূতভাবে বাজেট ছিল। এমনকি আফগানিস্তানে গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ ছিল বলেই আইসিসি’র জারা জুরি ছিলেন, বিশেষ করে জিনি প্রসেকিউটর ছিলেন তাকে আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আমাদের জারা মানবাধিকার কর্মী আছে তার এগুলো নিয়ে কথা বলবে না। কারণ বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তারা বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশের অর্থায়নে কাজ করেন। সুতরাং মানসিকভাবেই তারা পশ্চিমাজগতে বাস করেন।




বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না: রেহমান সোবহান

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্বেগ জানালেও, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান অভয় দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না। সোমবার অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রবীণ অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, “বাংলাদেশের রিজার্ভ যেভাবে ধারাবাহিকভাবে কমছে, তার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মিল আছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে।”বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের বড় একটি রপ্তানি খাত আছে। সেই সঙ্গে আছে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি। সে কারণে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনও শ্রীলঙ্কার মতো হবে না।”

১৯৯১ সালের তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রেহমান সোবহান বলেন, “দেশে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। তবে তার মানে এই নয় যে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাস্তবে কমে গেছে; আনুষ্ঠানিক পথে না এসে অনানুষ্ঠানিক পথে আসছে প্রবাসী আয়। যার মূল মাধ্যম হুন্ডি। অর্থাৎ রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না হয়ে হুন্ডিতে জমা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাইরে জমা হচ্ছে। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেন, তাদের জন্য এটা সুবিধাজনক হয়েছে।”

দেশের বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “দেশের আর্থিক খাতের সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ঋণ নেওয়ার পর ফেরত না দেওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা করার জন্য বড় ব্যবসায়ী নয়; বরং যারা এসব করছেন, তারা নিজেদের বড় রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।”

দেশের চলমান ডলার সংকট নিরসনে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন রেহমান সোবহান। বলেন, “নীতি-নির্ধারকদের এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আগে বিএমডব্লিউ গাড়ি আমদানি করবে; না কি ডিম কিংবা সার আমদানি করবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস’হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

তার আগের সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৭ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারে। এ হিসাবে এক সপ্তাহে বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১০ কোটি ডলার। আর ‘গ্রস’ হিসাবে কমেছে ১৯ কোটি ডলার।

১৪ সেপ্টেম্বর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৭ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’হিসাবে ছিল ২৯ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।

৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মেয়াদের ১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে।

গত ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অসুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন ‘গ্রস’ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ গত জুলাই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।




বাংলাদেশের নির্বাচন ও বিশ্বমোড়ল আমেরিকার হস্তক্ষেপ

চলতি বছরের ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদানকারী ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদানের বিধি-নিষেধ আরাপের পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। এই ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তার বিবৃতিতে উঠে এসেছে যে, ভিসা নীতির আওতায় সরকার সমর্থক, বিরোধীদল, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কয়েকদিন আগে ঘোষণা করা হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমও এই নিষেধাজ্ঞা বা সাংশন এর আওতাভুক্ত। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস চ্যানেল-২৪’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি পুর্নব্যক্ত করেন। যেটি অনেকাংশে আগুনে ঘি ঢালার শামিল। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সম্পাদক পরিষদ ও এডিটরস্ গিল্ড যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ঘোষণাকে স্বাধীন মত প্রকাশের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।

আমেরিকার এই অযৌক্তিক, অহেতুক ও অনধিকার হস্তক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি উত্তপ্ত। বিরোধী দল এ বিষয়কে অস্ত্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অপপ্রয়াস নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক আমেরিকা সফরের সময় ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। দেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আওয়ামী লীগের ছিলো। আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ তা প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই অবস্থার পরও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে, হঠাৎ কথা নেই, বার্তা নেই, তারা আমাদের উপর ভিসা সাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে?” জননেত্রীর এই সাহসী উচ্চারণ আমেরিকা ও নির্বাচন বিষয়ে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট বলে মনে করি।

একটি কথা প্রচলিত আছে, আমেরিকা যার বন্ধু তার কোনো শত্রুর প্রয়োজন নেই। অতীতের বাংলাদেশ ও ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষণ করলে, এই সত্যের সারবত্তা স্পষ্ট হয়। কেননা বাংলাদেশের উন্মেষকাল থেকে আমেরিকার ভূমিকা ছিলো বৈরী। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর ঘটনাও আমাদের মনে আছে। হতে পারে সাম্প্রতিক সাংশন ৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ। আমেরিকার অপচেষ্টা আমরা আরো স্মরণ করতে পারি ৭৪’র দুর্ভিক্ষের কারণও কিন্তু আমেরিকা। অর্থ দিয়ে কেনা গম বোঝাই জাহাজও তারা সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলো। এছাড়া ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ড সিআইএ এর ভূমিকাও প্রমাণিত।

বৈশ্বিক রাজনীতিতেও আমেরিকার ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা দেখেছি। ভিয়েতনামে তারা দশকের পর দশক যুদ্ধ করেছে। পোড়াামাটি নীতি প্রয়োগ করেছে। এছাড়া মার্কিনীদের অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়াসহ দেশগুলো এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশও হয়তো আমরিকার নতুন টার্গেট। কিন্তু আমেরিকার এই গাত্রদাহের কারণ কী? বাংলাদেশ এখন সমগ্র বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল। উন্নয়নের যে মহাসড়কে বাংলাদেশ ক্রমশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্বমোড়ল আমেরিকার অপছন্দ। পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ কোনো এক বিশেষ ব্লকে সীমাবদ্ধ নয়। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’ বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্ববাসী। সে কারণে চীনের সাথে সহযোগিতায় পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল বাস্তবায়ন করেছে। রাশিয়া থেকে ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছেছে দেশে। শূন্য থেকে বাংলাদেশের পারমাণবিক জ্বালানিতে পদার্পণ। বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক উৎপাদনকারী এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দৈনিক ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এবং সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের। ভারতের সঙ্গেও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার। জাপানও বাংলাদেশর উন্নয়ন সহযোগী কিন্তু আমেরিকা চায় বাংলাদেশ কেবল তার উপর অতি নির্ভরশীল থাকুক। আমেরিকা সবসময় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে তাবেদার বানিয়ে রাখতে চায়।

এ প্রসঙ্গে আরো একটি বিষয় উল্লেখ্য। আমেরিকা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সেন্ট-মার্টিন দ্বীপ চেয়েছিলো সামরিক ঘাঁটি করার জন্য। কিন্তু বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের ওই চাওয়া প্রত্যাখান করেছিলেন। আমেরিকা এখন আবার সেন্ট-মার্টিন দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি করতে চায়। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা কোনো অবস্থাতেই এই প্রস্তাব মানতে রাজি নন। তিনি কখনো দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চান না। সামাজ্রবাদী আমেরিকার কূটকৌশলের ধরন এখন পাল্টে গেছে। নব্য সামাজ্যবাদীর ভূমিকায় অবতীর্ণ আমেরিকা এখন সেই আগ্রাসনের নতুন ফর্মুলা গ্রহণ করেছে। এই অপশক্তি হতে এসেছে নতুন অস্ত্র সাংশন বা ভিসা নিষেধাজ্ঞা।

আমেরিকার কারণে বহু প্রকল্পচুক্তি থেকে সরকার থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়ে হয়েছে। এছাড়া প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের আগে কেন এই ভিসা ইস্যু? সরকার বারংবার উচ্চারণ করেছে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ-অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক। কিন্তু বিএনপিসহ কিছু সুবিধাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করতে দিবে না। তারা ঘোষণা করেছে এই নির্বাচন তারা প্রতিহত করবে। অথচ সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আর কোনো সুযোগ নেই। তাহলে আমেরিকা কি বিশেষ কোনো মহল বা তৃতীয় কোনো শক্তিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায়? কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাচক্রকে প্রভাবিত করার জন্য বিএনপির তরফ থেকে হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে বিশেষ লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ় ও দূরদর্শী নেতৃত্বে, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার সকল পথ নিশ্চয়ই বন্ধ করে দেবে। বাংলাদেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর ক্ষমতার আসতে হলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই আসতে হবে। সরকার প্রধান দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য সকল বৃহৎশক্তি ও উন্নয়ন পার্টনারদের পর্যবেক্ষক টিম পাঠাতে বলেন। অতীতেও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো, কিন্তু সুন্দর ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করা যায়নি। নিশ্চয়ই, আমেরিকার সাংশনও নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

এদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। এতে ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্ত ও দু’লক্ষ মা- বোনের সম্ভ্রম হারানোর ক্ষতও আছে। এদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রাণ হারিয়েছেন স্বয়ং জাতির পিতার পরিবার। জাতীয় নেতৃবৃন্দ। পথ হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। আবার সম্ভিত ফিরে পায় বেঁচে থাকা বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ’কে। সরকার প্রধান হয়েছেন চার বার। এই ধারাবাহিকতা ১৫ বছর। শত বাধা আতিক্রম করে বাংলাদেশ এখন বিশ^ অর্থনীতিতে ৩১তম স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন এক অবিস্মরণীয় উন্নয়নের দেশ। কোভিড-অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেও মেগা প্রকল্পগুলো অব্যাহত আছে এবং দৃশ্যমানও হয়েছে অনেক। দীর্ঘ সরকার পরিচালনায় হয়তো কিছু ভুল বা ব্যর্থতা থাকতে পারে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দু’একটি নির্বাচন হয়তো ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক হয়নি। এরকম উদাহারণ স্বয়ং আমেরিকায়ও দেখি। অনবরত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সবক দেওয়া আমেরিকার গত নির্বাচনও কলঙ্কিত হয়েছে ক্যাপিটাল হিলের হামলায়।

এতদসত্ত্বেও গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নির্বাচনের বিকল্প নেই। শত ভিসা নীতি ও সাংশন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারবে না। সাংশন চ্যালেঞ্জ কখনো ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে কঠিন হবে না। বৃহৎ স্বার্থের জন্য জনগণকে কিছু ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করতে হতে পারে, যেটি হবে সাময়িক। বাঙালি কখনো গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিতে পারে না। বাঙালির পরম স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা শেখ হাসিনার হাতে স্মার্ট বাংলাদেশ হয়ে গড়ে উঠবেই।

লেখক: প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, সাবেক ডিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।




কুষ্টিয়ার মিরপুরে ব্লাষ্টের আইনগত সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত

বাল্যবিবাহ দেশ ও জাতির জন্য অভিশাপ। তাই বাল্য বিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। বাল্যবিবাহ রোধ-সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় এই বাল্যবিবোহ বেড়েই চলেছে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে বেশি বশে করে জনসচেতনা গড়ে তুলতে হবে।

আজ সোমবার সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ২০১৩ আইনের উপর আয়োজিত আইনগত সচেতনতা সভায় বক্তারা এসব মতামত তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তমান্নাজ খন্দকার।

বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্টুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) কুষ্টিয়া ইউনিটের সমন্বয়কারী এ্যাড.শংকর মজুমদার, ব্লাস্ট কুষ্টিয়া ইউনিটের প্যানেল আইনজীবী এ্যাড. আব্দুর রশীদ রানা, ইউপি মেম্বার মাসুম আলী বিশ্বাস, সাদেক আলী, সাবেক মেম্বার উফান আলী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে বেশির ভাগ মেয়ের বিয়ে হয় ১২ থেকে ‘১৮ বয়সের মধ্যে।গ্রামের মেয়েদের বেশির ভাগই বিয়ের এক বছরের মধ্যে সন্তান জন্ম দেয়। আর এসব বাল্যবিবাহের অধিকাংশ কারণগুলো হচ্ছে দরিদ্রতা, সচেতনতার অভাব, প্রচলিত প্রথা ও কুসংস্কার, সামাজিক অস্থিরতা, মেয়েশিশুর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, নিরাপত্তার অভাব, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, যৌতুক প্রথা এবং বাল্যবিবাহ রোধ-সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া। বাল্যবিবাহের কারণে অপরিণত বয়সে সন্তান ধারণ, মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যহানি, তালাক, অপরিপক্ব সন্তান প্রসবসহ নানাবিধ জটিলতার শিকার হচ্ছে।

বাল্য বিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত উল্লেখ করে বক্তারা জানান, বাংলাদেশে বাল্য বিবাহ একটি মারাত্মক সমস্যা৷সমাজে বাল্য বিয়ে ও জোরপূর্বক বিয়ে বন্ধে শুধু প্রশাসনের ভূমিকাই নয়, বাবা-মাকে আগে সচেতন হতে হবে পাশাপাশি বাল্য বিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, ইউপি মেম্বার, কাজী, স্কুল শিক্ষক, ইমাম,মোয়াজ্জম সহ অনান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সার্বিকভাবে পরিচালনা করেন ব্লাস্ট কুষ্টিয়া ইউনিটের ল-ক্লার্ক এশখ ইসতিয়াক বকস্।




খালি পেটে যেসব খাবার ভুলেও নয়

স্বাস্থ্য আমাদের খাওয়াদাওয়ার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। শরীর সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রাখা জরুরি। চাইলেই যখন-তখন এটা-সেটা খাওয়া যায় না। বিশেষ করে খালি পেটে কিছু খাবার আগে চিন্তা করা উচিত। খালি পেটে খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মাথা ঘামান না কেউই। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা দিনের শুরুতে যদি খাওয়া হয় তাহলে শরীরে সৃষ্টি হতে পারে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা।

মসলাদার খাবার
সকালের নাশতায় মসলাদার খাবার খেলে শরীরে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসের কারণে পাকস্থলীর ক্ষতি হয়। তাই সকালের নাশতায় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরমর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

কমলালেবুর রস
অনেকেই সকালে কমলালেবুর রস খেয়ে থাকেন, যেটি খালি পেটে একেবারেই খাওয়া অনুচিত বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

চা-কফি
সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ গরম গরম চা হলে শরীরটা বেশ সতেজ হয়ে যায়। হলে কী হবে, খালি পেটে চা-কফি খাওয়ার রয়েছে ক্ষতিকর দিক। ডাক্তারদের মতে, খালি পেটে চা-কফি খেলে অম্বল হওয়ার আশঙ্কা সব থেকে বেশি থাকে। মাথা ঘোরার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই দিনের শুরুতে চা-কফি খেতে নিষেধ করেন তারা।

ঠান্ডা পানীয়
খালি পেটে ঠান্ডা পানীয় খেতে নিষেধ করেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে আছে কার্বোনেটেড ড্রিংকস, খুব ঠান্ডা পানি, কোল্ড টি অথবা কফি ইত্যাদি। এর বদলে দিনটা শুরু করা যেতে পারে কুসুম গরম পানি দিয়ে। তাতে থাকতে পারে লেবুর রস ও মধু।

সালাদ
ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে সালাদ আমাদের অনেকের প্রিয় খাবার। তবে সেটা একেবারে খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। ফলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।

লেবু জাতীয় ফল
লেবু জাতীয় ফল যেমন মাল্টা, কমলা, জাম্বুরা ইত্যাদি খালি পেটে খাওয়া বারণ। এসব ফলে যথেষ্ট ফাইবার থাকে। সেটা হজম করতে গিয়ে পাকস্থলীর ওপরে যথেষ্ট চাপ পড়ে। তাই পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে এ ধরনের ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুর সীমান্ত থেকে ২৮ হাজার ইউএস ডলার উদ্ধার

মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা সীমান্ত এলাকা থেকে ২৮ হাজার ইউএস ডলার উদ্ধার করেছে বিজিবি।

আজ সোমবার সকাল ১১ টার দিকে বুড়িপোতা বিওপি কমান্ডার সুবেদার মো: তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে বিজিবির টহল দল এ অভিযান পরিচালনা করে।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে: কর্ণেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, পিএসসি স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, সীমান্ত দিয়ে ইউএস ডলাল ভারতে পাচার হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানিক দলটি সীমান্ত পিলার ১১৬/৫-এস হতে ১৫০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুচ্ছগ্রামের মোড়ের পাশে অবস্থান নেয়। এসময় একজন ব্যক্তিকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলে বিজিবি টহল দলের সন্দেহ হয়। সন্দেভাজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টহল দল তার নিকটে যেতেই সে হাতা থাকা একটি ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিজিবির টহল দল ফেলে যাওয়া ব্যাগটি জব্দ করে। ওই ব্যাগটি তল্লাশী করে ব্যাগের ভিতর স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো দুটি বান্ডিলে ২৮হাজার ইউএস ডলার, ১টি পুরাতন লোহার বটি এবং ২টি পুরাতন কাচি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করে উদ্ধারকৃত ইউএস ডলারগুলি মেহেরপুর ট্রেজারী অফিসে জমা করা হয়েছে।




ঝিনাইদহে অস্ত্র মামলায় শিবির নেতার ২৪ বছরের কারাদন্ড

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে অস্ত্র মামলায় আকরাম হোসেন নামের এক শিবির নেতার ২৪ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ নাজিমুদ্দৌলা এ দন্ডাদেশ দেন।

দন্ডিত আকরাম হোসেন উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের আলম বিশ্বাসের ছেলে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ইসমাইল হোসেন জানান, ২০১৬ সালের ১১ জুলাই কোটচাঁদপুর উপজেলার দয়ারামপুর আলিম মাদ্রাসা থেকে জঙ্গি ও নাশকতামুলক কার্যক্রমের প্রস্তুতির সময় ১ টি ওয়ান শ্যুটার গান ও ১০ রাউন্ডগুলিসহ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি আকরাম হোসেনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিনই পুলিশের পক্ষ থেকে কোটচাঁদপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়। পরের মাসে পুলিশ আদালতে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করে।

দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলায় ৩ টি ধারায় আকরাম হোসেনকে ২৪ বছরের কারাদন্ড দেয়। বাকি আসামীদের বেকসুর খালাশ দেওয়া হয়েছে।




ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবীতে মিছিলে মিছিলে উত্তাল ছিল ঝিনাইদহ।

গত ১৫ বছরের মধ্যে আজ সোমবার ( ৯ অক্টোবর) ছিল ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সবচে বড় শোডাউন। এক দফার দাবী আদায়ে হাজারো বিএনপি নেতাকর্মী জেলার ৬ উপজেলা থেকে সমবেত হয় ঝিনাইদহ শহরে। নেতাকর্মীদের গগনবিদারী শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ঝিনাইদহ। শহরের অলিগলি দিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সামিল হয় মুল মিছিলে। সকাল ১১টার দিকে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব, আরাপপুর, চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড, মডার্ণমোড়, আদর্শপাড়া, হামদহ ও উজির আলী স্কুল এলাকাসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করে। কিন্তু স্থান সংকুলান না হওয়ায় প্রেসক্লাব থেকে উজির আলী স্কুল মাঠ পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে হাটের রাস্তায় গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল শেষে শহরের হাটের রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. এম এ মজিদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পাপপু, বিএনপি নেতা মুন্সি কামাল আজাদ পাননু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, মাহবুবুর রহমান শেখর, আলমগীর হোসেন, শাহজাহান আলী, জিয়াউল ইসলাম ফিরোজ, জাহাঙ্গীর হোসেন, যুবদল নেতা আহসান হাবিব রণক, আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, ছাত্রদল নেতা সোমেনুজ্জামান, মুশফিকুর রহমান মানিক, শ্রমিক দল নেতা আবু বকর, টোকন জোয়ারদার, রুহুল আমিন পিকুল ও রেজাউল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিতে হবে। নইলে পরবর্তী পরিস্থির জন্য এই সরকার দায়ী থাকবে। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা তলে তলে ঠিক থাকার কথা বললেও এই সরকারের তলা ফেটে পানি উঠতে শুরু করেছে। যে কোন সময় বঙ্গপোসাগরে ডুবে যাবে।




মেহেরপুরে মাদক ব্যবসায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মেহেরপুরে হেরোইন রাখার অভিযোগে তাজুল ইসলাম তাজু নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের দন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার ৯ অক্টোবর দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শহীদুল্লাহ এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত মাদক ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম মেহেরপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এমদাদ হোসেনের ছেলে।

মামলার অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুপুর মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা বিভাগের এস আই আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল তাজুল ইসলামের বাড়ির সামনে থেকে তাজুল ইসলামকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে ৮০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। মামলায় ৮ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।

মামলার অপর আসামি আলফাজ হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য এবং আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা কৌশলী ছিলেন।